বিজয়ীর জবানবন্দি ও গণতান্ত্রিক উল্লাস
লিখেছেন লিখেছেন আরাফাত আমিন ০৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৫:৪৫:০৬ বিকাল
ভাই,আমি একটা মেয়েকে ধর্ষন করেছি।
মেয়েটার চিৎকারে অনেক মানুষ ছুটে এসেছিল।তাদের হাত-পা ভেংগে দিয়েছি,কতগুলারে গুম করেছি আর কতগুলা আছে জেলে।
আমার কাজে বাধা,কত্তবড় সাহস এদের!আমি সন্তান উৎপাদনের 'মহান চেতনা' ধারণ করে এই রেপ করছি!এদেশে চেতনা সম্পন্ন একটা প্রজন্ম উপহার দিতে জাতির জন্য এই রেপ ছিল আমার অবশ্যই কর্তব্য! তাছাড়া আমার বংশের সংবিধান রক্ষার জন্য এই রেপের কোন বিকল্প ছিল না!
আজ আমাদের বিবাহবার্ষিকী।রেপ দিবস পালন করাটা খারাপ দেখায়-তাই এই নামকরণ।আমার লোকজন ভাই-বেরাদর রা আজ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আমার বিবাহবার্ষিকী পালন করবে।তারা আজ সারাদিন বিয়ের সুফল,নতুন প্রজন্মের উৎপত্তি ও তাদের মাঝে চেতনা প্রসারে বিয়ের ভূমিকা,বিয়ে নাকি উন্নয়ন এইসব বুঝাবে এলাকাবাসীকে।কারণ এলাকাবাসী ও মানুষের মনে এখনো তিনবছর আগের সেই 'ধর্ষনের ক্ষত' দগদগে আছে! সেই ক্ষত সারিয়ে তুলতে এই বিয়েবার্ষিকী পালনের কোন বিকল্প নেই!
ইতিমধ্যে আমার সেই সুকর্মের ফসল হিসেবে অসংখ্য সন্তান জন্মলাভ করেছে।যারা আজ আমার গুনগায়।তাদেরকে আজ দিয়েছি প্রচারণার দায়িত্বে।আমি আশাবাদী তারা আমার বাবার করা ধর্ষনকে যেভাবে বিবাহ বলে চালিয়ে দিয়েছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তেমনি আমার টাও তারা জায়েজ বানিয়ে ফেলবে।কারণ প্রচারেই প্রসার।আর যারা আমার বিয়েবার্ষিকীতে 'রেপ দিবস' কিংবা 'হত্যা দিবস' পালন করবে তাদের প্রতিহত করা হবে।তাদের লজ্জা-শরম বলে কিছু নেই,তাই এলাকাবাসী তাদের সাথে নেই।আমার অনেক লজ্জা-শরম,তাই জনগন সব আমার সাথে।জনগন কে সাথে নিয়েই তাদের প্রতিহত করা হবে!
তাই বলি কি ভাই,আপনিও আসুন না।আমার বিয়েবার্ষিকীর দাওয়াত খেয়ে যান।তবে বউ দেখতে চাইবেন না যেন,কারণ আগে ঘরবাড়ি উন্নয়ন ও চেতনার বাস্তবায়ন,পরে বউ!
এখন আবার উন্নয়ন দেখতে চাইবেন? অই যে দেখেন-মহাসড়ক,লাল নীল রংগের বাত্তি!!দেখছেন?আরে ভাই,অইটা না।অইটা তো ভারত বর্ডার-তার আগে দেখেন!!
অনেক বকেছিস,এইবার থাম।এত বকতে পারে ছেলেটা!
থামিয়ে দিলাম।কুয়াশামোরা চাদের আলোয় ছাদে বসে শীতে কাপছে সে।আমার পাশের ফ্ল্যাটে নতুন এসেছে।সারাক্ষণ শুধু বকেই যাচ্ছে!
নাম স্বৈরাচার দাস।ছেলেভাল-একদম মিথ্যা কথা বলেনা,এই খালি একটু নরেদ্র মোদীর ভক্ত আর কি!!
বিষয়: রাজনীতি
১১৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন