খাদিজা
লিখেছেন লিখেছেন Raya ০৯ অক্টোবর, ২০১৬, ০৭:৫৮:৩৭ সকাল
চিকিৎসকদের আশাবাদ
খাদিজার বাঁচার সম্ভাবনা বেড়েছে
সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার চাপাতির কোপে আহত খাদিজা বেগম নার্গিসের বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। গত সোমবার থেকে অচেতন খাদিজা ব্যথা পেলে সাড়া দিচ্ছেন। এটি জ্ঞান ফিরে আসার লক্ষণ। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন। স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খাদিজা বেগমের শারীরিক অবস্থার সবশেষ খবর জানাতে এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে হাসপাতালের উপপরিচালক এবং ইন্টারনাল মেডিসিন ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের পরামর্শক মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘খাদিজা বেগম যখন স্কয়ার হাসপাতালে আসেন, তখন তিনি অচেতন ছিলেন। তাকে বাঁচিয়ে রাখাটা ছিল আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আজ ৯৬ ঘণ্টা পর এসে আমরা বলছি, খাদিজা বেগমের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে। আপনারা তার জন্য দোয়া করুন।’ তিনি আরও বলেন, তবে খাদিজার জ্ঞান পুরোপুরি ফিরে আসতে কয়েক সপ্তাহ বা মাসও লেগে যেতে পারে। বেঁচে থাকলেও তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন কি না, তা শিগগিরই জানা যাবে না।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্কয়ার হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের পরামর্শক রেজাউস সাত্তার। তিনি বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) আমরা ঘুমের ওষুধের মাত্রা কমিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর তাকে ডান হাত ও ডান পা কিছুটা নাড়তে দেখেছি। তিনি ব্যথা পেলে সাড়া দিচ্ছেন। তিনি এখনো ভেন্টিলেশনে আছেন। মস্তিষ্কে চাপ কমানোর জন্য তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।’
চিকিৎসকেরা বলেন, মস্তিষ্ক কতটুকু কাজ করছে, সেটি বোঝার জন্য গ্লাসগো কোমা স্কেল ব্যবহার করা হয়। আগে খাদিজার স্কোর ছিল ১৫-তে ৬। অবস্থার উন্নতি হয়ে সেটি এখন ১০- ৬ হয়েছে। চোখ মেলা, ডাকে সাড়া দেওয়া ও স্পর্শ করলে বা ব্যথা পেলে সাড়া দেওয়া এই তিন নির্ণায়কের ভিত্তিতে স্কোর নির্ধারণ করা হয়। খাদিজা এখনো চোখ মেলে তাকাননি, ডাকে সাড়া দেননি। তবে ব্যথায় সাড়া দিচ্ছেন। চিকিৎসকেরা এই লক্ষণকে অগ্রগতি বলে দেখছেন।
রেজাউস সাত্তার বলেন, এমন আঘাতের পর রোগী খুব দ্রুত উঠে বসবেন বা কথা বলবেন এমনটা আশা করা যায় না। তবে খাদিজার বয়স ১৯ বছর। ফলে তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ সময় স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের প্রশংসা করেন। রেজাউস সাত্তার বলেন, এ ধরনের আঘাতের চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। এ সময়টিকে বলা হয় গোল্ডেন ফোর আওয়ারস। আরও আগে খাদিজার চিকিৎসা শুরু হলে হয়তো আরও ভালো হতো। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা হয়েছিল। ফলে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পর সিলেট থেকে খাদিজা স্কয়ার হাসপাতালে এসে পৌঁছালেও আমরা অস্ত্রোপচারের ৯৬ ঘণ্টা পর বলতে পারছি খাদিজা বেঁচে আছেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকালে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসের ওপর হামলা চালায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শেষবর্ষের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম। এ সময় সে চাপাতি দিয়ে খাদিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপাতে থাকে। এতে খাদিজা মাথা ও পায়ে গুরুতর আঘাত পান। পরে খাদিজার সহপাঠী ও স্থানীয়রা ধাওয়া করে বদরুলকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। একই সঙ্গে স্থানীয়রা খাদিজাকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার ভোরে খাদিজাকে রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। খাদিজার ওপর হামলার ঘটনায় বদরুলকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া খাদিজাকে কোপানোর কথা স্বীকার করে গত বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বদরুল।
বিষয়: বিবিধ
১০৮১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খাদিজার সুস্থ হবার পর পলিটিক্স শুরু হয়ে যাবে ।
আমার খুব আগ্রহ জাফর স্যার কি বলবেন তা নিয়ে , কারণ গত ২০১২ তে উনি বদরুলের পক্ষ নিয়ে কলাম লিখেছিলেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন