রাজধানীতে নারীদের প্রতারণার ফাঁদ
লিখেছেন লিখেছেন সৈয়দ মাসুদ ০৪ এপ্রিল, ২০১৬, ০৮:৩৮:৩৫ রাত
শুধু রাজধানী কেন সারাদেশেই একশ্রেণির দুশ্চরিত্রা নারী বিভিন্ন ভাবে মানুষের সাথে প্রতারণা করে থাকে। এই খবরকে একেবারে অভিনব মনে করার সুযোগ নেই। এসব অসৎপ্রবণ নারী আমাদের সমাজে আমাদের মধ্যেই মিশে আছে। তাই এসব এদের সনাক্ত করা বেশ কঠিন। সাধারণত এসব নারীরা উঠতি বয়সের ছেলেদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে। মূলত মানুষের কাছে প্রেম নিবেদনই এদের প্রকৃত পেশা ও নেশা। এক সময় তারা মানুুেষর সাথে অন্তরঙ্গ হয়। আর নারীর প্রতি পুরুষের স্বভাবজাত দুর্বলতার কারণেই এক সময় সবকিছু নিয়ে সকলের অলক্ষ্যেই কেটে পড়ে।
এসব ছলনাময়ীদের ছলনায় যে উঠতি বয়সের ছেলেরা বিভ্রান্ত হয় তা নয় বরং দুর্বল মানসিকতার এক শ্রেণির মানুষও এদের দ্বারা প্রতারিত ও বিভ্রান্ত হয়। অসম বয়সের পুরুষের সাথে এসব ললনাদের প্রেমলীলা চলে অবারিতভাবে। এক সময় তা প্রণয় থেকে পরিণয়ের রূপ নেই। পুরুষের অতিমাত্রায় দুর্বলতার কারণে এসব নারীরা মোটা অঙ্কের দেনমোহরও ধার্য করে নিতে সক্ষম হয়। এ ভাবেই অসম বয়সের জুটির মধ্যে সংসার সংসার খেলাটা চলে বেশ কিছু দিন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশেষ উদ্দেশ্যেই এ ধরনের অসম বিয়ের ঘটনা ঘটে। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই এক সময় তা দাম্পত্য কলহের রূপ নেয়। এ সময় তা চরম আকার ধারণ করে। তিক্ততা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। এক সময় উভয়েই বনিবনা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে ফেলে। আর আর মহিলা তো এক পায়ে একেবারে খাড়া। ঘর ভাঙ্গলে তো সে মোটা অংকের দেনমোহন আর ভরণ-পোষণসহ আরও অনেক কিছুই আদায় করে নিতে পারবে। বাস্তবেও হয় তাই। অনেক গচ্ছা দিয়েই গৃহস্বামীকে কোন মতে এই প্রতারক মহিলাকে বিদায় করতে হয়। আর এ ব্যবসা চলতে থাকে দীর্ঘদিন। একের পর এক বিয়ে বিয়ে খেলা চলে। খাজনা ও মাশুল আদায় করা হয় রীতিমত। যতদিন পর্যন্ত মহিলার রূপ-লাবণ্য ও লাস্যময়তা অটুট থাকে।
রাজধানীতে এসব ঘটনার প্রাদুর্ভাবটা প্রত্যন্ত অঞ্চলের চেয়ে বেশী। আর ঢাকা শহরে আরেক শ্রেণির মহিলার উপদ্রপটা বেশ প্রকট। এরা হলো ভাসমান পতিতা। স্কুল পড়–য়া টিন-এজারদের প্রতি এদের নজরটা বেশী। কারণ, এসব ছেলেদের তারা অতিসহজেই ঘায়েল করতে পারে। আর যুবদের জন্য তো প্রেমের ফাঁদ রয়েছেই। আর বর্তমান সময়ের সর্বাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার করে চলছে কপোত-কপোতীর অবৈধ প্রেমলীলা। মোবাইল আর ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হয়ে ফেইসবুক ও টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
যে মাধ্যম ও প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা অনেক গঠনমূলক কাজ করতে পারতাম, তা এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধবংসাত্মক কাজে ব্যবহার হচ্ছে। মূলত এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের সাথে প্রতারণার জন্য একটি প্রতারক গোষ্ঠী রাজধানীসহ সারা দেশেই তৎপর। যা আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছেই, এমনকি প্রতারিত হচ্ছে সরল বিশ্বাসী মানুষগুলোও।
সম্প্রতি এ বিষয়ে এক অভিনব প্রতারণার ফাঁদের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব নারী প্রতারকরা দেশে বসেই বিদেশে অবস্থানের কথা বলে সরলমনা যুবকদের সাথে প্রতারণা করছে। এসব নারীরা যুবকদের বিয়ের প্রলভন ও বিদেশ নেয়ার কথা বলে প্রভূত পরিণাম অর্থ বাগিয়ে নিয়ে চম্পট দিচ্ছে। এসব নারী প্রতারকদের সাথে যুক্ত হয়েছে একশ্রেণির বিদেশীনিও। তারা বাংলাদেশে অবস্থান করেও বিশেদের কথা বলে যুবকদের রীতিমত বিভ্রান্ত করছে। বর্তমানে তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলেই জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা।
প্রাপ্ত সংবাদে জ্ঞাত হওয়া গেছে যে, প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে দুই নাইজেরিয়ান ও এক বাংলাদেশি নারীকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভিজটিগেশন (পিবিআই)। ৪ এপ্রিল সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম শাখার ডিসি মারুফ হোসেন সরদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত ৩ এপ্রিল অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তাদের তথ্য প্রযুক্তি আইনে আটক করা হয়েছে বলে জানানো গেছে। আটকৃতরা যুবকসহ মানুষের সাথে বিভিন্নভাবে প্রতারণায় লিপ্ত রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
আসলে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবেই এসব সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র নির্বিঘেœ তাদের অপরাধ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত সমাজ সচেতনতা ও আত্মসচেতনতার অভাবেই এসব প্রতারকচক্র বেপরোয়া। তাই এদেরকে আটক করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারলেই আগামী দিনে এধরনের অপরাধ বোধ করা সম্ভব হবে। অন্যথায় নতুন প্রজন্মকে অবক্ষয়ের হাত থেকে কোন ভাবেই রক্ষা করা যাবে না।
http://www.seydmasud.com
বিষয়: বিবিধ
৯৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন