শেষ রাতের সাহরী
লিখেছেন লিখেছেন বিবর্ন সন্ধা ০৮ জুন, ২০১৬, ১২:০৪:৩১ দুপুর
আসসালামু আলাইকুম,
।
.
.গতকাল সকাল থেকে ই বাসায় সাহরী খাওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল, তা শুনে
বাসার একমাত্র ছোট্ট বাবাটির ও সাহরী খাওয়ার স্বাদ জাগলো।
কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞাস করলো, " সেহেরী কি অনেক টেষ্টি হয়? "
.
সেহেরী বলতে নাই,
আরবীতে সেহের অর্থ জাদু।
এটা হবে সাহরী,
সাহরী অর্থ,
ভোর রাতের শেষের অংশে খাওয়া।
.
শেষ রাতে যখন তাকে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হলো, সে অবাক হয়ে বলল, " ভাত কেনো !!!!
তোমরা তো বলেছিলে, সাহরী খেতে দিবে। এসব খাবো না, আমার ক্ষিদা নাই। "
: হি হি হি, রোজা রাখার উদ্দেশ্যে শেষ রাতে যে কোন হালাল খাবার খাওয়া কে ই সাহরী বলে,
সাহারী খাওয়া সুন্নত, যদি ক্ষিদা একেবারে ই না থাকে, তাহলে একটু পানি হলে ও পান করতে হবে,
তাতে ও সুন্নত আদায় হবে ইন শাহ আল্লাহ।
: তো এই খাবার, এত রাতে খেতে হবে কেন?? রাতের খাবারের সাথে খেয়ে ফেললে ই তো হয়।
: না বাবা, সাহরী যথাসম্ভব দেরী করে ই খেতে হয়, তবে এত দেরী করা ঠিক না যেন, ছোবহে সাদেক হবার
আশংকা থাকে আর রোজার মধ্যে সন্দেহ এসে যায়।
সাহল ইবনে সায়াদ (রা বর্ণনা করিয়াছেন, আমি, আমার ঘরে সাহারী খাইয়া রসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু
আলাইহে অসাল্লামের সঙ্গে ফজরের নামাযে শরীক হওয়ার জন্য আমাকে দ্রুতবেগে যাইতে হইত।
।
আবদুল্লাহ ইবনে মসউদ (রা বর্ণনা করিয়াছেন, এক সময় নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লাম বিরতি
না ঘটাইয়া লাগালাগি রোজা রাখিলেন। (অর্থাৎ, ইফতার, সাহারী এবং রাত্রের কোন অংশে কোন
প্রকার পানাহার না করিয়া পর পর কতিপয় রোজা রাখিলেন।)
সাহাবীগণ ও এইরুপ করিলেন, কিন্তু
তাহাদের জন্য এরুপ করা অত্যধিক কষ্টকর হইল। তাই
নবী ( স বলিলেন, আমার অবস্থা তোমাদের মত
নহে _ আমাকে ( আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হইতে) পানাহার (- এর শক্তি) দান করা হইয়া থাকে।
,
: ওও রাসুল আমাদেরকে সাহরী খেতে বলেছেন??
: হুম্ম,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
,
تَسَحَّرُوا فَإِنَّ فِي السَّحُورِ بَرَكَةً
(ক) তোমরা সাহরী খাও, কারণ সাহরীতে বরকত রয়েছে। (বুখারী : ১৯২৩; মুসলিম : ১০৯৫)
,
مَا بَيْنَ صِيَامِنَا وَصِيَامِ أَهْلِ الْكِتَابِ أَكْلَةُ السَّحَرِ
,
(খ) আমাদের (মুসলিমদের) ও ইয়াহূদী-নাসারাদের সিয়ামের মধ্যে পার্থক্য হল সাহরী খাওয়া। (মুসলিম : ১০৯৬)
,
অর্থাৎ আমরা সিয়াম পালন করি সাহরী খেয়ে, আর ইয়াহূদী-নাসারারা রোযা রাখে সাহরী না খেয়ে।
,
نِعْمَ سَحُورُ الْمُؤْمِنِ التَّمْرُ
,
(গ) মু’মিনের সাহরীতে উত্তম খাবার হল খেজুর।
(আবূ দাঊদ : ২৩৪৫)
,
السَّحُورُ أَكْلُهُ بَرَكَةٌ فَلاَ تَدَعُوهُ وَلَوْ أَنْ يَجْرَعَ أَحَدُكُمْ جُرْعَةً مِنْ مَاءٍ فَإِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَمَلاَئِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الْمُتَسَحِّرِينَ
,
(ঘ) (রোযাদারদের জন্য) সাহরী হল একটি বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিও না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরীর খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন। (আহামদ : ১০৭০২)
,
মনে পড়ে ছোট বেলায় আমি ও এইভাবে সাহরী খেয়ে রোজা রাখার অভ্যাস করতাম। প্রথম দিকে নাস্তার বেলা পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে পারলে,আম্মা বলতো, তোর, এক রোজা হয়েছে। ☺☺
তারপর জোহরের আজান পর্যন্ত, এরপর আসরের আজান এবং শেষ পর্যন্ত মাগরিবের আজান পর্যন্ত না খেয়ে খেয়ে সময় বাড়িয়ে, ধীরে ধীরে সাহরী খাওয়ার বদলতে রোজা রাখার অভ্যাসটা গড়ে উঠেছিল।
আগে একদিনে কত্তগুলো রোজা যে রাখতাম, এখন একটার বেশি রাখতে পারি না, বয়স হয়েছে না
যদি ও তখন নামাজের ১৮ ফরজ আদায়ের চেয়ে, ১ ফরজ রোজা রাখাটা বেশি প্রাধান্য পেত।
( গত ২৪ টা বছর ধরে বাবাকে ছাড়া এবং এইবার নিয়ে দুই বছর মাকে ছাড়া একেবারে এতিম হয়ে রমজান পার করছি।)
,
মহান আল্লাহ বলেন,
হে ইমান্দার গন, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পুরব পুরুশ দের
উপর। যেন তোমরা আল্লাহ ভীতি ( তাকওয়া) অজন করতে পার)
- আল কোরান।
(১) আল্লাহ যেন ধমকের সুরেই বলছেন, রোজা তোমাদের জন্য নুতন কিছুই নয়, এটা তোমাদের পুরব পুরুশ দের উপরও ফরজ ছিল।
(২) মানুশ যেমন ঘরের বাচ্ছাদের কে মাথায়
হাত বুলিয়ে কস্টের কাজ টা করিয়ে নেন,
তেমনি আল্লাহ যেন অতি আদরের বান্দাদের মাথায় হাত বুলিয়েই শান্তনার বানী শুনিয়ে কস্ট দায়ক রমজান গুলো বান্দা থেকে আদায় করে নিত চান।
,
সাহরী ফজিলত খুব বেশি হাদিস পাওয়া যায় না,
তারপর ও বিস্তারর সন্ধ্যাতারা আপুর ব্লগ থেকে
জেনে নিতে পারেন।
বিষয়: বিবিধ
২০২৭ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সেহরীর বাস্তব সুন্দর অনুভূতিসহ বিবেক জাগানিয়া লিখাটি অনেক ভালো লেগেছে আপু। মাশাআল্লাহ।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া। জাযাকিল্লাহ খাইর
যার হাংডা আছে, সে এতিম হয় কেমন করে!
লেখাটি দিয়ে কি 'প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত' ঝামেলায় পড়েছেন?
দেরি করে পড়ার জন্য দুকসিত!
অনেক দিন হয়ে গেলো, নতুন কোনো লিখা পাচ্ছিনা।
আয়েশা (রাঃ) কে প্রশ্ন করা হয়, যখন আল্লাহর রাসূল সল্লালল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুশয্যায় তখন তার পাঠ করা শেষ আয়াত কি ছিল? আয়েশা (রাঃ) উত্তর দিলেন, যদি প্রশ্ন কর তার পাঠ করা শেষ সুরা কোনটি ছিল? তবে সেটি ছিল সুরা মুরসালাত। আর যদি প্রশ্ন কর শেষ আয়াত কি ছিল তবে তা ছিল: সুরা নিসার ৬৯ নং আয়াত।
وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَأُولَٰئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ ۚ وَحَسُنَ أُولَٰئِكَ رَفِيقًا
অর্থাৎ: যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে, তারা নবী, সত্যবাদি, শহীদ ও নেককার লোকদের সঙ্গী হবে, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ দান করেছেন, তারা কতই না উত্তম সঙ্গী!
রাসূল (সাঃ) অব্যাহতভাবে এটি পাঠ করছিলেন।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আমার সাথে যোগদান কর তাদের সাথে যারা নবী, শহীদ এবং যারা সত্যবাদী। সেটা কতইনা উত্তম সঙ্গ।
রাসূল (সাঃ) যখন এই পৃথিবী ত্যাগ করছিলেন, তিনি তাদের সাথে পুনরায় মিলিত হতে চেয়েছিলেন যাদেরকে তিনি ভালবাসতেন। ইউসুফ (আঃ) ইয়াকুব (আঃ) এর সাথে পুনরায় মিলিত হতে চেয়েছিলেন। তিনি তার বাবার সাথে পুনরায় মিলিত হতে চেয়েছিলেন। তিনি তার দাদা ইসহাক (আঃ) এর সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন। তিনি ইবরাহীম (আঃ) এর সাথে মিলিত হতে চেয়েছিলেন। তিনি তাদের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন যারা তার আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। এবার ভাবুন, রাসূল (সাঃ) পুনরায় খাদিজা (রাঃ) এর সাথে পুনরায় দেখা করার জন্য কেমন উদগ্রীব ছিলেন? তিনি কেমন উদগ্রীব ছিলেন তার চাচা হামজা (রাঃ) এর সাথে দেখা করার জন্য? সেসকল সাহাবীদের সাথে দেখা করার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, যাদের জন্য তিনি চোখের জল ফেলতেন। মৃত্যুর চারদিন পূর্বে তিনি আবু মুওয়াইহিবা (রাঃ) কে বলেন, হে আবু মুওয়াইহিবা! আল্লাহ আমাকে বাকির মানুষদের জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ আমাকে যে কোন একটি বিষয় বেছে নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আমি যদি চাই আমি আমার উম্মাতের মাঝে থাকতে পারি আমাকে পৃথিবীর চাবিসমূহ দিয়ে দেয়া হবে এবং যতদিন পৃথিবী টিকে থাকবে আমি এভাবে থাকব এরপর পৃথিবীর ধ্বংসের পর আমি জান্নাতে প্রবেশ করব এবং আল্লাহর সাথে দেখা করব। অথবা আমি এখনই আল্লাহর সাথে মিলিত হব ( অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করব)। আবু মুওয়াইহিবা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে থাকাকে বেছে নিন, আমাদের ছেড়ে যাবেন না, আমাদের মাঝে থাকুন। আমরা আপনাকে হারাতে চাইনা, আমাদের বেছে নিন। রাসূল (সাঃ) উত্তর দিলেন, আমি আল্লাহকেই বেছে নিয়েছি। যখন তিনি পৃথিবী ত্যাগ করছিলেন, তিনি বলছিলেন, সবচেয়ে মহান এর সাহচার্য (আল্লাহর সান্নিধ্যে।) নবী (সাঃ) তাদের সাথে যোগদান করলেন যাদেরকে তিনি হারিয়েছিলেন। যখন তিনি পৃথিবী ত্যাগ করলেন সকল সাহাবীর মনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা হয়ে দাড়ালো, আমি আবারো আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর সাথে মিলিত হতে চাই। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর জীবিত সন্তান ছিলেন শুধুমাত্র ফাতিমা (রাঃ) যাকে তিনি প্রচন্ড ভালবাসতেন। তিনি বলতেন, ফাতিমা আমার শরীরের অংশ যে তাকে কষ্ট দেয়, সে আমাকে কষ্ট দেয়, যা তাকে কষ্ট দেয়, তা আমাকে কষ্ট দেয়। তিনি তার কণ্যা ফাতিমা (রাঃ) কে তার মৃত্যু নিকটে বলে জানান জবাবে নবী কণ্যা কাঁদছিলেন তখন তিনি বললেন, হে আমার কণ্যা! তুমিই প্রথম ব্যক্তি যে আমার সাথে সর্বপ্রথম মিলিত হবে। ফাতিমা (রাঃ)এর অন্তর আনন্দে ভরে উঠল। ফাতিমা(রাঃ) রাসূল (সাঃ) এর মৃত্যুর মাত্র ৪ মাস অথবা ৬ মাসের মাথায় মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তার বাবার সাথে মিলিত হন। বিলাল (রাঃ) মৃত্যুশয্যায় উপনীত হলেন, তার স্ত্রী আফসোস করে বলতে লাগলেন, কি বিষাদময় দিন আজ, কি মন্দ ভাগ্যের দিন আজ!! বিলাল (রাঃ) উত্তর দিলেন, এমন বলোনা বরং বল, আজ কি খুশির দিন। আগামীকাল আমি আমার ভালবাসার রাসূল (সাঃ) ও অন্যান্য সাহাবীদের সাথে সাক্ষাৎ করব। আমি রাসূল(সাঃ) এর কাছে ফীরে যাচ্ছি, সাহাবীদের মাঝে ফীরে যাচ্ছি, মুত্তাকি বান্দারা আমার আসার জন্য অপেক্ষায় আছে। যখন উসমান (রাঃ) তার গৃহে আবরুদ্ধ হলেন। তিনি তার মৃত্যুর দিনটিতে রাসূল (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখলেন। রাসূল (সাঃ) তাকে বলছেন, উসমান! তুমি কি রোজা রাখছ? তিনি বললেন, হ্যা হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, তুমি কি মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ করে দিয়েছ? (অবরুদ্ধ ছিলেন তিনি) তিনি বললেন, হ্যা! আল্লাহর রাসূল! রাসূল (সাঃ) বললেন, হে উসমান! বিচলিত হয়োনা, আজ তুমি পৃথিবীবাসী না বরং আজ রাতে তুমি আমার সাথে, আবু বকর ও উমার (রাঃ) এর সাথে তোমার রোজা ভাংবে, তুমি আমাদের সাথে ইফতার করবে। উসমান (রাঃ) এর ঘুম ভাঙ্গল তিনি স্ত্রী সন্তানদের ডেকে তার স্বপ্নের ব্যাপারে জানালেন এবং সেহরী করে রোজা রাখলেন সেদিনটিতেই তিনি রোজা রাখা অবস্হায় আততায়ীর হাতে শহীদ হলেন। তিনি মিলিত হলেন তার প্রিয় সাথীদের সাথে। একজন মুমিন এর জন্য এটা সবচেয়ে বড় স্বস্হি, আপনি যখন এই পৃথিবী ত্যাগ করছেন, আপনি তাদের সাথে মিলিত হচ্ছেন যারা মুত্তাকি, যারা আপনার পূর্বে গত হয়েছেন। আপনি আপনার ভালবাসার মানুষদের সাথে পুনরায় মিলিত হচ্ছেন। চিন্তা করুন, আপনি যাদের হারিয়েছেন যারা মুমিন ছিল, তারা আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছে, আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। যখন আবু বকর (রাঃ) মৃত্যুশয্যায়, তিনি আয়েশা (রাঃ) কে প্রশ্ন করলেন, হে আয়েশা! আজ কি বার? আয়েশা (রাঃ) জবাব দিলেন, সোমবার। তিনি বললেন, কি বারে আল্লাহর রাসূল মৃত্যুবরণ করেছিলেন? আয়েশা (রাঃ) বললেন, সোমবারে। আবু বকর (রাঃ) বললেন, শোন আমি যদি আজ মারা যাই আমাকে আজই কবর দিবে, আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবেনা আমি আজই যেতে চাই। কারণ আমি রাসূল (সাঃ) এর সাথে মিলিত হতে চাই। তিনি আবারো প্রশ্ন করলেন, রাসূল (সাঃ) কত বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন? আয়েশা (রাঃ) জবাব দিলেন, ৬৩ বছর বয়সে। তিনি বললেন, হে আয়েশা (রাঃ) আমার বয়স কত? আয়েশা (রাঃ) জবাব দিলেন, ৬৩। তিনি বললেন, রাসূল (সাঃ) মৃত্যুর সময়ে কি পোষাক পরে ছিলেন? আয়েশা (রাঃ) জবাব দিলেন, তিনটি কাপড় যার মাঝে দুটি ছিল ইহরামের কাপড় এবং অতিরিক্ত আরেকটি কাপড়। তিনি জবাব দিলেন, আমাকেও তেমন পোষাক পরিয়ে দাও। তিনি জানতেন তিনি নবী (সাঃ) এর নিকট ফেরৎ যাচ্ছেন। রাসূল (সাঃ) বলেন, যখন একজন মুমিন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে, তখন মৃত মুমিনগণ তাকে স্বাগত জানায়। তারা তোমার জীবিত আত্নীয় স্বজন এর চাইতে বেশি খুশিতে তোমাকে স্বাগত জানায়। কেমন লাগবে কোন প্রিয় মানুষ যার সাথে আপনি সুদীর্ঘ বছর পর মিলিত হবেন? তাকে জড়িয়ে ধরবেন, হাসি, কান্না, আনন্দ,অনেক স্মৃতি সব একসাথে আপনার মাঝে কাজ করবে- আপনি উত্তেজনায় থাকবেন। রাসূল (সাঃ) বলেন, মুমিন বান্দারা একত্রিত হবে তোমাকে স্বাগত জানানোর জন্য। রাসূল (সাঃ) বলেন, যখন তুমি তাদের সাথে মিলিত হবে তারা তোমাকে প্রশ্ন করতে থাকবে, অমুর ব্যক্তির কি অবস্হা? সে কেমন আছে? এমন অবস্হায় কিছু মুমিন ব্যক্তি বলবে, তাকে একটু রেহায় দাও সে এইমাত্র পৃথিবী থেকে এসেছে, তাকে একটু শান্ত হতে দাও। এটা আমাদের জন্য বড় স্বস্হির। হয়ত আমরা আজ রাতে অথবা কাল অথবা ২০ অথবা ৩০ বছর পর মারা যাবো তখন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমাদেরকে রিসিভ করবেন, মুমিন বান্দারা সেখানে উপস্হিত থাকবেন। আমার মৃত বাবা মা দাদা দাদি নানা নানী ও মৃত আত্নীয় স্বজন যাদেরকে আমরা ভালবাসতাম এবং মৃত্যু তাদেরকে আমাদের থেকে পৃথক করে দিয়েছিল তারা আমাদের স্বাগত জানাবে, আমাকে বলবে তোমার ছেলের কি খবর? অমুকের কি খবর? হয়ত আমার মা, নানী, দাদী কেউ বলবে, তাকে একটু রেস্ট নিতে দাও সে কেবল দুনিয়া থেকে আসল। তারা আমাদের বলবে, নতুন জীবনে স্বাগত জানাই। আল্লাহর কাছে আমরা দোয়া করি যেন আমরা আমাদের জীবনকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অতিবাহিত করতে পারি, আমাদের কষ্ট ও সংগ্রামগুলোকে ধৈর্য দিয়ে মোকাবেলা করতে পারি। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি যখন আমরা পৃথিবী থেকে বিদায় নিব তখন যেন প্রথম ব্যক্তি হন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) যিনি আমাদের স্বাগত জানাবেন, নিজ হাতে পানি পান করিয়ে আমাদের রোজা ভাঙ্গাবেন। আমরা আমাদের মৃত মা বাবা, ভালবাসার মানুষ, আমাদের সন্তান ও আমাদের মাশায়েখ উলামা যাদেরকে আমরা ভালবাসাতাম তাদের সাথে মিলিত হতে পারি যারা মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন