তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে !!!
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ মাসুদ ০৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:২২:১১ সকাল
জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু মাঝে মধ্যেই বিএনপি ভেঙ্গে ছত্রখান করার হুক্কার ছাড়তেন। বিএনপিকে না ভাঙ্গতে পারলে নাকি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুররক্ষা ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না। তাই মন্ত্রীবরের এই রণহুঙ্কার। কিন্তু নিজের ঘর অরক্ষিত রেখে অন্যের ঘরে অনাধিকার প্রবেশ কতখানি যৌক্তিক হয়েছে, তা-ই এখন রীতিমত ভেবে দেখার বিষয়। এখন তো দেখা যায় তাঁর নিজের ঘরেই ঘরেই আগুন লেগেছে। যা নেভানো তার সাধ্যের আওতায় আছে বলে মনে হয় না।
নাম সর্বস্ব জাসদই ভেঙ্গে এখন রীতিমত ছত্রখান। দল দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার পর এবার মশাল প্রতীকের মালিকানা নিয়ে নতুন লড়াই শুরু হয়েছে জাসদে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত গড়িয়েছে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ানোর সম্ভবনাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। এর ফলাফল যাই হোক না কেন জাসদের আখেরাত যে একেবারে ঝড়ঝড়া তা তো বলাই বাহুল্য। তাই তো কাউকে কাউকে কাব্য করতে শোনা যাচ্ছে, ‘ তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে’। আসলে জাসদের দ্বন্দ্বটা বোধ হয় সেদিকেই অগ্রসর হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র রশি টানাটানি শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেছেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার নৌকায় উঠে গেছেন। মশাল (জাসদের প্রতীক) আমার, যারা মশাল নিয়ে লড়াই করে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কাছ থেকে কেউ ‘মশাল’ কেড়ে নিতে পারবে না।
গত ১২ মার্চের কাউন্সিলের ইনু-শিরীনের কমিটি ‘অগণতান্ত্রিক’ভাবে করা হয়েছে উল্লেখ করে বাদল জানান, ওই রাতে দু’টি পথ খোলা ছিল। হয় সংঘাত, না হয় পরিত্যাগ। অধিকাংশ কাউন্সিলর এ কমিটিতে পরিত্যাগ করেছে। “জাসদের কাউন্সিলর ১২৩৬ জন, ওরা (ইনু-শিরীন) ভোট দেখিয়েছে ৬০৩ ভোট। বাকিরা গেল কোথায়? জাসদের ৬ জন সংসদ সদস্যের চার জন (বাদল, লুৎফা তাহের, তানসেন ও প্রধান) আমাদের, স্থায়ী কমিটির ১২ জনের মধ্যে ৭ জন আমাদের। সারাদেশে ৭৯টি কমিটির মধ্যে ৪০টি আমাদের”।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ রাতে কাউন্সিল অধিবেশনকে কেন্দ্র করে দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং শরীফ নুরুল আম্বিয়া নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ। হাসানুল হক ইনুকে সভাপতি ও শিরিন আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হলে একটি পক্ষ সেখান থেকে বেরিয়ে শরীফ নুরুল আম্বিয়াকে সভাপতি, নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক এবং মইনুদ্দিন খান বাদলকে কার্যকরী সভাপতি ঘোষণা করে।
এদিকে মশাল প্রতীকের মালিকানা নিয়ে উভয় পক্ষের দ্বদ্বের প্রেক্ষাপটে এ নিয়ে গত ৬ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনে শুনানী শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। কমিশনে স্বশরীরে হাজির হয়ে উভয় পক্ষই তাদের স্ব স্ব অবস্থান তুলে ধরেছেন। উভয় পক্ষই মশাল প্রতীক নিজেদের অনুকুলে থাকবে বলে জোর দাবিও করেছেন। কিন্তু সারাদেশে যাদের ভোট প্রাপ্তির হার শতকরা ১ ভাগেরও নিচে তাদের দল যদি আবার ভেঙ্গে যায বা প্রতীক নিয়ে আদালতে যেতে হয়, তাহলে তো নিকট-ভবিষ্যতে তাদের অস্তিত্ববিলীন হওয়ার সম্ভবনায় বেশী। আর এজন্যই বোধ তথ্যমন্ত্রী তার অনুগতদের নিয়ে সদলবলে নৌকায় আরোহন করেছেন। কিন্তু এতে অনিবার্য প্রলয়লীলা থামানো যাবে বলে মনে হয় না।
বিষয়: বিবিধ
১০১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন