সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস -২

লিখেছেন লিখেছেন আমি আল বদর বলছি ২২ মে, ২০১৮, ১০:২৬:২১ রাত

বিশ্বাসের পথে নীল

.

নীল- হুম গল্পটা মন দিয়ে শুনলাম এই গল্প থেকে তো আর প্রমাণ হলো না সৃষ্টিকারী বলতে কেউ আছে বলে এবং বিজ্ঞান বলে এই মহা বিশ্ব সৃষ্টি করতে কোনো সৃষ্টিকারী প্রয়োজন ছিল না,

- হুম নীল তুই যে কথা বলি সেটা ঠিক অবশ্য বিজ্ঞান যখন প্রমাণ করতে পারেনি তাই তুইও ভেবে নিলি সৃষ্টিকারী বলতে কেউ নেই তোর মতো পাগল আমার মনে হয় আর নেই - কেউ যদি কোন এক অজানা দ্বীপে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং মানুষের পায়ের চিহ্ন দেখে অবশ্য সে চিন্তা করবে এই দ্বীপে আমার আগে কেউ এসেছিল। সমুদ্রের ঢেউ এসে‘বাই চান্স’ মানুষের‘পায়ের চিহ্ন’ তৈরী করার চিন্তাটা অবশ্যই অদ্ভূদ হবে। গ্রীক দার্শনিক প্লেটো এই যুক্তিই দাঁড় করাচ্ছে।মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই পৃথিবীর মানুষ স্রষ্টায় বিশ্বাসী ছিল, এটাই যৌক্তিক যেহেতু পৃথিবীর বেশীর ভাগ মানুষই আজও স্রষ্টায় বিশ্বাসী। বরং নাস্তিকতার শুরু মূলত এই আধুনিক যুগে।বাস্তব অভিজ্ঞতা অন্তত এটাই বলে যে, স্রষ্টার বিশ্বাস মানুষের মধ্যে হঠাত করে আসেনি বরং ‘স্রষ্টা নেই’ এই বিশ্বাসটাই এসেছে এই শতাব্দীতে। আধুনিককিছু গবেষণাও এই ফলাফল দেখায় যে মানুষের মস্তিষ্কের একটি অংশ মানুষকে স্রষ্টায় বিশ্বাসী করে তোলে। কোরআন নাস্তিকদের এইব্যাপারে যেই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে তা হলো সূরা তূরের ৩৫ নং আয়াত। “তারা কি কোন স্রষ্টা ছাড়া এমনি এমনিই সৃষ্টি হয়ে গেছে, না তারা (বলে যে, তারা) নিজেরাই (নিজেদের) স্রষ্টা। না তারা নিজেরা এই আকাশ মন্ডলী ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে” (সূরা তূর ৫২:৩৫-৩৬)

নীল- এইতো তুই চলি গেলো কোরআনের ভিতরে

- গেলাম কই রে ভাই তোর বিজ্ঞানের কথাই তো আমি বলছি দাড়া শুন-

এই আয়াতে ‘লজিক’ এবং যৌক্তিক ‘কারণ’সহ কারে কোন কিছু ‘সৃষ্ট’ হওয়ার সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। মূলত এর বাইরে কোন যৌক্তিক কারণ নেই।

.

সম্ভাবনা-১ঃ মানুষ ‘শূন্য’ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। এটা যুক্তিতে টিকেনা। কারণ, NOTHING CAN NOT CREATE ANYTHING! মূলতনাস্তিকেরা এই দাবীই করে থাকে। সম্ভাবনা-

.

২ঃ মানুষ নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছে। এটাও যুক্তি হীণ।কারণ,কেউ নিজেকে সৃষ্টি করতে হলে, আগে নিজেকে অস্তিত্বে আনতে হবে। তাই এটা যুক্তি বিহীন। শুধুমাত্র অন্ যকেউ অলরেডী অস্তিত্বে আসলে সে দ্বিতীয়জনকে সৃষ্টির যৌক্তিকতা আসবে।

.

সম্ভাবনা-৩ঃ অনেক পর্ব কিংবা ধাপ পার হয়ে মানুষের আজকের এই অবস্থান। মানে অনেক ‘CAUSE’ & ‘EFFECT’ এর ফল মানুষ।মানে,C1 এসেছেC2 থেকে, C2 এসেছে C3 থেকে,এরুপ C3 এসেছে C4 থেকে।এভাবে C4 এসেছে CNথেকে। কিন্তু, এই ভাবে চেইন (chain) চলতে থাকলে, বস্তুত CN হবে অপরিসীম এবং অনির্দিষ্ট। অথবা বলা যায়, CN নিজেই কখনো অস্তিত্বে আসেনি, তাই C1 এর অস্তিত্বও অস্বীকার করা হয়, মানে মানুষের নিজের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা হয়। এরিস্টটল তাই এরুপ INFINITE CAUSE & EFFECT থেকে মানবসৃষ্টি অসম্ভব বলেই সাভ্যস্ত করেছেন। ই যুক্তি বলে,শুধুমাত্র মানুষ কিংবা এই বিশ্বের অস্তিত্বে তখনই আসা সম্ভব যখন মানুষকে কিংবা এই বিশ্বকে এমন কেউ সৃষ্টি করেছে যে নিজে ‘সৃষ্ট’ নয়।এটাই যুক্তিযুক্ত। তাই স্রষ্টায় বিশ্বাস কোন অন্ধ বিশ্বাস নয় যেই রকম আমাদের দেশের মানুষ মনে করে থাকে। এবং তুই কোরআন যদি ভাল করে বাংলা তাফসীর গুলি যাচাই করিস তাহলে পেয়ে যাবি,আল্লাহ বলতে কেউ আছেন কি না ঠিকই জানতে পারবি!

.

অতএব নীলের সাথে এই পর্য্যন্ত কথা বলে আমি বাসায় চলে আসি আশার পথে নীলকে আরিফ আজাদ ভাইয়ের সাজিদ আরজ আলী সমীপনে, উল্টো নিয়ণ, আরও কিছু বই গিফট করে আসি,

কিছুদিন পর যাওয়ার পর হঠাৎ একদিন নীল ফোন দিয়ে দেখা করার কথা বলে,

নীলের সাথে দেখা হলো নীলের চেহার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম নীল খুবই সমস্যায় আছে ,

নীল- না পাইলাম মূর্তি, না পাইলাম সৃস্টি, না আছে এদিকের পথ না আছে ঐদিকের পথ , কোনো পথই আমার জন্য খোলা নেই কি করবো আমি কোন পথে যাবো আমি ভেবে পাচ্ছি না রে,

-চিন্তার কি আছে আমরা অধম বান্দা গুনাহ করতে ভালবাসি আর আমাদের পরম দয়ালু মালিক ক্ষমা করতে ভালবাসেন। আমাদের গুনাহ যতই হোক তার সীমা আছে, আমার মুনিবের দয়া এত বেশি যার কোন সীমা নেই।

তিনি রহমতের হস্ত প্রসারিত করে আমাদের বারবার ক্ষমার দিকে ডাকছেন আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ "আমার কাছে তারা তওবা করে না কেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে না কেন? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু।" (সূরা মা'ইদা: ৭৪)

"যে গোনাহ, করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়।" (সূরা নিসা: ১১০)

"আর যারা মন্দ কাজ করে, তারপরে তওবা করে নেয় এবং ঈমান নিয়ে আসে, তবে নিশ্চয়ই তোমার পরওয়ারদেগার তওবার পর অবশ্য ক্ষমাকারী, করুণাময়।" (সূরা আরাফ: ১৫৩) আল্লাহ কাছে ক্ষমা চা নিজের অপরাধের জন্য লজ্জিত হ নিশ্চই আল্লাহ দায়ালু,

নীল- অবশ্যই চল দোস্ত আজকেই লাইব্রেরিতে গিয়ে কিছু তাফসীর নিয়ে আসি মনটাকে আরও একটু শান্তি দিতে হবে না বুঝে অনেক ভুল করে ফেলেছে রে দোস্ত তুই হুজুর মানুষ আমার জন্য পারলে একটু দোয়া করিস ভাই........এই বলে আমি আর নীল লাইব্রেরি উদ্দেশ্য নিয়ে হাঁটা শুরু করলাম.....

বিষয়: বিবিধ

৮০৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385406
২৪ মে ২০১৮ সকাল ০৭:৪৫
টাংসু ফকীর লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ জনাব৤
385419
২৬ মে ২০১৮ রাত ০২:১৫
কুয়েত থেকে লিখেছেন : লেখাটি অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File