সতীদাহ বিলোপ : ধর্মীয় স্বাধীনতায় নগ্ন হস্তক্ষেপ
লিখেছেন লিখেছেন বায়বার্স ০৭ জুন, ২০১৬, ১২:৫২:৩২ দুপুর
হিন্দু ধর্মের লোমহর্ষক নিয়ম নীতির কারণে সত্য ও শান্তির সন্ধানীরা দিনে দিনে মুসলমান হচ্ছিল। ব্যাপরটা পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হিন্দুদের নজর কাড়ল। রামমোহন রায় ব্রাহ্ম সমাজ নামে এক আলাদা ধর্মসম্প্রদায় তৈরী করলেন। ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা এর তীব্র বিরোধীতা করে। কিন্তু ব্রাহ্মসমাজ সংখ্যালঘু হলেও তারা ছিল প্রভাবশালী। এ প্রভাবশালী গোষ্ঠীটি ইংরেজদের সহায়তায় ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেয়,মানে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করে আইন পাশ করে। এখন ভারত স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। তাই এখন সরকারের উচিৎ তাদের ধর্ম পালনের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। প্রত্যেক নাগরিকের ধর্ম পালনের অধিকার আছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র নাক গলাতে পারবে না।সুতরাং মোদী তার দেশে সতীদাহ প্রথা বৈধ না করলেও ধর্মীয় সম্প্রীতির এই বাংলাদেশে আমাদের উচিৎ সংখ্যালঘুদের হারানো অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। আজকাল কিছু কিছু অজ্ঞ ভাই বলেন হিন্দু শাস্ত্রে নাকি সতীদাহের কথা নেই। তাদের জন্য প্রমাণ দিলাম।
দেখুন হিন্দু পবিত্র ধর্মপুস্তকে এ বিষয়ে কি বলছে ?
১ : ব্যাসস্মৃতি বলছে, চিতায় বিধবা নারী তার স্বামীর মৃতদেহে আলিঙ্গন করবেন অথবা তার মস্তকমুণ্ডন করবেন। (২:৫৫);
২ : দক্ষ সংহিতা : “যে সতী নারী স্বামীর মৃত্যুর পর অগ্নিতে প্রবেশ করে সে স্বর্গে পূজা পায়”।(৪:১৮-১৯);
৩ : অথর্ববেদে রয়েছে : “আমরা মৃতের বধু হবার জন্য জীবিত নারীকে নীত হতে দেখেছি।” (১৮/৩/১,৩);
৪ : পরাশর সংহিতা : “মানুষের শরীরে সাড়ে তিন কোটি লোম থাকে, যে নারী মৃত্যুতেও তার স্বামীকে অনুগমন করে, সে স্বামীর সঙ্গে ৩৩ বৎসরই স্বর্গবাস করে।” (৪:২৮);
৫ : ষষ্ঠশতকের বরাহমিহির তার বৃহৎসংহিতায় বলেন, “অহো নারীর প্রেম কি সুদৃঢ়, তারা স্বামীর দেহক্রোড়ে নিয়ে অগ্নিতে প্রবেশ করে।” (৭৪:২৩);
৬ : ব্রহ্মপুরাণ : “যদি স্বামীর প্রবাসে মৃত্যু হয়ে থাকে তবে স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর পাদুকা বুকে ধরে অগ্নিপ্রবেশ করা;
৭ : দক্ষ সংহিতা : “যে নারী স্বামীর চিতায় আত্মোৎসর্গ করে সেতার পিতৃকুল, স্বামীকুল উভয়কেইপবিত্র করে।” (৫:১৬০)। যেমন করে সাপুড়ে সাপকে তার গর্ত থেকে টেনে বার করে তেমনভাবে সতী তার স্বামীকে নরক থেকে আকর্ষণ করে এবং সুখে থাকে;
৮ : মহাভারতের মৌষল পর্বে, কৃষ্ণের মৃত্যুর পর তাঁর চার স্ত্রী রুক্ষিণী, রোহিণী, ভদ্রা এবং মদিরা তাঁর চিতায় সহমৃতা হয়েছিলেন। এমন কি বসুদেবের আট পত্নীও তাঁর মৃত্যুর পরে সহমরণে গিয়েছিলেন।
৯ : পাণ্ডু দেহত্যাগ করলে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রী তাঁর চিতায় সহমৃতা হয়েছিলেন;
১০ : রামায়নেও আমরা দেখি, রাবনের কাছে বন্দি থাকাকালে সীতার “সতীত্ব” ঠিক ছিল কী-না সেজন্য অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। সেটা ভগবান রামও অনুমোদন করে দেন!
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৪ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
উনাদের দূর্গাপূঁজা করতে বেশ্যার ঘরের মাটি লাগে যে !
এ ছাড়াও ম্লেচ্ছ ইংরেজরা হিন্দুদের আরও ক্ষতি করেছে। ঠগি নামে হিন্দুদের একটি ধর্ম সম্প্রদায় ছিল। ধর্ম অনুযায়ী এদের বৈধ পেশা ডাকাতি। তারা প্রতি কালী পূজার পর কালীমার আশীর্বাদ নিয়ে ডাকাতিতে নেমে পড়ত। তারা রাজপথে পথিকদের সঙ্গী হত এবং সুযোগ বুঝে গামছা পেচিয়ে সর্বস্ব লুটে মাটি চাপা দিয়ে রাখত। এটা কোনো অপরাধ নয় ধর্ম। ইংরেজরা এদের গণহারে খুন করে ও জেলে পুরে। এখন আমরা স্বাধীন সময় এসেছে সর্বধর্ম মিলেমিশে বাস করা। দ্বিজাতিতত্ত্ব সে কবেই ভুল প্রমাণ হয়েছে। এখন আমাদের উচিৎ আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতির অংশ ঠগীদের আবার পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ঠগী ইন্সটিটিউট গঠন করা। আমরা শেকড়ে ফিরে যেতে চাই।নরবলী চাই, সতীদাহ চাই, জাতপ্রথা চাই, যৌতুক প্রথা চাই। কেবল পহেলা বৈশাখে ধুতি পড়লেই হাজার বছরের ঐতিহ্য রক্ষা হয় না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন