স্বাধীনতা পরবর্তি ছাত্রহত্যা ও ছাত্ররাজনীতি

লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নলোকের সিঁড়ি ১০ জুন, ২০১৬, ০৫:০৭:৫২ বিকাল

এরিস্টটল রাজনীতিকে সত্য,সুন্দর ও নৈতিকতার বিষয় হিসেবে বর্ণনা করেন।পরে ইউরোপে ম্যাকিয়াভেলি ও ভারতবর্ষে কৌটিল্য রাজনীতিতে অনৈতিকতার বীজ বপন করেন।এরই ধারাবাহিকতা যেন বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি।যার প্রভাব ছাত্ররাজনীতিতেও বিদ্যমান।স্বাধিনতাপূর্ব ও পরবর্তি ছাত্ররাজনীতির গুণগত মান এক্ষেত্রে একটি নির্ণায়ক।

বিংশ শতাব্দির বাংলা ও বাঙ্গালিরর ইতিহাসের প্রধানতম নির্ণায়ক শক্তি যে ছাত্রসমাজ এ বিষয়ে কোন বিতর্ক নাই।উনিশ শতকের ছাত্ররা নিজেদের আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে গড়ে তুলেছিল। এ প্রসঙ্গে ড.আব্দুল হান্নান বলেন-"তখনো পর্যন্ত আধুনিক অর্থে ছাত্রান্দোলনের সূত্রপাত ঘটেনি।হিতকারি কর্মকাণ্ড, কল্যাণ সমিতি ইত্যাদির মধ্যেই ছাত্রদের কর্মকাণ্ড সিমিত ছিল।যদিও উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকেই "ইয়ং বেঙ্গল" ছাত্রসমাজ সামাজিক বিদ্রোহের সূচনা করেছিল।১৮৪০ সালে যখন বৃটিশ সরকার সিদ্ধান্ত নিল বাংলার সকল জেলাতেই একটি করে সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে,একমাত্র তখনই কলকাতার বাইরে সারা বাংলায় ছাত্রসমাজের সংগঠিত কর্মকাণ্ড জেগে উঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়(বাংলার ছাত্র আন্দোলন,১৮৩০-১৯৭১)।

তবে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারর পর কেউ ভাবতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ স্বাধীন বাংলার পত্তন করবে।১৮৩০ সালে ছাত্রসম্প্রদায় যে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল ৭১ সালে তার একটা সফল পরিসমাপ্তি ঘটায় ছাত্রসমাজের ঘরে ফিরে যাবার কথা ছিল।কিন্তু এখনো বাংলার ছাত্রসমাজ রাজপথেই আছে যদিও তার বিকৃতরূপ আমরা দেখছি।একথা সত্য যতদিন গণতন্ত্র স্থায়িভাব পাবেনা ততদিন ফেরার সুযোগ নাই কিন্তু জাতিয় রাজনিতির কর্দমাক্তরূপের মধ্যেই ছাত্রসম্প্রদায়ের মৌলিকত্ব হারিয়ে যাচ্ছে যদিও আদর্শিক ছাত্ররাজনীতি তার মৌলিকতা ধরে রাখতে পেরেছে।

সম্ভবত আইয়ুব খানের শাসনামল থেকেই শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসের সূচনা হয়। ওই সময়ে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এনএসএফ) নামে একটি ছাত্রসংগঠন গঠিত হয়। আইয়ুবের মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও গণতন্ত্রের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলন নস্যাৎ করার লক্ষ্যেই এই সংগঠনের জন্ম। এনএসএফ-এর ক্যাডাররা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিশেষ করে দেশের প্রধান শিক্ষাঙ্গন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। সন্ত্রাসের রাজনীতির প্রথম শিকার হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনএসএফ-এর সন্ত্রাসী ক্যাডার সাইদুর রহমান ওরফে পাঁচ পাত্তুর। ১৯৬৮ সালে সে নিহত হয়। এর আগে এধরনের হত্যাকান্ড ঘটে ১৯৪২ সালে। ওই সময়ে এক সাম্প্রদায়িক উন্মত্ততায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রনেতা নাজির আহমদ নিহত হন। একই সময়ে আমেরিকার শিক্ষাঙ্গনে সহিংস ঘটনার রেকর্ডের সঙ্গে তুলনা করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২ বছরের ইতিহাসে দুটি খুনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, আমেরিকার অধিকাংশ শিক্ষাঙ্গনের চেয়ে এদেশের শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ ভাল ছিল। (শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা -সিরাজুল ইসলাম-বাংলাপিডিয়া)

১৯৬৯ সালে ঘটে আরেক লোহমর্ষক হত্যাকান্ড।ঐ সালের ১২ আগস্ট ছাত্রমৈত্রি,ছাত্রইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলার শিকার হন ছাত্রসংঘ নেতা আব্দুল মালেক।তিনি ঢাবির টিএসসিতে এ দিন ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার উপর যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।১৫ আগস্ট তিনি মারা যান।

১৯৭৩ সালের পর দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। পাকিস্তানি শাসনের অবসান এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ছাত্রকর্মীদের প্রত্যাবর্তনের পর নতুন করে ছাত্রদের মধ্যে রাজনৈতিক ও আদর্শগত মেরুকরণের ফলে শিক্ষাঙ্গন দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও সহিংসতার ক্ষেত্রে পরিণত হয়।১৯৭৪ সালের ৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হলে সংঘটিত হয় সাত জন ছাত্র হত্যার মতো নারকীয় ঘটনা। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরিণ কোন্দলে ঐদিন মুহদিন হলের টিভিরুম রক্তাক্ত হয়েছিল।ব্রাশফায়ার আর বোমায় ঝাঝরা হয়েছিল সাতটি মুখ।এর পর থেকে শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতার রাজনীতি চলতে থাকে অবাধ গতিতে। ১৯৯৩ সালে নিউইয়র্ক টাইমস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশ্বের সর্বাধিক সংঘাতপূর্ণ শিক্ষাঙ্গন’ বলে চিহ্নিত করে।

জিয়াউর রহমান শাসনামলে ছাত্ররাজনীতির এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়াস লক্ষণিয়।মেধাশক্তির বিকাশের জন্য দেশের মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে নৌবিহারের আয়োজন করেন।

১৯৮২ সালে এরশাদ শাসনামলে মজিদ খান শিক্ষাকমিশনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলে।বিতর্কিত এ শিক্ষানিতি বাতিলের জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদি মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন জাফর,জয়নাল,দিপালি।

১৯৮২ সালের ১১ মার্চ রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে এক নির্মম ঘটনা।শিবিরের নবাগত সংবর্ধনায় ছাত্রমৈত্রি,ছাত্রইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় নিহত হন শিবিরের সাব্বির,হামিদ,আইয়ূব,জব্বার।ঐদিন লোহার রড,পাইপগান,দা-কিরিচ দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় সাব্বিরকে।ইটের উপর মাথা রেখে আরেকট ইটের আঘাতে মাথা থেকে মগজ বের করে দেয়া হয় আব্দুল হামিদের-যা ঐ সময়ের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

গত ৪০ বছরে শুধুমাত্র রাবিতে খুন হয় ২৯ জন।এর ১৫ জন শিবিরের যারা প্রতিপক্ষের জিঘাংসু মনোভাবের শিকার হন।৪ জন ছাত্রদল,২ জন ছাত্রমৈত্রি,১ জন ছাত্রইউনিয়ন ও ২ জন ছাত্রলীগের রাজনিতির সাথে জড়িত ছিলেন(এ পরিসংখ্যান ২০১৩ সাল পর্যন্ত)।এরপরে আরো বেশ কয়েকজন ছাত্রনিহত হন।

আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে রাবিতে ফারুক হত্যাকান্ড হয়।শিবিরের উপর দোষ চাপিয়ে সারাদেশে চিরুনি অভিজান পরিচালিত হয়।এ অভিযানে পুলিশ শিবিরনেতা হাফিজুর রহমান শাহিনকে তার বাড়িতে মাথায় গুলি করে হত্যা করে।২০০৯ সালের ১৩ মার্চ ছাত্রলীগ খুন করে রাবি শিবির সেক্রেটারি শরিফুজ্জামান নোমানিকে।অদ্যাবধি রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক মৃত্যুপুরি।

চট্রগাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত খুন হয় ১৮ জন।চবিতে প্রথম হত্যাকান্ড ঘটে ১৯৮৮ সালের ২৮ এপ্রিল।এদিন সর্বদলিয় ছাত্রঐক্যের হামলায় নিহত হন পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র আমিনুল হক।তিনি শিবিরের রাজনিতির সাথে জড়িত ছিলেন।সর্বশেষ আমানত হলে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন শিবিরনেতা মামুন হায়দার।চবিতে শিবিরের ৯ জন,ছাত্রলীগের ২ জন, ছাত্রদলের ২ জন,ছাত্রমৈত্রি ও ইউওনিয়নের রাজনিতির সাথে জড়িত ১ জন করে মারা যান।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোবায়ের নামের এক ছাত্র ছাত্রলীগের বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।

শাবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের সুমন দাস নামের এক কর্মি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারা যান।ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে সে মারা যায়।শাবিতে এর আগে লিটন হত্যাকান্ড হয় ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে।১৯৯৮ সালে নামকরণবিরুধি আন্দোলনে বিডিআরের গুলিতে মারা যান শিবির কর্মি আব্দুল মুনিম বেলাল।

বুয়েটের সাবিকুন্নাহার সানি হত্যা হয় ৪ দলিয় জোট আমলে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে গুলি বিনিময়ের সময়।এ ঘটনা তৎকালীন সময়ে ব্যাপক নিন্দার ঝড় তুলে।

সাম্প্রতিকতম কালে ২০১৬ সালের ১১ জানুয়ারি ব্রাম্মনবাড়িয়ার ইউনুসিয়া মাদ্রাসার ছাত্র মাসুদুর রহমানকে ছাত্রলীগ গুলি করে হত্যা করে বলে পত্রিকান্তরে প্রকাশিত।

নাজিমুদ্দিন সামাদ ও তনু হত্যাকান্ড ঘটে হাল আমলে।

কিশোর সোহান নামক শিবির কর্মিকে পুলিশ গুম করে হত্যা করে।

অতিসম্প্রতি অসুস্থ শিবির নেতা হাফিজুর পুলিশ হেফাজতে মারা যান।

ছাত্ররাজনীতি ও ছাত্রলীগ:

বর্তমান সরকারের প্রায় চার বছরে দেশের বিভিন্ন শিাপ্রতিষ্ঠানের ২৩ জন মেধাবী ছাত্রকে খুন করেছে ছাত্রলীগ, তার মধ্যে ৯ জনই ছাত্রশিবির নেতা-কর্মী। ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান নোমানীকে হত্যার মধ্যে দিয়ে ছাত্রলীগ খুনের কার্যক্রম শুরু করে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৮ ফেব্র“য়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে রক্তয়ী সংঘর্ষে দুই শিবিরকর্মী প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুজাহিদ এবং ইংরেজি শেষ বর্ষের ছাত্র মাসুদকে খুন করে ছাত্রলীগ। এছাড়া ২০১০ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মহিউদ্দিন, ২০১০ সালের ২৮ মার্চ মার্কেটিং বিভাগের হারুন অর রশিদ কায়সার, ১৫ এপ্রিল হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আসাদুজ্জামানকে খুন করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সবচেয়ে বেশি ছাত্রকে খুন করা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রশিবিরের ওপর ছাত্রলীগের হামলা এবং ছাত্রলীগের দু’গ্র“পের সংঘর্ষে বর্তমান সরকারের মেয়াদে নিহত হয়েছেন ৩ জন ছাত্র। ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ ছাত্রলীগের পৈশাচিকতায় নিহত হন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান নোমানী। ২০১০ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী (ছাত্রলীগের দাবি) ফারুক হোসেন। ১৫ আগস্ট নাসিম এবং ১৬ জুলাই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী সোহেল। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০ সালের ২ ফেব্র“য়ারি ছাত্রলীগ-পুলিশের সংঘর্ষে নির্মমভাবে খুন হন নিরীহ ও মেধাবী ছাত্র আবুবকর। ৮ জানুয়ারি নিহত হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী ও ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ। ২০০৯ সালের ৩১ মার্চ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ওরফে রাজীব, ২০১০ সালের ১২ জুলাই সিলেট এমসি কলেজে ছাত্রলীগ কর্মী পলাশ, ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদল নেতা চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবিদুর রহমান। ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রমৈত্রীর সহ-সভাপতি রেজানুল ইসলাম চৌধুরী, ২১ জানুয়ারি পাবনা টেক্সটাইল কলেজের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী মোস্তফা কামাল শান্ত, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ নিহত হন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাইসুল ইসলাম রাহিদ। সর্বশেষ ২০১২ সালের ১২ মার্চে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবদুল আজিজ খান সজীবকে খুন করে ছাত্রলীগ(সাপ্তাহিক সোনারবাংলা,১৬.১১.২০১২)

‘তিন দশকব্যাপী শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা’ শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত (৪ মে ২০০১) একটি জরিপে দেখা গেছে যে, ১৯৭৪ সাল থেকে তিন দশকে শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতায় খুন হয়েছে ১২৮ জন, মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে ৪২৯০ জন। নিহতদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭২, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ জন। উল্লেখযোগ্য সবগুলো ছাত্রসংগঠন ভয়াবহ এই সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আসলে কোন সংঘর্ষজনিত ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়।জাতিয় রাজনীতির সংকীর্ণ রূপই মূলত এজন্য দায়ি।ছাত্ররাজনিতি এখন মেধার পরিবর্তে পেশিনির্ভর হওয়ার কারণে -ছাত্রসমাজের দাবিদাওয়া আদায়ের পরিবর্তে টেন্ডারবাজি,দখলবাজি এখন এর মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।এথেকে বের হয়ে আসা দরকার।ছাত্রদের দাবি আদায়ই হোক ছাত্ররাজনিতির লক্ষ্য।আদর্শনির্ভর,সুকুমারবৃত্তি,মেধার চর্চাই হতে পারে এর উত্তরণের উপায়।নতুবা এভাবে ছাত্রের লাশ বহনে একসময় বাংলাদেশ অক্ষম হয়ে পড়বে।আহমদ সফা যেভাবে বলেছিলেন-কার রক্ত বেশি গুরুত্বপূর্ণ? প্রশ্ন থাকল বাংলাদেশের প্রতি।

বিষয়: বিবিধ

২৪৩১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

371632
১০ জুন ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:৪৪
শেখের পোলা লিখেছেন : আর এখন রীতিমত হত্যার মহড়া চলছে ঘরে বাইরে সর্বত্র। এই হল স্বাধীন সোনার বাংলা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File