মস্তিস্ককে নির্দিষ্ট কাজে মনোযোগী করে তোলার এক অনবদ্য কৌশলঃ পোমোডরো টেকনিক

লিখেছেন লিখেছেন ক্লে ডল ২২ অক্টোবর, ২০১৬, ১১:১৫:৫০ সকাল



আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন, অফিসের কাজ বা পড়াশোনা নিয়ে বেশ একঘেয়েমীতে ভুগি। কেউ অন্যমনস্ক হই, আবার কেউ জোর করে কাজে মনোনিবেশের চেষ্টা করি। কিন্তু তাতে আমাদের কাজ কর্ম কতখানি ফলপ্রসূ হয় বা এতে আমাদের মানসিক, দৈহিক স্বাস্থ্য কতটুকু সুস্থ থাকে তা যথেষ্ট প্রশ্ন সাপেক্ষ।

আপনি যদি একটানা দীর্ঘ সময় আপনার কাজ নিয়ে বসে থাকেন এতে আপনার স্থুলতা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি রয়েছে। আবার কাজ ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণে আপনি হতাশায়ও ভুগতে পারেন। কিন্তু এই সমস্যাগুলো এড়িয়ে আপনি অনেক সহজেই আপনার ব্রেইনের প্রোডাক্টিভিটি বাড়িয়ে তুলতে পারেন। আবার সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহারও করতে পারেন খুব সাধারণ একটা কৌশলের মাধ্যমে। যার নাম পোমোডরো টেকনিক ।

পোমোডরো টেকনিক কী?

এটা এমন একটা সময় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি যা আপনার ব্রেইনকে নির্দিষ্ট কাজের প্রতি ফোকাস করে। এবং অল্প সময়ে কাজটি শেষ করতে সাহায্য করে।

১৯৮০ সালে Francesco Cirillo নামের একজন উদ্যোক্তা এটি আবিষ্কার করেন। পোমোডরো ইটালিয়ান শব্দ। এর অর্থ টমেটো। এই পদ্ধতিতে তিনি টমেটো আকৃতির টাইমার ব্যবহার করেন তাই এর নাম দেন পোমোডরো।

পোমোডরো টেকনিক কীভাবে কাজ করে ?

প্রথমে নির্দিষ্ট কাজকে ২৫ মিনিটের খণ্ডে ভাগ করে নিতে হবে। ঘড়িতে বা মোবাইলে এলার্ম সেট করতে হবে ঠিক ২৫ মিনিট পরে (প্লে স্টোরে বহুত এপ্স রয়েছে)।এর বেশিও না, কমও না। এবং অন্য সব কিছু বন্ধ করে ২৫ মিনিট ধরে কাজটা করতে হবে। যেই মাত্র এলার্ম বাজবে, অমনি কাজ বন্ধ। ৫ মিনিটের ছোট বিরতি। চা খান, সেলফি তুলেন, চোখ বুজে হাওয়া খান, মন যা চায় তাই করেন(ভুলেও সামুতে আসবেন না ) । তার পর আবারও ২৫ মিনিটের কাজ। প্রতি ২৫ মিনিটকে বলা হয় এক পোমোডরি।

এভাবে ৪টি পোমোডরি শেষ করার পর একটা ২৫-৩০ মিনিটের লম্বা বিরতি।

পোমোডরো টেকনিকের উপকারিতাঃ

★ বিরতির কারণে যেকোনো বড় প্রজেক্টও ছোট খন্ডে বিভক্ত হয়, পোমোডরি গুলোতে কাজের প্রতি বেশী মনোনিবেশ করা হয় যার ফলে সময় ব্যবস্থাপনা অধিক ফলপ্রসূ হয়।

★ এটা আপনাকে মনের বিক্ষিপ্ততা হ্রাস করতে সাহায্য কর। কারণ এতে একটা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করতে হয়।

★ গবেষণায় দেখা গেছে যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর কাজে বিরতি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং ঐ কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করে।

★ছোট বিরতিতে কাজের সময়ের তথ্যগুলো আমাদের ব্রেইনে সেট হওয়ার সময় পায়। এবং দিনশেষে, একটানা কাজে যত ক্লান্ত হন, পোমোডরোতে বিরতির কারণে তার চেয়ে কম ক্লান্ত হবেন।

পোমোডরো টেকনিকের খারাপ দিকঃ

★ধরুন আপনি একটা কাজে গভীর মনোনিবেশ করেছেন অথবা কোন জটিল সমস্যা সমাধানের একেবারে দ্বার প্রান্তে তখন এলার্ম বেজে উঠল। এতে মনোযোগে চরম ব্যাঘাত ঘটতে পারে। (আমার হয়েছে)

★ আবার আপনি যদি অনেক লোকের মাঝে কাজ করেন, অন্যদের যদি আপনার সাথে কথা বলার প্রয়োজন হয় এক্ষেত্রে অপর পক্ষ বিরক্ত হতে বা আপনার পোমোডরোর মাঝে ব্যাঘাতও ঘটাতে পারে।

Cirillo ২৫ মিনিটকে ১ পোমোডরো করেছেন। আপনি আপনার মনোযোগকে প্রাধান্য দিয়ে এই সময়কালকে বৃদ্ধি করে দেখতে পারেন। এতে প্রথম সমস্যাটি অনেকটা এড়ানো সম্ভব। সর্বোপরি সহজ একটি কৌশল কিন্তু এটি। তাই ট্রাই করে দেখতে পারেন। আমি প্লে ষ্টোরের Brain focus নামের একটা app ব্যবহার করি।

বিষয়: বিবিধ

১০০৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File