Re: যারা হতে পারতো দ্বীনের সঠিক দায়ী তারা কেন সন্ত্রাসী?
লিখেছেন লিখেছেন ওবাদা বিন সামেত ০৩ জুলাই, ২০১৬, ০৬:০২:৪৩ সন্ধ্যা
"ভিনদেশী" লিখিত শিরোনামে উল্লেখিত পোস্টের ব্যাপারে কিছু মন্তব্য করতে চাচ্ছি। নতুন ব্লগার হিসেবে অন্যের পোস্টে মন্তব্য পোস্ট করার অপশন এখনো লাভ না করায় নতুন পোস্ট আকারেই দিচ্ছি।
ভিনদেশী ভাইয়ের আলোচ্য প্রবন্ধটি যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে, কিন্তু একটা বিশ্লেষণে তিনি ভুল করে বসেছেন। তা হচ্ছে, বিপথগামী তরুণগুলো কেন মূলধারার আলেমদের কাছে না এসে আহলে হাদীসদের কথা শুনে বিভ্রান্ত হল, এটা নিয়েই লেখক আক্ষেপ করেছেন। কিন্তু আমার কথা হল, এমন গ্যারান্টি কেউ কি দিতে পারবেন যে, আহলে হাদীসদের কাছে গেলেই শুধু কোরআন-হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা পেয়ে বিপথগামী হবে, আর কথিত হক্কানী আলেমদের কাছে গেলেই সবসময় হেদায়েতপ্রাপ্ত ও সঠিক পথের সন্ধান পাবে? আমি বরং এক্ষেত্রে আহলে হাদীস ও দেওবন্দী নির্বিশেষে সকল ঘরানার কথিত মোল্লাদেরকেই দায়ী মনে করি। কারণ, মুসলিম উম্মতের মাঝে ফেরকাবাজি এবং তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারামারি-হানাহানির মূল শিক্ষাগুরু হচ্ছেন এই মাওলানা-মৌলভীরা।
আর যতদিন সাধারণ জনতা ওলামায়ে কিরামের যথাযথ সম্মান করা শিখবে না, তাদের কাছে থেকে দ্বীন জানার-বুঝার ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করবে না, তাদেরকে নিজেদের রাহবার হিসেবে মেনে নিয়ে তাঁদের কাছ থেকে দ্বীন শিখবে না ততদিন চলমান এ সঙ্কট থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় দেখা যাচ্ছে না।
আমার তো মনে হয়, জনগণের দ্বীন শিক্ষার ব্যাপারটি যদি পুরোপুরি বর্তমানকালের আলেমদের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়, তাঁদেরকে যদি রাহবার মানা হয়, তাহলে দেখা যাবে 'মেসওয়াক করা ওযুর সুন্নত নাকি নামাযের সুন্নত' 'আমীন জোরে পড়বে নাকি আস্তে পড়বে' এসব নিয়েই মসজিদে মসজিদে রক্তারক্তি শুরু হয়ে যাবে এবং জনগণ ইরাকের মত গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। আইএস তবু কিছু মানুষকে বিপথগামী করেছে। আর কথিত আলেমদেরকে রাহবার মানা হলে আরো অনেক বেশি সংখ্যায় মানুষ বিভ্রান্ত হবে। কারণ, দ্বীনের মাঝে ফেরকাবাজি ও উম্মতের মাঝে বিভক্তির আমদানি ও চর্চা এই কথিত আলেমদেরই অবদান। আর দুর্নীতির বেলাতেও সম্ভবত তাঁরাই চ্যাম্পিয়ন। যারা এতিমের সম্পদ মেরে খেতে পারেন, টাকার বিনিময়ে ফতোয়া দিতে পারেন, তাদের কাছে কোরআন শিখতে গেলে কতটুকু আসল ব্যাখ্যা শেখা যাবে আর কতটুকু অপব্যাখ্যা শেখা যাবে তা আল্লাহ মাবুদই ভালো জানেন।
আসল কথা হল, সমস্যাটা হচ্ছে অন্ধ আনুগত্যে। তোমার আনুগত্য করলে বিভ্রান্ত হবে, আর আমার আনুগত্য করলে হেদায়েতপ্রাপ্ত হবে- এভাবে না দেখে কেউ যাতে কারো আনুগত্য অন্ধভাবে না করে; কোরআন-হাদীসে বাস্তবে কি আছে, তা যেন নিজেরা বিবেক-বুদ্ধি খাটিয়ে যাচাই করে দেখে, সেই আবেদনই জানাতে হবে তরুণ সমাজের কাছে। অন্যথায় শুধু এক শিয়ালের কাছ থেকে মুরগীগুলোকে আরেক শিয়ালের কাছে বর্গা দিতে বলে কোন লাভ নেই। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে আসা নয়, বরং কোরআনের কাছে ফিরে আসাটাই একমাত্র সমাধান।
আলোচনার এই অংশটুকু বাদে পূর্বাপর বাকি কথাগুলোর সাথে পুরোপুরি একমত প্রকাশ করছি।
আলোচিত পোস্টের লিংক: http://www.bd-desh.net/blog/blogdetail/detail/5539/naimhossain/78031
বিষয়: রাজনীতি
৯২৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সহমত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন