দায় স্বীকারের পোস্টমর্টেম

লিখেছেন লিখেছেন আরাফাত আমিন ২১ মে, ২০১৬, ০৭:০৮:৩২ সন্ধ্যা

দেশে এখন কোন একটা খুন বা কিছু একটা হলেই শুরু হয় দায় স্বীকার কাহিনি।এই দায় স্বীকার নিয়া আমার একটা কৌতুহল আছে,খুনি বা অপরাধী কেন স্বেচ্ছায় দায় স্বীকার করে?এই জিনিস টা আমার মাথায় ঢুকে না!এতে খুনির লাভ টা কি?এরা কি ঘটনা ঘটার পরপরই অনুতপ্ত হয়ে যায়! 'আবেগে কাইন্দালচি’ পরিস্থিতি দেখা দেয়!

এটা অনেকটা 'ক্রসফায়ার' বা 'এনকাউন্টার' এই দুটা টার্মের মতই বর্তমান জমানায় ব্যপক জনপ্রিয়।

এই জনপ্রিয়তা কেমনে পাইলো,খোজ লাগানো দরকার।লেইঞ্জা ধইরা দিলাম টান।

প্রথমেই জানলাম, দায় আবার সরাসরি কেউ স্বীকার করেনা,'সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ' নামে একটা ওয়েবসাইট আছে এনারা দায়স্বীকার কে করল এদের খুজে বের করে! লেও ঠেলা,এনেও দেহি দালাল আছে!

অনেকগুলো বড় বড় ঘটনার দায় স্বীকার কাহিনীর নিউজ অনুসন্ধান করলাম।

বড়ই আজিব এ তামাশা।সব জায়গায় দেখি নিউজের হোতা এরা।এরাই মিডিয়াতে এত সুন্দর একটা দায় স্বীকার মেগাসিরিয়াল চালু রাখছে!

এইকাজ করেই যদি হেতেরা ইন্টিলিজেন্স হয়,তাইলে এখন 'সাইট গাধা গ্রুপ' নামে একটা ওয়েবসাইট দরকার যারা এই ইন্টিলিজেন্সদের কার্যকলাপ মনিটরিং করবে!

ভয় পাবেন না!

সরাসরি না,ওয়েবসাইটে।

ওয়েবসাইট এখন খুনিরাও চালায়, ইন্টিলিজেন্সও চালায়!

কেমন হত,খুনটাও যদি ওয়েবসাইটে করা যেত!

প্রত্যেক টা খুনির একটা ইউনিক ইউজার আইডি থাকবে।যাতে লগইন করে হুমকি ধমকি সেন্ড করতে পারবে! বুলেট কিংবা চাপাতির স্ক্যানকপি ফরোওয়ার্ড করবে।খুন শেষে ম্যাসেজে কনফার্মেশন আসবে,'ইউর অপারেশন সাকসেসফুলি কমপ্লিটেড।'

তো এই গোয়েন্দাদের আমাদের গোয়েন্দারা কিভাবে দেখে,চলুন দেখি।

পঞ্চগড়ে পুরোহিতকে গলা কেটে হত্যায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) জড়িত বলে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ যে তথ্য দিয়েছে তাকে মনগড়া বলে মন্তব্য করেছেন কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) প্রধান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

এসময় তিনি বলেন, 'আমেরিকা ভিত্তিক ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। সাইটের প্রকাশিত তথ্যের সঙ্গে আসামীদের দেওয়া তথ্যের কোনো মিল থাকে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মনিরুল বলেন, সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ তাদের নিউজগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। আমেরিকায় বসে তারা শুধুমাত্র কথিত আইএসের তথ্য পায়।

তিনি বলেন, সাইট ইন্টেলিজেন্স কথিত মনগড়া খবর পায়। কে বা কাদের স্বার্থে মনগড়া তথ্য সরবারাহ করে। এসব তথ্য দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এ সাইটটি এর আগেও মনগড়া খবর প্রকাশ করেছে। '

আর কিছু বলা লাগবে? বুঝেন তাইলে অবস্থা।এদের তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে ইরাক,আফগান আর লিবিয়ায় হামলা হয়!

জামাত শিবির রিমান্ডে যায়,থুক্কু মইরে যায়!

এই সাইট টা কে চালায় জানতে খুব মন চাইল,গেলাম উইকিপিডিয়ায়,যা পেলাম তাতে আমি সন্তুষ্ট!

SITE Intelligence Group is a for-profit Bethesda, Maryland-based company that tracks online activity of White supremacist and Jihadi organizations.From 2002 to 2008, SITE Intelligence Group was known as the Search for International Terrorist Entities (SITE) Institute. SITE is led by the Israeli analyst Rita Katz.

শেষ লাইনটা দেখে মজা লাগল! ওমা,এদেখি আমাদের বেহাই বাড়ির লোকজন!(বিজ্ঞানীর শ্বশুর বাড়ির লোকজন তো আমাদের বেহাই লাগে,তাই নে!)

এবার আসেন দেখি এদের ক্লায়েন্ট কারা!

এদের মূল ক্লায়েন্ট বিবিসি,সিএনএন,প্রথম আলো,একাত্তর টিভি,এটিএন এর মত খামারিরা।অন্যদের পয়সা খরচ করে কিনতে হলেও,এরা বিনামূল্যে খবর গিফট পায় শর্তসাপেক্ষে।কি সেই শর্ত?

১.প্রাপ্ত নিউজের সাথে পানি মিশাতে হবে(এইজন্য এদের খামারি বলছিলাম)।

২.বানানো নিউজ ব্রেকিং নিউজে দিতে হবে।

৩.অই পানি মিশ্রিত নিউজের উপর লাইভ কাভারেজ টক শো করতে হবে।

৪.যেহেতু এরা তথাকথিত আইএসের খবরই বেশি পায়,তাই সেই টক শো গুলাতে ইসলাম বিদ্বেষীদের রাখতে হবে।

৫.টানা কয়েকদিন মিথ্যার উপর মিথ্যা দিয়ে এর পক্ষে জনমত তৈরি করতে হবে।

এইবার আসেন দেখি প্রকৃত অবস্থা কি?

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের বলেন,

সাম্প্রতিক সময়ে যে ৩৭টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ২৫টির সঙ্গে সরাসরি জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) জড়িত। আর আটটির সঙ্গে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এবং বাকি চারটির সঙ্গে অন্যান্য জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন জড়িত। এসব ঘটনায় আইএসের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

হায় হায়,কয় কি!তাইলে এতদিন যে শুনলাম আইএস!

আইএস গেল কই?

মোরাল অব দ্যা স্টোরি কি?

দায় স্বীকার শুনলেই তোরা করিসনে ভয়,আড়ালে তার বাটপারি আছে!

এতো গেল এক সাইট ইন্টিলিজেন্সের আইএস তেলেসমাতি , অভিযুক্ত বাকিগুলা অনুসন্ধান করলে কি যে পাওয়া যাবে আল্লাহ মালুম!

একটা কথা জেনে রাখুন।

দেশের উপর তিন শকুনের ছায়া পড়েছে।এদের আনাগোনা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।কিছু একটার ঘ্রান তো পাইছে!

যুদ্ধাপরাধী শেষ!

কানে ধরে এসে গেছে-

জংগিবাদ,সাম্প্রদায়িকতা আর সংখ্যা লঘু নির্যাতন!

কাগুজে শব্দ!থিওরিটিকাল!

আর প্রাক্টিক্যাল-

সংখ্যাগুরু নির্যাতন! (উইথ আউট দায়স্বিকার)

বাদ পড়ল অবজেক্টিভ-

বোকা ছেলে,এখনো বুঝে নাই,ধর্মনিরপেক্ষতা বাস্তবায়ন!

চলছে, চলবে!

বিষয়: বিবিধ

১১০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File