তেলের দাম কমিয়ে গ্যাসে বৃদ্ধিতে কী লাভ ?

লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ মাসুদ ০৮ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:০৮:৪৯ বিকাল



বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দরপতন অব্যাহত থাকলেও আমাদের দেশে জ্বালানী তেলের মূল্য কমানো হয়নি। কারণ, হিসাবে এতদিন পর্যন্ত সরকারের পক্ষে বিভিন্ন অজুহাত দেখানো হয়েছে। এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রীকেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। তিনি রাষ্ট্রের ধার-দেনার কথা উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু সরকারের কোন ব্যাখ্যায় দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি। ফলে বিষয়টি নিয়ে জনগণের মধ্যে একটা চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। মূলত সরকার অনেকটা বাধ্য হয়েই তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। যদিও তা এখনো কার্যকর হয়নি।

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ি এখনো তেলের দাম কমেনি। কিন্তু এর মধ্যেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ নিয়ে সরকার পক্ষ নানা চটকার কথায় বলছে। কিন্তু সেসব কথা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করছেন না। তারা এটিকে সরকারের চালাকি বলতেই পছন্দ করছেন। প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, এবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব গেল এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি)। এর আগে বিদ্যুৎয়ের দাম বাড়ানো হয়েছিল। গ্যাস বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি কোম্পানি গৃহস্থালি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দুই চুলার জন্য মাসিক বিল ১ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণের আবেদন করেছে। এক চুলার বিল হবে ১ হাজার টাকা।

এ ছাড়া যানবাহনে ব্যবহৃত সিএনজির দাম ৬৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বলে বিইআরসির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এই হারে বাড়ানো হলে প্রতি ঘনমিটার সিএনজির দাম হবে প্রায় ৫৮ টাকা, যা বর্তমানে ৩৫ টাকা। মাত্র সাত মাস আগে, গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন দুই চুলার বিল ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা এবং এক চুলার বিল ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছিল।

সূত্র জানায়, সরকার বাসাবাড়িতে নতুন করে গ্যাস-সংযোগ তো বন্ধ করেছে, এখন পাইপলাইন গ্যাসের ব্যবহারও নিরুৎসাহিত করতে চায়। এ ছাড়া দেশের অধিকাংশ মানুষ পাইপলাইনের গ্যাস পায় না। তাদের অনেকেই বিকল্প হিসেবে এলপি গ্যাস ব্যবহার করে, যার দাম অনেক বেশি। দুই ধরনের ব্যবহারকারীর মধ্যে বৈষম্য কমানোও সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। সেই কারণেই বাসাবাড়ির গ্যাসের দাম একটু বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়ে থাকতে পারে।

সূত্রটি আরো জানায়, সরকার বাসাবাড়ির গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সেখান থেকে পাওয়া বাড়তি অর্থেও একাংশ এলপি গ্যাস ব্যবহারকারীদের ভর্তুকি হিসেবে দেওয়ার কথাও ভাবছে। আর সিএনজির দাম বাড়ানো হবে যানবাহনে ব্যবহৃত তরল জ্বালানির (পেট্রল, অকটেন) দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার জন্য। এর আরেকটি উদ্দেশ্য দ্রুত কমে আসা দেশের গ্যাসের ওপর থেকে বাড়তি চাহিদার চাপ কমানো।

বিইআরসির এক সূত্র জানায়, এবার সব গ্রাহকশ্রেণির ক্ষেত্রেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। বাসাবাড়ি ও সিএনজি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো প্রয়োজন বলে আবেদন করেছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো।

সরকার জ্বালানী তেলের দাম কমানোর প্রস্তাব করেছে প্রতি লিটারে মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা। সেখানে প্রতিঘনমিটার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে প্রায় দ্বিগুন। গত সেপ্টেম্বরেই বাসা বাড়ীর গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছিল। কিন্তু আবারও একচুলার ক্ষেত্রে ৬০০ টাকার বিপরীতে ১০০০ ও ২ চুলার বিপরীতে ১২০০ টাকার প্রস্তব করা হয়েছে। প্রস্তাবনায় কিছু মন ভোলানো কথা থাকলো এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং গণদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

বিষয়: বিবিধ

৯০৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

364995
০৮ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:১৬
শেখের পোলা লিখেছেন : "জিসকা ফাটে উসকা ফাটে ধোবীকা কিয়া ফাটে?" --আছাড়ে যদি কাপড় ছিঁড়ে যায় তা মালিকের যাবে,ধোপার কিছু এসে যায়না৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File