বিএনপিকে বাস্তবতা উপলদ্ধি করতে হবে
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ মাসুদ ১৩ জুন, ২০১৬, ০৮:১৮:০০ রাত
নিজের সাধ আর সাধ্য বিবেচনা করেই কর্মপন্থা নির্ধারণ করা উচিত। আর সাধ ও সাধ্যের মধ্যে যদি বিস্তর তফাৎ থাকে তবে তা কখনোই বাস্তবতার মুখ দেখে না। তাই নিজের সাধ্যের বিপরীতে শুধুমাত্র কথামালার ফুলঝুড়ির মাধ্যমে কোন লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব নয়। এ কথা অন্য কেউ না বুঝলেও বিএনপি’র পক্ষে তা ভাল করেই উপলদ্ধি করা উচিত। কারণ, ২০০৬ সালে ক্ষমতা হারানোর পর তারা অনেক কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুধুই ‘লেঙরা মাঝির হুঙ্কার’ ছাড়া তারা জাতিকে কিছুই দিতে পারে নি। তারা ‘সোনার কাঠি ও রুপোর কাঠির’ ছোঁয়ায় সরকার পতনের অনেক গালগল্প জাতিকে শুনিয়েছে। কিন্তু তারা যতই আস্ফালন করেছে, সরকারের ভিত্তিটা ততই মজবুত হয়েছে বলেই মনে হয়েছে। তারা জিয়াউর রহমান আর ধানের শীর্ষ দিয়েই একেবারে কেল্লা ফতেহ করার দিবাস্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু সেদিন আর নেই। ভাগীরথীতে অনেক জল বয়ে গেছে। তাই পুরোনো অস্ত্র এখন অনেকটাই অকার্যকর। আবেগের ব্যবসার দিন অনেক আগেই শেষ হয়েছে।
বিএনপি’র কাছে সরকার পতনের আন্দোলনের অনেক কথায় শোনা গেছে। ঈদের পর সরকার পতনে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে অনেক নর্তন-কুর্দন তারা করছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি। বিষয়টি নিয়ে জনমনে বেশ হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। কৌতুহলীরা তো বলেই ফেলেছেন কোন ঈদের পর আন্দোলন করা হবে তা তো নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। হয়তো কোন এক ঈদের পর জোরদার আন্দোলন হবে, আর সে আন্দোলনের কল্পনার ফানুস তারা উড়াচ্ছেন। কিন্তু বিএনপির কাঙ্খিত ঈদটা যে কল্পলোকের কল্পনাবিলাস তা জনগণের সাথে সরকার পক্ষও বুঝে ফেলেছে। তাই বিএনপির কোন নেতার সরকার বিরোধী বাগাড়ম্বরকে সরকার কোন ভাবে কেয়ার করে বলে মনে হয় না বরং এ নিয়ে সরকারের হাইকমান্ডে এবং মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে চটুল হাস্যরসের সৃষ্টি হয় বলে শোনা গেছে। যাহোক এতে সরকারের শীর্ষকর্তাদের এক ঘেয়েমিটা কিছুটা হলেও কেটে যায়। আর এতে দোষেরই বা কী আছে?
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ‘মার্চ ফর ডেমোক্রিসী’ কর্মসূচী ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বিএনপি’র রথী-মহারথী কাউকেই সেই কথিত ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসী’তে অনুরীক্ষণ বা দূরর্বীক্ষণ কোন যন্ত্র দিয়েই খুঁজে পাওয়া যায়নি। কয়েক দিন আগে বিএনপি নেতা হান্নান শাহ সরকারের পতনে এক সপ্তাহের সময়সীমার কথা বলে বেশ লোক হাসিয়েছেন। যা জনগণ ‘চাপাবাজী’ হিসাবেই আখ্যা দিয়েছে। মূলত বিএনপি নেতাদের এমন বালখিল্যতা সরকারের গায়ে ‘সুরসুরি’ দিতেও সক্ষম বলে মনে হয় না বরং এসব পরাজিতের আর্তনাদ বলেই মনে করে সচেতন মহল।
সম্প্রতি আবারও লোক হাসিয়েছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার সমাজ ও রাষ্ট্রের মানবিক চেহারা হরণ করে নিয়ে এখন মৃত্যুর যন্ত্রণায় ছটফট করছে। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, গণতন্ত্রকে উৎখাত করে গোটা সমাজকেই অধ:পতনের শেষ অধ্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে এই সরকার। অনাচার, পাপ আর অধিকার হরণের বিভৎসতায় সরকার এখন মৃত্যুর যন্ত্রনায় ছটপট করছে।
জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এই অবৈধ ভোটারবিহীন সরকারের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই অপরাজয়ের মনোবল নিয়ে দেশের মানুষ এক তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারের বিদায়ের থার্ড বেল অর্থাৎ তৃতীয় ঘণ্টা বেজে গেছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি নেতাদের এসব কথা শুনতে শুনতে দেশের মানুষ এখন অনেকটাই বিরক্ত। তারা সরকারের বিরুদ্ধে যতই বাগারম্বর করছেন, ততই সরকারের আয়ু বাড়ছে। সরকার তো আগে ১৯ সালের কথা বললেও এখন তো তারা ৪১ সালের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। আর যেভাবে চলতে তাতে মনে হচ্ছে সরকার নয় বরং বিএনপিই এখন মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করছে। তাই বিএনপিকে বাস্তবতা উপলদ্ধি করা উচিত। অন্যথায় তাদেরকে অবশ্যয় কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে হবে। কোন ভাবেই তা রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
বিষয়: বিবিধ
৯৩০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
-বিএনপিকে এই বাস্তবতা উপলদ্ধি করতে হবে
মন্তব্য করতে লগইন করুন