চোঁখ খোল, তাকাও, সেজদাবনত হও !
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মাদ আবু মুছা ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৬:৩৮:৩২ সন্ধ্যা
পৃথিবীতে প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা কত, জানেন ? বিজ্ঞানীদের নানা হিসাব মোতাবেক প্রজাতি সংখ্যা (জীবন্ত) ৩০ লক্ষ থেকে ৩ কোটি, তন্মধ্যে প্রায় ১৪ লক্ষ শ্রেণীবিন্যস্ত হয়েছে এবং তাতে আছে প্রায় ২,৫০,০০০ উদ্ভিদ, ৭,৫০,০০০ কীটপতঙ্গ, ৪১,০০০ মেরুদন্ডী, বাকিরা অন্যান্য অমেরুদন্ডী, ছত্রাক, শৈবাল ও অণুজীব। তবে এটা চূড়ান্ত কোন হিসেব নয় বরং আশ্চর্য্যের কথা হলো এখন পর্যন্ত নাকি মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। বাকি ৯৯.৯৯৯ শতাংশ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি ! সে হিসাবে পৃথিবীতে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন অর্থাৎ ১,০০০,০০০,০০০,০০০ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে !!
এবার আসুন জেনে নিই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণীটি সম্পর্কে। নীল তিমি। আকারে বিশালতম প্রাণীটির খাদ্যের দিকে লক্ষ্য করুন। ক্যানাডার ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বিজ্ঞানীদের গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে ‘এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি' পত্রিকায়৷ নীল তিমি প্রতি কামড়ে কতগুলো মাছ গোগ্রাসে গিলতে পারে তার হিসেব কষে গবেষকরা দেখেছেন, এরা একসঙ্গে ৮ হাজার ৩শ ৬ ক্যালরি থেকে শুরু করে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৮শ ৩৫ ক্যালরি পর্যন্ত খেতে পারে৷ এরা সর্বোচ্চ যে পরিমাণ খেতে পারে তা দিয়ে ২২৮ জনেরও বেশি মানুষকে
প্রতিদিন ২০০০ কিলো ক্যালরি খাবার খাওয়ানো যেতে পারে৷ গবেষকরা দেখেছেন, তিমিকে কেবল একবার এর শরীর নড়াচড়া করতেই নি:শেষ করতে হয় ৭৭০ কিলো ক্যালরি৷
পৃথিবীতে এখন তিমির সংখ্যা ৬ - ১২ হাজারের মতো। তাহলে হিসেবটি দাঁড়ায় যে একবারে কেবল ১৩ লক্ষ ৬৮ হাজার থেকে ২৭ লক্ষ ৩৬ হাজার লোকের সমপরিমাণ খাবার তিমির একবেলার খাবার হিসেবে যাচ্ছে। এবার দেখুন পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম প্রাণী কোনটি ? আলট্রা-স্মল নামক একধরনের ব্যাকটেরিয়া হলো এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে পাওয়া সবচাইতে ক্ষুদ্র জীবনের নিদর্শন। কি মনে হয়, তার খাবারের প্রয়োজন হয় না ?
বাদ দিলাম ১ ট্রিলিয়নের হিসেব। যদি প্রজাতির সংখ্যা ৫০ লক্ষও হয়। আর প্রত্যেক প্রজাতিতে গড়ে ১ লক্ষ করে প্রাণী থাকে তাহলে মোট প্রাণীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ হাজার কোটি। আল্লাহু আকবার।এবার বলুন তো এ বিশাল সংখ্যক প্রাণীর প্রতিটির খাদ্যাভ্যাস, রুচি, খাবার গ্রহণ পদ্ধতি কি এক ? সুবাহান আল্লাহ। তিনিই সেই আল্লাহ যিনি এ বিশাল সংখ্যক প্রাণীর জন্য পৃথক পদ্ধতিতে পৃথক খাদ্যের বন্দোবস্ত করেন। "জমিনে বিচরণশীল এমন কোন জীব নেই যার রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহর উপর নেই।"
ভাই, এবার নিজের সম্প্রদায়ের দিকে তাকান। মানুষ। মোট সংখ্যা ৭৫০ কোটি মাত্র। রিজিকের অভাব কাদের বেশি ? না খেয়ে মরে কারা ? কাদের শিশুটিকে ময়লার ভাগাড়ে পঁচা খাবার খোঁজতে হয় ? কার শিশুটি কঙ্কালসার হয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে থাকে ময়লার ভাগাড়ের পাশে, একটি শকুন অপেক্ষা করে শিশুটির মৃতদেহ ভক্আষণ করার জন্য ? এ দৃশ্যপট কাদের জন্য প্রযোজ্য ? নিজের হিসেব নিজেই মিলান।
এবার এই পরিণতির কারণগুলো কি হতে পারে ?
আমি ক্ষুদ্র জ্ঞাণে যে কারণগুলো দেখতে পাই সেগুলো হলোঃ ১) অবিচার ২) স্বার্থপরতা ৩) প্রতিহিংসা ৪) অপব্যয় ৫) ইনসাফের অভাব ৬) সুষম বন্টনের অভাব ৭) সৎ নেতৃত্বের অভাব ৮) ধ্বংসাত্মক আচরণ ৯) অহমিকা এবং সর্বোপরি আল্লাহর প্রণীত বিধানের অনুসরণ না করা। আকাশ ও পৃথিবীতে যে বা যারা আছে ইচ্ছায় হউক অথবা অনিচ্ছায় হউক আল্লাহর বিধান মেনে চলে তাই তাদের দায়িত্ব আল্লাহ পাক গ্রহণ করেছেন, কিন্তু অকৃতজ্ঞ, বর্বর, স্বার্থপর, অবাধ্য মানুষ আল্লাহর বিধান মানেনি তাই বিশ্বব্যাপী গোলামী, বঞ্ছনা, নিগ্রহের শিকার হতে হচ্ছে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন