জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা ও দেশে ইসলামী মৌলবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন সজিব ওয়াজেদ জয়!
লিখেছেন লিখেছেন জীবরাইলের ডানা ২০ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০৮:২৮ দুপুর
.
জনাব জয়ের আবদার রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ছাড়া আর কিছু নয় : এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ
.
দেশবাসী বিস্মিত হলো যখন জনাব সজিব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের চরম রক্ষণশীল একটি পত্রিকায় একটি নিবন্ধ লিখে জামায়াতে ইসলামীর কড়া সমালোচনা এবং বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করলেন। ‘ওয়াশিংটন টাইমস্’ নামের পত্রিকাটিতে জয়ের এ নিবন্ধটি ছাপা হয়। ‘আনমাস্কিং টেররিস্টস্ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের প্রাথমিক পৃষ্ঠপোষক হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। তার লেখায় অতিসম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের গ্রেফতার ও তাদের কাছে অবিস্ফোরিত ২০টি বিস্ফোরক ডিভাইস, ২৫টি বাঁশের লাঠি উদ্ধারের এক রহস্যজনক নাটকের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। জনাব জয় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের সদস্যরা পাকিস্তানী সৈন্যদের ৩০ লাখ মানুষ হত্যা, ২ লাখ নারী ধর্ষণ এবং লাখ লাখ মানুষকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করার কল্প-কাহিনী বর্ণনা করেছেন। তিনি আইসিটির রায়ের প্রতিবাদে তথাকথিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কথাও উল্লেখ করেছেন।
জনাব জয়ের এই বক্তব্য বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। সেইসাথে সামাজিক গণমাধ্যমে তার এই বক্তব্যের সমালোচনা, অযৌক্তিকতা, অসারতা ও রাজনৈতিক চাতুর্যের বিষয়ে কড়া ভাষায় লেখালেখি হয়েছে। আবার অনেকে বিশ্রী ভাষায় এমন মন্তব্য করেছেন যা কলমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
জনাব জয় জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার যে আবদার রেখেছেন এটা তাদের অনেক পুরোনো বক্তব্য। বাংলাদেশের কোথাও কিছু ঘটলেই তা জামায়াতের ঘাড়ে চাপানো তাদের এক বদ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এমন কি তাদের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাভারের আশুলিয়ায় বিল্ডিং ধ্বসে পড়ার সময় সে বিল্ডিংয়ের খুঁটি ধরে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা ঝাঁকুনি দিয়েছে বলেও আজগুবি ও হাস্যকর বক্তব্য রেখে নিজেদের রাজনৈতিক সুস্থতার ব্যাপারে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আওয়ামী লীগ বোমা হামলা চালিয়ে তা উল্টো জামায়াত শিবিরের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা করেছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে দোষীদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। এমনকি জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি সন্ত্রাসী ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন এবং এ ধরনের কমিটি গঠন করা হলে জামায়াতের পক্ষ থেকে সর্বোতভাবে সহযোগিত করা হবে মর্মেও জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন। এ বিবৃতি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রচারিত হয়েছে। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল দ্ব্যর্থহীনভাষায় আরো ঘোষণা করেছেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জামায়াতের কোন কর্মী বা সমর্থকের কোন ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে জামায়াত তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাকে প্রচলিত আইনের হাতে সোপর্দ করতেও প্রস্তুত রয়েছে। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেলের এই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সরকার জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কোন তদন্ত কমিটি গঠনের ন্যূনতম সাহস দেখাতে পারেনি। বরং রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের লক্ষ্যে জামায়াতকে দোষারোপ করে ঢালাওভাবে বক্তৃতা করা হচ্ছে। জনাব জয় জামায়াতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের সে অভিযোগ এনেছেন তা তার নিজের দলের জন্যই প্রযোজ্য। বাংলাদেশে হত্যা, সন্ত্রাস, খুন, গুম ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার সাথে আওয়ামী ক্যাডাররা সরাসরি সম্পৃক্ত। এমনকি এসব অপকৃর্তি করতে গিয়ে তারা ঘটনাস্থলে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। জাতীয় দৈনিকে ধৃত ব্যক্তির ছবিসহ সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
হঠাৎ করে জনাব জয়ের এ বক্তব্য এবং তার মা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মিডিয়ায় আসার কারণে জনগণের মাঝে নানা ধরণের প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জামায়াতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান নতুন কোন ঘটনা না হলেও মি. জয়ের মুখে তার প্রকাশ খুব তাৎপর্য বহন করে। এরপর একই সুরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রচার হওয়ায় এর একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে পরিষ্কারভাবে মনে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বা জনাব সজিব ওয়াজেদ জয়ের এ বক্তব্যের পিছনে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধী কাজ করলেও জনগণের মধ্যে এই বক্তব্যের কোনো গুরুত্ব আছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশ সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশ। এদেশের মানুষ নির্ধারণ
বিষয়: বিবিধ
১২৬৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন