"রাকিনের লাশ !"
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মাদ আবু মুছা ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১১:২৪:৪৫ রাত
রাকিন। কুমিল্লার একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউশনে ২য় বর্ষে পড়ে। ভদ্রতা, নম্রতা যেনো তার স্বহজাত গুন। আজে বাজে আড্ডায় থাকে না রাকিন। যশোর থেকে কোন এক কারণে কুমিল্লা আসা হয় রাকিনের সেই ক্লাস নাইনে থাকতে। তারপর ম্যাচে থেকে চলে পড়াশুনা। এসএসসি পাশ দিয়েই ভর্তি হয় পলিটেকনিকে। ভালোই চলছিলো দিনকাল। ইদানিং একটা টিউশনী ধরেছে রাকিন। নিজের পড়াশুনার খরচ নিজেকেই বহন করতে হচ্ছে তাকে। বাবা নামক বটবৃক্ষটি ইহলোক ত্যাগ করেছেন বছর পাঁচেক পূর্বেই। তার পরও এসএসসি পর্যন্ত কিছু খরচ পেত সে বাড়ি থেকে। এখন সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। সেই থেকে শুরু রাকিনের টিকে থাকার সংগ্রাম।
বাড়িতে মা আছে। আছে ছোট্ট একটি বোনও। বড়ভাই সেদিক দেখাশুনা করেন বিধায় নির্বিঘ্নই থাকে রাকিনের পড়াশুনা। রাকিনের পড়াশুনা না করা ভাইয়ের স্বপ্ন একদিন বাবার রেখে যাওয়া অনটনের সংসারের হাল ধরবে রাকিন। অনেক বড় হবে সে। তখন আর অভাব থাকবে না তাদের। রাকিনও স্বপ্ন দেখে অহরহ। হুম, রঙ্গিন জীবনের স্বপ্ন।
রাকিনের স্বভাব ছিলো অন্যদের চেয়ে ভিন্নতর। প্যান্ট থাকতো গোড়ালীর উপরে। পকেটে টুপি থাকতো সারাক্ষণ। যেখানে যখন নামাজের আযান হয়েছে তো নামাজ শেষ করাই তার তাড়না ছিলো। বন্ধুবাদ্ধব মহলে তাই সুনাম ছিলো রাকিনের।
জীবনের সূচনায়, মধ্যগগনে, এবং অস্তাচলে কিছু প্রভাবক আছে, আছে কিছু প্রয়োজন, জীবনের সাথে মিশে থাকা আবেগ অনুভূতি, স্বপ্ন ইত্যাদির নির্ধারিত কোন সীমা নেই। জীবনের প্যারামিটারগুলো গুনগতভাবে ভিন্ন, সংখ্যাগতভাবে অগননীয়।রাকিনের জীবনের সাথে এগুলোর সুষম বিন্যাস ছিলো বলা যায়। তবে তাতে ব্যাত্যয় ঘটতে শুরু করে যখন রাফা নামের একটি মেয়ের টিউশনীর ভার তার উপর পড়ে। যে বিল্ডিংয়ে সে টিউশনী করাতো সেখানকারই একজন ধনাঢ্য লোকের মেয়ে। লোকটা রাকিনকে এতকরে ধরলো যে সে না বলতে পারলো না। ভালো বেতন। সে দিকটি বিবেচনা না করাও রাকিনের জন্য অসম্ভব একটি বিষয়। হু, সে রাজি হলো।মেয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। প্রথম দিকে রাকিনের অস্বস্থি লাগতে শুরু করে। নিচু মাথায় ঘন্টাখানেক সময় কাটে তার। বেরুতে পারলে যেনো প্রাণে বাঁচে বেচারা। এভাবে প্রথম একটি মাস কাটলো। এ মাসে প্রচুর টাকা তার হাতে। মূলত বস্ত্রহীনের কাছে আপাদমস্তক পোশাক প্রাচুর্য্যের মতোই। টাকা হতে পাওয়ার সাথে সাথেই বাজারে ছুটে রাকিন। নিজের ন্যূনতম টাকা রেখে বাকিটা বিকাশ করে ভাইয়ের নাম্বারে। পরোক্ষণেই ফোন উঠায়। অনেক তফাতে অগ্রজ - অনুজ দুজনের চোঁখেই তখন অশ্রু। আনন্দের অশ্রু। কান্নামাখা কন্ঠে রাকিনের সরল কথা, "ভাই, টকাটা দিয়ে মায়েরে একটা শাড়ি কিনে দিও, আর জহুরারে একটা জামা কিনে দিও। ভাই, সামনের মাসে তোমার জন্য একটা নতুন পাঞ্জাবী নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ।"
