কিছু স্মৃতি কিছু ছবি
লিখেছেন লিখেছেন আলমগীর ইমন ০৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১১:০৯:১৭ রাত
আলমগীর ইমন ||
প্রথম দেখায় ভালোবেসেছি বৃষ্টিকে। লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইড। তবে আমি বুঝতে পারি নি। বৃষ্টিই প্রথম বোঝেছে। কেউ কারো প্রেমে পড়লে মেয়েরাই প্রথমে বোঝতে পারে।
আমি শুধু বুঝতাম এবং জানতাম, বৃষ্টির উপস্থিতি আমাকে বেশ আনন্দে রাখে। বড় বড় চোখ দুটো আর লম্বা চুলগুলো সীমাহীন সুন্দর। হাসিটাও। আর কথার প্রতিটি শব্দ যেন গানের শব্দ। এমন মধুর তার কণ্ঠস্বর।
দেখা হলেই আমি অধিকাংশ সময় চুপচাপ তাকিয়ে থাকি বৃষ্টির দিকে। নিরবে তার চোখের ভাষা খোঁজার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে বসে, "কী দেখছেন?" আমিও "কিছু না" কিংবা "তোমাকে" উত্তর দিয়ে দিই। একটু অন্যদিকে হয়ে মুচকি হাসে। এতে গালে যে ভাঁজ পড়ে তা দেখার জন্যই আমার জন্ম সার্থক ভাবতে ভালো লাগে।
তাকে আমার মনের রাজ্যে রাণী সাজিয়ে কবিতা লিখেছি। একটি-দুটি নয়, অনেকগুলো কবিতা। কবিতাগুলো পড়েছে ঠিক, তবে তার অনুভূতি আমাকে বুঝতে দেয় নি। হয়তো চুপিসারে ডাইরিতে লিখে রেখেছে যতনে করে।
তাকে না দেখে আমি থাকতে পারি না। ছুঁটে যাই যেখানে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যতো ছুঁটতে শুরু করি ততো কমই দেখা হয়। ফোন দিলে- কোচিং, ক্লাস, প্রোগ্রাম, আব্বু-আম্মু ইত্যাদি অযুহাতের শেষ নেই। ফেসবুক কিংবা ইমুতে এক বা দুটি ছবি পাঠিয়ে বলে, "আজ ছবিতে দেখে নেন; আগামিকাল দেখা হবে।" কিন্তু আগামিকালটা সহজে আসে না!
ক্যাম্পাসে যাওয়ার আগে ফোন করে জেনে নিই, সে ক্যাম্পাসে যাচ্ছে কিনা। গেলে আমার যাওয়াও মিস হয় না। অন্যতায় আমিও বাতিল করে দিই ক্যাম্পাসে যাওয়ার প্লান। হঠাৎ একদিন প্রশ্ন করে বসলো, "ক্যাম্পাসে যাওয়া যদি বন্ধ করে দিই, আপনি কী করবেন? আর যাবেন না?" বললাম, "যেতে হবে আমাকে। কারণ সার্টিফিকেটটাও দরকার।"
বৃষ্টি আর নিজ থেকে আমাকে নক করে না! আমি করলেও ঠিক মতো সাড়া দেয় না! সামনা-সামনি হলেও যেনো আমাকে দেখে না! আমি তাকে পরোক্ষভাবে খুব বুঝাতে চেষ্টা করেছি, সে আমার কতোটা জুড়ে আছে। বুঝলো না বৃষ্টি!
তাকে দেখার ইচ্ছে হলে- প্রকৃতি দেখতে ছুঁটে চলা শুরু করি। কথা বলতে ইচ্ছে হলে- কোন বন্ধুকে ফোন দিই কিংবা কোন বিখ্যাত লেখকের বইয়ে হারিয়ে যাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করি। কিন্তু ভুলা তো সহজ নয়। যখন সে চোখের সামনে পড়ে যায় কিংবা মোবাইলে থাকা ছবিগুলো চোখে পড়ে, নিজেকে ধরে রাখতে পারি না। বাম অলিন্দ চিনচিন করে!
মাঝখানে অনেক দিন কেটে গেলো। বৃষ্টি আজ নববধূ সেজে পাড়ি জমিয়েছে এক প্রবাসী ধনকুবেরের হাত ধরে! অকালেই ঝড়ে গেলো আমার অপ্রস্ফুটিত একটি গোলাপ। তাকে ঘিরে স্মৃতিরা এখন ঝলমলে আমার কাছে। আর বৃষ্টির পাঠানো ছবিগুলোও।
বিষয়: সাহিত্য
১৪২৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন