বৃষ্টি বিলাস

লিখেছেন লিখেছেন অন্তিম পথের যাত্রী ১৪ মে, ২০১৬, ০২:১৬:২৩ দুপুর

ছোট ছোট পায়ে.

লাল রং এর ছাতা টা নিয়ে.

খোলা রাস্তায় এসে ছাতাটা সরিয়ে উপরের দিকে

তাকানো টা.

এখন নিত্য সঙ্গী তার।

সাথে হাত পেতে.

বৃষ্টির অস্তিত গায়ে মাখতে ভিষন পছন্দ পিচ্চি

টার।

যেদিন বৃষ্টিরা তুমুল নাচানাচি করে.

হয়তো সেদিন

ছেলেটা বন্ধি থাকে,

মায়ের আচল এর তলে।

সেদিন বন্ধ দরজাটা ভেদ করে

বৃষ্টির সঙ্গী হওয়া.

তার জন্য একপ্রকার আকাশ কুসুম.।

তাই হয়তো রোদ মুখে নিয়ে বেলা অবেলায় পিচ্চি

টা

ছাতা নিয়ে ঘুরে.

আর গম্ভীর মুখে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে .।

চোখের সামনে যখন ই ঘাসফড়িঙ এর উড়াউড়ি দেখে।

সব ভুলে আবারো ঘাসফড়িঙ এর পেছনে ছুটে...।

বর্ষন মুখর দিনগুলোতে,

জানালার গ্রীল ধরে.

বন্দি কয়েদীর মত.

চোখভরা স্বপ্ন নিয়ে ঘাসের ডগায় অবাক চাহনি.

প্রথিকের চোখ এডায় না কখনো।

অনেকে হয়তো পিচ্চি বা বাবু বলে ডাক ও দেয়,

তবু ও দৃষ্টি হারায় না তার একটুও..।

হয়তো বাদলঝরা দিনে ঘাসফড়িঙ গুলোর শুন্যতা

ব্যাকুল করে তাকে।

পাহাড়ীজনপদের বৃষ্টি মানেই..

মাটি আর পানির অবাধ সখ্যতা।

আর ঢালুর পথে অন্তিম যাত্রা.

যার শেষ ঝিরি বা নদীর মোহনা,

সেই লাল মাটির মিশ্রনময় পানিগুলো ও চোখ এড়ায়

না তার,

ছেলে টাকে দেখলে ভীষন কষ্ট হয় আমার।

মনে হয়

কোন একদিন

মুক্তমনে ঘুরে বেড়াবে সেই ছেলেটি,

শীত বর্ষা. কিংবা প্রখর রোদে মুখরিত গ্রীস্মে।

দুপুরের অফিস ফেরত বাস টা যেই

আমতলার বাসস্টপেজ এ থামে.

বাধ ভাঙ্গা আনন্দ আর উচ্ছাস.

ঘটা করে সাপ্তাহে.

দু তিন দিন এই সময়টাতেই বন্ধি থাকে.।

বৃষ্টি গায়ে মাখাটা ওভাবে হয়ে উঠে না আর.

সে তখনো.

দূর আকাশে বৃষ্টির নিশানা খোজে.

বাবার হাতে হাত রেখে.

হঠাৎ একদিন।

মুশলবৃষ্টিতে জানালাটা ফাকা.

বাড়ির সদর দরজাটাও খোলা.

যদিও আজ একটু ব্যতিক্রম।

হয়তো এটা মন থেকে মানতে পারিনি মোটেও.

প্রশ্ন একটাই.

ব্যাকুলতার শেষ ও ওখানে.

কই গেলো পিচ্চিটা??

পেছনের বারান্দায়, তাকিয়ে।

নিজেকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছি না..!

সত্যিই দেখছি ...?

না ঘুমের ঘোরে আছি.

পাহাড় ঘেরা মাঠের এক কোনে.

জমে থাকা পানিতে.

লাফালাফিতে ব্যাস্ত.

আর পাশে জমা করে রাখা কৃষ্নচুড়ার,

লাল পাপড়ি আর সফেদ কাঠগোলাপ এর

একগুচ্ছ সৌন্দর্য,

জিন্স এর হাফপেন্ট. আর হলুদ গেন্জির ছোট্ট শরীর

টা।।

কতটা আনন্দের বন্যা ছুয়ে গেছে তাকে,

তুমুল বাতাশে খোলা ছাতাটার দিগ্বিদিক

ছোটাছুটিই

প্রকাশের কিছুটা ফুলঝুড়ির অন্যতম সংস্কার।

যা খুবই মনে ধরেছে আমার।

সেই দিনগুলো.

যদিও

মেঘে মেঘে কেটে গেছে অনেক বেলা,

আঠারোটা বর্ষা পার করে আজ আবারও,

সেই মাঠ টাতে,

পরিচিত মুখগুলোর ভিড়ে।

নতুন একটা মূখের সামনে.

থমকে যাচ্ছি বার বার,

ভালো করে তাকাতেই,

পুরনো স্মৃতির ঝাঁপি খুলে গেলো।

এই তো সেই ছেলেটা,

হঠাৎ পূর্ব আকাশে বিজলির আনাগোনা।

সাথে আকাশের গর্জন ।

বৃষ্টিও আসি আসি ভাব করছে...

ততক্ষনে ছেলেটা কৃষ্নচুড়ার নিচে..

থমকে দাড়ায়.।

মুখভরা মলিনতাটাও ধীরে ধীরে উদাও হচ্ছে তার.

মেঘের গর্জনে ভেজা কৃষ্ণচুড়ার নিছে দাড়িয়ে

ফেলে আসা দুরন্তপনা আর বৃষ্টির ঘ্রান নিচ্ছে

দু হাত বাড়িয়ে...

বিষয়: বিবিধ

১২১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File