সন্তানের প্রতি মায়েদের কর্তব্যঃ
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহ বিন খোরশেদ ১৭ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:৫৫:০১ বিকাল
একটু পিছনের কথা। এই লেখাটি কয়েক মাস আগে রাজশাহীর শিশু-কিশোরদের প্রিয় সাময়িকী -"সোনামণি প্রতিভা"-র জন্যই মূলত লেখেছিলাম। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে আজকে আপনাদের জন্যও লেখাটি শেয়ার করছি। হয়তো লেখার মান সাহিত্যিক উৎকর্ষতার বিচারে টিকবেনা, তবে লেখাটি যে সময়োপযোগী হবে, তা আশা করতেই পারি। বাকিটা আপনাদের উপর। তাহলে এবার শুরু করছি...
#ভূমিকাঃ
মহান আল্লাহ মানব জাতিকে
অগণিত নেয়ামত দান
করেছেন। এ সব নেয়ামতের মধ্যে
সুসন্তান অন্যতম
শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। আল্লাহর বিশেষ
অনুগ্রহের দান। যে নেয়া'মতের
সুফল মৃত্যুর পরও ভোগ করা যায়।
যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত
হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ)
বলেন—
" ﺇﺫﺍ ﻣﺎﺕ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ ﺍﻧﻘﻄﻊ ﻋﻨﻪ ﻋﻤﻠﻪ ﺇﻻ ﻣﻦ
ﺛﻼﺙ : ﺇﻻ ﻣﻦ
ﺻﺪﻗﺔ ﺟﺎﺭﻳﺔ ﺃﻭ ﻋﻠﻢ ﻳﻨﺘﻔﻊ ﺑﻪ ﺃﻭ ﻭﻟﺪ ﺻﺎﻟﺢ
ﻳﺪﻋﻮ ﻟﻪ "
অর্থাৎ ‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ
করে, তখন তার সকল আমল বন্ধ হয়ে
যায়। কিন্তু তিনটি
কাজের ফল সে পেতে থাকে—
১. সদকায়ে জারিয়াহ (এমন দান যা
থেকে মানুষ অব্যাহতভাবে
উপকৃত হয়ে থাকে)
২. মানুষের উপকারে আসে এমন ইলম
(বিদ্যা)
৩. সৎ সন্তান, যে তার জন্য দুআ করে।
( সূত্রঃ ছহীহ মুসলিম- হা/১৬৩১,
নাসাঈ- হা/৩৫৯১)
এ হাদীছ দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায়,
সন্তান যদি সৎ হয় ও পিতা-
মাতার জন্য দুআ করে তবে তার ফল
মৃত পিতা-মাতা কবর থেকেও পেতে
থাকেন।
উপরের হাদীছে সৎ সন্তান রেখে
যাওয়াকে আমল বলার কারণ এই যে,
সন্তান
পিতামাতার কারণেই দুনিয়ায়
আগমন করে থাকে এবং তাদের
সযত্ন লালন-পালনের ফলেই সে
চরিত্রবান হতে পারে।
কাজেই সন্তানকে এ হাদীছে
পিতামাতার জন্য দোআ করতে
উৎসাহিত করা
হয়েছে। সন্তানের উচিৎ সব সময়
আল্লাহর কাছে তাঁদের
জন্য দোআ করা। জীবিত সন্তান
যেমন পিতামাতার জন্য
নি'য়ামত তেমনিভাবে মৃত সন্তানও
তাদের জন্য নি'য়ামত স্বরূপ।
যেমন আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত,
রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ
"কোন মুসলিমের তিনটি (নাবালিগ)
সন্তান মারা গেল,
তবুও জাহান্নামে প্রবেশ করবে,
এমন হবে না। তবে
কেবল কসম পূর্ণ হবার পরিমাণ
পর্যন্ত। আবূ ‘আবদুল্লাহ্
ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্
তা’আলা ইরশাদ
করেনঃ ﻭَﺍِﻥْ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺍﻟَّﺎ ﻭَﺍﺭِﺩْﻫَﺎ
“তোমাদের প্রত্যেককেই তা
অতিক্রম করতে হবে।” (ছহীহুল
বুখারী-হা/১২৫১)।
সন্তান যেমন আল্লাহর অন্যতম
নিয়ামত তেমনি পরীক্ষার
বস্তুও বটে। কারণ পৃথিবীটা মানব
জাতির জন্য পরীক্ষার বস্তু। তাই
আল্লাহর দেয়া ধন-সম্পদ ও সন্তান
পরীক্ষার বিষয়সমূহের
মধ্যে অন্যতম। এ প্রসঙ্গে সূরা
আনফালে মহান আল্লাহ বলেন-‘‘আর
জেনে রাখ যে, তোমাদের ধন-সম্পদ
ও সন্তান-সন্ততি এক
পরীক্ষা এবং আল্লাহরই নিকট
রয়েছে মহাপুরস্কার।’’ (
ধন-সম্পদ অন্যায় পথে ব্যায় করলে
যেমন আমানতের
খেয়ানত হয় তেমনি সন্তানদেরকে
ভুল পথে এবং অন্যায়
কাজে নিয়োজিত করলে আল্লাহর
আমানতের খেয়ানত
হবে। সন্তান যদি অসৎ প্রকৃতির হয়
তবে এ সন্তান পিতামাতার
বিপদের কারণ হবে। তাই সে
সন্তানকে অবশ্যই সচ্চরিত্রবান
ও দ্বীনদার করে করে গড়ে তোলার
বিকল্প নেই।
বর্তমানকালে পত্রিকার পাতা
খুললেই দেখা যায়, চাঁদাবাজি,
ছিনতাই, ধর্ষণ, খুন,
গুম, সন্ত্রাসসহ নানা ধরনের
অপকর্ম। এসব অপকর্মের মূলে
রয়েছে মানুষের ধর্মীয় নৈতিক
শিক্ষা না থাকা। অনেক বাবা-মার
ধারণা শুধু আদর-সোহাগ আর ধন-
ঐশ্যর্য্য দিয়ে সন্তান লালন পালন
করলেই, সন্তান আদর্শ নাগরিক
হিসাবে গড়ে উঠে। কিন্তু এ ধারণা
যে কতটা ভুল, তার প্রমান এ দেশের
হাজারো ধনীর দুলালী অভিশপ্ত
ঐশীরা রেখেছে। যে নিজে হাতে
বাবা-মাকে নিশার ঘোরে হত্যা
করেছে। যাদের পদচারণা দুশিত
করেছে এ দেশের কোমল
পরিবেশকে। কিন্তু ছোটবেলা
থেকেই যদি ছেলেমেয়েদের ধর্মীয়
নৈতিক শিক্ষা
দেয়া হয় তবে সে সব ছেলেমেযে
বড় হয়ে এমন
যঘন্য অন্যায় কাজ করতে পারে না।
এজন্য শৈশব কালই হল
একজন শিশুর উত্তমভাবে বেড়ে
ওঠার প্রথম স্তর। এ
কারণে একজন মাকে হতে হবে
আদর্শ রমনী, উত্তম
চরিত্রে চরিত্রবান নারী, ধার্মিক
ও পরহেজগার। তাই প্রত্যেক মুসলিম
পাত্রকে রূপ, বংশ ও সম্পদের চেয়ে
পাত্রীর
দ্বীনদারীকে বেশী গুরুত্ব দিতে
বলা হয়েছে। পরিপূর্ণ
দ্বীনদারী পাওয়া গেলে অন্য গুণ
কম হ’লেও
দ্বীনদার মহিলাকেই বিবাহ করা
উচিত, তাহ’লে দুনিয়া ও
আখেরাতে কল্যাণ হবে। যেমন
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
ﺗُﻨْﻜَﺢُ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓُ
ﻷَﺭْﺑَﻊٍ ﻟِﻤَﺎﻟِﻬَﺎ ﻭَﻟِﺤَﺴَﺒِﻬَﺎ ﻭَﺟَﻤَﺎﻟِﻬَﺎ ﻭَﻟِﺪِﻳْﻨِﻬَﺎ، ﻓَﺎﻇْﻔَﺮْ
ﺑِﺬَﺍﺕِ ﺍﻟﺪِّﻳْﻦِ ﺗَﺮِﺑَﺖْ
ﻳَﺪَﺍﻙَ.
অর্থাৎ ‘মেয়েদের চারটি গুণ
বিবেচনা করে বিবাহ করা হয়;
তার সম্পদ, তার বংশ মর্যাদা, তার
রূপ ও সৌন্দর্য এবং তার
দ্বীনদারী। কিন্তু তুমি দ্বীনদার
মহিলাকেই প্রাধান্য দাও।
নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে’।
(সূত্রঃ বুখারী হা/৫০৯০, মুসলিম
হা/১৪৬৬, মিশকাত হা/৩০৮২,
বুলূগুল মারাম হা/৯৭১।)
এই হাদীসের আলোকে এ কথা বলা
যায়, মহিলার রূপ বা
সম্পদই যেন সর্বাধিক গুরুত্ব না
পায়। ধর্মপরায়নতার গুণটি যেন
অবশ্যই যুক্ত থাকে। আর সে যেন
মার্জিত দ্বীনী
পরিবারের সদস্য হয়। কেননা তার
সন্তানরা তার চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও
আচরণ ইত্যাদি উত্তরাধিকার সূত্রে
প্রাপ্ত হয়।
শিশুদেরকে চরিত্রবান ও দীনদার
করার পেছনে পিতামাতার ভূমিকা
অপরিসীম। কেননা শিশু সব সময়
তাদের আচার আচরণ অনুকরণ করতে
থাকে। পিতা সব সময় বাহিরের
কাজে ব্যস্ত
থাকেন। মাকেই বেশিরভাগ সময়
শিশুর কাছে থাকতে হয়। তাই
শিশুর সুন্দর চরিত্র গঠনে মাকেই
বেশি ভূমিকা পালন করতে
হয়। একজন মা-ই পারেন জাতিকে
একজন আদর্শ নৈতিক
চরিত্রবান নাগরিক উপহার দিতে।
এই নৈতিক প্রশিক্ষণ শিশুকাল
থেকেই শুরু করতে হবে। তাছাড়া
পরবর্তীতে তাদের শুধরানো কঠিন
হয়ে পরে। কথায় বলে, "কাঁচায় না
নুয়ালে বাঁশ, পরে করে ঠাস ঠাস"।
একটি শিশু যখন মায়ের কোলে
থাকে তখন থেকেই তার শিশুর
শিক্ষা শুরু হয়। শিশু যখন বুঝতে
শিখে তখন মায়েরা সাধারণত
শিশুকে বলে থাকেন-আয় আয় চাঁদ
মামা টিপ দিয়ে যা, নোটন নোটন
পায়রাগুলি, আগডুম বাগডুম ঘোড়া
ডুম সাজে, ইত্যাদি নানারকম
অর্থহীন ছড়া কবিতা। কিন্তু তখন
যদি আমরা তাদেরকে আল্লাহর
নামের বিভিন্ন ছড়া শোনাই
তাহলে শিশু
আল্লাহর নামের সাথে পরিচিত হয়।
সহজেই আল্লাহর নাম
বলতে পারে। শিশু যখন দুনিয়া
সম্পর্কে বুঝতে শিখে তখন
তাকে যদি বলি কি সুন্দর আল্লাহর
চাঁদ, কি সুন্দর আকাশ, মেঘ এ সব
কিছুই আল্লাহর দান। তবে সে
আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে
পারে। শিশুদেরকে গল্প বলার সময়
জুজু বুড়ি আর মিথ্যা ভূত-পেত্নীর
অসার গল্প না শুনিয়ে, নবী-
রাসূলদের গল্প, সাহাবীদের
জীবনী, পূর্ববর্তী সলফে
ছালেহীনদের গল্প শুনিয়ে দিন না?।
এইভাবে তাদের সামনে ইসলামের
প্রকৃত আদর্শ উপস্থাপন করতে হবে
এবং ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষার প্রতি
তাকে আগ্রহশীল করে তুলতে হবে।
এইভাবে একজন আদর্শ মা হিসাবে
ছেলেমেয়েদের হাত দিয়ে গরীব
মিসকিনকে দান করার
অভ্যাস করাবেন। তাদের হাত দিয়ে
ভাইবোনদের খাদ্যদ্রব্য
বণ্টন করাবেন। এতে তাদের মধ্যে
দানশীলতার অভ্যাস ও
গড়ে উঠবে। আর হ্যাঁ, সন্তানদের
সাথে কখনোই জোরে কথা বলবেন
না।
তাহলে তারাও ঐ অভ্যাস গড়ে
তুলবে। তাদের সামনে ভুলেও
মিথ্যা কথা বলবেন না এবং মিথ্যা
প্রতিশ্রুতি দিবেন না। অহেতুক
তাদের বাঘ, ভাল্লুক আর পাগলের
ভয় দেখাবেন না। এতে তাদের
মধ্যে মিথ্যা
বলার অভ্যাস গড়ে ওঠে। তাদের
মধ্যে এক ধরনের ধোঁকা দেওয়ার
প্রবঞ্চনা সৃষ্টি হয়। সন্তানদেরকে
গান, বাজনা, টিভি-সিনেমা এবং
অশ্লীল নভেল, নাটক জাতীয় বই
পড়া থেকে
বিরত রাখবেন। এতে তাদের মধ্যে
বদ-দ্বীনী মানসিকতার সৃষ্টি হয়।
আর সন্তানদেরকে অবশ্যই নিজের
কাজ নিজ হাতে করার অভ্যাস
করাবেন। তারা ভাল কাজ করলে
জাযাকাল্লাহ খাইর বলে সাবাস ও
ধন্যবাদ দেবেন।
মাঝে-মধ্যে কিছু পুরস্কারের
ব্যবস্থা করতে পারলে মন্দ হয়না।
শিশুকাল থেকেই সন্তানদেরকে
পোশাক পরিধানের ব্যাপারেও
সচেতনতা
অবলম্বন করতে হবে। কেননা
ছোটবেলা থেকে তাকে যা অভ্যাস
করানো যায় বড় হলে তার ঐ
অভ্যাসই থেকে যায়।
মেয়ে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই
পায়জামা ও মাথায়
স্কার্ফ বা হিজাব পড়ার অভ্যাস
গড়ে তুলতে হবে। কোনভাবেই
তাদেরকে টাইট-ফিট কাপড় পড়তে
দিবেন না। ছেলে শিশুদের বেলায়
সমাজের দ্বীনদার ও পরহেজগার
লোকদের
অনুসরণে পোশাক নির্বাচন করতে
হবে। স্বর্ণের আংটি ও
চেইন ছেলেদের শখ করেও পড়তে
দেবেন না। কারণ
ছেলেদের জন্য এগুলো পড়া হারাম।
খাওয়ার শুরুতে
‘‘বিসমিল্লাহ’’ বলার অভ্যাস
করাবেন। কারো ঘরে প্রবেশ
করার সময় অনুমতি নেয়ার অভ্যাস
করাবেন। সালাম ইসলামের
গুরুত্বপূর্ণ আমল। তাই ছোটবেলা
থেকেই শিশুদেরকে সালাম দেয়ার
অভ্যাস গড়ে তুলবেন। একটি
মুসলিম শিশুকে অবশ্যই ইসলামী
শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে।
তাকে কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞান
প্রদান করতে হবে। রাসূল (স.)
বলেন-‘‘তোমরা তোমাদের
সন্তানদেরকে মহৎ
করে গড়ে তোল এবং তাদেরকে
উত্তম আদব তথা শিষ্টাচার শিক্ষা
দাও।’’
শিশুর বয়স যখন পাঁচ বছর হবে তখন
কোন পরহেজগার নিষ্ঠাবান আলিম
ব্যক্তির মাধ্যমে দুআ করিয়ে পড়তে
শুরু করাবেন। মকতবে
যাওয়ার ব্যবস্থা করাবেন। প্রথমে
কুরআনুল কারীম তথা
দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেবেন। বাইরে
এ ব্যবস্থা না থাকলে ঘরে শিক্ষক
রেখে ব্যবস্থা করবেন। শৈশবেই
শিশুকে
আল্লাহর কালাম শিক্ষা না দেয়া
হলে তার তার উত্তম চরিত্র গঠন
সম্ভব নয়।
এ কারণেই বদর যুদ্ধের বন্দীদের
মধ্যে কিছুসংখ্যক বন্দী মুক্তির শর্ত
ছিল দশজন করে মুসলিম সন্তানকে
লেখাপড়া শেখানো।
শিশুকে সাত বছর বয়স থেকেই
ছালাত শিক্ষা দেবেন। এটাই
রাসূল (ছাঃ) এর শিক্ষা। শুয়ে-শুয়ে,
কাছে বসিয়ে খেলার ছলে, মুখে-
মুখে ছালাতের দোআ' গুলো
শেখাতে
পারেন শিশুর মা ও বাবা। শিশুকে
সাথে নিয়ে ছালাত পড়বেন।
ছালাতের দোআগুলো অর্থসহ
শিশুকে শেখাবেন। ছালাতের
উপকারিতা, গুরুত্ব সম্পর্কে
তাদেরকে শিক্ষা দেবেন। আপনার
সন্তানকে ক্লাসের পড়ার আগে
কুরআন থেকে দুইখানা আয়াত
অর্থসহ পড়তে দিন। হাদীছ থেকে
১টি হাদীছ অর্থসহ পড়তে দিন।
আপনার সন্তানের ১টি হাদীছ
পড়তে ৫ মিনিট সময় লাগতে পারে।
একটি হাদীছ পড়লেই
মাসে অর্থসহ ত্রিশটি হাদীস পড়া
হয়ে যাবে। এভাবে প্রতিদিন ২টি
কুরআনের আয়াত অর্থসহ পড়লে
মাসে ৬০টি আয়াত তার জানা হয়ে
যাবে। বছরে সে কতখানি কুরআন-
সুন্নাহর নৈতিক জ্ঞান
অর্জনে সক্ষম হবে তা আপনিই
চিন্তা করে দেখুন। তাহলে দেখবেন
এই সন্তান বড় হয়ে ইসলামের দুশমন
হবে না। আল্লাহর দ্বীন ইসলামের
প্রতি সে শ্রদ্ধাশীল হবে। একজন
মুসলিম সন্তান
হিসেবে জীবন যাপন করা তার জন্য
সহজ হবে। সমাজের যাবতীয়
অন্যায়, অশ্লীলতা থেকে নিজেকে
সে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হবে।
তাই বলা যায়, সন্তানদেরকে
চরিত্রবান করে গড়ে তোলার
পিছনে মায়েদের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
এই দিকটাই ইঙ্গিত করেই হয়তো
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
বলেছিলেন-
"তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত
মা দাও আমি তোমাদের একটি
শিক্ষিত জাতি উপহার দেব ।"
অবশ্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ কথায়
আর কেউ কান দেয়না। এখন তো
চলছে-
"তোমরা আমাকে স্টার জলসা/
স্টার প্লাস/ জি বাংলা/রুপসী
বাংলা আর সি এন......চ্যানেল
গুলো দাও আমি তোমাদের এক ঝাঁক
ঝগড়াটে বউ আর অলস মতিস্কের
কিছু সন্তান উপহার দেব ।"
পরিশেষে বলা যায়, আসুন!
সমাজকে পালটে দাও শ্লোগান
বাদ দিয়ে মা-দের পাল্টানোর
শ্লোগান শুরু করি। একজন মা যদি
ধার্মিক ও আদর্শবান হন, তারা যদি
আছিয়া, হাজেরা, খাদীজা,
আয়েশা, ফাতেমা (রাঃ)-র মতো
পূন্যবতী হতে পারেন, সেক্ষেত্রে
একটি পুরো জাতী আদর্শের মডেল
হতে বাধ্য। তবেই তো সমাজে
শান্তি ফিরে আসবে, ভবিষ্যৎ
পৃথিবী হবে আলোকোজ্জ্বল সুখময়।
আল্লাহ আমাদের কবুল করুন আমীন!
বিষয়: বিবিধ
১২৯৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। ধন্যবাদ আপনাকে
এই লেখাকে যদি স্টিকি বা নির্বাচিত পোস্ট না করা হয়, তাহলে বুঝব স্টিকি নির্বাচনে ব্যাপক ঘাপলা আছে.
আপনার লেখা অসম্ভব ভাললাগার অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে, বানানের ব্যাপারে সতর্কতা. তবুও কিছু ভুল আছে যেমনঃ
কাপড় পড়ে নয় পরে
দন্ত্য ন এবং মূর্ধণ্যের ব্যবহারে কিছুটা জগাখিচুড়ি অবস্থা. ঠিক করে নেবেন.
লাইনগুলো কবিতার লাইনের মত হয়ে গেছে. ঠিক করে নিবেন.
আপনি সন্তান প্রতিপালনে মায়ের দায়িত্ব সম্পর্কে এত কিছু বলেছেন যে, নতুন করে আর কিছু বলার মত খুজেঁ পাচ্ছিনা.
জাযাকাল্লাহু খাইর
আর লেখাটির মাঝে কবিতার লাইনের মতো স্পেস যে কেন হল, আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা ভাইয়া...?
আমি অভ্র কি-বোর্ডে লিখি বলেই কি এমনটা হচ্ছে না তো???
মন্তব্য করতে লগইন করুন