বটতলার উকিল কামরুল কি রাষ্টের প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন?

লিখেছেন লিখেছেন জীবরাইলের ডানা ০৬ মার্চ, ২০১৬, ০৬:১৫:৪৯ সকাল



প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে সরিয়ে দিয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাশেম আলীর আপিলের পুনরায় শুনানির দাবি জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

আজ (শনিবার) রাজধানীর ধানমন্ডির বিলিয়া মিলনায়তনে ‘একাত্তরের গণহত্যাকারীদের বিচারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র: সরকার, বিচার বিভাগ ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গোলটেবিলের আয়োজক করে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (প্রধান বিচারপতি) বলেছেন, প্রসিকিউশন রাজনীতি করছে। এর অর্থ হলো, সরকার রাজনীতি করছে। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো বিএনপি-জামায়াতের, তার সত্যতা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিচার হচ্ছে। প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যে সবকিছু প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেল। জামায়াত-বিএনপির অভিযোগকে তিনি প্রমাণ করে দিলেন।’ তিনি বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব, রাষ্ট্রপক্ষের মামলা সঠিকভাবে পরিচালনা করা। তিনিও (অ্যাটর্নি জেনারেল) একই সুরে কথা বলছেন।’

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মীর কাশেম আলীর দেহ কারাগারে থাকলেও অর্থ-বিত্ত বাইরে সক্রিয়। যার ফলশ্রুতিতে এ রায় নিয়ে এত কথা হচ্ছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে চাই না। প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে এই মামলার শুনানি হওয়া উচিত। রাষ্ট্রের প্রধান কৌঁসুলিকেও (অ্যাটর্নি জেনারেল) এই মামলা পরিচালনা থেকে বিরত রাখা উচিত। নইলে আমরা বিচার পাব না।’

কামরুল ইসলাম বলেন, এই মামলার রায় কী হবে তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি যে, এই মামলায় আর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এরপরও যদি মীর কাসেমের মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়- তাহলে সবাই ভাববে, সরকার চাপ দিয়ে এই কাজ করিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ মানবতাবিরোধীর আপিলের রায় আরেক যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মতো হলে তা কোনো অবস্থাতেই মানা হবে না। এ সময়, মীর কাসেমের বিপক্ষে ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় আপিলে বহাল থাকবে, এমন প্রত্যাশার কথাও জানান আওয়ামী লীগের এ নেতা।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, বিচারপতিরা আইনের ঊর্ধ্বেও নন। আমাদের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে সেটা বলা আছে। আমরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নই। কাজেই আইনটা সকলের জন্য সমান।

তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করব, আপনি আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিন। নইলে এ পদে থাকার কতটুকু সুযোগ আছে, তাঁর ওপরই সেটা রাখতে চাই।’

উল্লেখ্য, মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা শুনানিকালে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।‘ এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনায় খুবই মর্মাহত। মামলার এভিডেন্স দেখলে, এগুলো পড়লে আমাদের খুব কষ্ট লাগে। মামলাগুলো যখন আমরা পড়ি, তখন আমাদের গা ঘিনঘিন করে তাদের মামলা পরিচালনা দেখে। সব মামলায় এটা হয়ে আসছে।

বিষয়: রাজনীতি

৯৪৫৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

361563
০৬ মার্চ ২০১৬ সকাল ০৭:৩৩
তট রেখা লিখেছেন : বিচারাধীন মামলার ব্যাপারে, প্রধান বিচারপতির বিরূদ্ধে এভাবে কথা বলা কি আদালত অবমাননা নয় ? না কি মন্ত্রীরা আদালত অবমাননার আইনে ইন্ডেমনিটি প্রাপ্ত ?
361566
০৬ মার্চ ২০১৬ সকাল ০৭:৫৭
শেখের পোলা লিখেছেন : মন্ত্রীদের জন্য আইন নয়৷ কেননাা তারাই আইন বানান৷ নব্য ডিজিটাল দেশের বোধহয় সংবিধান এমনটাই বলে৷ অমন কথা পাবলিক বললে এতক্ষন তার গ্রেফ্তার, শতখানিক কেস, রিমাণ্ড হয়ে ফাঁসীও হয়ে যেত৷ হায়রে আমার দেশ৷
361573
০৬ মার্চ ২০১৬ সকাল ০৯:১৮
হতভাগা লিখেছেন : কামরুল সাহেব অনেক ভদ্র ভাষায় কথা বলেছেন উনাদের ব্যাপারে।
361582
০৬ মার্চ ২০১৬ সকাল ১১:৪৩
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন :
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উনি (প্রধান বিচারপতি) বলেছেন, প্রসিকিউশন রাজনীতি করছে। এর অর্থ হলো, সরকার রাজনীতি করছে। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো বিএনপি-জামায়াতের, তার সত্যতা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিচার হচ্ছে। প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যে সবকিছু প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেল।
361599
০৬ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০২:৪৫
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File