এভাবে যদি চলতো সারাটি বছর তাহলে কতোই না ভালো হতো। চোঁখ মুছে তৃপ্তির হাসির ঝিলিক ঠিকরে পড়ে রাকিনের আবয়বে। দিন গড়ায় একে একে। এদিকে অনেকটা অস্বস্থি কাটতে শুরু করে তার।রাফার বাবা প্রচন্ড রাগি। মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। মাস দুএক পর পরই দেশে ফেরেন। তার দেশ বিদেশে আতরের ব্যাবসা। এক সময় ছিলো মজুরের খাটনি খাটতে হয়েছে সদ্য ভদ্র লোককে। দাঙ্গা হাঙ্গামা ও কম করেননি। রাকিন তাই উনার ব্যাপারে ছিলো খুবই সতর্ক। অবশ্য তার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ ভিন্ন কারণে। ধর্মের বিধান যে তার শিরোধার্য্য কর্তব্য সে তা ভালো করেই জানে।
রাফা ক্ষণে ক্ষণে রুপ বদলাতে শুরু করছে। বস্তুত মেয়েদের আবির্ভাব একটি জীবনে ঘটে নিভৃতে। আর প্রস্থান ঘটে ঘটা করে। অত্যন্ত অনাকাঙ্খিত রুঢ়তায় এলোমেলো হয়ে যায় জীবনের সরল পথ।
- কেমন আছেন স্যার ?
- ভালো।
- স্যার, আজকে পড়বো না।
- কেন, কি সমস্যা ?
- এমনিতেই।
- আশ্চর্য্য ! তোমার তো পরীক্ষা ক'দিন পর।
- কালকে পড়বো।
- তাহলে আমি উঠছি।
- বসেন না স্যার কথা বলি।
এবার রাকিনের হার্টবিট বাড়তে শুরু করেছে। রাফার আচরণ এতোটা খোলামেলা সে ইতোপূর্বে প্রত্যক্ষ করেনি। যত দ্রুত উঠা যায় ততই ভালো তার পক্ষে ভালো।
- স্যার, আপনার কি ফেসবুক আইডি আছে ?
- হ্যা, কিন্তু তা জেনে তুমি কি করবে ?
- দরকার আছে স্যার।
- ঠিক আছে তাহলে আমি উঠলাম।
- স্যার, আজকে আমার বার্থ ডে।
- অহো, হেপি বার্থ ডে।
- থেংক ইউ সো মাচ স্যার।
হনহন করে বেরিয়ে গেলো রাকিন। রাফার আবয়বে হাসির ছাপ। বাইরের আবহাওয়া প্রচুর ঠান্ডা মনে হচ্ছে। রাকিন বুঝতে পারছে তার শরীর ঘেমে গেছে। হঠাত রাফার এহেন আচরণ রাকিনের কাছে বড্ড তাজ্জব লেগেছে। তবে তাকে দেখলে যে কেউ বুঝবে সে আতংকিত ছিলো।
বাসায় ফিরেছে রাকিন। কিন্তু চিন্তা জগতে রাফার উদ্ভট আচরণ ভেসে উঠছে বারবার।ফেসবুকে খুব কমই লগ ইন করা হয়। তার পরও আজ লগইন করলো। চোঁখ কাড়লো Friends অপশনটি। রাফার রিকোয়েস্ট ! চিনলো কিভাবে ? হয়তো রাকিনের প্রফাইল পিকচারই তাকে সহায়তা করেছ।দ্রুত ম্যাসেজ রিকোয়েস্ট চেক করলো রাকিন। হ্যা, নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ। কি ঘটতে যাচ্ছে বুঝতে বাকি রইলো না রাকিনের। চিন্তার ঝড় বইছে। হাত কাঁপছে তার। কি করবে এখন ?
