ভালবাসার স্নিগ্ধ চাঁদরে আবিষ্ট হওয়ার আশায় এখনো প্রতীক্ষমাণ আপনার প্রিয়তমা!

লিখেছেন লিখেছেন উম্মে হাফসা ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৮:৫৯:২৫ রাত



স্ত্রীকে ভালবাসুন !!!!

কোন এক গোধূলী লগ্নে, নিঃসঙ্গতায় যখন তার চারপাশটা মেঘময় হয়ে যেত, আখির পানে জলের আভা ছিল তার তীব্র কস্টের বহিঃপ্রকাশ।

এই মুহূর্তটা সে সামাল দিয়ে উঠত, নিজেকে এই বলে সান্তনা দিয়ে- হয়তো কেউ একজন তার অপেক্ষায় বসে আছে ঠিক তারই মত করে। আল্লাহ্‌ সময় মত তাদের মিলিয়ে দিবেন।

ভোরের সূর্যোদয়ের মনোরমতা কখনো কখনো আপনার স্ত্রী ইচ্ছে করেই মিস করেছিল, যেন তা আপনার সঙ্গেই দেখার মাঝেই পূর্ণতা পায়।

সবুজ ঘাসের কোমলতাকে তুচ্ছ করে অবহেলা করেছিল,শুধুমাত্র আপনার জন্য, হ্যাঁ! আপনারই জন্য!! আপনার হাতের প্রেমময় কোমলতা তার হৃদয়ের সবটুকু আবেগ দিয়ে অনুভব করবে বলে!

ভোরের শিশিরের স্নিগ্ধ স্পর্শ অবজ্ঞা করেছিল, কারন সে ভেবেছিল আপনি মাঝে মাঝে তার অবাধ্য চুল এসে পরা মুখে ভালবেসে শিশির কণা ছড়িয়ে দিবেন।

ঝুম বৃষ্টিতেও সে ভিজেনি অনেক ইচ্ছেদের হাতছানির পরেও, আপনার সাথে বৃষ্টিবিলাস করবে বলে;

স্ত্রীকে প্রশ্ন করে দেখুন! পরিতৃপ্তির জোসনাবিলাসটাও এখনো বাকি আছে, শুধু আপনার প্রতিক্ষায়!

এগুলো আপনার স্ত্রীর স্বপ্ন ছিল ! ছোট থেকে একটু একটু গড়ে তোলা স্বপ্ন!

স্ত্রীকে ভালবাসুন ! তার স্বপ্নগুলোর পূর্ণতা দিন! সে তো আপনারই স্ত্রী!

আল্লাহ্ বলেছেন,

“তাঁর নিদর্শন সমূহের মধ্যে একটি এই যে,তিনি তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন,যাতে তোমরা তাদের পেয়ে পরিতৃপ্ত হও। তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক প্রেম- ভালবাসা ও মমত্ববোধ সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চিন্তাশীল লোকদের জন্য অবশ্যই অনেক নিদর্শন আছে।“-(সূরা রুমঃ৩০-২১)

আল্লাহ্ সুবহানআল্লাহ তায়ালা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রাহমাহ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। রাহমাহ সেই গুন যার কারনে কোনো বিনিময় না পেলেও অকাতরে বিলিয়ে দেয়া যায়। স্ত্রীকে একটু সহ্য ক্রুনই না! আপনার বাড়িতে তাকে বুঝার মত আপনি ছাড়া হয়তো কেউ নেয়। স্বামীই তার একমাত্র ভরসার স্থল ! মাথার উপর ছায়া! নিরাপত্তাদানকারী! পরম বন্ধু ! সে-ই আপনিই যদি তাকে না বুঝে দুর্ব্যবহার করেন, বা পরিবারের সবার কথা শুনে অসন্তুষ্ট হন, বেচারীর অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় একবারও কি ভেবেছেন???!

অথচ প্রতিনিয়ত আপনার কাছ থেকে পবিত্র ভালবাসা পাওয়ার জন্য সব কিছু সহ্য করে নিচ্ছে। মাঝে মাঝে কস্টের কথা আপনাকে জানাচ্ছে অথবা কখনো না! হয়তো আপনি পাত্তায় দিচ্ছেন না!

অনেক স্বপ্ন নিয়ে আপনার সাথে সে জীবন শুরু করেছিল।কিন্তু আপনার একটু অবহেলা তাকে অনেক কস্ট দেয়। খোঁজ নিয়ে দেখুন।

খেয়াল রাখুন, পরিবারের সবার ইচ্ছের মাঝে তার ইচ্ছেগুলো,স্বপ্নগুলো চাপা পড়ে যাচ্ছে না তো!?? আপনার উপর তার অধিকার ঠিক ততটুকুই ,যতটুকু আপনি তার উপর অধিকার রাখেন।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “ তোমরা ভাল করে জেনে নাও,তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের যেমন অধিকার আছে,তেমনি তোমাদের উপর তাদেরও অধিকার আছে।“

সুন্দর দাম্পত্যজীবনের জন্য প্রয়োজন নিজের জীবন সঙ্গীকে নিজের উপর প্রাধান্য দেয়া এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ । আপনার সুন্দর অনুভুতি গুলো স্ত্রীর সাথে শেয়ার করুন।স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা প্রকাশে বিলম্ব নয়! কেননা ,আপনি জানেন ,আপনার আর তার মাঝে কোন বাধার প্রাচীর নেই। আপনাকে বিশ্বাস করে সে তার মণিকোঠায় স্থান দিয়েছে। সে বিশ্বাসের সঠিক মূল্যটুকু দিন।

স্ত্রীর প্রতি কোমল হোন! আল্লাহ্ কোমলতা ভালবাসেন।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ ব্যাপারে বলেনঃ “আল্লাহ্ নিজে কোমল । তিনি কোমলতা ভালবাসেন। তিনি কোমলতা দ্বারা ঐ জিনিস দান করেন যা কঠোরতা দ্বারা দেন না।“-(মুসলিম)

“নারীদের সাথে ভাল ব্যবহার কর।“- মুসলিম

স্ত্রীকে সময় দিন। সারাদিন আপনার প্রতিক্ষায় সে বসে থাকে!

স্ত্রীর মনের মত হওয়ার চেষ্টা করুন (ইসলামী শরীয়াহ’র মধ্যে থেকে) ।তার কাজে সহযোগিতা করুন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যে তরবারি দিয়ে যুদ্ধ করতেন,সেই তরবারি দিয়েই স্ত্রীদের কাজে সাহায্য করতেন।

যাকে একদিন ভালবাসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বউ করে নিয়ে ছিলেন, কেন কস্ট দিচ্ছেন?! দোষ গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃশটিতে দেখুন। তাকে ভালবাসা দিয়ে শুদরে দিন।

মাঝে মাঝে বউয়ের চোখে কাজল পরিয়ে দিন। ভেজা চুলের ঘ্রাণটুকু নিন। আপনি প্রেমে পড়বেনই। প্রতিদিন একবার করে স্ত্রীর ভালবাসায় নিজেকে হারিয়ে ফেলুন :p

ভাললাগার মুহুরতগুলোতে তাকে ফুল উপহার দিন অথবা এমন কিছু যা আপনার স্ত্রী কামনা করে।

গভীর ভালবাসার এই সম্পর্ক জান্নাত পর্যন্তই অটুট থাকুক।

আল্লাহ্ সুবহানআল্লাহ তায়ালা বলেন,” জান্নাতে প্রবেশ কর তোমরা এবং তোমাদের স্ত্রীরা আনন্দচিত্তে।“-(সূরা যুখরুক ৭০)

( যাকে এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে এত ভালবাসেন, তাকে জান্নাতে পেতে চান,তাইলে পরস্পরকে জান্নাতের পথে সহযোগিতা করুন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন একজন যদি জান্নাতী হয়, তাইলে তাকে অন্য কোন এক মুমিনের সাথে আল্লাহ্ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে দিবেন। আপনি নিশ্চয় প্রিয় মানুষটাকে চিরস্থায়ী ভাবে হারাতে চাইবেন না! Happy

বিষয়: বিবিধ

১১১০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

381700
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ রাত ১১:১৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার শিক্ষয়িন পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ।
381704
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ রাত ০১:৪০
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় বোন, আপনার সুন্দর লিখাটির জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। জাযাকাল্লাহ
381709
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম। আমি যদিও বিয়ে বিষয়ক পোস্টগুলো এড়িয়ে চলি তবুও এটা আগ্রহ নিয়েই পড়লাম। সুন্দর লেখা নিঃসন্দেহে। কিন্তু আমার মনে হয় আমি যখন নারী, আমি নারী হিসেবে বিপরীত লিঙ্গকেই উপদেশ দিচ্ছি বা আমি একজন পুরুষ তাই আমার আবেগের কথা বিপরীত লিঙ্গকে বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি- এটা মোটেও সঠিক না। আমি যখন লেখক তখন আমি জেন্ডারটা বাদ দিয়ে যদি নারী-পুরুষ উভয়ের অবস্হান, দৃষ্টিভঙ্গি, চাওয়া, পাওয়া, দোষ-ত্রুটি তুলে ধরি নিরপেক্ষ মন নিয়ে- তবে সেটার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। কারণ আমি যেমন, আমি যা ভাবি- সমাজকে আমি সেভাবেই কল্পনা করি এটাই স্বাভাবিক কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা ভিন্ন হয়। একজন নারী যেভাবে ভাবেন, আরেকজন নারী ঠিক তার উল্টাটা ভাবেন। তাই সামঞ্জস্য রক্ষা করাই সবচেয়ে সঠিক পথ। জাঝাক আল্লাহ
381711
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ দুপুর ০২:১৫
উম্মে হাফসা লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File