সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস-১
লিখেছেন লিখেছেন আমি আল বদর বলছি ১৭ মে, ২০১৮, ০৭:৩৮:২২ সন্ধ্যা
নীল আমার বন্ধু ছোট বেলা থেকেই ইসলাম প্রতি নীলের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ছিল, ক্লাস ৮ পর্য্যন্ত আমরা একসাথে পড়াশোনার করেছি, ছেলেটি খুবই ভদ্র কখনও কারো সাথে খারাপ আচরণ করতে দেখেনি, বিগত ৪,৫দিন ধরে ওর চাল চলন খুব একটি সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না, ওর পরিবারের সবাই এনিয়ে খুবই চিন্তিত যে ছেলেটি নামায পড়তো হঠাত্ করে ছেলেটি সবকিছুই ছেড়ে দিলো ,বাসায় সবসময় নীল ওর আব্বুর সাথে তর্কে লিপ্ত থাকে যে সৃষ্টিকারী বলতে কেউ নেই, আমরা যারা মনে করি সৃষ্টিকারী রয়েছেন আসলে আমরা রূপ কথার জগতে এখন রয়েছি বিভিন্ন ভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যায় নীল যে সত্যিই আল্লাহ বলতে কেউ নেই, সেদিন নীলের আম্মু যখন নীলেরে বেপারে এই কথা গুলি বলছিলেন উনি তো প্রায় কেঁদে দিয়েছিলেন, ছেলেটিকে ইউনিভার্সিটিতে পড়তে দিতে গিয়ে আজ নাস্তিক হয়ে বসে আছে, যাই হোক নীলের আম্মু আমাকে নীলকে একটু বুঝানোর দায়িত্ব দিলেন, শুক্রবার অফিস ছুটির দিন, সিদ্ধান্ত নিলাম আজকে নীলদের বাসায় যাবো নামায শেষ করে বাসায় এসে খাওয়া করে সাথে ইরফান ভাইকে নিয়ে হাজির হলাম নীলদের বাসায়,
দরজায় কলিং বেল দেওয়ার সাথে সাথে দরজা খুলে নীল এসে সামনে হাজির আমাকে দেখেই নীল কিছু চমকে উঠল আরে সুয়েব তুই?
আমি জবাব দিলাম হা আমি
নীল- হঠাত্ করে আমাদের বাসায় কি মন করে?
- কিছু মনে না করে কি আসা যায় না তদের বাসায়, আচ্ছা ঠিক আছে আমরা চলে যাচ্ছি
নীল- ধুর হ্লা কি বলিস এইসব, রাগ করছিস দোস্ত সরি রে, ইরফান ভাইয়া আপনাকে সুয়েবের সাথে দেখে খুবই খুশি হলাম।
- বাহিরে দাড়িয়ে থাকবো?
- সে কি তোকে বাহিরে দাড়িয়ে থাকতে কে বলেছে ভিতরে আয়।
_------ বাসায় ভিতরে আমি আর ইরফান ভাই এসে বসালম নীলের আম্মু খুবই খুশি হয়েছেন আমাদের দেখে উনার চেহারা দেখ বুঝা যাচ্ছে,এতক্ষণে কাজের বুয়া কফি নিয়ে হাজির ইরফান ভাই কফিতে চুমুক দিতে দিতে বললেন নীল কি শুনালম তুই না কি কলা বিজ্ঞানী হয়ে গিয়েছিস সেটা কি সত্যিই রে?
------ কলা বিজ্ঞানী নীলকে বলায় কিছুটা অপমান বোদ করলো নীল
নীল- কলা বিজ্ঞানী হতে যাবো কেন
ইরফান- না শুনলাম তুই না কি বলিস সৃষ্টিকারী নেই আল্লাহ নেই তাই বলাম আর কি?
নীল- হা নেই তো ১০০% শিওর আমি
আমি- ক্যামনে বুঝলি নাই
নীল-সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস কতটুকুযৌক্তিক? এইবিশ্ব জগতের স্রষ্টা কি কেউ আছে? প্রমাণ কর
আমি- প্রমাণ করবো না ছোট একটি গল্প বলবো সেটা একটু খেয়াল করিস
পাগল না হলে ঠিকই বুঝতে পারবি সৃষ্টিকারী কি আছে না নেই কেমন?
নীল- হুঁ
আমি- তাহলে শুরু করা যাক--
খেয়াল করিস- একটি মার্তৃগর্ভে জমজ দুই শিশুর মধ্যে কথা হচ্ছে।তাদের প্রথমজন
দ্বিতীয়জনকে জিজ্ঞেস করলো,- 'তুমি কি প্রসব পরবর্তী জীবনে বিশ্বাস করো?'
দ্বিতীয়জন বললো,- 'অবশ্যই করি।নিশ্চয় প্রসব পরবর্তী জীবন বলে কিছু আছে।হয়তো প্রসব পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতির জন্যই আজ
আমরা এখানে আছি।
' প্রথমজন বললো,- 'আরে বোকা! প্রসব পরবর্তী জীবন বলে কিছুই নেই।দেখি বলতো, তোমার সেই কাল্পনিক জগত কেমন হতে পারে?'
দ্বিতীয়জন বললো,- '
আমি ঠিক জানিনা এটা কেমন।তবে হতে পারে সেখানে এখানের(মার্তৃগর্ভের) তুলনায় আলো অনেক বেশি হবে।হতে পারে সেখানে আমরা আমাদের পা দিয়ে হাঁটতে পারবো।আমাদের মুখ দিয়ে নিজেরাই খাদ্য গ্রহন করতে পারবো।হয়তো সেই জগতে আমাদের অন্যান্য ইন্দ্রিয় থাকবে যা আমরা এখন কল্পনা করতে পারছিনা।'
প্রথমজন বললো,- 'এটা নিছক কল্পনা ছাড়া কিছুই নয়।পা দিয়ে হাঁটাহাঁটি? অসম্ভব। মুখ দিয়ে খাদ্য গ্রহন? অলিক কল্পনা। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় পুষ্টি আসে এই নাড়ির মাধ্যমে। কিন্ত নাড়ির এই স্বল্প দৈর্ঘ্য কখনোই প্রসব পরবর্তী জীবনের পক্ষে যুক্তি হতে পারেনা।প্রসব পরবর্তী জীবন বলে আদৌ কিছু নেই। এটা বাতুলতা।'
দ্বিতীয়জন বললো,- 'আমি মনে করি প্রসব পরবর্তী জীবন বলে কিছু আছে এবং সেটা এই মাতৃগর্ভের জীবনের চেয়ে ভিন্ন।হতে পারে সেখানে বাঁচার জন্যে আমাদের এই নাড়ির দরকার হবেনা।'
প্রথমজন উত্তর দিলো,- 'হাধারাম! প্রসব পরবর্তী জীবন বলে যদি কিছু থেকে থাকে,তাহলে সেই জীবন থেকে কখনো কেউ এই জীবনে ফেরত আসেনা কেনো? আসলে প্রসবের পরের জীবন বলতে কিছুই
নেই।প্রসব হচ্ছে জীবনের শেষ। এরপর আর কিছু নেই।আছে কেবল অন্ধকার আর শুন্যতা।'
"আমি ঠিক জানিনা।'- দ্বিতীয়জন বললো। সে আরো বললো,- 'হতে পারে সে জগতে আমাদের সাথে আমাদের মায়ের দেখা হবে।মা হয়তো সে জগতে আমাদের দেখাশুনা করবেন।' প্রথমজন হাসতে লাগলো, আর বললো,- ' মা? তুমি 'মা' তে বিশ্বাস করো? এটা সত্যিই হাস্যকর! যদি মা বলে কেউ থেকে থাকে,তাহলে সে এখন কোথায়?'
দ্বিতীয়জন বললো,- 'সে আমাদের চারপাশে বিরাজমান।সে আমাদের ঘিরে আছে।আমরা তার মাঝে বেঁচে আছি।তাকে ছাড়া এই জগত অসম্ভব।এই পৃথিবী অসম্ভব।'
প্রথমজন বললো,- 'যেহেতু আমরা মা বলে কাউকে দেখিনা,অনুভব করিনা।সুতরাং, এর যুক্তিসম্মত ব্যাখ্যা এই যে, আসলে মা বলে কেউ নেই।'
দ্বিতীয়জন মুচকি হেসে বললো,- 'মাঝে মাঝে যখন তুমি নীরব থাকো,তখন মনোযোগ সহকারে যদি খেয়াল করো তাহলে তুমি তার উপস্থিতি টের পাবে।তুমি তার কন্ঠ শুনতে পাবে।বুঝতে পারবে তিনি তার
দরদভরা মধুর কন্ঠে উপর থেকে আমাদের ডাকছেন।'
নীল মনে হয় কিছুটা বুঝতে পেরেছে চুপ হয়ে বসে আছে নীল , কিছুক্ষন চুপ থাকার পর বলে উঠলো সুয়েব তোর এই গল্প থেকে তো আর প্রমাণ হলো না যে আল্লাহ সত্যিই আছেন
.
চলবে......
লেখায় কোনো ভুল থাকলে ছোট ভাই হিসেবে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
বিষয়: বিবিধ
৮০৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন