কেন আমিরাতের ভিসা বন্ধ ?
লিখেছেন লিখেছেন রাজপথ ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০২:০৮:৫১ দুপুর
কেন আমিরাত কতৃপক্ষ বাঙলাদেশী জনশক্তি আমদানির ক্ষেত্রে অলিখিত বিধি নিষেধ আরোপ করেছে? এটা একটি এমন প্রশ্ন যার কোনো উত্তর বাংলাদেশ সরকার , বাংলাদেশ দুতাবাস ,কোনো মিডিয়া কারো কাছে নাই , মাঝে মধ্যে কিছু গুজব ও রটনা ছাড়া। যদিও আমিরাত কতৃপক্ষ বলছে তারা সাময়িক ভাবে স্তগিত করেছে। বাংলাদেশের সাথে আমিরাতের সরকারী পর্যায়ে গভীর কূটনৈতিক সম্পর্ক বিরজমান , তাহলে কেন আমিরাত এধরনের আচরণ করছে ? এর উত্তর খুজতে গেলে আমাদের একটু গভীরে যেতে হবে।
প্রথমত হলো , আমাদের দেশের সামাজিক অবক্ষয় এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌছেছে যার কুফল গুলো আমাদের জনশক্তি আমদানীকারক দেশগুলা পর্যন্ত ভোগা শুরু করছে।
দুটো অবক্ষয়ের কথা আমি এখানে উল্লেখ করব , আর এর দ্রুত কিছু সমধান আমি আমার আরেক পর্বে আলোচনা করব।
প্রথম অবক্ষয়টি হলো সামাজিক পর্যায়ে অপরটি হলো রাষ্টীয় পর্যায়ে। সামাজিক পর্যায়ের মধ্যে আছে আমাদের লোকজনদের দেশে যা করে তা বিদেশের মাঠিতে করার প্রবনতা , মারামারি , জুয়াবাজি , অসমাজিক কার্যকলাপ ( যেমন মদ, গাজা , পতিতা ইত্যাদি ) , ছিটকে চুরি , ও অসাদাচরন উল্লেখযোগ্য। সামাজিক মেনার , আচার ব্যবহার ইত্যাদি পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ে শিক্ষার অভাব বা শিক্ষা না দেওয়ার কুফল আমরা পেতে শুরু করছি। চিত্কার করে কথা বলা , হইচই করা , পথ আগলে দাড়িয়ে আড্ডা দেওয়া , খাওয়া চলার রীতি নীতি গুলা শিক্ষার অভাবে , আমাদের লোকজন এখন অন্যদের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। এছাড়াও আমাদের আরেকটি ভয়ানক প্রবণতা হচ্ছে দ্রুত বিশ্বাস ভঙ্গ করা। মারামারি দাঙ্গা হাঙ্গামার কথা বললে হয়ত কারো চোখ কপালে উঠবে। লাঠি কিরিচ নিয়া যখন এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে দৌড়ায় তখন অনন্য দেশের নাগরিকরা চেয়ে চেয়ে দেখে আর বাঙালী বলে গালি দেয়। মোবাইলে ব্যালেন্স বিক্রি , ব্যালান্স ব্যালান্স চিত্কার এখন বাংলাদেশীদের প্রতিশব্দ হয়ে দাড়িয়েছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে টেবিল নিয়া জুয়া খেলা, খুন তাও আবার বিভিন্ন পদ্ধতিতে এমনও হইছে ৮ টুকরা করে বিল্ডিং এর ময়লা ফেলার ড্রেন দিয়ে ৬ তলা থেকে নিচে লাশ ফেলেছে। এসব অপরাধ দেখতে আমিরাতের অধিবাসীরা অভ্ভস্থ না , তার উপর যেহেতু পুরা আমিরাত ই পর্যটন ও বিনিয়োগের উপর সর্বচ্চো গুরুত্ব দিয়ে থাকে সেখানে সামাজিক নিরপত্তা ও স্তিতিসিলতার ব্যাপারে জিরো টলারেন্স এ থাকে আমিরাত কর্তৃপক্ষ। এটা ওদের ক্ষেত্রে নয় কোনো দেশের নাগরিকরা যদি এরকম বহুমুখী অপরাধ করে আমাদের দেশে তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়া কিহবে ? সাধারণ রোহিঙ্গারা কক্সবাজার এলাকায় সাধারণ অপরাধের কারণে আমাদের মিডিয়াগুলা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায় ? এক্ষেত্রে আমি মনে করি আমিরাত কতৃপক্ষ এখনো অনেক উদারতার পরিচয় দিচ্ছে আমাদের সাথে।
অপর অবক্ষয়টি হল , প্রশাসনের এতে জড়িত আছে জনশক্তি বিভাগ , রিক্রুটিং এজেন্ট , ইমিগ্রেশন ও পুলিশ বিভাগ। একটা ভিসা জাল করে ৭/৮ জন লোক কিভাবে ইমিগ্রেশন দিয়া পার হয় ?? কোথায় থাকে যারা ইমিগ্রেশন কার্ড ইস্সু করে ফিঙ্গার নেয় ? বিমান বন্দরের ইমিগ্রাসন কি পরীক্ষা করে না যখন একই ভিসা নম্বর দিয়া কয়েকজন পার হচ্ছে ? এয়ার লাইনস গুলা চেক করেনা একই ভিসা দিয়ে কয়েকটা টিকেট ইসু হচ্ছে ? সোজা উত্তর লেনদেন , রিক্রুটিং এজেন্ট গুলা মানব পাচারে লিপ্ত , জনশক্তি রপ্তানিতে নয়। ঢাকার ফকিরাপুল থেকে কাকরাইলে যত রিক্রুটিং এজেন্ট আছে সব অফিস-এ ডু মারলে এটা বুঝা যাই। যদিও সাবেক প্রবাসী ক্যাল্লন মন্ত্রী চেষ্টা করছিলো এটা ভাঙ্গার জন্য। তিনি এটা কেন পারেন নাই আমি জানিনা , তবে আমার মনে হয় মন্ত্রকের সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের কারণে হয়তো উনি ফেল মারছেন।
আমাদের মনে রাখতে হবে , আমরা যদি নিজেরাই সংশোধন না হই হবে কেউ আমাদেরকে তাদের সমাজে স্থান দিবে না।
এখন আমাদের উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব এসব সংশোধন করা , তাহলে হয়ত একটা সম্ভবনা থাকলেও থাকতে পারে , তবে আমার অনুমান ২০২০ আগে হয়ত আমাদের ভাগ্যের সিকা ছিড়বে না।
সবাইকে ধন্যবাদ।
বিষয়: Contest_priyo
১২২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন