ওবামার হিরোশিমা সফরঃ মার্কিনীদের অনুতাপ ?
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ মাসুদ ৩১ মে, ২০১৬, ০৬:০৩:৫৩ সন্ধ্যা
বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শেষ সময়গুলো বেশ কর্মতৎপরতার মধ্যেই কাটছে বলেই মনে হচ্ছে। অতিসম্প্রতি তিনি কিউবা ও ভিয়েতনাম সফর করে বিশ্ব রাজনীতিতে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন। আর এই সফরগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে দীর্ঘদিনের বৈরিতার পর। তাই প্রেসিডেন্টের এই সফরগুলোকে মার্কিন প্রচলিত রাজনীতির খোলস থেকে বেড়িয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন বোদ্ধামহল। উল্লেখ্য, আগামী নভেম্বরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাচ্ছে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টর কাছে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওবামা আগামী বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে হোয়াইট হাউস ছেড়ে নতুন জীবনে পদার্পন করবেন।
গত এপ্রিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ষষ্ঠ বারের মত পরমাণু অস্ত্র নিরাপত্তা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন। আর এ সম্মেলনের মধ্যমণি ছিলেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ৬ বছর আগেও এই সম্মেলন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখনও এই সম্মেলনের বারাক ওবামায় মধ্যমণি ছিলেন। ফলে মার্কিন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট পরমাণু অস্ত্র বিস্তার বোধ ও পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তায় তার নিজের আন্তরিকতার বিষয়টি যেমন প্রকাশ পেয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষকে এক নতুন বার্তা দিয়েছেন বলেই মনে হয়েছে। তাই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিশ্ববাসীর কাছে একজন করিৎকর্মা মানুষ হিসাবেই পরিচিত হয়েছেন। যা বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসাবে ধরে নেয়া যায়।
বিদায়ী প্রেসিডেন্টের বিদায়ী সফরের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বারাক ওবামা। সম্মেলন শেষেই তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পারমাণবিক বোমা বিধ্বস্ত হিরোশিমা শহরে পৌঁছেন। গত ২৭মে হিরোশিমা থেকে ২৬ মাইল দূরে ইয়াকুনি নৌ বিমান ঘাঁটিতে একটি সামরিক বিমানে তিনি অবতরণ করেন। এ সফরের মধ্য দিয়ে তিনি সাম্প্রতিক সময়ের অতিগুরুত্বপূর্ণ মিত্র জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করলেন বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দাবি করা হয়। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্রের আণবিক বোমা হামলার পর এই প্রথম কোনো ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিরোশিমা সফর করছেন। আণবিক বোমা হামলার সাত দশক পরও এখনো সেখানকার মানুষ সেই বিভিষিকাময় পরিস্থিতির কথা ভুলতে পারেনি। তারা এখনো বহন করছেন বিভিষিকাময় এবং দুঃসহ স্মৃতি। যা বিস্মৃত হবার নয়; হওয়া যায় না।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ওবামা গত ২৭ মে হিরোশিমা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন। ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমা হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। এর আগে তিনি সেখানে পৌঁছালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে তাকে স্বাগত জানান। যুক্তরাষ্ট্রের কোন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের এটি হচ্ছে প্রথম হিরোশিমা স্মৃতিসৌধ সফর। যা ছিল বিশ্ববাসীর কাছে একেবারে কল্পনাতীত।
১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা পারমাণবিক বোমায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এই শহরটি। এরপর আর কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্থানটি পরিদর্শনে যাননি। কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতেও দেখা যায়নি। কিন্তু অতীতের দুঃসহ স্মৃতি ও তিক্ততাকে পেছনে ফেলে জি-সেভেন সম্মেলন শেষ করে জাপানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আইওয়াকুনি থেকে হিরোশিমায় পৌঁছেন ওবামা। সেখানে পৌঁছে তিনি তার সফর সম্পর্কে বলেন, ‘কীভাবে সবচেয়ে বেদনাদায়ক বিভক্তি জোড়া লাগানো যায় এটা তার একটা প্রমাণ।’ তবে এই সফরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইবেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিষয়টি স্পষ্ট করেছে মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহল দাবি করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে ক্ষমতা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও এই সফর যে মার্কিনীদের অনুতাপের ফলশ্রুতি তা বলা যায় অনেকটাই।
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, ওবামা বিমান থেকে হিরোশিমায় অবতরণ করেছেন এবং হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল জাদুঘরে প্রবেশ করেছেন। এরপর সেখান থেকে হেঁটে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের সঙ্গে হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পার্কে যান। তারা সেখানে হিরোশিমায় নিহতদের স্মরণে প্রজ্বলিত শিখার সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে নিহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ওবামা প্রথমে সেখানে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। পরে করেন শিনজো অ্যাবে। এর আগে ওবামা তার হিরোশিমা সফরকে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ হারানো সবার প্রতি সম্মান জানানোর একটি সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেন। গত ১০ মে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজ থেকে জানানো হয়েছিল, ২৭ মে হিরোশিমা পরিদর্শন করবেন তিনি। আর মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ সফর ছিল সে ধারাবাহিকতারই অংশ।
ওবামার প্রেস সচিবের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয় ‘পরমাণুমুক্ত একটি বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেষ্টার অংশ হিসেবে শিনজো অ্যাবের সঙ্গে হিরোশিমায় এক ঐতিহাসিক সফরে যাবেন প্রেসিডেন্ট।’
উল্লেখ্য, বিশ্ব ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়গুলোর একটি জাপানের হিরোশিমা ট্রাজেডি। আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে মার্কিন অসভ্যতার নজির বললেও ভুল হবে না এটিকে। প্রায় ৭১ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর ‘লিটল বয়’ নামের বোমটি ফেলে। তিন দিন পর নাগাসাকি শহরের ওপর ‘ফ্যাঁ ম্যান’ নামের আরেকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ফলে ইতিহাসের ভয়াবহ ধবংসযজ্ঞ ও নির্মম প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। কিন্তু ঘটনার সাত দশক অতিক্রান্ত হলেও এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্মম ঘটনার জন্য বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেনি এবং বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীতে শান্তি, নিরাপত্তা আর মানবাধিকারের কথা বললেও আজ পর্যন্ত স্থানটি পরিদর্শনে যাননি ক্ষমতাসীন কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তাদের ধারণা, স্থানটি পরিদর্শন তাদের অপরাধ স্বীকারের মধ্যে পড়ে যাবে। মার্কিনিরাও হিরোশিমার ঘটনাটিকে ‘প্রয়োজনীয় অপরাধ’ বলে মনে করে। অনুমান করা হয়, ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের ফলে হিরোশিমাতে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার লোক মারা যায়। নাগাসাকিতে মারা যায় প্রায় ৭৪ হাজার লোক। পরবর্তীতে এই দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আরো দুই লাখ ১৪ হাজার লোক। ইতিহাসের ভয়বহতম হত্যাযজ্ঞ ছিল এটি।
ওবামার হিরোসিমা সফরের বিষয়ে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন, ওবামার এই সফরে জাপানীরা তার কাছে যুদ্ধকালীন আগ্রাসনের জন্য ক্ষমা দাবী করতে পারেন। উত্তর কোরিয়ার অব্যাহত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি প্রকল্পের ব্যাপারে ওবামা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি এ বিষয়ে বিশ্বকে জানাবেন, কী কারণে উত্তর কোরিয়াকে অবশ্যই পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। তাদের এই কর্মসূচি অন্যান্য দেশকে মর্মাহত করছে।
জাপানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনএইচকে’কে কয়েকদিন আগে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জাপানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে ওবামা বলেছেন, যেকোন যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সেই সময়ের নেতারা নিয়ে থাকেন, আর তাদের স্বীকৃতি দেয়া আমাদের দায়িত্বও বটে। আর আমার হিরোশিমার সফর মূলত অতীতে ফিরে যাওয়া নয়। এতে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন আণবিক বোমা ফেলার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করা হলো। যদিও পর্যবেক্ষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা দাবি করছেন, সাম্প্রতিক সফরের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অতীত ভুলের আত্মস্বীকৃতিই প্রদান করলো।
ইতিহাসবিদদেরও চাওয়া ছিল হিরোশিমায় যাওয়ার। গত সাড়ে সাত বছর ধরে একজন নেতা হওয়ার পরও এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে আমার অনেক সময় লেগেছে। ওবামার এই কথায় হিরোশিমাবাসীর পাশাপাশি ওবামার নিজ দেশের একদল ইতিহাসবিদ, চলচ্চিত্র পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমা হামলায় আক্রান্তরা বলেছেন, ক্ষমা নয়, বিশ্বে আর কোনও হিরোশিমা-নাগাসাকি তারা দেখতে চান না। তারা বলেন, আমরা আর কালো বৃষ্টি চাই না, এবার নীল আকাশের সবুজ বিশ্ব দেখার সাহস যোগাতে চাই। পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন বিশ্ব গড়ার আশ্বাসের বাস্তবায়ন চাই।
মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠলেও এ পর্যন্ত কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টই তাতে কর্ণপাত করেননি। জাপানে জি-সেভেন সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হিরোশিমা সফরে যান। জাপানীদের দাবী মতো ক্ষমা চাইবেন না বলে তিনি আগেই জানিয়েছেন। এদিকে, এই ক্ষমা কোন সমাধান হতে পারে না উল্লেখ করে পারমাণবিক বোমায় আক্রান্ত শসো মুনেতো বলেন, হিরোশিমাকে মনে রাখা নয়, আমরা চাই হিরোশিমার মতো আর কোন শহর যাতে দ্বিতীয়বারের মতো আক্রান্ত না হয়। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা নয়, আর কখনও যুদ্ধে এ ধরনের ধ্বংসলীলা দেখতে চাই না।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে এনোলা গে নামে একটি বি-২৯ বোমারু বিমান ‘লিটল বয়’ নামের পারমাণবিক বোমাটি নিক্ষেপ করে হিরোশিমা শহরের ঠিক কেন্দ্রে। বিস্ফোরণের পর কেন্দ্রের তাপমাত্রা ছিল ১০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শহরের ৪ বর্গমাইল এলাকা মুহূর্তেই ভস্মীভূত হয়ে মাটিতে মিশে যায়। ১৯৩৯ সালের আগে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, বেলজিয়াম, জাপান উপনিবেশ বিস্তার করেছিল। এরই প্রেক্ষিতে শুরু হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই অপবাদ আর গ্লানি মুছতে গত বছর ৬ অগাস্ট হিরোশিমার সত্তর বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের ভূমিকার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এর কয়েক মাস পর গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন জাপানি সেনাদের জন্য যৌনদাসীদের ক্ষতিপূরণের জন্য ১শ’ মিলিয়ন ডলার দেয়ার ঘোষণাও আসে। জাপান ক্ষমা চাইলেও এককালের শত্রু বর্তমানে মিত্র রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া দাবিটিও দীর্ঘদিনের। কিন্তু মার্কিন প্রশাসন বরাবরই এই ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছেন। আর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট তার পূর্বসূরীদের ধারাবাহিকতায় রক্ষা করলেন।
তবে অতীতের জন্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি ওবামা প্রশাসনের পক্ষে অস্বীকার করা হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক হিরোশিমা সফরের মাধ্যমে তাদের পূর্বের অবস্থানের কিছুটা হলেও পরিবর্তন হয়েছে তা নির্দিধায় বলা যায়। পর্যবেক্ষক মহল এই পরিবর্তনকে অতীত ভুলের আত্মস্বীকৃতি বা মার্কিনীদের অনুতাপ হিসাবেই দেখছেন।
বিষয়: বিবিধ
৯৪১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এরকম উনি উনার প্রথমবারের টার্মে করেছিলেন মরক্কোর আল- আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে । ওবামার আমলে মুসলমানেরা আরও স্টিং অপারেশনের বাটে পড়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের সিরিয়ালে আরও চরিত্র যোগ হওয়ায় সিরিয়ালের পর্বও বেড়ে গেছে।
ইরাকের ৬ লাখ লোক মারা পর বুশ স্বীকার করেছেন তারা যে তথ্য পেয়ে(WMD) ইরাক আক্রমন করেছিলেন তা ছিল ভুল তথ্য । কিন্তু এটাতে কি সেই ৬ লাখ লোক আবার ফিরে আসবে ? স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন করলে কি জাপানের সেই পুড়ে যাওয়া লোকগুলো উঠে আসবে ?
এটা আমেরিকার একটা পলিসি বিশ্ব রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার । কারণ চীন আর রাশিয়া যেভাবে তাকে পাশ কাটিয়ে যেতে শুরু করেছে সেটা ট্যাকল দিতে ভারতের মত আরেকটা বন্ধু চাই তার পাশে ।
'' তোর মত আমি একটা বন্ধু চাই
যে শত থাপ্পড়েও বলবে - হ্যাঁ ....''
জাপানকে আগে খুব শ্রদ্ধা করতাম তাদের প্রবল শ্রমনিষ্ঠার জন্য । মনে হত যে খুব আত্মসন্মানসম্পন্ন জাতি । কারণ এটম বোম খাবার পর নাকি জাপানের জনগন হিরোহিতোর কাছে এসে বলেছিল যে , রাজা আমরা আজ এক পরাজিত জাতি । আমরা কি আত্মহত্যা করবো ? হিরোহিতোর উত্তর ছিল - আমরা যুদ্ধে হেরেছি ঠিকই , কিন্তু তাদেরকে ইকোনমিতে ঘায়েল করবো ।''
সেটা তারা করেছেও । কিন্তু এই আমেরিকার কাজকে কি তারা মনে রেখেছে ? আমেরিকা তো তাদের বন্ধু !
আসলে ব্যবসা ও হালুয়ারুটির ভাগ পেলে শত লাথ্থিগুতাও মধুর মনে হয় ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন