রোজার রুকন, রোজায় যা বৈধ, রোজার মুস্তাহাব ও রোজার মাকরুহসমূহ
লিখেছেন লিখেছেন ইসলাম কিংডম ০১ জুন, ২০১৭, ০৮:০৬:১৩ রাত
অনেকেই কষ্ট করে রোজা রাখে, কিন্তু রোজা কি শুদ্ধ হচ্ছে? রোজার মাসায়েলগুলো জানা না থাকার কারনে হয়ত আপনার রোজা শুদ্ধ হচ্ছে না, তাই রোজার রুকন, রোজায় যা বৈধ, রোজার মুস্তাহাব, ও রোজার মাকরুহসমূহ জানা থাকা দরকার।
রোজার রুকনসমূহ:
প্রথম রুকন: সুবেহ সাদেক উদয় হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজাভঙ্গকারী বিষয় থেকে বিরত থাকা।
দ্বিতীয় রুকন: নিয়ত, অর্থাৎ রোজাদার ব্যক্তি রোজাভঙ্গকারী-বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করার নিয়ত করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল, আর প্রত্যেকের জন্য তাই নির্ধারিত যা সে নিয়ত করেছে।’(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)
রোজার সুন্নত-মুস্তাহাবসমূহ:
১ - সেহরি খাওয়া এবং তা দেরি করে ফজরের আযানের কিছু সময় পূর্বে খাওয়া।
হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘তোমরা সেহরি খাও; কেননা সেহরিতে বরকত রয়েছে।’ (বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)
২ - দ্রুত ইফতার করা,
রোজাদারের জন্য মুস্তাহাব হলো দ্রুত ইফতারকরা। অর্থাৎ সূর্যাস্ত যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হলে সাথে সাথে ইফতার করা। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘মানুষ ভালো থাকবে যতক্ষণ তারা দ্রুত ইফতার করে যাবে।’ (বর্ণনায় আবু দাউদ)
তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব। তাজা খেজুর না পাওয়া গেলে শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার করা। খেজুর বেজোড় সংখ্যায় হওয়া। যদি খেজুর না পাওয়া যায় তবে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করা।
৩ - ইফতারের সময় দুআ করা।
৪ - অহেতুক ও অশ্লীল কথা পরিত্যাগ করা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন রোজারাখবে তখন সে যেন অশ্লীল কথা বর্জন করে, ঝগড়া ও হট্টগোল বর্জন করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হয় তখন সে যেন বলে, আমি রোজাদার।’(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)
৫- বেশি বেশি ইবাদত করা
যেমন কুরআন তিলাওয়াত, আল্লাহর যিকর করা, তারাবির নামাজ পড়া, তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া, লাইলাতুল কদর যাপন করা, ফরজ নামাজের আগে-পড়ের সুন্নতগুলো আদায় করা, দান-সদকা করা, ভালো কাজ সম্পাদনে অর্থ ও শ্রম ব্যয় করা, রোজাদারদেরকে ইফতার করানো ও মাহে রমজানে উমরা আদায় করা; কেননা মাহে রমজানে নেক আমলের ছাওয়াব বাড়িয়ে দেয়া হয়। ইবনে আব্বাস রাযি.
রোজায় যা বৈধ:
১- রোজাদারের জন্য গোসল করা বৈধ।
২ - রোজাদারের মেসওয়াক ব্যবহার করা বৈধ।
যেকোনো সময় মেসওয়াক ব্যবহার করা বৈধ, হোক তা সূর্যে ঢলে যাওয়ার পূর্বে অথবা পরে। হোক তা তাজা অথবা শুষ্ক। তবে মেসওয়াক তাজা হওয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন কন্ঠের নিচে চলে না যায়; কেননা এরূপ হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
৩- আতর ও সুগন্ধির ঘ্রাণ নেয়া রোজাদারের জন্য বৈধ।
৪ - মুখের থুতু ও কাশ গিলে ফেলা বৈধ।
রোজা রাখা অবস্থায় যা মাকরুহ:
১ - কুলি করা ও নাকে পানি দেয়ায় অতিরঞ্জন করা, কেননা এরূপ করলে পেটে পানি চলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এতদসংক্রান্ত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আর নাকে পানি দেয়ায় তুমি অতিরঞ্জন করো, তবে যদি রোজাদার হও।’(বর্ণনায় আবু দাউদ)
২ - যৌনোত্তেজনাসহ চুম্বন করা, রোজাদার ব্যক্তি যদি বীর্যপাত অথবা উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে তবে তার পক্ষে চুম্বন করা মাকরুহ হবে। আর রোজাদার ব্যক্তির উচিত হবে এমনসব বিষয় বর্জন করা যার দ্বারা যৌনাত্তেজনা আন্দোলিত হয়।
রোজার রুকন, রোজায় যা বৈধ, রোজার মুস্তাহাব, মাকরুহ ও রোজাভঙ্গকারী বিষয়সমূহ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত পড়ুন: ••► bn.islamkingdom.com/s2/46725
বিষয়: বিবিধ
৭৫৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইনসুলিন নেওয়া যায় এটা এখন সবাই জানে।
কান চুলকালে কটনবাড ইউজ করা যাবে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন