সাথেই নেয় না কোলে উঠতে চান কেন ?
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ মাসুদ ২১ জুন, ২০১৬, ১০:০২:৫৫ রাত
ক্ষমতাকেন্দ্রীক অপরাজনীতির কারণেই আমাদের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। দেশে রাজনৈতিক শক্তিগুলো পরস্পর বিবাদ-বিসংবাদে লিপ্ত। এক পক্ষ আরেক পক্ষ নির্মূল-উৎখাত করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত। এ কাজটি বিশেষ কোন রাজনৈতিক দল বা শক্তি করছে এমনটা অন্তত আমি মনে করছি না। বরং যারা যখন ক্ষমতায় এসেছে তারাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল-উৎখাত করতে চেয়েছে। কিন্তু তা তো সম্ভব হয়নি বরং এই প্রক্রিয়ার কারণেই আম-জনতায় ভূক্তভোগী হয়েছেন। জাতীয় ইস্যুতে তো কখনো জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি বরং পরস্পর কাঁদা ছোঁড়াছোড়ির মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করা হয়েছে। যা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনকই বলতে হবে।
রাজনীতিকদের দায়িত্বহীনতার কারণে দেশের রাজনীতি এমন ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে যে তা থেকে উত্তরণের আশু কোন সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে না। যারা ক্ষমতায় আছেন তারা তো দেশে কারো অস্তিত্বই স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। আর যারা সরকারের বাইরে রয়েছেন তাদের দৃষ্টিভঙ্গীও ইতিবাচক মনে করার কোন কারণ আছে বলে মনে হয় না। তারা সরকারের সাথে শক্তি-সামর্থে পাল্লা দিতে পারছেন না বলেই মাঝে মাঝে তারা সরকারের কাছে সমঝতার আহবান জানান। বিষয়টি যে ‘ দায়ে পড়ে পায়ে হাত’ তা সরকার পক্ষ ভালভাবেই উপলদ্ধি করতে পেরেছে। তাই এসব ‘ আলতু মিয়ার ফালতু বয়ান’কে আমল দেয়ার মত কোন যৌক্তিকতা তারা খুঁজে পান নি। আর আমল না দিলেও যদি কোন সমস্যা সৃষ্টি না হয় তাহলে দেবেই বা কেন ?
সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গীবাদ নিয়ে সারাদেশে তুলকালাম কান্ড চলছে। সরকার প্রথম দিকে দেশে সংঘঠিত সকল অপরাধ তৎপরতার জন্য জঙ্গীবাদীদের অপতৎপরা বলে আখ্যা দিলেও এখন তারা বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করছে। বলা হচ্ছে এখন যা ঘটছে তার সবকিছুই ঘটাচ্ছে সংসদের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলো। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চুলচেরা বিশ্লেষণও চলছে। অনেকেই এই বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার আহবান জানালেও সরকার তা মোটেই আমলে নেয় নি বা আমল দেয়ার মত গরজও বোধ করেনি। বিএনপির পক্ষেও সরকারের কাছে বারবার এমন আহবান জানালেও তা কোন ভাবেই হিসাবে নেয়নি সরকার পক্ষ।
সম্প্রতি জঙ্গিবাদের কথা বলে দেশের বিরোধীদলকে দমনের চেষ্টা করছে সরকার এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘দেশের জঙ্গিবাদ নির্মূলে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে কনভেনশনের মধ্য দিয়ে একটা জাতীয় প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। তা না হলে ভয়াবহ এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমি ছাত্রদলের এই সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানাতে চাই, অনেক হয়েছে। এনাফ ইজ এনাফ। দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এখন দেশে জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদের নাম করে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের দিকে দেশ যাচ্ছে তাকে বন্ধ করার চেষ্টা করুন। এজন্য সকল রাজনৈতিক দলকে ডেকে কনভেনশনের মধ্য দিয়ে একটা জাতীয় প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’
আসলে মির্জা ফকরুলের আহবানে সরকার সাড়া দেবে বলে মনে করার কোন কারণ আছে বলে মনে হয় না। তার এই আহবান নিষ্ফলা বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, সরকার তো বিএনপির রাজনৈতিক অস্তিত্বই স্বীকার করে না। তারা কোন অস্তিত্বহীন বস্তুর বায়বীয় আহবানে সাড়া দেবে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। সরকার তো বিএনপিকে সাথেই নিতে চায় না। কিন্তু তারা এখন কোলে উঠতে চায় কেন তা নিয়েই তো রীতিমত রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাই মির্জা ফখরুল ‘অরণ্যে রোদন’ না করলেও পারতেন।
বিষয়: বিবিধ
৯৯০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন