গল্পঃ বিবেধ
লিখেছেন লিখেছেন বাহউদ্দিন আবির ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১০:০৩:৩৯ রাত
বিভেদ
সকাল বেলাঃ ঈশিতা নাস্তা দিয়ে যা তাড়াতাড়ি ।ডাক শুনেই ঈশিতা টেবিলে নাস্তা দিয়ে রান্নাঘরে এসে রিপার টিফিন বানাতে শুরু করে ।
এখনো মিস্টার ও মিসেস শামীম চৌধুরী টেবিলে বসে নাস্তা করছেন আর রিপা স্কুলের জন্য তৈরী হচ্ছে ।।
ফয়সাল ঘুম থেকে উঠেনি এখনো ।।
ঈশিতা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে ।একদন্ড দাড়াবার সময় তার হাতে নেই ।।সকাল আটটা বেজে গেছে ।। রিপার নাস্তা বানিয়ে ঈশিতা যায় ফয়সাল কে উঠাতে ।। ফয়সাল এবার অনার্স ফাইনাল দিয়েছে ।।
সকলের নাস্তা হয়ে গেছে কেবল ঈশিতার ছাড়া ।। তার জন্য রূটি নয় আছে গতরাতের ভাত ।।
নাস্তা খেয়ে সবাই চলে যায় ।।
ঈশিতা নাস্তা খাচ্ছে আর মনে পড়ছে ঈশিতা এই বাড়িতে এসেছিল ক্লাস নাইনে থাকতে । গ্রাম থেকে মিসেস শামীম চৌধুরী আনার সময় ওর বাবা মাকে বলেছিল আপনার মেয়ে আমার মেয়ে ।।
প্রথম সপ্তাহ মেয়ের মতই ছিল ।ধীরে ধীরে সব বদলে গেছে ।।
ঈশিতার স্বপ্ন সে পড়ালেখা করবে ,বড় হবে । কিন্তু সেটা আর সম্ভব নয় ।।
ফয়সাল ঘুম থেকে উঠে নাস্তা খেয়ে নিজ রুমে বসল । এই বাড়িতে কেবল ফয়সাল ঈশিতাকে সম্মান ও স্নেহ করে এবং যতটা সম্ভব চেষ্টা করে সাহায্য করতে ।।
বিকেল বেলাঃ রিপা স্কুল থেকে এসেই কলিংবেল টিপতে থাকে অনবরত ।। ঈশিতা বুজতে পারে যে রিপা চলে এসেছে ।তাই তাড়াতাড়ি হাতের কাজ রেখে দরজা খুলতে যায় । রিপা দরজা দিয়ে ঢুকে ঈশিতার হাতে ব্যাগ দেয় এবং টিভির সামনে বসে পড়ে । ঈশিতাকে শরবত আনতে ভেতরে পাঠায় ।। একটু দেরী দেখে রিপা চেঁচিয়ে উঠে ।ঈশিতা তাড়াতাড়ি শরবত দিতে গিয়ে রিপার হাতের সাথে ধাক্কা খেয়ে গ্লাস পড়ে যায় এবং রিপা চটে গিয়ে থাপ্পড় লাগিয়ে দেয় ।।
ফয়সাল সব কিছু দেখে । ক্লাস সিক্সের একটি মেয়ে টেনের একটি মেয়েকে তখনই থাপ্পড় দেয় যখন সে দরিদ্রের কষাঘাতে দিন গুজরান করে ।।
ঈশিতা হতবম্ভ হয়ে যায় এবং চোখের কোনে জলটা রেখে রান্নাঘর থেকে পরিস্কার করার ঝুড়ি এনে সব পরিষ্কার করে রান্নার কাজে লেগে যায় ।।
ফয়সাল সব লক্ষ্য করে আর ভাবে এটাই কি ঈশিতার বাবার সাথে বলা কথা রাখার প্রক্রিয়া :-O
রাতের বেলাঃ সবার খাওয়া শেষে ঈশিতা নিজের খাওয়াটা সেরে নেয় ।।তারপর তার শখ হল টিভি দেখা ।।কিন্তু শামীম চৌধুরী বলে ফকিন্নীর মেয়ের আবার টিভি দেখা । কোন কাজই ত করিসনা সারাদিন খাওয়া আর টিভি দেখা যা যা কাজ করতে যা ।
কাঁধতে কাঁধতে চলে যায় ।। আবার তাকে সকালে উঠতে হবে ।আবার কাজ.....
রাতে ফয়সাল এসব নিয়ে ভাবে । চিন্তা করে একটা ছোট মেয়েকে কি কেবল টাকার কারনেই হাত উঠাতে পারে বয়সে বড় ব্যক্তির উপর !! চিন্তা করে সে গরীব বলেই কি টিভি দেখতে পারবেনা ?? সারাদিন গাঁধার খাটুনি খাটার পরে কি স্বিকৃতি এরূপ হবে ?
ফয়সাল চেষ্টা করে যায় ।। সে ঈশিতাকে যতটা সম্ভব গড়ে তুলতে সহায়তা করে ।
পাঁচবছর পরঃ কক্সবাজারে সি বিচে ফয়সাল হাঁটছে । হঠাত্ পিছন থেকে ডাক শুনে ঘুরে দাঁড়ায় ।ঈশিতা তার পায়ে ধরে সালাম করে ।। পরিচয় করিয়ে দেয় তার স্বামীর সাথে ।। তারা এখানে ঘুরতে এসেছে । সুখে আছে ঈশিতা ।। সারাটা বিকেল তারা আড্ডা দেয় গল্প করে ।। বিকেলে সূর্যের রক্তিম হাঁসির সাথে তারা তাদের সুখের জীবনে হেঁটে যায় ।
পদটিকাঃ একটি জগাখিচুড়ি লিখা / গল্প ।। মনে হল লিখি তাই লিখলাম :-) ।।
আবির
বিষয়: বিবিধ
১১৪৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন