নামাজ - এক প্রদীপ্তমান আলোকরশ্মি ...!
লিখেছেন লিখেছেন উম্মে হাফসা ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৮:২০:৩৮ রাত
রাত্রির আবহ এখনো পুরোপুরি কেটে যায়নি।
ভোর হতে আর খানিকটা দেরী ।
“ ক্রিং ক্রিং …………” এলার্ম বেজেই চলেছে।
“ থেত্তেরিকা…! আয়েশী ঘুমটা………। “ – এই বলে ফোনের SNOOZE বাটনে ক্লিক করে চাদরটা জড়িয়ে নিয়ে ঘুমের রাজ্যে জারিয়া।
পাঁচ মিনিট পর এলার্মটা বেজে উঠতেই - “ উফফফ! আবার !!! “ পৃথিবীর সমস্ত বিরক্তি চেপে বলল সে। ওর মনেই ছিল না ফজরের সময় উঠার জন্য ফোনে Multiple এলার্ম দিয়ে রেখেছিল।
খানিক সময় পরেই দূর থেকে ভেসে আসছিল মোয়াজ্জিনের সমুধুর কন্ঠে আজানের ধ্বনি। “ নিশ্চয়ই ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম। এসো নামাজের দিকে।“ – প্রেরনার আলোয় উদ্ভাসিত আজানের এই হৃদয়স্পর্শী শব্দ কানে বাজতেই ঘুমকাতুরে চোখ নিমিষেই এক পবিত্র জ্যোতি খুঁজে পেল ।
হ্যা ! এটি আমাদের জীবনেরই প্রতিচ্ছবি। শয়তান কোন ভাবেই চায় না আমরা স্রষ্টার নিকটবর্তী হয়।
তার চেষ্টা- কিভাবে আমাদের নামাজ থেকে বিরত রাখবে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “ বান্দা যখন ঘুমিয়ে থাকে শয়তান তখন তার উপর কতগুলো গিরা মেরে রাখে। যখন সে ঘুম থেকে উঠে আলস্য ত্যাগ করে পবিত্রতা অর্জন করতে যায় ও অজু করার সময় তার হাত ধোয় তখন একটি গিরা খুলে যায়। তারপর যখন তার মুখ ধোয় তখন আরেকটি গিরা খুলে যায়। আর যখন তার মাথা মাছেহ করে তখন আরেকটি গিরা খুলে যায়। “ – মুসনাদে আহমদ
কিয়ামতের ময়দানে যখন সবাইকে সমবেত করা হবে, আল্লাহ্ সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন।
রাসুলুল্লাহ ( সাঃ) বলেন-“ কিয়ামতের দিন বান্দার যে কাজ সম্পর্কে সর্বপ্রথম হিসাব নিকাশ নেয়া হবে তা হচ্ছে নামায। হিসাব দিতে সক্ষম হলে মুক্তি নচেৎ ব্যর্থতা অবধারিত। “
জাহান্নামবাসী সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন- “ জান্নাতবাসী তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে , কোন কারণে তোমরা দোজখে গেলে? তারা জবাব দেবেঃ আমরা নামাজ আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না। “
এক ব্যাক্তি রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে বললোঃ “ হে রাসূল! ইসলামের কোন কাজ আল্লাহ্র নিকট বেশী প্রিয়? রাসুল (সাঃ) বললেনঃ যথা সময়ে নামাজ পড়া। যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দিল তার ধর্ম নেই। নামাজ ইসলামের খুঁটি। “ –( বায়হাকী)
প্রতিটি ভোরের উন্মোচন কিছু স্বপ্নের সমাহরণ। দিনটি যার শুরু হলো স্রষ্টার স্বরণে ,তার উপর অবারিত রাহমাহ বর্ষিত হয় । প্রভাতের স্নিগ্ধ সমীরন পবিত্রতম অনুভূতিতে মন ছুঁয়ে যায় ।
তন্দ্রা-প্রমোদ ছেড়ে বান্দা যখন রবকে ভালবেসে জায়নামাজে বনম্র মস্তকে সিজদাবনত হয়, রব সন্তুষ্ট হয়ে ফেরেস্তাদের ডেকে বলেন,
“দেখো! পৃথিবীর এই বান্দাটিকে চেন? আমি একে অনেক ভালবাসি। তোমরাও একে ভালবেসো। আমি কেন ভালবাসব না। ওতো পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে আমাকে ভালবাসে।“
সুবহানআল্লাহ।
রাসূল (সাঃ) বলেন, “ কোন বান্দা যখন প্রথম ওয়াক্তে নামাজ পড়ে তখন সেই নামাজ একটি আলোকরশ্মি ছুড়তে ছুড়তে আরশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অতঃপর কিয়ামত পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে যে, তুমি যেমন আমাকে রক্ষা করেছ, আল্লাহ্ তেমন তোমাকে রক্ষা করূন! “ – (তারবানী)
তাই আমাদের প্রত্যহ দিনগুলো হোক না শুরু স্রষ্টার স্বরনে, শুভ্র অনুভুতিতে!
বিষয়: বিবিধ
১৩৪২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কারণ ফজরের সময়ে মানুষ ঘুমে অচেতন থাকে এবং সে সময়ের ঘুম খুবই গভীর হয় । আর যাকে শয়তান সহজেই কাবু করতে পারে সে এলার্ম শুনেও ঘুমিয়ে পড়ে ৫ মিনিট পরে উঠে পড়বে এই হিসেব করে । এই পাঁচ মিনিট আসলে ৫০ মিনিট হয়ে যায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন