হজ্জ্ব ফরয হওয়ার শর্তাবলী

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মাদ রুমান ২০ আগস্ট, ২০১৬, ০৯:৪২:৪১ সকাল

আলেমগণ হজ্ব ফরজ হওয়ার শর্তগুলো উল্লেখ করেছেন। কোন ব্যক্তির মধ্যে এ শর্তগুলো পাওয়া গেলে তার উপর হজ্ব ফরজ হবে; আর পাওয়া না গেলে হজ্ব ফরজ হবে না। এমন শর্ত- পাঁচটি। সেগুলো হচ্ছে- ইসলাম, আকল (বুদ্ধিমত্তা), বালেগ হওয়া, স্বাধীন হওয়া, সামর্থ্য থাকা।

১. ইসলাম: এটি যে কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে শর্ত। যেহেতু কাফেরের কোন ইবাদত শুদ্ধ নয়। দলিল হচ্ছে আল্লাহ তাআলার বাণী: “তাদের অর্থ ব্যয় কবুল না হওয়ার এছাড়া আর কোন কারণ নেই যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি কাফের (অবিশ্বাসী)।”[সূরা তওবা, আয়াত: ৫৪]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক মুআয (রাঃ) কে ইয়েমেনে পাঠানো সংক্রান্ত হাদিসে এসেছে- “তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছ। তাদেরকে তুমি ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এই কালেমাতে সাক্ষ্য দেয়া এবং আমি যে আল্লাহর রাসূল এই সাক্ষ্য দেয়ার প্রতি আহ্বান জানাবে। যদি তারা তা মেনে নেয় তখন তাদেরকে জানাবে আল্লাহ তাদের উপরে দিবানিশি পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ করেছেন। যদি তারা তা মেনে নেয় তবে তাদেরকে জানাবে আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরজ করেছেন। তাদের মধ্যে যারা ধনী তাদের থেকে যাকাত আদায় করা হবে এবং গরীবদের মধ্যে তা বিতরণ করা হবে।”[সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিম] অতএব, কাফেরকে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করার দাওয়াত দেওয়া হবে। ইসলাম গ্রহণ করার পর আমরা তাকে নামায, যাকাত, রোজা, হজ্ব ও ইসলামের অন্যান্য বিধিবিধান আদায় করার নির্দেশ দিব।

২ ও ৩. আকলবান ও বালেগ হওয়া: দলিল হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তিন শ্রেণীর লোকের উপর থেকে (শরয়ি দায়িত্বের) কলম তুলে নেয়া হয়েছে। ঘুমন্ত ব্যক্তি; সজাগ না হওয়া পর্যন্ত। শিশু; তার স্বপ্নদোষ না হওয়া পর্যন্ত। পাগল; তার হুঁশ ফিরে আসা পর্যন্ত।” [সুনানে আবু দাউদ (৪৪০৩), শাইখ আলবানী সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন] অতএব, শিশুর উপরে হজ্ব নেই। তবে শিশুর অভিভাবক যদি তাকে নিয়ে হজ্ব আদায় করে তাহলে তার হজ্ব শুদ্ধ হবে। সে শিশু যেমন সওয়াব পাবে তেমনি তার অভিভাবকও সওয়াব পাবে। হাদিসে এসেছে- এক মহিলা একটি শিশুকে উপরে তুলে ধরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন: এর জন্য কি হজ্ব আছে? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: হ্যাঁ। আপনিও প্রতিদান পাবেন।”[সহিহ মুসলিম]

৪. স্বাধীন হওয়া: অতএব, ক্রীতদাসের উপর হজ্ব নেই। যেহেতু ক্রীতদাস তার মনিবের অধিকার আদায়ে ব্যস্ত।

৫. সামর্থ্য থাকা: আল্লাহ তাআলা বলেন: “এ ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ্য রয়েছে এ পর্যন্ত পৌছার।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭] আয়াতে কারীমাতে উল্লেখিত সামর্থ্য শারীরিক সামর্থ্য ও আর্থিক সামর্থ্য উভয়টাকে অন্তর্ভুক্ত করে। শারীরিক সামর্থ্য বলতে বুঝায় শরীর সুস্থ হওয়া এবং বায়তুল্লাহ পর্যন্ত সফরের কষ্ট সইতে সক্ষম হওয়া। আর আর্থিক সামর্থ্য বলতে বুঝায় বায়তুল্লাহতে আসা-যাওয়া করার মত অর্থের মালিক হওয়া।

বিষয়: বিবিধ

১০৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File