jকমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিদের চাকুরী রাজস্বকরণের দাবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে উন্মুক্ত আবেদন

লিখেছেন লিখেছেন নিরন্তর শৈবাল ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৯:৫৭:১৩ রাত



বরাবর

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ সরকার।


বিষয় : কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)দের চাকুরী রাজস্বকরণ প্রসঙ্গে।

শ্রদ্ধেয় মহোদয়

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান, ও আপনার মস্তিষ্ক প্রসূত সন্তানতুল্য প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কর্মচারীদের সংগঠন, বাংলাদেশ সিএইচসিপি এসোশিয়েশন (বিসিএইচসিপি) এর পক্ষে সশ্রদ্ধ সালাম জানায়।

মহোদয়,

আমরা আগ্রহভরে লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ গ্রামীন জনসাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত কল্পে প্রতি ৬০০০ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেছে। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদানের জন্য একজন করে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত আছে। আমরা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপিগণ) আপনার সরকারের অনুগত্য থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের দেওয়া সকল কর্মকান্ড তৃণমুল পর্যায়ে অতি দক্ষতার সহিত সফল ভাবে পালন করে চলেছি। আমরা জানি বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য সেবা জনগনের দৌড়গোড়ায় পৌঁছাতে বদ্ধ পরিকর। কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতি রয়েছে আপনার কৃপা ও শুভ দৃষ্টি। আপনার বলিষ্ট নেতৃত্ব, দুরদর্শিতা, সঠিক ও যুগউপযোগী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ আজ বিশ্বের বুকে সমাদৃত ও প্রশংসা অর্জন করেছে। উল্লেখ্য আমরা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)গণ আপনার নির্দেশিত পথে চলে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগের অসামান্য অবদান রাখছি। তার সংক্ষিপ্ত চিত্র আপনার সদয় বিবেচনার জন্য নিম্মে উপস্থাপন করছি-

অবদান সমুহঃ

১। কমিউনিটি ক্লিনিকে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা সহ, প্রসবকালীন বিপদচিহ্ন দেখে সর্তকতা মুলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়, গর্ভবতীর উচ্চতা, ওজন, রক্তচাপ মাপা, ইডেমা দেখা, জন্ডিস দেখা, প্রস্রাবে প্রোটিন, প্রস্রাবে শর্করা দেখা, রক্তে ডায়াবেটিস মাপা হয়। গর্ভবতীদের চারটি চেকাপ এবং প্রসব পরিকল্পনা করানো হয়। গর্ভবতীদের আয়রন, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম দেওয়া হয়। গর্ভবতীদের নরমাল ডেলিভারী করানো হয়। ফলে গ্রামে মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুর হার দিন দিন কমছে।

২। কমিউনিটি ক্লিনিকে নবজাতক ও শিশুদের খুব মারাত্বক রোগ, নিউমোনিয়া, নিউমোনিয়া নয় সর্দি-কাশি, জ্বর-ম্যালেরিয়া, জ্বর ম্যালেরিয়া নয়, ডায়রিয়া ও আমাশয়, কানের সমস্যা, হাম, পানিতে ডোবা, আঘাতসহ বিভিন্ন সমস্যার ঔষধ/প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। শিশুদের ওজন , উচ্চতা, মুয়াগ মাপা এবং অপুষ্টি অনুসারে স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এতে গ্রামে নবজাতক ও শিশুর মৃত্যুর হার কমছে।

৩। কমিউনিটি ক্লিনিকে সাধারন রোগীদের বিভিন্ন প্রকার রোগের স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ দেওয়া হয়, তার মধ্যে সিফিলিস, গনরিয়া, ডাইরিয়া, আমাশয়, জ্বর, সর্দি কাশি, এলার্জি, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, পেট ব্যাথা, পেপটিক আলসার, বাতব্যথা, রাতকানা, আঘাত, পোড়া ক্ষত, দাতের গোড়ায় প্রোদাহ, টনসিলাইটিস, অন্ননালীতে প্রোদাহ অন্যতম। এছাড়া জটিলতা দেখে বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী রেফার করা হয়, এতে গ্রামের নিম্ন আয়ের জনসাধারন উপকৃত হচ্ছে এবং জনসাধারন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে।

৪। কমিউনিটি ক্লিনিকে জনসচেতনতা মুলক উঠান বৈঠক করা হয়, যেমন বাল্য বিবাহ রোধে উঠান বৈঠক, যক্ষা প্রতিরোধে উঠান বৈঠক, এ্যানথ্রাক্স সম্বন্ধে উঠান বৈঠক। ফলে গ্রামের সাধারন মানুষ এ সমস্ত দুরারোগ্য ব্যধি সম্বন্ধে জানতে ও সতেচন হতে পারছে।

৫। কমিউনিটি ক্লিনিকে সরকারের বিভিন্ন জাতীয় প্রোগ্রাম, যেমন- ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন, ইপিআই প্রোগামে সহযোগীতা করে থাকি। এতে সরকারের এ সমস্থ্য কাজ সুন্দর ভাবে সফল হচ্ছে।

৬। আমরা মেডিকেল টিম হিসাবে বিভিন্ন প্রকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলা করে থাকি।

ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অবদানঃ

১। আমরা গর্ভবতী মহিলাদের ও শিশুদের অনলাইনে রেজিষ্ট্রিশন করছি।

২। আমরা অনলাইনে ই-হেলথ্ সেবা দিচিছ।

৩। আমরা দৈনিক/মাসিক রির্পেট আনলাইনে পাঠাচ্ছি। ফলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সঠিক ভাবে হিসাব পাচ্ছে।

এত কাজ করা সত্বেও আমাদের চাকুরী জাতীয়করণ হয় নাই, ফলে আমরা অনেক সময় বিভ্রান্ত হচ্ছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কমিউনিটি ক্লিনিকের জননী

আমাদের চাকুরী জাতীয়করণ হয়নি বলে আমরা নিম্নোক্ত উদ্ভুত সংকট নিরসনে আমরা নিমোক্ত বিষয়ে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ ও নির্দেশনা কামনা করছি।

১. ২০১১ সালে যোগদানকৃত যে বেতন চাকুরী নিয়েছি ২০১৬ সালে যোগদানকৃত এখন পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে বেতন পাচ্ছি।

২. আমরা প্রকল্পের আওতায় চাকুরী করার ফলে সরকারি কোষাগারে অর্থ্যাৎ প্রভিডেন্ট ফান্ডে কোন অর্থ সঞ্চয় করতে পারছি না।

৩. প্রকল্পের আওতায় চাকুরী করার ফলে এমনকি সাধারণ ভবিষ্যত তহবিলে ৫০/-(পঞ্চাশ) টাকা করে সঞ্চয় করতে পারছি না। আমরা বেতন গ্রহণ করছি সর্বসাকুল্যে।

৪. সর্বসাকুল্যে বেতন হওয়ার কারণে আমাদের বছর শেষে বেতন বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

৫. বেতন বৃদ্ধি না পাওয়ার ফলে বাজার দরের সাথে ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে পারছি না।

৬. কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কোন দূর্ঘটনায় নিহত হলে সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা পায় না।

৭. সর্বোপরি আমাদের চাকুরী জাতীয়করণ না হওয়াতে আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যৎতের দিকে ধাবিত হচ্ছি।

মহোদয়,

আমরা বিশ্বাস করি, সুষ্ঠু স্বাস্থ্য সেবার কর্মপরিবেশ ও উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার স্বার্থে বর্ণিত বিষয়সমূহ আপনার সদয় হস্তক্ষেপে বাস্তবায়িত হবে। যার মাধ্যমে বর্তমান জননন্দিত সরকারের ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে এদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত গরীবের ডাক্তার খ্যাত সিএইচসিপিবৃন্দ অধিকতর মনোযোগ ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে মনোনিবেশ করতে সক্ষম হবেন।

আপনার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।

অশেষ শ্রদ্ধান্তে,

কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার

কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত আপনার ১৪০০০ সন্তান

বিষয়: রাজনীতি

১০২৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File