পরদিন টিউশনীতে যায়নি রাকিন। সারাদিন ভেবেছে। পথ খোলা নেই। নিম্নবিত্ত একটি পরিবারের সন্তান হয়ে অনেক কিছু বিষর্জন দিতে হবে সেটাই স্বাভাবিক। তাই বলে সে পরকাল বরবাদ করবে ? যদি সে না বলে দেয় তাহলে হয়তো ভিন্ন মোড় নিতে পারে ঘটনা। অপবাদ আসতে পারে তার নামে। সহজ বাংলায় ব্ল্যাক মেইল।সিদ্ধান্ত নিলো যা সম্ভব নিরাপদ রাখবে নিজেকে। এড়িয়ে চলবে প্রসঙ্গ। কিন্তু এভাবে কতদিন ঠিক থাকতে পারবে রাকিন ?
পরদিন বিকেল পাঁচটা। টিউশনীর পথ ধরেছে রাকিন। কাঁপা কাঁপা পায়ে এগুচ্ছে। একেবারেই মনের বিরুদ্ধে সে যাত্রা। মনে অনেক ভাবনা। মোকাবেলার অনেক পথচিত্র। কে জানে শেষ পর্যন্ত কি হয়।রাকিন ঐদিন যা আশংঙ্খা করেছিলো তার কিছুই ঘটেনি। অন্যান্য দিন অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু সেদিন রাফা অপেক্ষমাণ ছিলো। রীতিমত পড়াশুনায় মনোযোগী। অনেকটা রহস্যে ঘেরা।
অষ্টম শ্রেণীর একটি মেয়ে কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখে রাকিনকে অবজার্ভ করতে পারে সেটা তখনও ধোঁয়াশা। যা হোক, আপাতত বিপত্তি কাটলো মনে হয়। রাকিনও নিয়মিত টিউশনীতে যায়। রাফার অাচরণেও তারতম্য তেমন নেই। রাকিন চিন্তা জগতে সন্তরণ করছে অবিরত। কেন হঠাৎ ও এমন করলো। আবার নির্লিপ্ত হয়ে গেলো। আড়ষ্ট হয়ে হয়ে আসছে বিচলিত নিউরণগুলো। দলা পাকাচ্ছে বিক্ষিপ্ত লব্ধিতে।কৌতুহল মানুষের সহজাত। কিন্তু তা যদি হয় নিজের কোন ব্যাপারে তাহলে তার ব্যপ্তি হয় অত্যাধিক। আবারো ম্যাসেজ রিকোয়েস্ট অপশনটি চেক করলো রাকিন। নাহ, কোন সাড়া নেই।এদিকে রাকিনের পরীক্ষাও নিকটবর্তী। বুঝতে পারছে সে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে দিনে দিনে। পড়াশুনার কোন ক্ষতি নিঃসন্দেহে সে হতে দিতে পারবে না, কিন্তু কেন আচমকা এ ঝড় তার জীবনে ?
নিজেকে শক্ত করে রাকিন। কোন কিছুতেই সে তার মায়ের স্বপ্ন পদদলিত হতে দেবে না। মহান প্রভূর অবশ্যপালনীয় নির্দেশের ব্যত্যয় ঘটাবে না।তারপর একদিন। কালো দিনই বলা যায়। রাফা সরাসরি মুখ খোলে বসলো।
- স্যার, অপেক্ষা করছিলাম।
- কিসের জন্য।
- প্রতি উত্তরের আশায়।
- বুঝলাম না।
- স্যার, আপনি আমার রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেননি। আমার ম্যাসেজের কোন রিপ্লে দেননি।শিহরিত হলো রাকিন। কি বলবে দিশা হারিয়ে ফেলছিলো সে। তারপর দৃঢ়তা নিয়ে আসলো চেহারায়। বললো,
- প্রয়োজন বোধ করিনি।
- কেন ?
- জানা কি খুব প্রয়োজন ?
- অবশ্যই স্যার।
- তাহলে শুনো, গত দুমাস যাবত তোমাকে সময় দিচ্ছি। তোমার বাবা সেজন্য আমাকে পেমেন্ট দিচ্ছেন। তাহলে আমার কাজ সঠিকভাবে করা কি সমিচীন নয় ? সো, এর বাইরে কোন কথা বলতে আমি আগ্রহী নই। আর তুমি যে ব্যাপারে আমাকে নক করছো ওটাকে আমি ঘৃণা করি।রাফার আবয়ব দেখলে যে কেউ চমকে যেতো। রাগে ফুসছে সে। অপমান সহ্য করা তার জন্য বেশ কঠিন। তার ক্লাসের অন্যান্য মেইটদের তুলনায় সে ছিলো অনন্যা, আর রাকিনের মতো সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের একটি ছেলে তাকে অপমানের সাথে প্রত্যাখ্যান করলো !!
রাকিন জানে কেন সে ঐ কঠিন কথাগুলো বলেছিলো। ঐ রাত ঘুম হয়নি রাকিনের। কান্নায় কেটেছে। আইডিতে লগইন করেই রিকোয়েস্ট ডিলিট করলো রাফার। তারপর ম্যাাসেজ ডিলিট। তারপর ব্লক। রাতে তাহাজ্জুদের সালাতে দাড়িয়ে মহামহিম রবের কাছে অনুনয় বিনয় করে সাহায্য চাইলো রাকিন। ক্ষমা চাইলো কৃতকর্মের জন্য। রাকিন কি অপরাধ করেছিলো ? সে তো ছিলো এক অসহায় শিকার।ভোর হয়েছে মাত্র। রাকিনের কন্ঠে ভেসে আসছে সূরা ইউসূফের সুমধুর তেলাওয়াত। এদিকে রাফা প্রতিশোধের নেশায় বদ্ধ উন্মাদ প্রায়।
দিন পাঁচেক হলো। রাকিন নিখোঁজ। অনেক খোজা খোজির ফলাফল শূন্য। বড় ভাই ভেঙ্গে পড়েছেন মানষিক ভাবে। মা কাঁদতে কাঁদতে সঙ্গা হারিয়েছেন। ছটফট করছে গোলাপের মতো ছোট বোনটি। পুলিশের কাছে জানানো হয়েছে কিন্তু তাদের আচরণে শীথিলতা। বিষয়টি আমরা দেখছি জাতীয় বক্তব্য ছাড়া তাদের তৎপরতা নেই বললেই চলে।ছোটবোন জহুরা একা মা কে নিয়ে যশোর মেডিক্যালে আজ চার দিন হলো। যখনই হুশ ফিরছে সাথে সাথেই " তোমরা আমার রাকিনকে এনে দাও" বলে চিৎকার করছেন। গলা শুকিয়ে গেছে। আওয়াজ বেরুয় না। পরোক্ষণেই সঙ্গাহীন হয়ে পড়ছেন জননী। রাকিন কোথায় ? এ প্রশ্নের জবাব কেউ দিতে পারে না।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে রাকিনের ম্যাচ মেইটদের। তারা এতটুকু বলতে পারে রাকিন রাত আনুমানিক দশটার দিকে কারো সাথে ফোনে কথা বলে। আর বিমর্ষ মুখে বেরিয়ে যায়। এর পরের খবর তারা বলতে পারে না।খোঁজ অব্যাহত থাকে। হঠাৎ একদিন গ্রামের এক ব্যাক্তির দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় ক্ষেতের পাশে। একটি সেপটিক ট্যাংকের আসে পাশে মাছি ভন ভন করছে। কৌতুহল জাগলো তার। সামনে এগুতেই নাকে লাগলো তীব্র দূর্গন্ধ। এবার ভয় পেতে শুরু করলো লোকটি। কাছাকাছি হলো ট্যাংকটির। হ্যা, ঐ ট্যাংক থেকেই দূর্গন্ধ আসছে। লোহার ঢাকনা টা একটান দিয়ে সরালো সে। তার পর চিৎকার। এক থেকে দুই, অতঃপর অনেক। শোরগোল চেচামেচি আর মানুষের প্রচন্ড ভীড় সরিয়ে দৃশ্যপটে আসলো পুলিশ। ট্যাংক থেকে তুলা হলো রাকিনের বিকৃত লাশ। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন।
সব খোলে বলছি, ঐদিন রাকিনকে ফোন দিয়েছিলেন রাফার বাবা। রাফা বাসায় ছিলো না। রাকিন কিছু বুঝে উঠার আগেই গর্জে উঠেন করিম। আমার মেয়ের সাথে অপকর্ম করতে চাস, সাহস তো কম না তোর। শালা খা...... মা......। রাফার মায়ের হাতে নাইলনের রশি। দুজনে মিলে রাকিনের হাত দুটি বেঁধে ফেলেন। তারপর করিমের হাতের ছুরিটি এফোড় ওফোড় করে রাকিনের দেহ। তারপর লাশ কাধে নিয়ে যায় করিম ক্ষেতে ফলে রাখার জন্য, কিন্তু পা চলেনা তার। অজানা আতংকে শীতল হয়ে আসে করিমের পা গুলো। এগুতে পারে না।ফিরে আসে করিম। তারপর ভাইয়ের ঘরের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরেই ছুড়ে দেয় রাকিনের লাশটি। তারপর রাফার মা চলে যায় বাপের বাড়ি, আর করিম পালিয়ে যায় তার কর্মস্থলে (ওমান)।
যাবার সময় স্ত্রীকে বলে যায় যদি কেউ জিজ্ঞেস করে (পুলিশ)। তাহলে বলবে খুনটি তুমিই করেছো। তাহলে আমি তোমাকে টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে পারবো। আর যদি আমার কথা বলো তাহলে আমি ধরা পড়বো, সাথে ধরা পড়বে তুমিও। তখন ছাড়ানোর কে থাকবে ? পাপিষ্ঠ স্ত্রী পাপিষ্ঠ স্বামীর কূটচাল বুঝতে পারেনি। সে দোষ স্বীকার করে। তারপর থেকে আজ বছর হতে চলেছে সে বন্দি। কই করিমের তো পাত্তাই নেই। এদিকে পুলিশ ওকে কোর্টে চালান করার পরিবর্তে লকআপে আটকে রাখে। ভালোই ইনকাম চলছে তাদের।
রাকিনের মা এখন অনেকটা স্বাভাবিক। তবে কথা একেবারেই কম বলেন। নিভৃতে প্রাণের চেয়ে প্রিয় ছেলেটির জন্য মহান রবের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন। বোনটি লুকিয়ে কাঁদে। ভাইয়ের কলিজায় মরুভূমির নিষ্ঠুর হাহাকার।
রাকিনের এমন পরিণতির জন্য রাফা একা দায়ি নয়। দ্বায়ি তার কুলাঙ্গার পিতা, আর তার পাপিষ্ঠা মা। তারা নিজেরাও আল্লাহর বিধান মানতো না, আর মেয়েকেও আল্লাহর বিধানের ব্যাপারে ভয় দেখাতো না।
হে সম্মানিত পিতা, আপনার মেয়েটিকে দ্বিন শিখান। তার প্রতিপালনের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। অনুসরণ করুন নবীজীর প্রদর্শিত সরল পথ। তাহলে আবারো পৃথিবীতে আসতে পারে ঐশী বিধানের পরম পবিত্র এক প্রভাত।
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন