চেতনায় চুক্তিযোদ্ধারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়

লিখেছেন লিখেছেন জীবরাইলের ডানা ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৫:২৭:৪২ সকাল



বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার নাম চলে এসেছে।



বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারিভাবে গেজেটভুক্ত প্রায় দুই লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন

তিনি বলেছেন অনেকেই ভুল মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট পাচ্ছেন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

তবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের মত সংস্থাগুলো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করার জন্য তদন্তকাজ চালাচ্ছে।

বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৪০ বছর পরে এখনও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত হয় নি। তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তির প্রক্রিয়া এখনও চলছে এবং সরকার থেকে বলা হচ্ছে এই কার্যক্রম শেষ করার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা তাদের এখনও নেই।

মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের সরকারি চাকরিতে কোটা সুবিধাসহ নানা সুবিধা থাকার কারণে মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ প্রায়সময়ই পাওয়া যায়।

এন এস আই এবং ডিজিএফআইয়ের মতো সংস্থাগুলো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করার জন্য তদন্ত করছেন।

মিজানুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সচিব

বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্র থেকে যেসব সুযোগ-সুবিধা পান, তার মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে শতকরা ৩০ ভাগ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে শতকরা ৫ ভাগ সংরক্ষিত কোটা সুবিধা।

তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা যদি নিজেকে রাষ্ট্রের কাছে “অসচ্ছ্বল” প্রমাণ করতে পারেন তবে তিনি “অসচ্ছ্বল মুক্তিযোদ্ধা”-দের তালিকাভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়ে থাকেন।

এসব রাষ্ট্রীয় সুবিধা পাওয়ার জন্যে অনেকে মুক্তিযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে এসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন বলে সরকার বলছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজানুর রহমান বলছেন, তারা এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

“এন এস আই এবং ডিজিএফআইয়ের মতো সংস্থাগুলো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করার জন্য তদন্ত করছেন। এরই মধ্যে আমরা অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করেছি এবং অনেক কর্মকর্তার সনদ বাতিল হয়েছে,” বলছেন মিজোনুর রহমান।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্ত করার কাজ যেমন চলছে, তেমনি আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং তদন্তের ভিত্তিতে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভূক্তির সুযোগ এখনও রয়েছে বলে মিঃ রহমান জানিয়েছন।

শুধুমাত্র অস্ত্রধারী যোদ্ধাদেরই মুক্তিযোদ্ধা বলা হবে কিনা সেটাও সমাধান করা প্রয়োজন।

শাহরিয়ার কবির, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক

তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক অধ্যাপক শাহরিয়ার কবির বলছেন, এই তালিকা তৈরি না হওয়ার পেছনে রাজনৈতিক ব্যর্থতা যেমন রয়েছে, তেমনি মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নির্ধারণ নিয়েও জটিলতা রয়েছে।

“ যারা ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বা যারা বাংলাদেশে যুদ্ধ করেছেন সবাইকেই অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। শুধুমাত্র অস্ত্রধারী যোদ্ধাদেরই মুক্তিযোদ্ধা বলা হবে কিনা সেটাও সমাধান করা প্রয়োজন। চল্লিশ বছর অনেক সময়। আর বিলম্ব করা উচিত নয়, ” বলেন শাহরিয়ার কবির।

বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারিভাবে গেজেটভুক্ত প্রায় দুই লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।

তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্র থেকে আরো যেধরনের সুবিধা পান তার মধ্যে রয়েছে সরকারি চাকরিতে ২ বছর বেশি কাজ করার সুবিধা৷

এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি তালিকা থেকে রেশন দেয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে।

বিষয়: বিবিধ

১০২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File