রামাদান : আমাদের করণীয় এবং বর্জনীয়

লিখেছেন লিখেছেন তামান্না তানহা ৩০ মে, ২০১৬, ০৭:৪৬:৫২ সন্ধ্যা

আহলান সাহলান, মাহে রামাদান। সবাইকে মাহে রামাদানের শুভেচ্ছা। রামাদান সংযমের মাস। আরবি চন্দ্র মাসের অন্য যে কোন মাসের চেয়ে এ মাসের গুরুত্ব সর্বাধিক। এমাসেই পবিত্র মহাগ্রন্থ আল- কুরান মাজিদ নাযিল করা হয়েছে। এমাসে এমন একটি মহিমান্বিত রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সুতরাং এই ফযিলতময় মাসে আমাদের সবোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে হবে। রোযা রেখে মিথ্যা কথা বলা পরিহার করতে হবে। হাদিসে এসেছে, আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই (বোখারী শরীফ)। যাবতীয় ফাহেশা কাজ, ঝগড়া করা থেকে সবোচ্চ বিরত থাকতে হবে। হাদিসে এসেছে, ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢাল স্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। কেউ যদি তাঁকে গালি দেয় অথবা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন সায়িম। যার কব্জায় মুহাম্মদের প্রান, তাঁর শপথ! সায়িমের মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মিসকের গন্ধের চাইতেও সুগন্ধি। সায়ইমের জন্য রয়েছে দূ’টি খুশী যা তাঁকে খুশী করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে তাঁর রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র বিনিময়ে আনন্দিত হবে (বোখারী শরীফ)। পবিত্র এমাসে বেশি বেশি করে মহাগ্রন্থ আল কুরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে, নফল নামায ও দান- সদকার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করতে হবে।পবিত্র কুরানের অনুবাদ/তাফসীর পড়ার চেষ্টা করতে হবে।যাতে করে আল্লাহর নির্দেশনাবলী পরিষ্কার করে বুজতে পারি এবং সে মোতাবেক আমল করতে পারি। ইফতার সমর্পকে হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে , রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : লোকেরা যতদিন যাবৎ ওয়াকত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে (বোখারী শরীফ)। কিছু কিছু লোক কে দেখা যায়, নানা রকম বাহারী আয়োজনের পসরা সাজিয়ে বসে, এবং এত বেশি পরিমানে খায় যে, খাওয়ার পর শরীর আর সায় দেয় না তারাবীহ পড়তে, অলস হয়ে পড়ে। নিজে শুধু ইফতার করলে হবেনা, প্রতিবেশী/গরীব লোকদের ও ইফতারের খোজ খবর নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগীতা করতে হবে। কিছু কিছু লোক সেহরী খেয়েই শুয়ে পড়ে, ফযর নামাজ আর পড়া হয় না। আবার কিছু লোকতো রোযাই রাখে না। আমরা কি পারিনা বার মাসের মাত্র একটি মাস একটুখানি কষ্ট করতে? রামাদানের গুরুত্ব সংক্রান্ত একটি হাদিস দিয়ে শেষ করবো, খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) সাহল (রাঃ) থেকে বর্নিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতে রায়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাঁদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তাঁরা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাঁদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে (বোখারী শরীফ)। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে পুরো রামাদান মাসে ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ার, তারাবীহ পড়ার, কুরান পড়ার এবং পুরো রামাদান মাসে রোযা রাখার তাওফীক এনায়েত করুন। (আমিন)

বিষয়: বিবিধ

১২৬৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File