হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ এবং বাংলার মুসলমানদের প্রাণের দাবিসমূহ
লিখেছেন লিখেছেন ইরফান ভাই ২৪ মে, ২০১৬, ০১:৩৮:১১ রাত
বর্তমান দেশ-বিদেশে সবচেয়ে আলোচিত
সংগঠনের নাম হল "হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ"।স্বাধীনতার পর হেফাজত ইসলামের মত অরাজনৈতিক কোন দল এত জনসমর্থন পাওয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত।২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারী বাংলাদেশের দুই জনপ্রিয় ইসলামি চিন্তাবিদ হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালক শাহ আহমদ শফী এবং ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ইযহারুল ইসলাম
এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা করেন।
ছবি:-হেফাজত ইসলামের সমাবেশে জনসমুদ্রের একাংশ।.
মূলত ২০১৩ সালে সরকারী মদদপুষ্ট নাস্তিক
ব্লগার,ইসলাম ধর্ম ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স
এর কুটুক্তিকারীদের বিচারের দাবিতে হেফাজত
ইসলামের আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে
ব্যাপক আলোচিত হয়।এই সময় দেশের বিশাল একটা
জনগোষ্ঠী হেফাজত ইসলামকে সমর্থন দেয়।
এ প্রেক্ষিতে তারা ১৩ দফা দাবী উত্থাপন করে।
যেটি বাংলার মানুষের প্রচুর সাড়া দেয়।
""""""১৩ দফা দাবী হেফাজতে ইসলামের বক্তব্য
অনুযায়ী তাদের দাবি সমূহ হল"""
১)সংবিধানে ‘আল্লাহর
ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরআন-
সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা।
২)আল্লাহ্,
রাসুল ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের
বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি
মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন
পাস।
৩)শাহবাগ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী
স্বঘোষিত নাস্তিক এবং রাসুল এর নামে কুৎসা
রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব
অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।
৪)ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা,
অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ
বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির
অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
৫)ইসলামবিরোধী
নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে
শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর
পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।
৬)সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং
তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা
বন্ধ করা।
৭)মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে
রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও
কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন
বন্ধ করা।
৮)জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ
দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ
আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং
ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ
করা।
৯)রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-
টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক -
সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-
পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ
প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক
মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।
১০)পার্বত্য
চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী
কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিষ্টান মিশনারিগুলোর
ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
১১)রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার
ছাত্র রাসুলপ্রেমিক জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন,
নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।
১২)সারা
দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ
ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি- ধমকি, ভয়ভীতি
দানসহ তাঁদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।
১৩)অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সব আলেম-ওলামা,
মাদ্রাসাছাত্র ও রাসুলপ্রেমিক জনতাকে মুক্তিদান,
দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত
ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের
আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদান।১৩ দফা দাবিটি
আওয়ামি ছাড়া প্রায় সব মুসলমান সমর্থন দেয়।যার
ফলে হেফাজত ইসলামের দাবিটি আরও যৌক্তিক হয়ে
যায় এবং তাদের আন্দোলনে জনসমর্থন বৃদ্ধি
পেতে থাকে।
৬ই এপ্রিল, ২০১৩ হেফাজতে ইসলাম সারা দেশ
থেকে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করে এবং ঢাকার মতিঝিল
শাপলা চত্ত্বরে তাদের প্রথম সমাবেশ করে।এই
সমাবেশে লক্ষ লক্ষ সাধারন মানুষের সমাগম হয়।
এসময় বিভিন্ন বাধার কারণে লক্ষাধিক মানুষ চট্টগ্রাম
থেকে ঢাকা যেতে ব্যর্থ হয়।পরবর্তীতে তারা
চট্টগ্রামের ওয়াসা মোড়ে সমাবেশ করে।
নাস্তিকবিরোধী আন্দোলনের জন্য দ্রুত
জনপ্রিয় হয়ে যায় হেফাজতত ইসলাম।শাহ্ আহমদ শফি
এবং জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে
এগিয়ে যেতে তাকে অরাজনৈতিক দলটি।এরই
ফলশ্রুতিতে২০১৩ সালের ৫ই মে,হেফাজতে ইসলাম
বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সমাবেশ
করে।তাদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি এবং ঢাকার
মতিঝিলে তাদের দ্বিতীয় সমাবেশের করে।৫ ও ৬ই মে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা
বাহিনীর সাথে এই সংগঠনের কর্মীদের ব্যাপক
সংঘর্ষে বহু হেফাজতে ইসলামের কর্মী নিহত
হয়।৬ই মে,সংগঠনের মহাসচিব,ইসলামি চিন্তাবিদ জুনায়েদ
বাবুনগরীকে,ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগ এনে
গ্রেপ্তার করা হয়।এর আগে ৫ই মে শাপলা
চত্ত্বরে গভীর রাতে মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায়
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে হেফাজতের
কর্মীদের সরকারী আইন-শৃংখলা বাহিনী আক্রমণ
পরিচালনা করে।বিপুল পুলিশ,র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা
এতে অংশগ্রহণ করে।এছাড়া এই অভিযান পরিচালনার
পূর্বেই সরকার বিরোধী স্যাটেলাইট টেলিভিশন-
দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
যাতে হেফাজতের ওপর সরকারী বাহিনীর
নির্যাতনের ভিডিও জনগন দেখতে না পারে।এশীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে বলা করা হয়,বিভিন্ন
ইন্টারনেট রিপোর্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে
তারা ২৫০০ বা তারও বেশি হেফাজত কর্মী ওই হামলায়
নিহত হতে পারে বলে ধারনা করছে এবং এজন্য তার
তাদের রিপোর্টে একে গণহত্যা বলে অভিহিত
করে।এত নির্যাতনের পরও শাহ্ আহমদ শফি ও জুনায়েদ
বাবুনগরীসহ অন্যান্য নেতৃত্ববৃন্দ বাংলার মানুষের
ইসলাম প্রতিষ্টার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
সর্বশেষ "রাষ্টধর্ম ইসলাম বহাল রাকা"
আন্দোলন,পাঠ্যবইয়ে ইসলাম অবমাননাকর পড়া
তুলে দেওয়া এবং নারায়নগন্জের হিন্দু কর্তৃক ইসলাম
অবমাননার বিরোদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছে
অরাজনৈতিক দলটি আন্দোলন করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে,এরপর নাস্তিক লতিফ সিদ্দিকের বিরোদ্ধে আন্দোলন করে।বর্তমানে বই থেকে ইসলাম ধর্ম তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং ইসলাম বিদ্বেষী শিক্ষব্যাবস্তা বাতিল এবং নারায়নগন্জের আল্লাহ্কে অবমাননা কারি শিক্ষকের বিচারের দাবিতে তারা আন্দোলন করছে।
##একজন সচেতন মাসলান হিসেবে আমি হেফাজত ইসলামকে ভালবাসি।তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করি।নাস্তিক মিডিয়া তাদের বিরোদ্ধে অনেক অপ্রচার চালাচ্ছে তাই আমাদের সকলে উচিত সেটা মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাছাড়া গত ০৬.০৫.২০১৩ তে যেসব পোলাপান নিয়ে তারা এসেছিল তাদের অভিভাবকরাও এরকম কর্মসূচীতে তাদের পোলাপানদের বেহুদা মার খেতে পাঠাতে রাজি নয় ।
০৬.০৪.২০১৩ তে যে ১৩ দফার কথা পাঠ করা হয়েছে সেটা শফি সাহেব পড়েন নি ।
এরা নাকি এখন ছাত্রলীগের সাথে দোস্তি পাকিয়েছে এবং সরকারের কাছ থেকেও নাকি জমি টমি পাচ্ছে ।
বাংলাদেশের এসব পান চিবানো হুজুররা তো এসবের জন্যই ইসলামকে মুখোশ হিসেবে ব্যবহার করে ।
সরকারি রেলওয়ের জমি লিজ নেওয়া হয়েছে আরো ত্রিশ বছর আগে, এটা নতুন কিছু নয় আর ফ্রিতেও দেওয়া হয় নাই, এটি হাটহাজারী মাদসার পক্ষ থেকে লিজ নেওয়া হয়েছে। কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন নয়।
দোস্তি শুধু লীগের সাথে নয়, সব দলের সাথেই আছে, আ:লীগ এম,পি হাটহাজারী মাদরাসায় এসেছে বলে যদি লীগের সাথে দোস্তী হয়, মীর নাসির এলো বলে বি,এন,পির সাথে দোস্তী নয় কেন?
শুধু শুধু একটি বৃহৎ ইসলামী দলকে ঠুনকো অজুহাতে কোনঠাসা করা মোটেই কাম্য নয়।
পারলে সঙ্গ দিয়ে সহযোগীতা করুন, না পারলে বাম মিডিয়া দ্বারা প্রভাবান্নিত না হওয়াই ভালো মনে করি।
এমন ভাব ধরবে যে সে যা বোঝে , যা বলে , যা করে সবই শরিয়ত সন্মত।
মন্তব্য করতে লগইন করুন