লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র হলেন সাদিক খান
লিখেছেন লিখেছেন awlad ০৭ মে, ২০১৬, ১০:৫২:২৬ সকাল
লন্ডনের মেয়র নির্বাচিতের মাধ্যমে ইউরোপের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মোট ১৩ লাখ ১০ হাজার ১৪৩ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির জ্যাক গোল্ডস্মিথকে পরাজিত করেন। তিনি গোল্ডস্মিথের চেয়ে ১৩ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছেন।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি প্রার্থী জ্যাক গোল্ডস্মিথের সঙ্গে তার ভোটের ব্যবধান ৩ লাখ ১৫ হাজার ৫শ’ ২৯। গোল্ডস্মিথ পেয়েছেন ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ ভোট
ইউরোপের ইতিহাসে সাদিক খান হলেন প্রথম মুসলিম মেয়র।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত একটানা ভোট গণনা শেষে প্রথম এগিয়ে থাকা প্রার্থী হিসেবে সাদিক খানের প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার প্রদত্ত ভোটের ৪৪.২ শতাংশ হওয়ায় দ্বিতীয় পছন্দের ভোট গণনার প্রয়োজন পড়ে। এ সময় জ্যাক গোল্ডস্মিথের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিলো ৩৫.০ শতাংশ। নিয়ম অনুযায়ী বিজয়ী প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি না পেলে দ্বিতীয় পছন্দের ভোট গণনা করতে হয়।
দ্বিতীয় পছন্দের ভোট গণনা শেষে স্থানীয় সময় মধ্যরাত ১২টা ২২ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৫টা ২২ মিনিট) আনুষ্ঠানিকভাবে সাদিক খানকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। প্রথম পছন্দের গণনায় সাদিক খান পেয়েছিলেন ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৭১৬ ভোট।
দ্বিতীয় পছন্দের ভোট গণনায় তিনি পান আরও ১ লাখ ৬১ হাজার ৪২৭ ভোট।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জ্যাক গোল্ডস্মিথ প্রথম পছন্দ ভোট গণনায় পেয়েছিলেন ৯ লাখ ৯ হাজার ৭৫৫ ভোট। দ্বিতীয় পছন্দের ভোট গণনায় তিনি পান আরও ৮৪ হাজার ৮৫৯ ভোট।
দ্বিতীয় পছন্দের ভোট গণনা শেষে স্থানীয় সময় মধ্যরাত ১২টা ২২ মিনিটে গ্রেটার লন্ডন রিটার্নিং অফিসার জেফরি জ্যাকব আনুষ্ঠানিকভাবে সাদিক খানকে মেয়র ঘোষণা করেন। ঘোষণার সময় মঞ্চে সাদিক খান ও জ্যাক গোল্ডস্মিথসহ অন্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিজয়ী ঘোষণার পর এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় সাদিক খান তাকে নির্বাচিত করতে ভূমিকা রাখায় সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে তার প্রয়াত বাস ড্রাইভার বাবাসহ মা, স্ত্রী ও সন্তানের কথাও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, আজ বাবা বেঁচে থাকলে দেখতেন তার সন্তান লন্ডনের মেয়র হয়েছে।
এদিকে সাদিক খানের বিজয়কে তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী টোরি পার্টির নোংরা বর্ণবাদী অপপ্রচারের জবাব হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
লেবার নেতা জেরিমি করভিন বলেছেন, সাদিক খানের বিরুদ্ধে টোরি পার্টির বর্ণবাদী অপপ্রচার বিজয় ছিনিয়ে আনতে লেবার পার্টিকে সাহায্য করেছে।
উল্লেখ্য, ধর্মসহ বিভিন্ন ইস্যু সামনে নিয়ে বিরোধীদের ব্যাপক ব্যক্তিগত আক্রমণ মোকাবেলা করেই নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চালাতে হয়েছে সাদিক খানকে। নির্বাচনে সাদিক খানের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে বিরোধীরা বর্ণবাদী অপপ্রচার শুরু করলে স্বয়ং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এ প্রচারণার সমর্থনে অংশ নেন। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সাদিক খানের বিরুদ্ধে তিনি ইসলামিক এক্সট্রিমিস্টদের সঙ্গে প্লাটফর্ম ব্যবহারের অভিযোগ আনেন। সাদিক খানের সমর্থকরা মনে করছেন একমাত্র মুসলমান হওয়ার কারণেই তাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধীদের এ অপপ্রচার। লেবার পার্টির গত সরকারে সাদিক খান ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন।
পাকিস্থানী বংশোদ্ভূত সাদিক খানের বাবা লন্ডনে বাস ড্রাইভারের কাজ করতেন।
এদিকে লেবার পার্টি এবারের মেয়র নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে ৮ বছর পর আবারো সিটি হলে প্রবেশ করলো। এর আগে ২০০৮ সালে কনজারভেটিভ পার্টির বরিস জনসন পরপর দু’বার কেন লিভিংস্টোনকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন।
বিষয়: বিবিধ
১২৪৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন