পাবলিক টয়লেটে অনলাইনে ভর্তি!
লিখেছেন লিখেছেন ওবাদা বিন সামেত ০১ জুলাই, ২০১৬, ০৮:০৮:৪০ সকাল
যাচ্ছিলাম যাত্রাবাড়ি দিয়ে। প্রকৃতির বেগ আসল। লাইন দিলাম একটি পাবলিক টয়লেটে। টয়লেটের লোকজন জানালো, না, না। এখন আর এভাবে লাইনে দাড়ালে চলবে না। প্রথমে আপনাকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে আসতে হবে। তারপর সিটি কর্পোরেশন ঠিক করে দেবে, আপনি কোন্ টয়লেটের লাইনে দাড়াবেন। কী আর করা! গেলাম সাইবার ক্যাফেতে। সাইবার ক্যাফের বিল বাবদ ১৫ টাকা আর রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ বিকাশ থেকে ২৫ টাকা খরচ করে প্রাকৃতিক কর্মের জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলাম। প্রথম চয়েস দিলাম, যাত্রাবাড়ি পাবলিক টয়লেট, যেহেতু ওটা আমার বর্তমান নিকটবর্তী টয়লেট। দ্বিতীয় চয়েস দিলাম গুলিস্তান বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ডের পাবলিক টয়লেটটি, যেহেতু ওটা আমার বর্তমান অবস্থান থেকে একটু দূরে। তৃতীয় চয়েস দিলাম শাহাবাগ শিশু পার্কের সন্নিহিত থানার পার্শ্ববর্তী টয়লেটটি। চতুর্থ চয়েস দিলাম ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের বিপরীতের পাবলিক টয়লেটটি। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে যাত্রাবাড়ি এসে দেখলাম, টয়লেটের লাইন অনেক লম্বা হয়ে গেছে। টয়লেট ফি ৫ টাকা জমা দিয়ে লাইনে দাড়ালাম। কিন্তু এত লম্বা লাইনে দাড়ালে যে হাগু আমার বেরিয়ে যাবে। তাই ভেবে ঐ ৫ টাকার মায়া না করে একটা রিকসা নিয়ে গেলাম গুলিস্তান বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ডে। ৫ টাকা দিয়ে ওখানকার টয়লেটের টিকেট নিলাম। কিন্তু ওখানকারও যা ভীড়, আমার আর তড় সইল না। তাই ওখানকার ৫ টাকার মায়াও ছেড়ে দিয়ে 'হাগায় ডরায় না বাঘারে' ভেবে চললাম শাহবাগ শিশুপার্কের দিকে। দাঁড়ালাম থানার পার্শ্বে অবস্থিত টয়লেটটির সামনে। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম, আসন শূন্য নেই। আমি বললাম, "কই, আপনাদের তো অত ভিড়ও দেখছি না। আপনারা চাইলেই তো আমাকে একটু সুযোগ দিতে পারেন।" তারা জানালো, "মাথা খারাপ নাকি রে ভাই? সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত কোটার বাইরে আমরা নিজে থেকে যদি আপনাকে এখানে কাজ সারার সুযোগ করে দেই, তাহলে আমাদের চাকরি তো থাকবেই না, উল্টো টয়লেটটিও উচ্ছেদ হয়ে যেতে পারে।" অবশেষে গেলাম আমার চতুর্থ চয়েসের টয়লেটটিতে। সেখানে গিয়ে শুনলাম, ১০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হবে। আমি বললাম, না রে ভাই! যে কাজের জন্য আমার ৫ টাকা আর ৫ মিনিটই যথেষ্ট ছিল, সেই কাজের জন্য আমি ইতিমধ্যে অলরেডি (১৫+২৫+৫+৫)= ৫০ টাকা আর দুই ঘন্টা সময় ব্যয় করে ফেলেছি। আর এতক্ষণে কাপড়ও নষ্ট যা হবার তা আমার হয়েই গিয়েছে। কাজেই এখন আমি বাড়ি ফিরে যাই, বাড়ির বাথরুমে গিয়েই ছুছু করে নেই। তবু তো ভাগ্যিস, আমার নিজের বাড়ির বাথরুমটির ক্ষমতা এখনো আমার হাতেই আছে!
বিষয়: সাহিত্য
১১২৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন