একজন এসপি বাবুল ও অবিচারের সংস্কৃতি
লিখেছেন লিখেছেন দূর দ্বীপ বাসিনী ০১ জুলাই, ২০১৬, ০২:১৪:৫৯ রাত
জনমানুষের প্রত্যাশা পূরণের নিমিত্তেই কোন রাষ্ট্রে কিংবা রাষ্ট্রের একটা ভূখন্ডের উপর প্রভাব বিস্তারের জন্যই নির্বাচিত হয় একটা সরকার। আর জনগণের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভোটেই নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয় সরকার। সরকারের মেয়াদকালে জনগণের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে জবাবদিহিতার ভিত্তিতে কাজ করে সরকার। কিন্তু যদি কোন দেশের সরকার একচেটিয়া ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে নিজের মত নাটকীয় নির্বাচন করে সেখানে জনগণের স্বদিচ্ছা ও আশা আকাঙ্খা কতটুকু কার্যকরী হয় তা একটু অনুধাবন করলেই বুঝা যায়। আজকের পৃথিবীতে সিরিয়া,মিশর ও বাংলাদেশ এরকম কয়েকটি রাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থা তার উল্লেখযোগ্য উদাহরন। বাংলাদেশে ২০০৯ সালে কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের নাটকীয়তা ও তৎপরবর্তিতে ২০১৪ স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে যে সরকার নির্বাচিত হয়েছে, তারা কতটুকু জনগণের আশা আকাঙ্খাকে নূন্যতম বাস্তবায়ন করেছে তা আজকের বাংলাদেশের দিকে তাকালেই উপলব্ধি করা যায়। অতীতের সমীকরণ বাদ দিয়ে বর্তমানের সমীকরণ নিয়েই একটু বিশ্লেষণ করি। সম্প্রতি কয়েকটি বছরে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে যেমন বেড়েছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক দল কর্তৃক গুম খুন গুপ্ত হত্যা,অবিচার, লুণ্ঠন, নারী নির্যাতন তেমনি পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে সাধারন ভাবে ঘটে যাওয়া দুর্ধর্ষ গুম খুনের ঘটনা। এইতো কিছুদিন আগে সেনানিবাসের নিরাপত্তার দেয়াল ভেদ করে খুন হলো তনু নামের কলেজ পড়ুয়া এক সাধারন ছাত্রী। কিন্তু বিচারের নাটক করে আমাদের সরকার, প্রশাসন কতটা না হয়রানি ও নিপীড়ন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবারকে। মানবিকতা ও সহানুভূতিবোধ বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে হিংস্র রাজনীতি ও ঘুষের ভিত্তিতে গড়ে উঠা প্রশাসনের ছায়াবাজির হাডুডু খেলায়। সে রেশ কাটতে না কাটতে দিবালোকে প্রকাশ্যে খুন হলো প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের একজন নিবেদিত প্রাণ পুলিশ অফিসারের স্ত্রী। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ উধাও হয়ে গেলো মুহূর্তের মাঝে। দেশজুড়ে জঙ্গী খোঁজার নামে সপ্তাহব্যাপী চলছিল যৌথবাহিনীর সাড়াশি অভিযান। অভিযান তো নয়,সাধারন জনগণকে হয়রানি আর প্রশাসনের ঘুষ বাণিজ্য। কত নাটকীয়তার মাঝে ধামাচাপা দেওয়ার ব্যর্থতা প্রচেষ্টা চালিয়েছে সরকার ও সরকারের আজ্ঞাবহ গোলাম প্রশাসন। একে গ্রেপ্তার ওকে রিমান্ড,, ওকে ধাওয়া দেওয়া ইত্যাদি বিচিত্র সব কর্মযজ্ঞ।নাটকের সর্বশেষ পর্বে এসে হলুড মিডিয়ার কল্যাণে গোটা বিশ্ব দেখলো ভিন্নধর্মী কাহিনীর এক পর্ব। শেষ পর্যন্ত আসামী সাজানো হলো বাদী পক্ষকেই। নিজের প্রাণপ্রিয় স্ত্রী খুনের দায় এসে পড়লো তার স্বামী বাবুল আকতারের উপর,যদিও মিডিয়ার সুষ্ঠু বিচার বিশ্লেষণে এটাই প্রতিয়মান হয় বাবুল একজন এ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত সৎ পুলিশ অফিসার। ছলে বলে কলে কৌশলে তাকে চাকরিচ্যূত করা হলো। বাংলা সিনেমার কাহিনীর মত সব দায় আর অভিযোগের ভার চাপিয়ে দেওয়া হলো তার উপর। যেখানে বাবুলের শ্বশুরপক্ষের লোকেরা স্পষ্ট ভাষায় বলছে যে বাবুল নির্দোষ, সেখানে কি করে প্রশাসন এরকম ছলছাতুরির নাটক সাজায়? প্রশাসনের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার এই হাল হাকিকত হলে আমজনতার কি অবস্থা তা অতি সহজেই টের পাওয়া যায়। নির্দোষ হয়েও যখন বাবুল দোষী সেখানে গোটা বাংলাদেশটাই যেন কাঠগড়ায় অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আজকে আরেকটা প্রশ্ন জাতির সামনে পিলখানা সেনানিবাসে ৫৭ জন চৌকস সেনা অফিসারকে নাটকের নামে মেরেছিলো কারা? জাতি এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে চায়।
বিষয়: বিবিধ
৮২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন