**-^ পল্লী-শ্রম ^-** ........................... উত্সর্গ: রোজা রেখে জীবন সংগ্রামরত সকল মানব মানবীদের প্রতি ।
লিখেছেন লিখেছেন ক্রুসেড বিজেতা ২০ জুন, ২০১৬, ০৭:৫৯:২৮ সন্ধ্যা
পল্লী কবির আষাঢ় মাসে
মাহেশ্বরী গগন কোলে...
ভোরের সূর্য হুংকার তোলে;
লোক সভাগৃহে চিন্তা'র ছাপ-
-দিনটি যাবে কেমন আজ !
.
খেয়ালি স্রোতে গড়াচ্ছে বেলা,
বাড়ছে চন্দন সূর্যের তাপ ;
কৃষক,শ্রমিক,দিনমজুর বলে-
চৌঘাট,রাজপথ ঝাঁপসা দেখি...
-কি করি যে বলো বাপ ।
.
বাকরুদ্ধ পথিক,স্তব্ধ গতি
বলিবে কি সে .... !
সবিনয়ে কড়জোড়ে বলে-
- বিশ্রাম নিতে পারেন ।
.
কাহিল ভঙ্গি'র বিবর্ণ মুখে,
দিনমজুর চাচা কয়...
ঘরে মোর বিধবা ভাবী-
-সাথে ছেলেমেয়ে;
উপোস থাকিতে হয় বাপু
-কাজ না করিলে !!
.
ধৈর্য ধরুন,সংগ্রাম করুন
-চলন্ত পথিক কয় ;
জীবন মানে উথান পতন
শক্তি তে নয় ধৈর্যেই জয় ।
.
আগত অপরাহ্নের তেজোদীপ্ত বেলা,
গোধুলী'র অপেক্ষায় আকাশ;
আচমকা নামে অঝোর বৃষ্টি!
কার সৃজিত এই প্রাণবন্ত বাতাস ?
-------- 18/06/2016 at M,M
বিষয়: সাহিত্য
১২৭৭ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের বাংলা কাব্যসাহিত্যে মধ্যযুগের অনেক কবির কবিতায় বর্ষার বর্ণনার উল্লেখ পাওয়া যায়। এদের মধ্যে কবি কালীদাস, জয়দেব এর কবিতায় বর্ষার সন্ধান মেলে। তাছাড়া কবি বড়ু চ-িদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে, কবি বিদ্যাপতি, গোবিন্দ দাস, রায়শেখর, মনোহর দাস, বাসুদেব ঘোষ এদের প্রত্যেকের বৈষ্ণব পদাবলিতেও বর্ষার বর্ণনা রয়েছে। যেখানে দেখা যায় যে, তারা প্রত্যেকেই রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের যে অনুরাগ সেই অনুরাগের গভীরতাকে প্রকাশ করেছেন বর্ষার বিভিন্ন রূপবৈচিত্রের বর্ণনার মধ্যে দিয়ে। এছাড়াও মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, খনার বচন, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত, স্বর্ণকুমারী দেবী, অক্ষয়কুমার বড়াল, প্রমথনাথ রায়চৌধুরী প্রমুখের কবিতায় বর্ষার সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের হাত ধরেই বাংলা কবিতায় বর্ষার বিচিত্র রূপ বা সৌন্দর্য ওঠে এসেছিল।
তবে- আমাদের কবিতার ভুবনে "পল্লীকবি" হিসেবে খ্যাত হয়ে আছেন যিনি তিনি হলেন কবি জসিমউদ্দীন। তিনিও বর্ষা নিয়ে অন্যবদ্য কবিতা সৃষ্টি করেছেন। তাঁর অনবদ্য কবিতাটি হলো 'পল্লী-বর্ষা'। পল্লী-বর্ষা কবিতায় কবি বর্ষার অবিশ্রান্ত বর্ষণে মুখর গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে যে আড্ডার আসার বসে, ফাঁকে ফাঁকে পল্লীবাংলার শ্রমজীবী মানুষের অসমাপ্ত কাজগুলোও যে আড্ডার ছলে সারা হয়ে যায় এবং সাথে সাথে কিচ্ছা-কাহিনী শোনার যে লোকায়ত চিত্র তা তুলে ধরেছেন উক্ত কবিতায়। কবিতাটির কিছু অংশ- গাঁয়ের চাষীরা মিলিয়াছে আসি মোড়লের দলিজায়,-/ গল্পে গানে কি জাগাইতে চাহে আজিকার দিনটায়!/ কেউ বসে বসে কাখারী চাঁচিছে, কেউ পাকাইছে রসি; কেউবা নতুন দোয়াড়ীর গায়ে চাঁকা বাঁধে কসি কসি।/ মাঝখানে বসে গাঁয়ের বৃদ্ধ, করুণ ভাটীর সুরে/ আমির সাধুর কাহিনী কহিছে সারাটি দলিজা জুড়ে।/ বাহিরে নাচিছে ঝর ঝর জল, গুরু গুরু মেঘ ডাকে,/ এসবের মাঝে রূপ-কথা যেন আর রূপ-কথা আঁকে। উক্ত কবিতাটিতে সত্যিই পল্লীবাংলার বর্ষাকালের সময়চিত্র ওঠে এসেছে।*আমার লিখিত কবিতাটি সৃজনের সময় পল্লী কবি'র পল্লী-বর্ষা কবিতায় কল্পিত পরিবেশের ছোয়া আশপাশে খুঁজে পেয়েছিলাম।চাইলে রবীন্দ্রনাথের নামটা দেওয়া যেত,,উনার "বর্ষাকাল" কবিতাটি "পল্লী-বর্ষা'র" মত এত মজাইতে পারেনি আমাকে,, এ জন্যই শুরুটা ভালোলাগা ভালোভাসার কবি দিয়েই,,,ক'বার ভেবেছিলাম নামটিও "পল্লী-শ্রম" দিব, হয়নি দেওয়া শেষ পর্যন্ত* ।
রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জসীমউদ্দীন এর পরবর্তী সময়ের কবিরা অর্থাৎ তিরিশি প্রজন্মের কবিরাও বর্ষা নিয়ে কবিতা লিখেছেন। তাদের মধ্যে কবি জীবনানন্দ দাশ, সুধীনন্দ্রনাধ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব বসু এদের কবিতায় বর্ষার কথা ওঠে এসছে। প্রকৃতির যে কতো রূপ আর ঐশ্বর্য ছড়িয়ে রয়েছে তার কোন হিসেব নেই।
খুশি হলাম,,, দারুণ যৌক্তিক অনুসন্ধিত্সু সুন্দর জানতে চাওয়ায়,, ধন্যবাদ অনিঃশেষ, সুখময় হোক আপনার পথচলা।
ইদানিং যেসব গরীব খেটে খাওয়া দিন মজুরদের দেখছি আসা যাওয়ার পথে - তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে দেখছি খাওয়া দাওয়া করতে । আগে রোজার সময় হোটেল বন্ধ থাকতো । এখন সেরকম লজ্জাবোধ নেই । পর্দা দিয়ে খাওয়া দাওয়া ঠিকই চলে ।
যে দেশের ব্যবসায়ীরা সবকিছুতেই লাভ খোঁজে , যে দেশের মানুষ শুধু জুম্মার নামাজে মাসজিদে যায় , যে দেশের মানুষ দোকানে ভিসিআর চালিয়ে সিনেমা দেখতে জড়ো হয় -- তাদের কাছে রোজা রাখার মাহাত্ন্য কি আছে ?
আপনার অপার মন্তব্য ও সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি অফুরান সম্মান ও শ্রদ্ধা রইল। ভালো থাকবেন অহর্নিশি,,, শুভরাত্রি ।
মাহেশ্বরী অর্থ কী?
মন্তব্য করতে লগইন করুন