ধর্ম থেকে মানুষকে Divert করার যত বাহানা!

লিখেছেন লিখেছেন ওবাদা বিন সামেত ১৫ এপ্রিল, ২০১৭, ০৭:৪৮:১৬ সকাল

মানব সৃষ্টির শুরুতেই স্রষ্টাকে উদ্দেশ্য করে মানুষের ব্যাপারে শয়তান প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল, "এরপর তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকে, পেছন দিক থেকে, ডান দিক থেকে এবং বাম দিক থেকে। আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না।" (সূরা আ’রাফ: ১৭) বাস্তবেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, শয়তানের কৃত সেই ওয়াদা অনুসারে শয়তানের চেলা-চামুণ্ডরা মানব জাতিকে আল্লাহর পথ থেকে ঘুরিয়ে দেবার জন্য নানান দিকে নানান জিনিস সেট করে রেখেছে এবং আল্লাহর আনুগত্যের চাইতে অন্য কিছুকে অধিক জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ সাব্যস্ত করবার দ্বারা আল্লাহর দ্বীনকে তুচ্ছ ও গুরুত্বহীন ঠাওরানোর বন্দোবস্ত করেছে। তার কতিপয় নমুনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:-

* নামাজের চেয়ে লেখাপড়া বড়: তুরস্কে কামালবাদী সেকুলারিজমের রাজত্বকালে ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজের সময়ে ক্লাস দেয়া হতো এবং ছাত্রদের মধ্যে কেউ নামাজ পড়তে চাইলে তার উদ্দেশ্যে এ কথাটি বলে দেয়া হতো। আমরা ঐ ধরনের চিন্তায় বিশ্বাসী না হলেও বাস্তব জীবনে কার্যত ঐ থিউরির উপরেই আমল করে যাচ্ছি।

* আগে বাঙ্গালি, তারপর মুসলমান: ভেবে দেখুন তো, যিনি আপনার, সমগ্র মানব জাতি ও সমগ্র বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা, তাঁর আনুগত্যের ব্যাপারটিকে যদি আপনি দ্বিতীয় স্থানে রাখেন, সেটা কি তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? স্রষ্টা, তাঁর প্রেরিত পয়গম্বর ও তাঁর নাযিলকৃত কিতাব এবং সেই সাথে তাঁর আদেশ-নিষেধের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের বিষয়টাকে দ্বিতীয় চয়েস হিসেবে গ্রহণ করাটা কি অবিশ্বাস বা প্রত্যাখ্যানেরই নামান্তর নয়? আজকালকার মানুষ নিতান্ত দায় না ঠেকলে কিংবা একান্ত গরজে আহাম্মক না হলে কেউ কারো দ্বিতীয় স্ত্রী বা দ্বিতীয় স্বামী হতেই রাজি হতে চাইবে না; সেখানে যিনি স্বয়ং স্রষ্টা, যিনি তাঁর কোন সৃষ্টির মুখাপেক্ষীই নন, তাঁকে আপনি 'দয়া করে' দ্বিতীয় বিবেচনায় রাখবেন, দ্বিতীয় অবস্থানে ঠাঁই দেবেন, আর তাতেই তিনি প্রীত হয়ে পড়বেন! ধর্মকে দ্বিতীয় স্থানে রাখতে বলার আবদারটা কি ধর্মকে একেবারে ত্যাগ করানোরই ফন্দি নয়?

'আগে বাঙ্গালি পরে মুসলমান' হলে যদি কোন কাজ নিজ দেশের আইন বা জনগোষ্ঠীর প্রচলিত কালচার ও সামাজিক প্রথা অনুযায়ী সিদ্ধ হয় কিন্তু ধর্মে নিষিদ্ধ হয়, তাহলে সে কাজটি বৈধ বলে বিবেচিত হবে। অথচ মানুষের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক আইন, সংস্কার ও প্রথা নিয়ত পরিবর্তনশীল; নৈতিকতার মানদণ্ডও সবসময় সব সমাজে একরকম থাকে না। সুতরাং ঐ ধরনের শ্লোগানের অর্থই হল বিধাতার হুকুমের উপরে মানুষের নিজেদের সৃষ্ট নিয়ম ও প্রথাকে অগ্রাধিকার দেয়া। এছাড়া যে ব্যক্তি 'আগে বাঙ্গালি পরে মুসলমান' নীতিতে বিশ্বাসী হবে, তার কাছে ভিন্ন দেশ ও ভিন্ন ভাষাভাষীর লোক মুসলিম, মজলুম বা নিরপরাধ হলেও পর বা শত্রু বিবেচিত হবে; পক্ষান্তরে নিজ দেশ ও নিজ ভাষাভাষীর মানুষ ধর্মবিদ্বেষী, জালেম বা অপরাধী হলেও আপন ও মিত্র হিসেবে বরণীয় হবে।

'আগে বাঙালি পরে মুসলমান' পলিসির প্রবক্তারা এ নীতির সপক্ষে উদ্ভট এক যুক্তি দেখান। তাদের মতে, কেউ আগে মুসলমান হলে সে জঙ্গি হবে, নিজের মতের সাথে কারো মিল না থাকলেই তার প্রতি অসহিষ্ঞুতা প্রদর্শন করবে, কথায় কথায় মসজিদে বোমা মারবে ইত্যাদি। কিন্তু কথা হল, শান্তিপ্রিয়তা ও সহনশীলতার গুণটি না থাকলে তো যেকোন মতাদর্শের মানুষের দ্বারাই বাড়াবাড়ি ও সীমালংঘন করা সম্ভব। কেউ বাঙ্গালি চেতনার মানুষ হলেও তার দ্বারা অবাঙ্গালিদের প্রতি অসহিষ্ঞু ও সাম্প্রদায়িক আচরণ করা সম্ভব। এমনকি বাঙ্গালিদের মধ্যেও ভিন্ন মতাবলম্বী বিশেষত ধর্মপ্রেমী মানুষের প্রতি নিষ্ঠুরতা ও সন্ত্রাসী আচরণ করা সম্ভব। অতএব, ধর্মভিত্তিক চেতনা হলেই সেটা সংকীর্ণ ও অসহিষ্ঞু মানসিকতা পয়দা করবে, আর বাঙ্গালিত্বের চেতনা মানুষকে সহিষ্ঞুতা ও সম্প্রীতির মানসিকতায় উজ্জীবিত করে তুলবে- এই সরল সমীকরণটা একেবারেই অবান্তর ও অবাস্তব।

'আগে বাঙ্গালি' শ্লোগানটা যে কতটা ভুয়া ও ভণ্ডামি, তার নমুনা পাওয়া যায় এই শ্লোগানের প্রবক্তাদের নিজেদের সন্তানদের বাংলা বাদ দিয়ে ইংরেজি শেখানো থেকে। বলাবাহুল্য, ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করা মানেই বাংলা বাদ দিয়ে ইংরেজি শেখা। বাঙালি চেতনাবাদীদের ব্রিটিশ কাউন্সিলমুখিতাই এদের দ্বিমুখী নীতির বড় দৃষ্টান্ত। এরা বাস্তবে বাংলাকে সবার উপরে বা সবকিছুর উপরে রাখে না। বাংলার নিচে শুধু ধর্মকেই নামায়, আর অন্য সব কিছুকে বাংলার উপরে রাখতেও তাদের আপত্তি নেই। বাঙ্গালীয়না ফলানোর ক্ষেত্রে এরা বাংলা ভাষার চর্চা কিংবা বাংলা ভাষায় কথা বলা, লেখা ও পড়ার অধিকারকে অটুট রাখাকে জরুরী মনে করে না; বরং ভাষার পরিবর্তে কথিত কালচারকেই তারা বাঙ্গালিত্ব ফলানোর জন্য যথেষ্ট মনে করে। আর এই বাঙ্গালি কালচার বলতে বর্ষবরণের নামে ধর্ষণোৎসব ও মূর্তিপূজাকেই বুঝিয়ে থাকে। বাংলা ভাষার ব্যাপারে তাচ্ছিল্য ও উদাসীনভাব এবং শুধু কথিত বাঙ্গালী কালচার দিয়ে বাঙ্গালিত্ব কায়েমের প্রহসন থেকেই তাদের বাঙ্গালীপনার আসল উদ্দেশ্য ধরা পড়ে যায়। সবকিছুর মূলে যে ধর্মের মূলে কুঠারাঘাত করাটাই তাদের আসল মতলব, সেটা বুঝতে আর বাকি থাকে না।

* ধর্মের চেয়ে মানবতা বড়। কিংবা মানবধর্মই বড় ধর্ম: প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দ্বীনই মানবতা ও মানবাধিকার রক্ষার একমাত্র রক্ষাকবচ হলেও ধর্মবিরোধী মতলববাজরা ধর্ম ও মানবতাকে পরস্পর সাংঘর্ষিকরূপে দাড় করায় এবং মানবতার সেবা করার দোহাই দিয়ে ধর্মের গুরুত্ব কমিয়ে দিতে সচেষ্ট হয়। একজন মুসলমান তো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই মানবের সেবায় নিয়োজিত হয়ে থাকে এবং মানুষের উপকার ও বিপন্ন মানুষকে সাহায্য করাটা তো ইসলামে এবাদত হিসেবেই স্বীকৃত। কাজেই ধর্মকে ভুলে গিয়ে ও ছেড়ে দিয়ে শুধু মানবের সেবায় আত্মনিয়োগ করার মতলবি উপদেশখানি মানুষকে মানবের সেবায় নিয়োজিত করবার লক্ষ্যে পরিচালিত নয়, বরং কেবল ধর্ম থেকে সরিয়ে দেবার উদ্দেশ্যেই পরিচালিত। এই ভগলারা মানবতা নিয়ে চিল্লাচিল্লি করে মূলত: ধর্মবিদ্বেষী বা ধর্মবহির্ভূত মানুষগুলোর প্রতি গ্রহণযোগ্যতা আনয়নের জন্য, কিন্তু ধর্মবিশ্বাসী ও ধর্মানুরাগী মানুষেরা মানব হিসেবে সম্মান বা সহানুভূতি এদের কাছে আশা করতে পারবে না।

* ধর্মচর্চার পিছনে সময় না দিয়ে বিজ্ঞানচর্চা কর, কাজে লাগবে: বিজ্ঞানচর্চা করতে তো ধর্মে মানা নেই, কিন্তু ধর্মচর্চাকে বাদ দিয়ে কেন? আর বিজ্ঞানকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মকে খণ্ডন করবার জন্য ব্যবহার করা কেন? কেন মিথ্যা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে পরস্পরবিরোধী সাব্যস্ত করা? ধর্মবিশ্বাসকে যারা অপ্রয়োজনীয় মনে করে, ধর্মচর্চাকে যারা সময়ের অপচয় মনে করে, ধর্ম বাদ দিয়ে বিজ্ঞান চর্চায় মনোনিবেশ করতে পারাটাকেই যারা সময়ের সদ্ব্যবহার হিসেবে বোঝাতে চায়; নাচ ও গান-বাজনা সম্পর্কে তাদের অভিমত কি? যারা নাচ-গান চর্চার পিছনে সময়, অর্থ এমনকি গোটা জীবনটাই ব্যয় করে, তাদেরকে কি এনারা নৃত্যচর্চা ও গীত গাওয়া বন্ধ করে বিজ্ঞান চর্চার দিকে আহবান করবেন? যদি এটা না করে থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে, মানুষের সময় বাঁচানো বা সময়ের অপচয় রোধ করা এদের উদ্দেশ্য নয়, বরং সময় বাঁচানোর দোহাই দিয়ে ধর্ম ঠেকানোটাই আসল গরজ। একদিকে বিজ্ঞানমনষ্ক জাতি গঠনের নামে ধর্মকে বাদ দিয়ে বিজ্ঞানচর্চার নসীহত করা হচ্ছে, অপরদিকে পাঠ্যবইয়ে গোনায় ধরার মত নয় এমন যতসব উপজাতি গোষ্ঠীর দেব-দেবীর নাম মুখস্থ করানো হচ্ছে। বিরক্তিকর সব আচরণ!

* ধর্মশিক্ষা দেবার দরকার নেই, নৈতিক শিক্ষাই যথেষ্ট: ধর্মকে বাদ দিয়ে নৈতিকতার কী মূল্য আছে! স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য না থাকলে শুধু সংযম সাধনা মানুষের কী কাজে আসবে! রোজার নিয়ত ছাড়া শুধু উপবাসের ফায়দাটা কি? এই মতলববাজরা আসলে নৈতিক শিক্ষা ও নৈতিকতাকেও জরুরী মনে করে না, বরং একপ্রকার অপছন্দই করে থাকে। শুধু শুধু ধর্মশিক্ষাকে ঠেকানোর জন্য নৈতিক শিক্ষার বাহানা দেয়।

* নামাজ-রোজার দরকার নেই, সর্বদা সত্য কথা বললে এবং সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকলেই চলবে: নামাজ-রোজা ও সত্যবাদিতা দুটোই ধর্মীয় বিধান। নামাজ-রোজা পালন করা একটি সদগুণ, সত্য কথা বলা আরেকটি সদগুণ। এই দুই গুণের মধ্যে যেকোন একটিকে ধারণ করলেই চলবে, আরেকটি নিষ্প্রয়োজন- এ কেমন অদ্ভূত আবদার! তবে একটু খেয়াল করলেই দেখতে পাবেন, ধর্মবিদ্বেষী এই মতলববাজেরা বাস্তবে সততা ও নৈতিকতার ধার ধারে না, বরং ধর্মের গুরুত্ব কমানোর জন্যই সত্যবাদিতার বাণী শোনায়। তারা নিজেরা কিন্তু ধর্ম, ধর্মের নবী ও ধর্মানুসারী মানুষকে ঘায়েল করবার জন্য ঠাণ্ডা মাথায় মিথ্যা রটনা অবলম্বন করে। তাদের সত্যবাদিতার দাবিটাই সবচে বড় মিথ্যা।

* কর্মই ধর্ম: অর্থাৎ, পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করাটাই ধর্মের আসল কাজ, এর জন্য স্রষ্টাকে ডাকা ও এবাদত-বন্দেগি করাটা খুব একটা জরুরী নয়। এ কাজটি সঠিকভাবে দায়িত্বশীলতার সাথে করতে পারলেই স্রষ্টা খুশী হবেন। এক্ষেত্রে প্রকৃত কথা হলো, পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করাটা অবশ্যই ধর্মের কাজ, আল্লাহই বলেছেন এ কাজ করতে, কিন্তু তাই বলে ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মপালন বাদ দিয়ে এটা করতে হবে কেন? এটা কি মতলবি প্রয়াস নয়?

আমি আল্লাহর নামে শপথ করে দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, ধর্মের অস্তিত্ব যদি না থাকতো, জগতের সবাই যদি নাস্তিক হতো, সকলের জাহান্নামে যাওয়াটা যদি এমনিতেই নিশ্চিত হতো, ধর্মকে ঠেকানোর গরজ যদি এদের না থাকতো, তাহলে এই সমস্ত ফটকাবাজরা বিজ্ঞান, মানবতা, বাঙ্গালিত্ব, লেখাপড়া ইত্যাদি কোন কিছু নিয়েই মাতামাতি করতো না। নাচ-গান ও কথিত শিল্প-সংস্কৃতির প্রসারেও এতটা যত্ন ও গুরুত্বের সাথে অগ্রসর হতো না। মূর্তি বা ভাষ্কর্যের প্রতিও এদের এত অনুরাগ থাকত না। বিভিন্ন পার্বন ও আচার-অনুষ্ঠান পালনের সময় এরা আকারে-ইঙ্গিতে এর উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলে থাকে যে, কোন্‌ বিশেষ ধরনের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা এবং কোন্‌ ধরনের চিন্তা-বিশ্বাসকে দূর করার লক্ষ্যে এটা পালিত হচ্ছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, "শয়তান মদ-জুয়ার দ্বারা তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল করে দেয়া এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করা ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য রাখে না।"

এই মতলববাজেরা যতসব তত্ত্বকথার জন্ম দিয়েছে শুধুমাত্র ধর্মকে ঠেকানোর জন্য এবং এই ধর্ম নির্মূল ও ধর্মানুসারী মানুষকে ঠেঙানোর প্রয়োজনে নিজেদের আবৃত্ত বুলিগুলোকেও নিমিষে ছুঁড়ে ফেলে দিতে সময় নেয় না। নিরপরাধ কোন জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা ও ধর্ষণ অমানবিক ও অনৈতিক কর্ম হলেও সেটাকে নির্লজ্জভাবে সমর্থন জানানোর ক্ষেত্রে এদের মানবিকতা ও নৈতিকতার স্বঘোষিত দর্শন কোন বাধা হয়ে দাড়ায় না। ভিকটিমরা বাঙ্গালী হলেও এবং নিরপরাধ মানব হলেও শুধুমাত্র মুসলিম হবার কারণে এদের বেলায় এসে উপরে বর্ণিত মতলববাজ দুরাচারী গোষ্ঠীটির বাঙ্গালিত্ব, মানবতা, নৈতিকতা সবই মনসুখ হয়ে যায়।

বিষয়: বিবিধ

১১২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File