সাম্প্রদায়িকতা মানে কি অমুসলিম,,,,????
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার মাহি ২০ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৭:৫৯:২২ সন্ধ্যা
আমি দেশপ্রেমিক ব্লগার , আমি ধর্মানুরাগী। পাশাপাশি আমি বাংলাদেশী এবং পাক্কা মুসলমান- এ বিশ্বাসে সাম্প্রদায়িকতা কোথায়?
.
ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা এখন একটি
ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক;
যার পরিণতি শুভ হতে পারে না এবং হচ্ছে
না। ধর্মের বিরুদ্ধে লেখালেখির জন্য একটি
সম্প্রদায় সৃষ্টি হয়েছে। ব্লগারদের মধ্যে এর
ব্যাপ্তি বেশি। এমন ফ্যানাটিক লেখালেখি
জনসম্মুখে প্রকাশ করার অনুপযোগী।
নবী করিম সা: জীবিত অবস্থায় ঘোষণা
দিয়ে যুদ্ধ
করেছেন; কিন্তু গোপনে কোনো নিরস্ত্র
বিধর্মীকে হত্যা বা হেয়প্রতিপন্ন করেননি।
ব্লগারদের ওপর এমন বর্বর হামলা
কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তথাকথিত
প্রগতিশীল বা অতিমাত্রায় বুদ্ধিজীবীদের
অনেকে ইস্যুটি যথাযথ মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ
হয়েছেন।
.
.
বাংলাদেশের সংবিধানে সংখ্যাগুরু,
সংখ্যালঘু শব্দগুলো খুঁজে পাওয়া না গেলেও
কলকাতামনস্ক বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবীদের
চলনে, বলনে, লেখায়, কবিতায় সব জায়গায়ই
সাম্প্রদায়িকতা খুঁজে পাওয়া যায়, যা শুধু
উসকানিমূলক নয় বরং যাদের প্রতি
মায়াকান্না দেখানোর জন্য ‘সংখ্যালঘু’
শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়, এতে তাদের প্রতি
সম্মান তো দেখানো হয় না বরং স্বাধীন
নাগরিকের মর্যাদা অর্থাৎ সমমর্যাদা থেকে
নিচে নামিয়ে দেয়া হয়।
.
জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার
জন্য পুলিশ বা পুলিশপ্রধানের একপেশে
ভূমিকার জন্য তার প্রতি ক্ষোভ থাকলেও
ব্লগারদের লেখালেখির প্রশ্নে তার বক্তব্য
একপেশে নয় বরং তিনি প্রকৃত বিষয়টি
উপলব্ধি করেই বক্তব্য দিয়েছেন, যা
প্রকৃতপক্ষে জাতির কাছে একটি মেসেজ।
.
.
যারা দেশে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ খোঁজার
ইজারা নিয়েছেন তাদের জন্ম, বিয়ে, সন্তান
ধারণ ও মৃত্যুর পর বিদায় অনুষ্ঠান কি ধর্মীয়
অনুশাসন মোতাবেক হয় না? যার পিতা হিন্দু,
স্ত্রী মুসলমান (ব্লগার অভিজিতের মতো)
তার লাশ দাফন বা সৎকার না হয়ে
মেডিক্যাল কলেজে দান হলে শেষ বিদায়ের
আনুষ্ঠানিকতার প্রয়োজন হয় না;
কিন্তু অভিজিতের লাশ যদি গবেষণার জন্য
দান
করা না হতো তবে কোনো না কোনো ধর্মীয়
প্রক্রিয়ায় হয় তাকে দাফন অথবা সৎকার
করতে হতো।
.
ঢাকার অভিজাত এক ব্যবসায়ীর লাশ এখনো
বারডেম হিমাগারে পড়ে আছে।
কারণ তার দুই স্ত্রী দুই ধর্মের, একজন হিন্দু,
একজন মুসলমান। কোন প্রক্রিয়ায় শিক্ষকের
লাশ দাফন হবে,এ নিয়ে হাইকোর্টে
বিচারাধীন বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া
পর্যন্ত শিক্ষক হিমাগারেই পড়ে থাকবেন।
.
ফলে বিষয়টি সহজেই অনুমেয় যে, আধুনিকতার
নামে সমাজকে ধর্মহীন করার যতই চেষ্টা
করা হোক না কেন, এর সফলতা আগেও
আসেনি এবং পরেও আসতে পারে না। কারণ
সমাজের বেশির ভাগ মানুষই শান্তিপূর্ণ
অবস্থায় বসবাস করতে চায় এবং এ জন্য
ধর্মীয় অনুশাসনই একটি পরিবার ও সমাজবদ্ধ
জীবনে শান্তি এনে দিতে পারে;
.
এটা পরীক্ষিত সত্য।
প্রকৃতির স্বাদ যারা না পায় তারাই হতাশায়
এবং এ হতাশা থেকে সৃষ্টি হয় নাস্তিকতা।
অন্য দিকে, অঢেল বিত্তবৈভবের মালিক
যারা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ
করেছে এবং পৃথিবীর সব সুখ ভোগ করে আরো
কোনো নতুনত্বের স্বাদ খোঁজে, তাদের
মধ্যে অনেকেই হয় আত্মহত্যা, নতুবা মস্তিষ্ক
বিকৃতি অথবা আধা মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে উদ্ভট
কথা বলে নাস্তিক বনে যায়।
.
অন্য দিকে যেহেতু মুসলিম জনগোষ্ঠী
সংখ্যায় ভারী,সেহেতু মুসলমান ও ইসলামের
বিরুদ্ধে কথা
বলতে পারলে নিজেদের মধ্যে বৈপ্লবিক
ভাব এসে যায় এবং পরিচিতি পেতেও সেটা
অনেক সহজতর। অবাধ যৌনাচারে যারা
বিশ্বাসী তারাই নাস্তিক। ধর্ম মানুষকে
অনুশাসন শিখায়। যারা প্রকৃত ধর্মবিশ্বাসী
তারা রাতের অন্ধকারেও সৃষ্টিকর্তার ভয়ে
অন্যায় অপরাধ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা
করে।
.
.
ব্লগার হত্যা হওয়ার পর তাদের লেখা নিয়ে
পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে শহীদুল ইসলাম
ব্লগারদের সীমা লঙ্ঘন না করার পরামর্শ
দিয়েছেন। পুলিশপ্রধান যখন মনে করেন
ব্লগারদের লেখায় সীমা লঙ্ঘিত
হয়েছে,সেখানে অন্য কোনো যুক্তি দাঁড়
করানোর দরকার নেই। যারা সীমা লঙ্ঘন করে
তাদের আইনের আওতায় নেয়ার এবং আইন
নিজের হাতে তুলে না নেয়ার জন্য
পুলিশপ্রধান পরামর্শ দিয়েছেন। .
.
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশপ্রধান
গত ৯ আগস্ট ২০১৫ তারিখে যে বক্তব্য
দিয়েছেন, তা নিম্নরূপ : ‘মুক্তমনা ব্লগারদের
প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আপনারা কারো
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত
করবেন না। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা
একটি অপরাধ। যদি কেউ ধর্মীয় অনুভূতিতে
আঘাত করেন তাহলে তার ১৪ বছর পর্যন্ত জেল
হতে পারে।’
.
ওই সভায় ব্লগারদের উদ্দেশে পুলিশপ্রধান
আরো বলেন, ‘আমরা যেন কেউ সীমালঙ্ঘন না
করি। এমন কিছু লেখা উচিত নয়, যা অন্যের
অনুভূতিতে আঘাত হানে। তবে কেউ নিজের
হাতে আইন তুলে নেবেন না।’
পুলিশপ্রধানের ওই বক্তব্যকে সমর্থন করি এ
জন্য যে, এ ক্ষেত্রে কথিত বুদ্ধিজীবীদের
মতো তিনি একপেশে পরামর্শ দেননি। উভয়
পক্ষকেই সীমালঙ্ঘন ও আইন নিজের হাতে
তুলে না নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন এবং
এটাই হওয়া বাঞ্ছনীয় সমাজের শান্তি
শৃঙ্খলার স্বার্থে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়
এই যে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে
সীমালঙ্ঘনের জন্য কোনো ব্লগারকে
অদ্যাবধি আইনের আওতায় আনা হয়নি।
.
কালচারের দিক থেকে এপার বাংলা ওপার
বাংলা কাছাকাছি অবস্থানে
থাকলেও,ওপার বাংলা দিয়ে আমরা
ডোমিনেটেড হতে চাই না। আমাদের দেশ
একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্র, যার
নিজস্ব সকীয়তা
নিয়েই এগিয়ে যাওয়া দরকার। আমরা ওপার
বাংলাকে খাটো করে দেখি না। এপার
বাংলায় শিক্ষার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত
করার লক্ষ্যে ১৯২০ সালে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় যাতে প্রতিষ্ঠা না হতে
পারে এ জন্য কলকাতায় কবি গুরু
রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে শুধু চরম বিরোধিতাই
হয়নি; বরং কবি গুরুর স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি
বড় লাটের কাছে পেশ করা হয়েছে। এ ধরনের
উপমা যখন চোখের সামনে ভেসে আসে, তখন
মুসলমান যাতে অগ্রসর হতে না পারে এ জন্য
ষড়যন্ত্র কত প্রকার ও কী কী হতে পারে তা
উপলব্ধি ও অনুমান দুটোই করা যায়।
.
কলকাতামনস্ক বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবীরা
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে
সাম্প্রদায়িকতা খুঁজে পেয়েছেন এবং
ভাষার অলঙ্কার লাগিয়ে এর পরিধি বড়
করছেন। আমি ‘মুসলমান’ এ কথা যদি জোর
দিয়ে বলি, তবে আমি কি সাম্প্রদায়িক?
কোনো হিন্দু যদি জোরগলায় বলে আমি হিন্দু
তবে সে কি সাম্প্রদায়িক? তবে
সাম্প্রদায়িকতা কোথায়?
বিষয়: রাজনীতি
১৩৩২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন