আল্লাহ্ তাআলার ভয় ও তাঁর আযাবকে ভয় করা
লিখেছেন লিখেছেন জীবরাইলের ডানা ২২ জুলাই, ২০১৭, ০৮:১৮:৪৪ সকাল
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِيَّٰيَ فَٱرۡهَبُونِ ﴾ [البقرة: ٤٠]
অর্থাৎ “তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর।” (সূরা বাক্বারাহ ৪০ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ إِنَّ بَطۡشَ رَبِّكَ لَشَدِيدٌ ١٢ ﴾ [البروج: ١٢]
অর্থাৎ “নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও বড়ই কঠিন।” (সূরা বুরুজ ১২ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿وَكَذَٰلِكَ أَخۡذُ رَبِّكَ إِذَآ أَخَذَ ٱلۡقُرَىٰ وَهِيَ ظَٰلِمَةٌۚ إِنَّ أَخۡذَهُۥٓ أَلِيمٞ شَدِيدٌ ١٠٢ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَةٗ لِّمَنۡ خَافَ عَذَابَ ٱلۡأٓخِرَةِۚ ذَٰلِكَ يَوۡمٞ مَّجۡمُوعٞ لَّهُ ٱلنَّاسُ وَذَٰلِكَ يَوۡمٞ مَّشۡهُودٞ ١٠٣ وَمَا نُؤَخِّرُهُۥٓ إِلَّا لِأَجَلٖ مَّعۡدُودٖ ١٠٤ يَوۡمَ يَأۡتِ لَا تَكَلَّمُ نَفۡسٌ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ فَمِنۡهُمۡ شَقِيّٞ وَسَعِيدٞ ١٠٥ فَأَمَّا ٱلَّذِينَ شَقُواْ فَفِي ٱلنَّارِ لَهُمۡ فِيهَا زَفِيرٞ وَشَهِيقٌ ١٠٦ ﴾ [هود: ١٠٢، ١٠٦]
অর্থাৎ “আর এরূপই তাঁর পাকড়াও; যখন তিনি কোন অত্যাচারী জনপদের অধিবাসীদেরকে পাকড়াও করেন। নিঃসন্দেহে তাঁর পাকড়াও অত্যন্ত যাতনাদায়ক কঠিন। নিশ্চয় এ সব ঘটনায় সে ব্যক্তির জন্য নিদর্শন রয়েছে যে ব্যক্তি আখেরাতের শাস্তিকে ভয় করে। ওটা এমন একটা দিন হবে যেদিন সমস্ত মানুষকে সমবেত করা হবে এবং ওটা হবে সকলের উপস্থিতির দিন। আর আমি ওটা নির্দিষ্ট একটি কালের জন্যই বিলম্বিত করছি। যখন সেদিন আসবে তখন কোন ব্যক্তি আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কথাও বলতে পারবে না। সুতরাং তাদের মধ্যে কেউ হবে দুর্ভাগ্যবান এবং কেউ হবে সৌভাগ্যবান। অতএব যারা দুর্ভাগ্যবান তারা তো হবে জাহান্নামে; তাতে তাদের চীৎকার ও আর্তনাদ হতে থাকবে।” (সূরা হূদ ১০২-১০৬ আয়াত)
আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেন,
﴿وَيُحَذِّرُكُمُ ٱللَّهُ نَفۡسَهُۥۗ﴾ [ال عمران: ٢٨]
অর্থাৎ “আল্লাহ তাঁর নিজের সম্বন্ধে তোমাদেরকে সাবধান করছেন।” (আলে ইমরান ২৮ আয়াত)
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ يَوۡمَ يَفِرُّ ٱلۡمَرۡءُ مِنۡ أَخِيهِ ٣٤ وَأُمِّهِۦ وَأَبِيهِ ٣٥ وَصَٰحِبَتِهِۦ وَبَنِيهِ ٣٦ لِكُلِّ ٱمۡرِيٕٖ مِّنۡهُمۡ يَوۡمَئِذٖ شَأۡنٞ يُغۡنِيهِ ٣٧ ﴾ [عبس: ٣٤، ٣٧]
অর্থাৎ “সেদিন মানুষ পলায়ন করবে আপন ভ্রাতা হতে এবং তার মাতা ও তার পিতা হতে, তার পত্নী ও তার সন্তান হতে। সেদিন তাদের প্রত্যেকের এমন গুরুতর অবস্থা হবে, যা নিজেকে সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত রাখবে।” (সূরা আবাসা ৩৪-৩৭ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمۡۚ إِنَّ زَلۡزَلَةَ ٱلسَّاعَةِ شَيۡءٌ عَظِيمٞ ١ يَوۡمَ تَرَوۡنَهَا تَذۡهَلُ كُلُّ مُرۡضِعَةٍ عَمَّآ أَرۡضَعَتۡ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمۡلٍ حَمۡلَهَا وَتَرَى ٱلنَّاسَ سُكَٰرَىٰ وَمَا هُم بِسُكَٰرَىٰ وَلَٰكِنَّ عَذَابَ ٱللَّهِ شَدِيدٞ ٢ ﴾ [الحج: ١، ٢]
অর্থাৎ “হে মানবমণ্ডলী! তোমরা ভয় কর তোমাদের প্রতিপালককে; (আর জেনে রেখো যে,) নিঃসন্দেহে কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ানক ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে সেদিন প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী নিজ দুগ্ধপোষ্য শিশুকে বিস্মৃত হবে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে। আর মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ, অথচ তারা নেশাগ্রস্ত নয়; বস্তুত আল্লাহর শাস্তি বড় কঠিন।” (সূরা হজ্জ্ব ১-২ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেন,
﴿ وَلِمَن خَافَ مَقَامَ رَبِّهِۦ جَنَّتَانِ ٤٦ ﴾ [الرحمن: ٤٦]
অর্থাৎ “আর যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্য রয়েছে দু’টি (জান্নাতের) বাগান।” (সূরা আর-রাহমান ৪৬ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿وَأَقۡبَلَ بَعۡضُهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ يَتَسَآءَلُونَ ٢٥ قَالُوٓاْ إِنَّا كُنَّا قَبۡلُ فِيٓ أَهۡلِنَا مُشۡفِقِينَ ٢٦ فَمَنَّ ٱللَّهُ عَلَيۡنَا وَوَقَىٰنَا عَذَابَ ٱلسَّمُومِ ٢٧ إِنَّا كُنَّا مِن قَبۡلُ نَدۡعُوهُۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡبَرُّ ٱلرَّحِيمُ ٢٨ ﴾ [الطور: ٢٥، ٢٨]
অর্থাৎ “তারা একে অপরের দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করবে এবং বলবে, নিশ্চয় আমরা পূর্বে পরিবার-পরিজনের মধ্যে শংকিত অবস্থায় ছিলাম। অতঃপর আমাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে উত্তপ্ত ঝড়ো হাওয়ার শাস্তি হতে রক্ষা করেছেন। নিশ্চয় আমরা পূর্বেও আল্লাহকে আহবান করতাম। নিশ্চয় তিনি কৃপাময়, পরম দয়ালু।” (সূরা ত্বূর ২৫-২৮ আয়াত)
এ বিষয়ে বহু আয়াত রয়েছে। যেমন হাদীসও রয়েছে অনেক। নিম্নে কতিপয় হাদীস উল্লিখিত হলঃ
1/401 عَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ وَهُوَ الصَّادِقُ المَصدُوقُ: «إنَّ أحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ في بَطْنِ أُمِّهِ أربَعِينَ يَوماً نُطْفَةً، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذلِكَ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذلِكَ، ثُمَّ يُرْسَلُ المَلَكُ، فَيَنْفُخُ فِيهِ الرُّوحَ، وَيُؤْمَرُ بِأرْبَعِ كَلِمَاتٍ: بِكَتْبِ رِزْقِهِ وَأجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ . فَوَالَّذِي لاَ إِلٰهَ غَيْرُهُ إنَّ أحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ الجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وبيْنَهَا إلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيهِ الكِتَابُ، فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ النَّارِ فَيدْخُلُهَا، وَإنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إلاَّ ذِرَاعٌ، فَيَسْبِقُ عَلَيهِ الكِتَابُ فَيعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ الجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১/৪০১। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, যিনি সত্যবাদী ও যাঁর কথা সত্য বলে মানা হয় সেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, ‘‘তোমাদের এক জনের সৃষ্টির উপাদান মায়ের গর্ভে চল্লিশ দিন যাবৎ বীর্যের আকারে থাকে। অতঃপর তা অনুরূপভাবে চলিলশ দিনে জমাটবদ্ধ রক্তপিন্ডের রূপ নেয়। পুনরায় তদ্রূপ চল্লিশ দিনে গোশে্তর টুকরায় রূপান্তরিত হয়। অতঃপর তার নিকট ফিরিশ্তা পাঠানো হয়। সুতরাং তার মাঝে ‘রূহ’ স্থাপন করা হয় এবং চারটি কথা লিখার আদেশ দেওয়া হয়; তার রুযী, মৃত্যু, আমল এবং পাপিষ্ট না পুণ্যবান হবে তা লিখা হয়। সেই সত্তার শপথ, যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই! (জন্মের পর) তোমাদের এক ব্যক্তি (বাহ্যদৃষ্টিতে) জান্নাতবাসীদের মত কাজ-কর্ম করতে থাকে এবং তার ও জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাত তফাৎ থেকে যায়। এমতাবস্থায় তার (তাকদিরের) লিখন এগিয়ে আসে এবং সে জাহান্নামীদের মত আমল করতে লাগে; ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আর তোমাদের অন্য এক ব্যক্তি প্রথমে (বাহ্যদৃষ্টিতে) জাহান্নামীদের মত আমল করে এবং তার ও জাহান্নামের মাঝে মাত্র এক হাত তফাৎ থাকে। এমতাবস্থায় তার (তাকদীরের) লিখন এগিয়ে আসে। তখন সে জান্নাতীদের মত ক্রিয়াকর্ম আরম্ভ করে; পরিণতিতে সে জান্নাতে প্রবেশ করে।’’ (বুখারী-মুসলিম) [1]
2/402 وَعَنهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «يُؤتَى بِجَهَنَّمَ يَومَئذٍ لَهَا سَبْعُونَ ألفَ زِمَامٍ، مَعَ كُلِّ زِمَامٍ سَبعُونَ ألْفَ مَلَكٍ يَجُرُّونَهَا ». رواه مسلم
২/৪০২। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন জাহান্নামকে এ অবস্থায় নিয়ে আসা হবে যে, তার সত্তর হাজার লাগাম থাকবে। প্রত্যেক লাগামের সাথে সত্তর হাজার ফিরিশতা থাকবেন। তাঁরা তা টানতে থাকবেন।’’ (মুসলিম) [2]
3/403 وَعَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ الله ﷺ، يَقُولُ: «إنَّ أهْوَنَ أهْلِ النَّارِ عَذَاباً يَوْمَ القِيَامَةِ لَرَجُلٌ يُوضَعُ في أخْمَصِ قَدَمَيْهِ جَمْرَتَانِ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُهُ . مَا يَرَى أنَّ أَحَداً أشَدُّ مِنْهُ عَذَاباً، وَأنَّهُ لأَهْوَنُهُمْ عَذَاباً ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৩/৪০৩। নু‘মান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, ‘‘কিয়ামতের দিবসে ঐ ব্যক্তির সর্বাপেক্ষা হাল্কা আযাব হবে, যার দু’ পায়ের তলায় জ্বলন্ত দু’টি অঙ্গার রাখা হবে। যার ফলে তার মাথার মগজ ফুটতে থাকবে। সে মনে করবে না যে, তার চেয়ে কঠিন আযাব অন্য কেউ ভোগ করছে। অথচ তারই আযাব সবার চেয়ে হাল্কা!’’ (বুখারী ও মুসলিম) [3]
4/404 وَعَن سَمُرَةَ بنِ جُندُبٍ رضي الله عنه: أنَّ نَبيَّ الله ﷺ، قَالَ:«مِنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ النَّارُ إِلَى كَعْبَيهِ، وَمنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى رُكْبَتَيهِ، وَمنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى حُجزَتِهِ، وَمِنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى تَرْقُوَتِهِ ». رواه مسلم
৪/৪০৪। সামুরাহ ইবনে জুনদুব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘জাহান্নামীদের মধ্যে কিছু লোকের পায়ের গাঁট পর্যন্ত আগুন হবে, কারো হাঁটু পর্যন্ত, কারো কোমর পর্যন্ত এবং কারো কারো কণ্ঠাস্থি (গলার নিচের হাড়) পর্যন্ত হবে।’’ (মুসলিম) [4]
5/405 وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ، قَالَ: «يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ العَالَمِينَ حَتَّى يَغِيبَ أحَدُهُمْ في رَشْحِهِ إِلَى أنْصَافِ أُذُنَيهِ ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৫/৪০৫। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন লোকেরা বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান হবে (এবং তাদের এত বেশি ঘাম হবে যে,) তাদের মধ্যে কেউ তার ঘামে তার অর্ধেক কান পর্যন্ত ডুবে যাবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [5]
6/406 وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ خُطبَةً مَا سَمِعْتُ مِثلَهَا قَطُّ، فَقَالَ: «لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ، لَضحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيتُمْ كَثِيراً » فَغَطَّى أصْحَابُ رَسُولِ اللهِ ﷺ وَجُوهَهُمْ، وَلَهُمْ خَنِينٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ وفي رواية: بَلَغَ رَسُولَ اللهِ ﷺ عَنْ أَصْحَابِهِ شَيْءٌ فَخَطَبَ، فَقَالَ: «عُرِضَتْ عَلَيَّ الجَنَّةُ وَالنَّارُ، فَلَمْ أرَ كَاليَومِ في الخَيرِ وَالشَّرِّ، وَلَوْ تَعْلَمونَ مَا أعلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيراً» فَمَا أتَى عَلَى أصْحَابِ رَسُولِ اللهِ ﷺ يَوْمٌ أَشَدُّ مِنْهُ، غَطَّوْا رُؤُسَهُمْ وَلَهُمْ خَنِينٌ .
৬/৪০৬। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আমাদেরকে এমন ভাষণ শুনালেন যে, ওর মত (ভাষণ) কখনোও শুনিনি। তিনি বললেন, ‘‘যা আমি জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে।’’ (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ তাঁদের চেহারা ঢেকে নিলেন এবং তাদের বিলাপের রোল আসতে লাগল। (বুখারী ও মুসলিম) [6]
অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সাহাবীদের কোনো কথা পৌঁছল। অতঃপর তিনি ভাষণ দিয়ে বললেন, ‘‘আমার নিকট জান্নাত ও জাহান্নাম পেশ করা হল। ফলে আমি আজকের মত ভাল ও মন্দ (একত্রে) কোন দিনই দেখিনি। যদি তোমরা তা জানতে, যা আমি জানি, তাহলে কম হাসতে আর বেশি কাঁদতে।’’ সুতরাং সাহাবীদের জন্য সেদিনকার মত কঠিনতম দিন আর ছিল না। তাঁরা তাঁদের মাথা আবৃত করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।
7/407 وَعَنِ المِقدَادِ رضي الله عنه، قَالَ: سمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ، يَقُولُ: «تُدْنَى الشَّمْسُ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنَ الخَلْقِ حَتَّى تَكُونَ مِنْهُمْ كَمِقْدَارِ مِيلٍ ». قَالَ سُلَيْم بنُ عَامِرٍ الرَّاوِي عَنِ المِقدَادِ: فَوَاللهِ مَا أدْرِي مَا يَعنِي بِالمِيلِ، أَمَسَافَةَ الأرضِ أَمِ المِيلَ الَّذِي تُكْتَحَلُ بِهِ العَيْنُ ؟ قَالَ: «فَيكُونُ النَّاسُ عَلَى قَدْرِ أعْمَالِهِمْ في العَرَقِ، فَمِنْهُمْ مَنْ يَكُونُ إِلَى كَعْبَيْهِ، وَمِنهُم مَن يَكُونُ إِلَى رُكبَتَيهِ، وَمِنهُم مَنْ يَكُونُ إِلَى حِقْوَيْهِ، وَمِنْهُمْ مَنْ يُلْجِمُهُ العَرَقُ إلْجَاماً». قَالَ: وَأَشَارَ رَسُولُ اللهِ ﷺ بيدهِ إِلَى فِيهِ . رواه مسلم
৭/৪০৭। মিক্বদাদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘কিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টজীবের এত কাছে করে দেওয়া হবে যে, তার মধ্যে এবং সৃষ্টজীবের মধ্যে মাত্র এক মাইলের ব্যবধান থাকবে।’’ মিক্বদাদ থেকে বর্ণনাকারী সুলাইম ইবন আমের বলেন, আল্লাহর কসম! আমি জানিনা যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘মীল’ শব্দের কী অর্থ নিয়েছেন, যমীনের দূরত্ব (মাইল), নাকি (সুরমাদানীর) শলাকা যার দ্বারা চোখে সুরমা লাগানো হয়? ‘‘সুতরাং মানুষ নিজ নিজ আমল অনুযায়ী ঘামে ডুবতে থাকবে। তাদের মধ্যে কারো তার পায়ের গাঁট পর্যন্ত, কারো হাঁটু পর্যন্ত (ঘাম হবে) এবং তাদের মধ্যে কিছু এমন লোকও হবে যাদেরকে ঘাম লাগাম লাগিয়ে দেবে।’’ (অর্থাৎ নাক পর্যন্ত ঘামে ডুববে।) এ কথা বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মুখের দিকে ইশারা করলেন। (মুসলিম) [7]
8/408 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ، قَالَ: «يَعْرَقُ النَّاسُ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يَذْهَبَ عَرَقُهُمْ في الأَرضِ سَبْعِينَ ذِراعاً، وَيُلْجِمُهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ آذَانَهُمْ ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৮/৪০৮। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘কিয়ামতের দিন মানুষের প্রচণ্ড ঘাম হবে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত পর্যন্ত নিচে যাবে। আর তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত থাকবে। এমন কি কান পর্যন্তও।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [8]
9/409 وَعَنهُ، قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ ﷺ إذْ سَمِعَ وَجْبَةً، فَقَالَ: «هَلْ تَدْرُونَ مَا هَذَا ؟ » قُلْنَا: اللهُ وَرَسُولُهُ أعْلَمُ . قَالَ: «هذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ في النَّارِ مُنْذُ سَبْعينَ خَريفاً، فَهُوَ يَهْوِي في النَّارِ الآنَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى قَعْرِها فَسَمِعْتُمْ وَجْبَتَهَا ». رواه مسلم
৯/৪০৯। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি হলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। অকস্মাৎ তিনি কোনো জিনিস পড়ার আওয়াজ শুনলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তোমরা জান এটা কি?’’ আমরা বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রসূল বেশী জানেন।’ তিনি বললেন, ‘‘এটা ঐ পাথর, যেটিকে সত্তর বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, এখনই তা জাহান্নামের গভীরতায় (তলায়) পৌঁছল। ফলে তারই পড়ার আওয়াজ তোমরা শুনতে পেলে।’’ (মুসলিম) [9]
10/410 عَن عَدِي بنِ حَاتمٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَينَهُ وَبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ، فَيَنْظُرُ أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إلاَّ مَا قَدَّمَ، وَيَنْظُرُ أَشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرى إلاَّ مَا قَدَّمَ، وَيَنظُرُ بَيْنَ يَدَيهِ فَلاَ يَرَى إلاَّ النَّار تِلقَاءَ وَجْهِهِ، فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَو بِشِقِّ تَمْرَةٍ» . متفق عليه
১০/৪১০। আদী ইবনে হাতেম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে তার প্রতিপালক কথা বলবেন; তার ও তাঁর মাঝে কোন আনুবাদক থাকবে না। (সেখানে) সে তার ডানদিকে তাকাবে, সুতরাং সেদিকে তা-ই দেখতে পাবে যা সে অগ্রিম পাঠিয়েছিল। বামদিকে তাকাবে, সুতরাং সেদিকেও নিজের কৃতকর্ম দেখতে পাবে। আর সামনে তাকাবে, সুতরাং তার চেহারার সামনে জাহান্নাম দেখতে পাবে। অতএব তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো; যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকাহ করে হয়।’’ (বুখারী-মুসলিম) [10]
11/411 وَعَن أَبي ذَرٍّ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «إنِّي أَرَى مَا لاَ تَرَوْنَ، أطَّتِ السَّمَاءُ وَحُقَّ لَهَا أنْ تَئِطَّ، مَا فِيهَا مَوضِعُ أرْبَعِ أصَابعَ إلاَّ وَمَلَكٌ وَاضِعٌ جَبْهَتَهُ سَاجِداً للهِ تَعَالَى . وَاللهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ، لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيراً، وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بالنِّسَاءِ عَلَى الفُرُشِ، وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ تَجْأرُونَ إِلَى اللهِ تَعَالَى ». رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث حسن »
১১/৪১১। আবূ যার্র রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, ‘‘অবশ্যই আমি দেখি, যা তোমরা দেখতে পাও না। আকাশ কটকট্ করে শব্দ করছে। আর এ শব্দ তার করা সাজে। এতে চার আঙ্গুল পরিমাণ এমন জায়গা নেই, যেখানে কোনো ফিরিশ্তা আল্লাহর জন্য সিজদায় নিজ কপাল অবনত রাখেননি। আল্লাহর কসম! তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে তোমরা কম হাসতে এবং বেশী কাঁদতে এবং বিছানায় তোমরা স্ত্রীদের সাথে আনন্দ উপভোগ করতে না। (বরং) তোমরা আল্লাহর আশ্রয় নেওয়ার জন্য পথে পথে বের হয়ে যেতে।’’(তিরমিযী, ইবনে মাজাহ) [11]
12/412 وَعَن أَبي بَرزَةَ نَضْلَةَ بنِ عُبَيدٍ الأسلَمِي رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «لاَ تَزُولُ قَدَمَا عَبْدٍ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أفنَاهُ ؟ وَعَنْ عِلمِهِ فِيمَ فَعَلَ فِيهِ ؟ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أيْنَ اكْتَسَبَهُ ؟ وَفيمَ أنْفَقَهُ ؟ وَعَنْ جِسمِهِ فِيمَ أبلاهُ ؟ » رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث حسن صحيح »
১২/৪১২। আবূ বারযাহ নাদ্বলাহ ইবনে উবাইদ আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন বান্দার পা দু’খানি সরবে না। (অর্থাৎ আল্লাহর দরবার থেকে যাওয়ার তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না।) যতক্ষণ না তাকে প্রশ্ন করা হবে; তার আয়ু সম্পর্কে, সে তা কিসে ক্ষয় করেছে? তার ইলম (বিদ্যা) সম্পর্কে, সে তাতে কী আমল করেছে? তার মাল সম্পর্কে, কী উপায়ে তা উপার্জন করেছে এবং তা কোন্ পথে ব্যয় করেছে? আর তার দেহ সম্পর্কে, কোন কাজে সে তা ক্ষয় করেছে?’’ (তিরমিযী, হাসান সূত্রে) [12]
13/413 وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، رضي الله عنه، قَالَ: قَرَأَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: « يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا » ثُمَّ قَالَ: «أَتَدْرُوْنَ مَا أَخْبَارَهَا؟ » قَالُوْا: اَللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ . قَالَ: «فَإِنَّ أَخْبَارَهَا أَنْ تَشْهَدَ عَلىٰ كُلِّ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ بِمَا عَلىٰ ظَهْرِهَا، تَقُوْلُ: عَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا فِيْ يَوْمٍ كَذَا وَكَذَا، فَهَذِهِ أَخْبَارَهَا » رواه الترمذي وقال: حديث حسن.
১৩/৪১৩। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতটি তিলাওয়াত করলেনঃ ‘‘সেদিন তা (যমীন) তার প্রত্যেক বিষয় বর্ণনা করবে’’- (সূরা আয্-যিলযালঃ ৪)। অতঃপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানো যমীন সেদিন কী বর্ণনা করবে? উপস্থিত সকলেই বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ যমীন বলবে, এই এই কর্ম তুমি এই এই দিন করেছো। এগুলো হলো তার বর্ণনা।[13]
14/414 وَعَن أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «كَيْفَ أنْعَمُ ! وَصَاحِبُ القَرْنِ قَدِ التَقَمَ القَرْنَ، وَاسْتَمَعَ الإذْنَ مَتَى يُؤمَرُ بالنَّفْخِ فَيَنْفُخُ » فَكَأنَّ ذلِكَ ثَقُلَ عَلَى أصْحَابِ رسولِ الله ﷺ فَقَالَ لَهُمْ: «قُولُوا: حَسْبُنَا الله وَنِعْمَ الوَكِيلُ ». رواه الترمذي، وَقالَ: حديث حسنٌ
১৪/৪১৪। আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আমি কেমন করে হাসিখুশি করব, অথচ শিঙ্গা ওয়ালা (ইস্রাফীল তো ফুৎকার দেওয়ার জন্য) শিঙ্গা মুখে ধরে আছেন। আর তিনি কান লাগিয়ে আছেন যে, তাঁকে কখন ফুৎকার দেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে এবং তিনি ফুৎকার দেবেন।’’ অতঃপর এ কথা যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের জন্য ভারী বোধ হল। সুতরাং তিনি তাঁদেরকে বললেন, ‘‘তোমরা বল, ‘হাসবুনাল্লাহু অনি‘মাল অকীল।’ অর্থাৎ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং উত্তম সাহায্যকারী।’’(তিরমিযী, হাসান) [14]
15/415 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: «مَنْ خَافَ أدْلَجَ، وَمَنْ أدْلَجَ بَلَغَ المَنْزِلَ. أَلاَ إنَّ سِلْعَةَ اللهِ غَالِيَةٌ، ألاَ إنَّ سِلْعَةَ الله الجَنَّةُ ». رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث حسن»
১৫/৪১৫। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি গভীর রাত্রিকে ভয় করে সে যেন সন্ধ্যা রাত্রেই সফর শুরু করে। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যারাত্রে চলতে শুরু করে সে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যায়। সাবধান! আল্লাহর পণ্য বড় দামী। শোনো! আল্লাহর পণ্য হল জান্নাত।’’ (তিরমিযী, হাসান)[15]
16/416 وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ ﷺ، يَقُولُ: «يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ القِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلاً» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ جَمِيعاً يَنْظُرُ بَعضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ؟! قَالَ: «يَا عائِشَةُ، الأمرُ أشَدُّ مِنْ أنْ يُهِمَّهُمْ ذلِكَ » .
وفي رواية: «الأَمْرُ أهمُّ مِنْ أنْ يَنْظُرَ بَعضُهُمْ إِلَى بَعضٍ ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৬/৪১৬। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মানুষকে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাত্নাবিহীন অবস্থায়।’’ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! পুরুষ ও মহিলারা একে অপরের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে?’ তিনি বললেন, ‘‘হে আয়েশা! তাদের এরূপ ইচ্ছা করার চাইতেও কঠিন হবে তখনকার অবস্থা।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [16]
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তাদের একে অন্যের দিকে তাকাতাকি করা অপেক্ষা ব্যাপার আরো গুরুতর হবে।’’
[1] সহীহুল বুখারী ৩২০৮, ৩৩৩২, ৬৫৯৪, ৭৪৫৪, মুসলিম ২৬৪৩, তিরমিযী ২১৩৭, আবূ দাউদ ৪৭০৮, ইবনু মাজাহ ৭৬, আহমাদ ৩৫৪৩, ৩৬১৭, ৪০৮০
[2] মুসলিম ২৮৪২, তিরমিযী ২৫৭৩
[3] সহীহুল বুখারী ৬৫৬১, ৬৫৬২, মুসলিম ২১৩, তিরমিযী ২৬০৪, আহমাদ ১৭৯২৩, ১৭৯৪৬
[4] মুসলিম ২৮৪৫, আহমাদ ১৯৫৯৭, ১৯৬৯৫
[5] সহীহুল বুখারী ৪৯৩৮, ৬৫০১, মুসলিম ২৮৬২, তিরমিযী ২৪২২, ৩৩৩৫, ইবনু মাজাহ ৪২৭৮, আহমাদ ৪৫৯৯, ৪৬৮৩, ৪৮৪৭, ৫২৯৬, ৫৩৬৫, ৫৭৮৯
[6] সহীহুল বুখারী ৪৬২১, ৯৩, ৫৪০, ৬৩৬২, ৬৪৮৬, ৭০৯১, ৭২৯৪, ৭২৯৫, মুসলিম ২৩৫৯, আহমাদ ১১৫০৩, ১২২৪৮, ১২৩৭৫, ১২৪০৯, ১২৭৩৫, ১৩২৫৪
[7] মুসলিম ২৮৬৪, তিরমিযী ২৪২১, আহমাদ ৯৩৩০১
[8] সহীহুল বুখারী ৬৫৩২, মুসলিম ২৮৬৩, আহমাদ ৯১৪৪
[9] মুসলিম ২৮৪৪, আহমাদ ৮৬২২
[10] সহীহুল বুখারী ১৪১৩, ১৪১৭, ৩৫৯৫, ৬০২৩, ৬৫৩৯, ৬৫৬৩, ৭৪৪৩, ৭৫১২, মুসলিম ১০১৬, নাসায়ী ২৫৫২, ২৫৫৩, আহমাদ ১৭৭৮২
[11] তিরমিযী ২৩১২, ইবনু মাজাহ ৪১৯০, আহমাদ ২১০০৫
[12] তিরমিযী ২৪১৭, দারেমী ৫৩৭
[13] আমি (আলবানী) বলছিঃ তিরমিযীর কোন কোন কপিতে সহীহ্ শব্দটি নেই আর হাদীসটির বর্ণনাকারীদের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সেটিই সঠিকের নিকটবর্তী। দেখুন ‘‘সিলসিলাহ্ য‘ঈফা’’ (৪৮৩৪)। হাদীসটিকে ইবনু হিববান (২৫৮৬) ও হাকিমও (২/৫৩২) বর্ণনা করেছেন। এর এক বর্ণনাকারী ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবী সুলাইমান সম্পর্কে ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি মুনকারুল হাদীস আর হাফিয ইবনু হাজার তাকে হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। [৪৮৩৪]।
[14] তিরমিযী ২৪৩১, ৩২৪৩, আহমাদ ১০৬৫৫
[15] তিরমিযী ২৪৫০
[16] সহীহুল বুখারী ৬৫২৭, মুসলিম ২৮৫৯, নাসায়ী ২০৮৩, ২০৮৪, ইবনু মাজাহ ৪২৭৬, আহমাদ ২৩৭৪৪, ২৪০৬৭
____________________________________________________________________________________________________________
সংকলন : ইমাম মুহিউদ্দীন আবু যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবন শরফ আন-নাওয়াবী রহ.
হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় : শাইখ মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ.
বিষয়: বিবিধ
৭০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন