"প্রাসঙ্গিকতায় প্রাপ্তি ও ঘুনে ধরা সমাজ"
লিখেছেন লিখেছেন ক্রুসেড বিজেতা ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ০৭:১৭:০৭ সন্ধ্যা
মানুষ সামাজিক জীব- কথাটি পুরনো হলেও এর প্রয়োজন ও মহত্ত্ব এখনো ফুরিয়ে যায় নি। সামাজিক জীবনে মানুষের সমাজে আজীবন বাক্যটির অফুরন্ত প্রয়োজন ফুরাবে না। শিখার জন্য পরিবারের পরেই সমাজ উত্তম ক্ষেত্র। মানুষ নামক জীবের জীবনে সমাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম।
এই প্লাটফর্ম নামক সমাজ মানুষেরা মিলে তৈরি করে, স্বীকার করতে হবে মানুষের জীবনে সমাজের অদৃশ্য ভূমিকার প্রভাব অনেক। প্রভাব মানুষ কে প্রভাবশালী করে তোলে, প্রভাবশালী'রা সমাজ কে প্রভাবিত করে ।
'
এখন সেই শিখার ক্ষেত্রের প্রভাব তো হবে আদর্শিক,নৈতিক,উত্সাহ-উদ্দিপনা মূলক, ও সর্বোপরি অনুকরণীয়।
তা না হয়ে- কার্বন মনোক্সাইডের ভূমিকায় কেন ?
(উল্লেখ্য- কার্বন মনোক্সাইড হল নীরব ঘাতক)
আমরা বাঙালি বলে নাকি ?
যদি তাই হয়, তাহলে আমাদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথ মন্দ বলেননি-
'
সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী,
রেখেছ বাঙালি করে, মানুষ করো নি ।
'
অধুনা নীরদ চৌধুরী তার "আত্মঘাতী বাঙালি" শীর্ষক বইতে এক জায়গায় লিখেছেন- বাঙালি বাঙালি বলিয়া যত দিনের ইতিহাস আছে, তাহার সবটুকু জুড়িয়া ভাল বাঙালি শুধু আপন ভোলা বাঙালির মধ্যেই দেখা দিয়াছে ।
নাকি যাহারা ধন,মান,ঐচ্ছিক ক্ষমতা বা প্রতিষ্ঠা চাহিয়াছে- তাহাদের বাসনা যখন শক্তির অল্প তা বা সমাজের ভয়ের দ্বারা সংযত থাকে নাই, তখন তাহারা নামে চোর,ডাকাত,সুবিধাবাদী না হইলেও- চরিত্র ধর্মে তা হইয়াছে ।
রবীন্দ্রনাথ আরও অপবাদসূচক কথা বলেছেন।
'
তবে বাঙালি সম্পর্কে সবচেয়ে অপবাদ সূচক কথা বলেছেন, ভারতবর্ষে ব্রিটিশ প্রসাশনের ইস্পাত কাঠামো স্থপতি 'লর্ড মেকেলে' - বাঘের কাছে থাবা যা,মৌমাছির কাছে হুল যা,মহিষের কাছে শিং যা,মহিলাদের কাছে সৌন্দর্য যা, একজন বাঙালির কাছে প্রতারণা ও তা !!
তাহলে কি সব বাঙালি খারাপ ?
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর,রবীন্দ্রনাথ,কাজী নজরুল,শেরে বাংলা মাওলানা ভাসানী, শেখ মুজিব,শহীদ জিয়া,হাজী মুহাম্মদ মহসিন,ও আর পি সাহার মতো অনেক বাঙালি আছেন, যাদের নিয়ে আমরা গর্ব করি ।
'
আর বাঙালির গুন নিয়ে ইশ্বরগুপ্ত বলেছেন- "কোন গুন নেই তার,কপালে আগুন"
'
তাহলে আমাদের বর্তমান সমাজের অবস্থা কি ?
মানুষের জীবন টা তো কেমিস্ট্রির থিওরি নয়, যে ইচ্ছে হল-
অক্সিজেন+নাইট্রোজেন= পানি বানানো যাবে।
সমাজে সবাই যার যার ভাল মন্দ বুঝে,এমনকি পাগল ও সবাই নিজের মত চলা ফেরা করবে।নৈতিকতা বজায় থাকলেই হল, নৈতিকতার সংজ্ঞা অনেক, ধর্ম কর্ম সব নৈতিকতার ভিতরে পড়ে।
যে ছেলেটা বুকের 2 টা বোতাম খুলে কানে রিং ও হেডফোন লাগিয়ে মাথা ঝাঁকিয়ে রাস্তায় স্কুলের মেয়েদের সাথে ফাজলামি করে বেড়ায়, মহল্লার মান সম্মান বাহিরে নষ্ট করে দেয়, মাস্তানি করে- তাঁকে নিয়ে আপনাদের মাথা ব্যথা নেই।
'
অথচ যারা, গ্রামের জন্য মান-সম্মান বয়ে আনছে, মহল্লার ভাল চায়, বাজে আড্ডায় উপস্থিতিতি নেই, প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে চায় না, পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করে, মাথা নিচু করে শালীনতা বজায় রেখে চলাফেরা করে, তাদের কি অপরাধ?
শালীনতার প্রদর্শনী কি তাদের দুর্বলতা?
তাদের পেছনে লাগার চেষ্টা করছেন কেন?
তার নামে দুর্নাম ছড়াচ্ছেন কেন?
গলা চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়।
কিন্তু- লজ্জা হয়, ঘৃণিত কাজ কর্ম দেখে।
ঘৃনার লজ্জায় তাই নীরব, নীরবতা মানে দুর্বলতা নয- নীরবতারও ভাষা আছে...।
'
মনে পড়ছে সেই কালজয়ী বাণী-
ঝিনুক নীরবে সহজে যাও,
মুখ বুজে মুক্তা ফলাও
ঝিনুক নীরবে সহজে যাও ।।
'
পরিশেষ সমাচার:
আপন মাংস যেমন, হরিণের বৈরি।
তেমনি বাঙালি বাঙালির প্রতিদ্বনদ্বী।
সাবানের মধ্যে যেটি নিকৃষ্টতম সেটির নাম দিয়েছি আমরা- বাংলা সাবান, মদের মধ্যে যেটি নিকৃষ্টতম তার নাম- বাংলা মদ।
এই নিরিখে সমাজের মধ্যে যেটি মন্দ- সে কি আপনারই ভেবে দেখেন/বলেন।
জয় হোক বাঙালি জাতির চেতনার ।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন