নজদী কানা মুফতির বোধোদয় হয়েছে মুসলিম বিশ্বের বোধোদয় হবে কি?
লিখেছেন লিখেছেন নিল অপরাজিতা ১৪ জুলাই, ২০১৬, ০৭:১৭:৫০ সন্ধ্যা
মাত্র গতকালই লিখেছিলাম 'জঙ্গীবাদ জিন্দাবাদ'!? শিরোনামে একটি লেখা। সেই লেখাটি আমার সেরা লেখাগুলোর একটি। কিন্তু অন্য অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ লেখাগুলো যেভাবে দ্রুত পাঠকপ্রিয়তা পায়, এটি সেভাবে পায়নি। সিরিয়াস লেখাগুলো হয়তো আমি পাঠকের হৃদয়ে রেখাপাত করে মতো সুন্দর ভাষায় লিখতে পারি না। আমি মনে করি- সেটা আমার ব্যর্থতা। সে লেখাতে আমার একটি মন্তব্য ছিল এ রকম- "আইএসআইএস'র প্রধান টার্গেট কাছের সৌদি আরব এবং দূরের বাংলাদেশ"। আমার লেখাটি প্রকাশ হওয়ার ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে জঙ্গীরা সকালে আমেরিকান কন্স্যুলেটে আর সন্ধ্যায় পবিত্র হেরমে নবূবীতে বোমা হামলা চালায়। তার মানে আমি কোন ভবিষ্যতবক্তা নই। আপনি আইএসআইএস'র এইম, তাদের বক্তব্য-বিবৃতি, নৃশংস কর্মকাণ্ড, বিশ্ব রাজনীতি এবং মুসলিম বিশ্বের শাসকবর্গের জঙ্গী তোষণনীতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করুন, তারপর আপনার মস্তিষ্কের রাডারে যা ধরা পড়ে- তা লিখুন। তারপর অবাক নয়নে দেখুন- আপনার মন্তব্য জ্যোতিষীর ভবিষ্যতবাণীকেও হার মানাবে! কারণ, আপনার মাথার ভেতর আল্লাহ একটি 'সুপার কম্পিউটার' ফিট করে দিয়েছেন। আপনি সেই কম্পিউটারের পুরোটা ব্যবহার করুন- আপনার চিন্তাশক্তি দেখে আপনি নিজেই চমৎকৃত হবেন।
পবিত্র মদীনা মুনাওওয়ারা কেমন শহর? হেরমে নবূবী কেমন জায়গা? রমজান মাস কেমন মাস? ইফতারের মুহূর্ত কেমন সময়? আল্লাহর রাসূল (দরুদ) হেরমে নবূবীর জন্য হেরমে মক্কার চেয়ে দ্বিগুণ সওয়াবের জন্য দোয়া করেছেন। মদীনাতুন নবীর (দরুদ) অতুলনীয় ফজিলতের কথা হাদীসে বারবার এসেছে। পৃথিবীর কোন শহর, এমনকি মক্কা শরীফেও অহিতকর বা গুনাহ করার ইরাদা করলে অথবা কোন শহরের অধিবাসীদের ক্ষতি করার ইচ্ছা করলে সেই কাজটি না করা পর্যন্ত কোন গুনাহ হয় না। কিন্তু মদীনা মুনাওওয়ারায় অহিতকর কাজ বা গুনাহ্ করার ইচ্ছা করলে অথবা মদীনাবাসীদের ক্ষতি করার ইচ্ছা করলেও গুনাহ হয় এবং এতে ঈমানহারা হবার আশঙ্কা থাকে। সৈয়দী আ''লা হযরত (রহ.) বলেছেন- "হেরম কি জমীঁ অওর কদম রাখ্কে চলনা/ আরে ছের কা মওকা ও জানে ওয়ালে"!
এমন একটি পবিত্র স্থানে আইএসআইএস হামলা করলো কেন? কারণ, তারা পবিত্র মক্কা ও মদীনা থেকে শিরক (?) নির্মূল করতে চায়। নজদী সৌদি সরকারও কিন্ত তাই চায়! মক্কা ও মদীনায় শিরকগুলো কী কী? তাদের মতে, মক্কায় আছে ৩ শিরক। ক. কা'বা ঘরের তাওয়াফ করা, তারা বলে- এটা হলো 'গৃহপূজা'! খ. হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা, তাদের মতে- এটা 'পাথর পূজা'। গ. রাসূলের 'বেলাদতগাহ'' পরিদর্শন ও তা'জিম করা। তাদের মতে, এটা 'জায়গা পূজা"। তাদের মতে, মদীনায়ও আছে ৩ শিরক। ক. রাসূলের রওজাকে চুম্বন বা সম্মান করা, তাদের মতে- এটা 'মাজার পূজা', খ. রাসূলের রওজার দিকে ফিরে দোয়া করা, তাদের মতে- 'দিক পূজা', গ. জান্নাতুল বাকি জেয়ারত করা, তাদেরকে মতে- এটা 'কবর পূজা'। তারা বিশ্বাস করে- বিশ্বের নবীপ্রেমিক মুসলমানরা এসব শিরক কাজ করে মুশরিক হচ্ছে। তাদের মতে, "শিরকের মূল ঘাঁটি রাসূলের (দরুদ) রওজা শরীফ"। সূতরাং প্রিয় রাসূলের (দরুদ) পবিত্র দেহ মোবারক অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নিতে হবে। তাদের মতে, মক্কা শরীফে শিরকের মূল ঘাঁটি হলো- কা'বা শরীফ। সূতরাং তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে।
নজদী সৌদি সরকার এবং তাদের নিয়োজিত মোল্লা, সকল ওহাবী, সালাফী ও আহলে হাদীসেরও কিন্তু একই আকীদা। পার্থক্য হলো- নজদী সৌদি সরকার তাদের গান্ধা আকীদা প্রচার করতে দেশে দেশে এজেন্ট নিয়োগ করে এবং খোদ মক্কা ও মদীনা শরীফে বিভিন্ন ভাষা-ভাষী মোল্লা ও নানা ভাষায় বই-পুস্তক ছাপিয়ে এবং ফ্রি বিতরণ করে ওহাবীবাদের প্রচার চালাচ্ছে আর আইএসআইএস সেই গান্ধা আকীদা বাস্তবায়নে বোমা হামলা, নৃশংস হত্যাকান্ড ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। উভয়ের মূল লক্ষ্য কিন্তু একটাই- মুসলমানদেরকে শিরকমুক্ত করে তথাকথিত তাওহীদবাদী বানাোনো। এই খবিস বদ আকীদার লোকদের মতে মূল শিরক হলো- প্রিয় রাসূলকে (দরুদ) ভালোবাসা আর সম্মান করা। ওরে কমবখত! এই যদি তোমাদের তাওহীদ হয়, তাহলে তোমাদের এই পঁচা তাওহীদ এবং তোমাদের উপর আল্লাহ, রাসূল (দরুদ), ফেরেশতা ও মুমিনদের লা'নত পড়ুক। সৈয়দী আ'লা হযরত বলেছেন-
"শিরক ঠেহরে জিস মে হ্যায় তা'জীমে হাবীব
উস বুরে মযহাব পে লা'নত কীজিয়ে"।
বিষয়: বিবিধ
৯৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন