জেলা প্রশাসকও যখন নিরাপত্তাহীন
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ মাসুদ ২১ জুন, ২০১৬, ০৪:১৩:৩৯ বিকাল
জন জীবনে এক অনাকাঙ্খিত আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাষ্ট্রের কোন পর্যায়েই শৃঙ্খলা আছে বলে মনে হয় না। এক অশুভশক্তি সবকিছুকেই আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। আর এ আতঙ্ক থেকে বাদ যাচ্ছেন না কোন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। মূলত গোটা জাতিই এখন নিরাপত্তহীনতায় ভূগছে। রাষ্ট্রও মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি দিতে পারছে না। প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছেন মানুষ। ক্রমেই লাশের মিছিল প্রলম্বিত হচ্ছে। যারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত তারাও বোধহয় নিরাপদ বোধ করছেন না। সম্প্রতি পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার স্ত্রী গুপ্তহত্যার স্বীকার হওয়ায় জনমনে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিবার-পরিজনও যদি নিরাপদ না হন তাহলে তারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করবে কিভাবে ? এ প্রশ্ন এখন সর্বমহলে।
সাম্প্রতিক সময়ের নির্বিবাদে গণহত্যার কারণেই জনমনে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। কোন ভাবেই এই গুপ্তহত্যা থামানো সম্ভব হচ্ছে না। সরকার গুপ্তহত্যা বন্ধে ও অপরাধীদের পাকড়াও করার জন্য পুলিশের সাঁরাশি অভিযান চালালেও পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়েছে বলে মনে করার মত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। মূলত অবস্থাটা ‘যথা পূর্বং তথা পরং’। থামানো যাচ্ছে না অপ্রতিরোধ্য চাঁদাবাজীও।
আর এই চাঁদাবাজীর পরিসরটা সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মূলত চাঁদাবাজীর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কোন শ্রেণির মানুষ। সম্প্রতি একজন জেলা প্রশাসকের কাছে চাঁদাবাজরা চাঁদা দাবি করার বিষয়টি গণমাধ্যমের প্রকাশিত হওয়ায় দেশের সচেতন মানুষকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসকে মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে হুমকি দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে খবরে প্রকাশিত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোজাম্মেল হক জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এস আই শফিকুল ইসলাম এ জিডি করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে মোবাইলফোনে হুমকির বিষয় অবহিত হয়ে থানায় এ জিডি করা হয়।
জিডিতে বলা হয়, ০১৮৮২৬২৮২৭৫ নম্বর থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। হুমকিদাতা জেলা প্রশাসককে বলে, আমাদের ৫০ লাখ টাকা দরকার। ৪০ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। আপনি ১০ লাখ টাকা দেবেন। তা না হলে আপনার সন্তানদের হত্যা করা হবে।
একজন জেলা প্রশাসকের মত প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবির ঘটনাকে একেবারে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার কোন সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। যার দায়িত্বে গোটা জেলার নিরাপত্তাসহ সার্বিক দায়িত্ব নিয়োজিত তিনিই যদি চাঁদাবাজদের টার্গেটে পরিণত হন, তাহলে আমাদের মত আমজনতার অবস্থাটা যে কতটা ভয়াবহ তা সহজেই অনুমান করা যায়। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই পশুশক্তির লাগাম টেনে ধরার কোন বিকল্প নেই। আর এজন্য জাতীয় ঐক্য সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। অন্যথায় আমাদের ভবিষ্যত ঘোর তমসাচ্ছন্ন।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৭ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন