কেন এত Divorce! সোশ্যাল মিডিয়া!!!!!
লিখেছেন লিখেছেন উম্মে হাফসা ২৮ জুলাই, ২০১৭, ০৫:৪৭:৩২ বিকাল
প্রেয়সীকে হারানোর ভীতি। হৃদয়জুড়ে চাপা কষ্ট । এগুলো এখন তেমন একটা কাজ করে না।
.
তখনও স্যোসাল সাইটের অত প্রসার ঘটে নি। তবে যুবক-যুবতীর নিজেদের খারাপ দিকে, অশ্লীলতার দিকে এগিয়ে নেয়ার একটা সুযোগ হয়েছিল- Robi Circle । এরপর আসে Facebook, Whatsapp এর মত স্যোসাল সাইট , যেখানে নিজের ঈমানকে ঠিকিয়ে রাখতে প্রতিমূহুরতে সংগ্রাম করতে হয়।
.
.
তখন আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে মাত্র। ওমা! দেখি ছোটভাইটার ফেইসবুক আইডি আছে। আবার পরিচিত কিছু সুন্দরী আত্মীয়ার সাথে চ্যাটিং মারে। ফেবু আইডি থাকা মানে তখন আমার কাছে আহামরী ব্যাপার ছিল। তাই সোজা আম্মুকে গিয়ে বলি। আম্মু প্রশয় দেননি। ওই বয়সেও মারতে হয়েছে।
.
.
Facebook , Social Media এমন একটা ক্ষেত্র , যেখানে আমরা নিজেদের Available করে দিচ্ছি। প্রেয়সীকে হারানোর ভীতি। হৃদপিন্ড জুড়ে চাপা কষ্টরা প্রিয়তমের মধ্যে থাকে না। রঙ্গিন দুনিয়ায় প্রবেশের পর Scrolling’র সাথে সাথে সে দেখতে পায় আরো কত সুন্দরী!!! ( কৃত্রিম কিংবা প্রাকৃতিক সুন্দরী)
.
.
ব্রেকআপারের পর হৃদয়ে রক্তক্ষরণও হয় না। আজ থেকে ঠিক ৭-৮ বছর আগেও মানুষ অন্য ভাবে চিন্তা করতো। তার যেটুকু আছে , যেটুকু সে পেয়েছে, তা আঁকড়ে ধরতে পারাটায় প্রশান্তি। নতুন কোন গুনবতী-রূপবতীদের প্রয়োজন পরতো না।
.
.
যারা টুকটাক লিখালিখি করেন , তাদের জন্য সবেচেয়ে রিস্কি পয়েন্ট হলো- “ আপনি না খুব ভালো লিখেন, মাশা’আল্লাহ।“ “ আপনার মতো কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাবো কিনা জানিনা।“ নন-মাহররাম থেকে এধরনের বাক্য ।
.
প্রশংসাগুলোকে ছোট করে দেখার কোন অবকাশ নেই। ( প্রশংসার বদলে দোয়া করুন) কিন্তু যারা অন্তত একটু ইসলামিক জ্ঞান রাখেন , তাদের পক্ষ থেকে এধরনের কোন কাজ করা , বা অন্য কোন নন- মাহাররাম নারীর এধরনের আহ্বানে সাড়া দেয়া সত্যিই ব্যথিত করে। কারণ এখান থেকে অন্যায় কাজের ফাঁকফোকর থেকে যায়। চ্যাটিং’র শুরুটা হয় কিছু ভালো কথা দিয়ে। ধীরে ধীরে দুজন তরুন-তরুনী Attracted হতে থাকে, খারাপের দিকে যেতে থাকে। কারণ দু’জনের চ্যাটিং মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে শয়তান অবস্থান করেন। সে প্রতি মুহূর্তে অশ্লীলতার দিকে উস্কানি দেয়। আল্লাহ্ সুবহান’আল্লাহ তায়ালা বলেন, - “তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ”। (সূরা বনী ইসরাঈল -৩২)
.
.
একবার আবু বকর (রাঃ) ও তার কন্যা আয়েশা (রাঃ) একাকী কোন এক বিষয় নিয়ে আলাপ করছিলেন। হঠাত রাসুল (সাঃ) এলেন। যখন তিনি খুব ক্ষুদ্ধ হলেন। স্ত্রী আয়েশা (রাঃ) রাসূল (সাঃ) কাছে এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন , যখন তোমরা দু’জন একাকী আলাপ করছিলে , তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে তোমাদের মাঝে শয়তান অবস্থান করছিল।
.
ভাবুন তো, বাবা-মেয়ের সম্পর্কের ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) একথা বলেছেন, তাহলে দুজন নন-মাহাররামের সাথে চ্যাটিং ‘র ব্যাপারে নির্দেশ কেমন হতে পারে? ( চ্যাটিং ও তো গোপনে হয়। মাঝখানে দেখার কেউ থাকে না।)
এত ভাঙ্গন কেন?
........................................
এর মূল কারণ আমাদের avalibility (তা Online এ হোক কিংবা Offline এ ) . যখন কেউ নক করে, শয়তানের ফাঁদে আমরাও গুছিয়ে রিপ্লে দিতে সদা প্রস্তুত। শয়তান আমাদের এই বলে উস্কানি দেয়, “ যদি রিপ্লে না দিই, সে আমাকে অসামাজিক ভাববে না তো! তাছাড়া সে তো খারাপ কোন কিছু করছে না। জাস্ট খুঁজ খবর নেয়া, আর হেল্প চাওয়া বা হেল্প করা । এতটুকুই তো। “ কিংবা কখনো কখনো বিপরীত পক্ষের কমেন্টেস ,কমেন্টেসের রিপ্লে গুলো এতটায় গুছানো থাকে যে, He or She খুব সহজেই তার প্রতি Attracted হয়ে পড়ে। ভাবে- “ ইসসস! কি গুনবান বা গুনবতী! আমার বউ কিংবা জামাইটা তো এভাবে পারে না! “
( শুনুন, কাউকে যাচাইয়ের জন্য স্যোসাল সাইট কোন নির্ভর যোগ্য মাধ্যম না। হতে পারে, তার লিখনীর সাথে, তার বাস্তবজীবন খুব বেশি অমিল। তখন কি করবেন? )
এভাবেই ভাগন ঘটে। যে মানুষটা তার প্রিয়তম/ প্রিয়তমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসত, Social Media’র অপব্যবহারে সে এখন কাকে ফোকাস করবে তা বুঝে উঠতে পারে না। স্ত্রী বা স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হলেই ফেইসবুকের রঙ্গিন দুনিয়ায় নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করে। ধীরে ধীরে ভার্চুয়াল জগতের অন্য কোন মানুষ তার কাছে অধিক গুরুত্ব বহন করে। স্ত্রী/ স্বামীর অভিমানের থোড়ায় কেয়ার করে। খুব টুনকো ব্যাপারে একসময়ের প্রিয় মানুষটার সাথে সারাজীবন সংসার করা তার কাছে খুব অপ্রিয় হয়ে উঠে। খুব অপ্রিয়! শ্বাস্রুদ্ধকর!!! Because, Now Option is available for him or her……
এই অপশনটি হয়তো আমি, আপনি কিংবা অন্য কেউ। আমাদের কারো জন্য কেউ একজনকে হারাতে হয়েছে তার প্রেয়সীকে, কিংবা তার প্রিয়তমকে। আমাদেরই কেউ ভেঙ্গে দিয়েছিলাম, কোন এক মানিকজুড়ের সাজানো স্বপ্ন……
যাদের জন্য কোন জুটির সাজানো রঙ্গিন স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়, তার জীবনেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটে। আল্লাহ্ উত্তম ইনসাফকারী। নিজের যা ,তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকুন। প্রিয়মানুষের অপ্রিয় আচরণগুলোর সাথে নিজেকে একটু মানিয়ে নিন। ধৈরয্যের সাথে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করুন, যেন তিনি সবকিছু ঠিক করে দেন।
ভালোবাসা আর প্রগাঢ় মমতায়
আবিষ্ট থাকুক প্রতিটি বন্ধন,
এ বন্ধন যেনো হয়ে উঠে জান্নাতী বন্ধন...
বিষয়: বিবিধ
৯৩০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বেটার কাউকে পেলে মেয়েরা সেটা এভেইল করতে বিন্দুমাত্র পিছুটান তথা দূর্বলতা দেখায় না ।
আর ছেলেরা দ্বায়িত্ব পালনের অযথা বেগার খাটুনি খাটতে চায় না। দেবে আর নেবে , কোন পিছুটান নেই ।
এই হাদীসটার সূত্র নিয়ে সন্দিহান আছি। সম্ভব হলে খুজে দেখবেন
মন্তব্য করতে লগইন করুন