১/১১ থেকে ফ্যাসিবাদ, শোষক জমিদারের জায়গায় ভ্রাহ্মন্যবাদের ক্রীড়নক

লিখেছেন লিখেছেন জীবরাইলের ডানা ০৩ মার্চ, ২০১৬, ০৬:৩২:১১ সকাল



অলিউল্লাহ নোমান

আবারো আলোচনায় ১/১১। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি টার্নিং পয়েন্ট। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ১/১১-এর ধারাবাতিকতা মাত্র। ১/১১-এর জরুরী আইনের দাপুটে সরকার নিজেদের অযোগ্যতা এবং অদূরদর্শীতার কারনে চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। নিরাপদ প্রস্তানের পথ তৈরি করতেই তারা বর্তমান ক্ষমতাসীনদের দারস্ত হয় তখন। অন্তরালের সমঝোতা হয়েছিল। ক্ষমতার খুটি সেনা কর্মকর্তারা তখন কারাগারে গিয়ে দুই নেত্রীর সাথেই বৈঠক করেছিলেন। সে আলোকেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন মুক্তি পান আগেভাগে। অতি ক্ষিপ্র গতিতে মুক্তি হয় তাঁর। অসুস্থতার জিকির তোলে মুক্তি মিললেও মেহদীরাঙ্গা হাতে কারাগার থেকে বের হন তিনি। ওয়ারেন্টের আসামী হয়েও ভোট চেয়ে ঘুরেছেন জেলা থেকে উপজেলায়। সাজানো নির্বাচনে ভুমিধ্বস বিজয়ের পর শপথ গ্রহন করেন ফৌজদারি মামলার ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে।

বহু ক্ষেত্রে এখন ১/১১-এর জরুরী আইনকেও ছাড়িয়ে গেছেন শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সরকার। কথিত গণতন্ত্রের নামে ফ্যাসিবাদ চুড়ান্তরুপ দেখছে বাংলাদেশের মানুষ। ফ্যাসিবাদের কালো থাবায় ব্যক্তি, পরিবার এবং গোষ্ঠীর শাসনের কবলে গোটা দেশ। সাধারণ মানুষ নিজ নিজ এলাকায় ফ্যাসিবাদী শাসক গোষ্ঠীর ক্রিড়নকদের হাতে জিম্মি। জেলায় জেলায় আইন-আদালত, পুলিশ, প্রশাসন সবই চলে তাদের হুকুমে। এ যেন ১৯৪৭ পূর্ববর্তী জমিদারি শাসনে ফিরে গেছেন নাগরিকরা। তখন ইংরেজ শাসকের তাবেদার হিন্দু জমিদার গোষ্ঠীর নিপীড়নের শিকার ছিল সাধারণ কৃষক প্রজারা। এখন ইন্ডিয়ার হিন্দুত্ববাদী শাসনের তাবেদার শাসক গোষ্ঠীর ক্রীড়নকদের হাতে জিম্মি সেই সাধারণ খেটে খাওয়া কৃষক মজুর। পার্থক্যটা হচ্ছে আগে শোষন নির্যাতন করত ইংরেজ শাসনের ক্রীড়নক হিন্দু জমিদার। এখন শোষণ নির্যাতন করছে হিন্দুত্ববাদী ইন্ডিয়ার তাবেদার শাসক গোষ্ঠীর স্বদেশী ক্রীড়নকরা। শোষক হিন্দু জমিদারদের জায়গাটি দখল করেছে ফ্যাসিবাদের কালো থাবায় গজিয়ে উঠা স্বদেশী তাবেদার একটা গোষ্ঠী। সাধারণ খেটে খাওয়া কৃষক মজুরের যেন নির্যাতন, নিপীড়ন থেকে রেহাই বা মুক্তি নেই। জমিদার সামন্ত শাসকের জায়গায় ফ্যাসিবাদী শাসক। শুধু নামে এবং স্টাইলে কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছে।

স্কুল- কলেজের বই পুস্তক থেকেও ইতোমধ্যে উঠে গেছে মুসলমান পরিচয়। হাজার বছরের মুসলিম সংস্কৃতির জায়গাটি পাঠ্য পুস্তকে দখল নিয়েছে হিন্দুত্বের দার্শনিক তত্বের গল্প, কবিতা। সংবিধানের মূলনীতি থেকে মূছে ফেলা হয়েছে সকল কাজে সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাসের বিধান। এর জায়গায় পুনস্থাপন করা হয়েছে কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’। রহস্যজনকভাবে নীরব রইছেন এক সময় যারা সংবিধানে বিসমিল্লা সংযোজন এবং মূলনীতিতে আল্লাহর উপর আস্থা এবং বিশ্বাস সংযোজনের দাবী করে গর্ব করতেন। সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায়ের চেস্টা করতেন। তাদের এ নীরবতা ফ্যাসিবাদকে আরো বহুদূর এগিয়ে দিচ্ছে। নির্ভয়ে তারা পাঠ্য পুস্তকে হাজার বছরের মুসলিম সংস্কৃতির ঐতিহ্যটুকু মুছে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। এনিয়ে কোন আওয়াজ নেই। কারো পক্ষ থেকে প্রতিবাদ নেই। সবাই যেন এখন ফ্যাসিবাদের নীরব সমর্থক। কেউ ভয়ে, কেউ বোঝে, কেউ না বোঝে নীরব। কেউ অদূর ভবিষ্যতে ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে বিদেশী বেনিয়াদের খুশি রাখতে নীরব। এ সুযোগে ফ্যাসিবাদ অদম্য গতিতে তাদের কার্য সম্পাদন করছে।

ব্যবসা, বাণিজ্য, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে ফ্যাসিবাদের সমর্থক এক শ্রেনীর মাফিয়া গোষ্ঠী। কৌশলে হাতিয়ে নেয়ার চেস্টা করছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধ মতের ব্যবসায়ীদের সহায় সম্পদ। ইসলামি ব্যাঙ্কসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকানা পরিবর্তন হয়ে ফ্যাসিবাদের তৈরি মাফিয়া ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাওয়ার কথা চাউড় হয়েছে। যদিও শেষ রক্ষার আশায় ২০১১ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সময় ঢাকা শহর নৌকা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিসহ ফ্যাসিবাদী নানা শ্লোগানে সাজিয়ে দিতে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে ব্যঙ্কটি। এই সাজিয়ে দিতে পারার অহঙ্কারে তখন তারা যেন বাতাসে উড়ছিলেন।

বিচার ও বিচারালয়ের ভুমিকা হচ্ছে ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখার মূল খুটি হিসাবে। ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে বিচারালয় আইনের ব্যাখ্যা দিচ্ছে তাদের মত করে। গণমাধ্যম দালালের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়ে ফ্যাসিবাদী কর্মকান্ডকে আরো উস্কে দিচ্ছে। তাদের এই উস্কানি এবং আদালতের ভুমিকার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই নেমে আসে বিপদ। পাকড়াও করা হয় রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে বা আদালত অবমাননার খড়গ দিয়ে। দু/একজন যারা সাহস করে এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কলম নিয়ে রুখে দাড়ানোর চেস্টা করেছিলেন তাদের পরিণামও ভাল হয়নি। কারাগারের চার দেয়ালের ভেতরে এখন তাদের আপন ঠিকানা।

গত ৬ ফেব্রুয়ারী ইংরেজী দৈনিক ডেইলি ষ্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ১/১১ সরকার আমলে নিজের আংশিক ভুলের জন্য ক্ষমা চান। তারপরই বিষয়টি আলোচনায় সমানে চলে আসে। দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ৭০টি’র বেশি মামলা হয়েছে ইতোমধ্যে। এনিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর দলের অনেক নেতাও এই বিষয়ে সোচ্ছার। জাতীয় সংসদেও তারা ১/১১-এর কুশিলবদের বিচারের জন্য কমিশন গঠনের দাবী উঠেছে। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে এ কমিশন গঠের সুপারিশ করেছেন তারা। তবে খায়রুল হক, শামসুদ্দিন চৌধুরী মানকি এবং মোজাম্মেল হোসেনের মত আওয়ামী মার্কা বিচারপতির নেতৃত্বে হলে তো আর কথাই নেই।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিরোধী জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও মুখ খুলেছেন ১/১১ নিয়ে। তিনিও বিচার দাবী করেছেন কুশিলবদের। জেনারেল মইন, মাসুদ, আমিন, বারীসহ অনেকের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি। তারাই ১/১১-এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে একটি বিষয় দিবালোকের মত সত্য। সেটি হচ্ছে ১/১১-এর নেতৃত্বদানকারীদের বেগম খালেদা জিয়াই সেনা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার বিশ্বাস ছিল গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হলে তারা এগিয়ে আসবেন। বর্তমান সরকার গণতন্ত্র এবং সংবিধানের দোহাই দিয়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী এক তরফা নির্বাচন করে। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তারা সেটা করতে সক্ষম হয়। কিন্তু ২০০৭ সালে বিএনপি’র নেতৃত্বে চার দলীয় জোট চেস্টা করেও পারেনি। ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বেও একটি নির্বাচনের আয়োচন করা হয়েছিল ২০০৭ সালের ২২ । তখনো গণতন্ত্র এবং সংবিধানের দোহাই দিতে শোনা গেছে নির্বাচনপন্থিদের। কিন্তু নির্বাচনে অংশ গ্রহন থেকে বিরত থাকা রাজনৈতিক শক্তি রাজপথে আগলে রেখেছিল। ষড়যন্ত্রকারীরা ছিল হিংস্ত্র ছোবলের অপেক্ষায়। এই ষড়যন্ত্রটা অনুভব না করতে পারার খেসারতই দিচ্ছে আজ গোটা জাতি।

তখন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক গোলযোগ চরম আকার ধারণ করেছিল। এই সুযোগটাই নেন চারদলীয় জোট সরকারের বসানো সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে আসীন ব্যক্তিরা। তারা বঙ্গভবনে এসে শতভাগ অনুগত রাষ্ট্রপতির নিকট থেকে সরকারের সকল ক্ষমতা দখল করেন। এতে বঙ্গভবনে বসানো অনুগত রাষ্ট্রপতিও এক পর্যায়ে সেনা বাহিনীর হুকুম তামিলে বাধ্য হয়। চার দলীয় জোট সরকারের সময় নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, মনোনীত সেনাপ্রধান, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান সবাই এক কাতারে চলে যান। কেন এই বিশ্বাস ভঙ্গ, কেন ছিল রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা!

বঙ্গভবনে যারা এই ক্ষমতা দখল প্রতিরোধ করতে পারতেন তারা ছিলেন বিভ্রান্তিতে। ক্ষমতা কার পক্ষে দখল হচ্ছে সেটা পর্যবেক্ষণে ছিলেন রাজনৈতিক একটি মহল। যখন দেখলেন তাদের অনুকুলে কিছুই নেই তখন হুশ হয়। ততক্ষণে সময় অনেক দেরি হয়ে গেছে। আপসোস করা ছাড়া কিছুই আর করার রইল না।

মাহফুজ আনাম ক্ষমা চেয়েছেন আংশিক ভুলের জন্য। তাঁর পুরো ভুমিকার জন্য তিনি ক্ষমা চাননি। তাঁর পত্রিকায় তখন সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তখন। সে বিষয়ে দায়িত্বহীনতার কথা স্বীকার করেন তিনি। তথ্য যাছাই না করেই হুবহু প্রকাশ করাকে নীতিহীন হিসাবে উল্লেখ করেন। এজন্য ক্ষমা চান। কিন্তু তাঁর আরো ভুমিকা ছিল সেই সরকারের পক্ষে। নিজে দাবী করেছিলেন ১/১১-এর জরুরী আইনের সরকার তারা এনেছেন। জরুরী আইনের সরকারকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য সম্পাদক এবং সিনিয়র সাংবাদিকদের ডাকা হয়েছিল তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সেটা ছিল ২০০৭ সালের ১৪ জানুয়ারী। তথ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা সেই সভা পরিচালনাও করেছিলেন মাহফুজ আনাম। তিনি সেখানে জরুরী আইনের সরকারের পক্ষে সাংবাদিকদের সাপোর্ট দেয়ার জন্য রীতিমত ওকালতি করেন। এই সরকার তারা এনেছেন বলে দাম্ভিকতা প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে অবশ্য তিনি এখনো মুখ খুলেননি। তিনি শুধু মুখ খুলেছেন ডিজিএফআই-এর সরবরাহ করা তথ্য যাছাই না করে প্রকাশ করার বিষয়ে।

আজ যাদের বিচার দাবী উঠেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ফখরউদ্দিন আহমদ, জেনারেল মইন ইউ আহমদ, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, আমিন, বারী এবং সেনা বাহিনীর দুইটি গুরুত্বপূর্ন বিভাগের দায়িত্বে থাকা ২ রুমী। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত সেনা প্রধান হাসান মাসুদ চৌধুরী, সাবেক সচিব আকবর আলী খান এবং উপদেস্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যারা মইন ইউ আহমদকে সহযোগিতা করেছেন তারা কি কম দায়ী? জরুরী আইনের সময় যেসব সমারিক কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে টাকা আদায় করেছেন, সাধারণ মানুষকে নির্যাতন ও হয়রানি করেছেন তারা কি আইনের উর্ধ্বে!

সংবিধান লঙ্ঘন থেকে শুরু করে জিম্মি করার মাধ্যমে যারা টাকা আদায় করেছেন, যারা নির্যাতন নিপীড়ন করেছেন তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনা আইনের শাসনের দাবী। যদি ফ্যাসিবাদের কাছে এদাবী করা আর বোকার স্বর্গে বাস করা একই কথা। বিচার হীনতার সংস্কৃতির কারনে একদল অপরাধী সবসময় আইনের উর্ধ্বে থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তাদের দাপটেই নির্যাতন আর নীপিড়ন উস্কানি পায়। দুর্নীতিতে পশ্রয় পায় সুযোগ সন্ধানীরা। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার শ্লোগানে আমরা যেই বিচার এখন দেখছি, সেটা হচ্ছে ফ্যাসিবাদের চুড়ান্তরুপ মাত্র। সেটা বিচার নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ গায়েলে আইনের অপপ্রয়োগ।

লেখক: দৈনিক আমার দেশ-এর বিশেষ প্রতিনিধি, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত।

বিষয়: বিবিধ

১৫৩০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

361203
০৩ মার্চ ২০১৬ সকাল ১০:৫৫
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
361212
০৩ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০১:৩৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার শ্লোগানে আমরা যেই বিচার এখন দেখছি, সেটা হচ্ছে ফ্যাসিবাদের চুড়ান্তরুপ মাত্র। সেটা বিচার নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ গায়েলে আইনের অপপ্রয়োগ মাত্র। বিস্তারিত ভাবে লেখাটির জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
361239
০৩ মার্চ ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:২১
জীবরাইলের ডানা লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File