সত্য সমাগত মিথ্যা অপসৃত- ১৫

লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ০৬ জুলাই, ২০১৭, ০২:৩২:৪১ দুপুর

ফিরকাবাজরা মুশরিক এবং নিজেদের মতবাদে সন্তুষ্ট-

وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وَكَانُوا شِيَعًا كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ (32) --

এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লসিত। (রুম/৩২)

তাফসিরঃ- ঈমাম কুরতুবি ও অন্যরা বলেন- مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا - পুর্বে অন্যান্য আয়াতে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা, আয়েশা, আবু উমামা-এর মতে অত্র আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য আহলে কিবলা তথা এ উম্মতের বিদাতি ও প্রবৃত্তির অনুসারীরা। অর্থাৎ যারা নিজেদের খেয়াল খুশিমত নতুন নতুন মতবাদ সৃষ্টি করে উম্মাহকে বিভক্ত করেছে। তবে কেউ কেউ বলেন এখানে ইহুদি নাসারা উদ্দেশ্য।

ইমাম ইবনে জরীর তাবারী বলেন-

(وَلا تَكُونَوا مِنَ المُشْرِكِينَ)يقول: ولا تكونوا من أهل الشرك بالله بتضييعكم فرائضه، وركوبكم معاصيه، وخلافكم الدين الذي دعاكم إليه. وقوله: (مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وكانُوا شِيَعا) يقول: ولا تكونوا من المشركين الذين بدّلوا دينهم، وخالفوه ففارقوه (وكانوا شِيَعًا) يقول: وكانوا أحزابا فرقا كاليهود والنصارى. وقوله: (كُلُّ حِزْبٍ بمَا لَديْهِمْ فَرِحُونَ) يقول: كل طائفة وفرقة من هؤلاء الذين فارقوا دينهم الحقّ، فأحدثوا البدع التي أحدثوا (بِمَا لَديْهم فَرِحُونَ) يقول: بما هم به متمسكون من المذهب، فرحون مسرورون، يحسبون أن الصواب معهم دون غيرهم. ---

অর্থাৎ (وَلا تَكُونَوا مِنَ المُشْرِكِينَ) এখানে আল্লাহ তা’লা বলেন, তোমরা মুশরেকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না আল্লাহর ফরয সমূহ লঙ্ঘন করে, পাপাচারিতায় লিপ্ত হয়ে এবং দ্বীন যা কামনা করে তার বিরুদ্ধাচরন করে। (অর্থাৎ দ্বীন উম্মাহর মধ্যে ঐক্য কামনা করে- যা ফরয, এর খেলাফ করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

(مِنَ الَّذِينَ فَرَّقُوا دِينَهُمْ وكانُوا شِيَعا) এখানে আল্লাহ তা’লা বলেন, তোমরা সেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না যারা নিজেদের দ্বীনকে পরিবর্তন করেছে, মতভেদ করেছে এবং বিভক্ত হয়ে গেছে।

(وكانوا شِيَعًا) অর্থাৎ তোমরা ইহুদি খৃষ্টানদের ন্যায় বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ো না।

(كُلُّ حِزْبٍ بمَا لَديْهِمْ فَرِحُونَ) অর্থাৎ যারা দ্বীনকে বিভক্ত করেছে এবং বিদাত সৃষ্টি করেছে- তারা যে পথ-মত ও মযহাব অবলম্বন করে আছে তাতেই সন্তুষ্ট পরিতৃপ্ত, তারা নিজেদেরকেই সঠিক এবং অন্যদেরকে ভ্রান্ত মনে করে। যা তারা আকড়ে ধরে আছে তাতে তারা আনন্দিত ও সন্তুষ্ট। তারা মনে করে একমাত্র তারাই সঠিক অন্যরা ভ্রান্ত। ( বাহঃ, কী চমৎকার মিল- দেওবন্দী, বেরেলভী, সালাফী, জামাত, তাবলীগ, ব্রাদার হুড, তালেবান ইত্যাদির সাথে খাপের খাপ লেগে গেল)

كُلُّ حِزْبٍ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ- প্রত্যেক দল নিজেদের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট। বসরিদের মতে এ আয়াত পূর্বের আয়াত. وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ - এর সাথে মিলিত। কাজেই অর্থ হবে যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করেছে তারা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত।

মাওঃ মওদুদী বলেন, দুনিয়ায় যতগুলো ধর্ম পাওয়া যায় এ সবেরই উৎপত্তি হয়েছে এ আসল দীনের মধ্যে বিকৃতি সাধনের মাধ্যমে। এ বিকৃতি আসার কারণ হলো এই যে, বিভিন্ন ব্যক্তি প্রাকৃতিক সত্যের ওপর নিজেদের নতুন নতুন কথা বাড়িয়ে দিয়ে নিজেদের জন্য এক একটি আলাদা ধর্ম বানিয়ে নিয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই মূল সত্যের পরিবর্তে এ বর্ধিত জিনিসেরই ভক্ত অনুরক্ত হয়ে গেছে। যার ফলে তারা অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে একটি স্বতন্ত্র ফিরকায় পরিণত হয়েছে। এখন সঠিক পথনির্দেশনা লাভ করতে চাইলে যে প্রকৃত সত্য ছিল দীনের মূল ভিত্তি, প্রত্যেক ব্যক্তিকেই সেদিকে ফিরে যেতে হবে। (তাফহীমুল কোরআন)।

ব্যাখ্যাঃ প্রথম শরীয়ত প্রবর্তিত হয় হযরত নুহ (আঃ) এর মাধ্যমে। এটাই হল আসল দ্বীন। এই দ্বীনের মধ্যে বিকৃতি সাধন করে, প্রাকৃতির সত্যের ভিত্তিতে নতুন নতুন কথা বাড়িয়ে দিয়ে বিভিন্ন ধর্ম বানিয়ে নেয়া হয়েছে। এভাবেই হিন্দু বৌদ্ধ ইহুদি খৃষ্ট ইত্যাদি ধর্ম গুলির জন্ম হয়েছে। মুলত এই সকল ধর্ম গোড়ায় এক ছিল। ঠিক একইভাবে ইসলাম ধর্মে বিভিন্ন ব্যক্তির রুচি ও প্রকৃতি অনুসারে নতুন নতুন মতবাদ সৃষ্টি করে ইসলামের সাথে জুড়ে দিয়েছে। শরীয়ত বহির্ভুত ব্যাখ্যা দাড় করে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে। তারপর তারা এই অতিরিক্ত বিষয় বা বিদাতের অনুসারী হয়ে, অন্যদের সাথে বিতর্কের সৃষ্টি করে,সেই বিদাত প্রতিষ্ঠার জেদ ধরে অন্যদের সাথে মতান্তর ঘটিয়েছে। তারপর উম্মাহ থেকে খারিজ হয়ে পৃথক ফেরকায় পরিনত হয়ে গেছে। এভাবেই ইসলামের মধ্যে বিভিন্ন ফেরকার জন্ম হয়েছে। যেমন বেরেলভীরা রাসূল (সাঃ) এর গায়েব জ্ঞান ও নুরের সৃষ্টি তত্ত্বের বিতর্ক সৃষ্টি করে পৃথক ফেরকা হয়েছে। নবীগণের ইসমত ও সাহাবাগনের মিয়ারে হক বিতর্কে জামাত পৃথক হয়েছে। জিহাদ খিলাফতের বিকল্প তাবলীগ – এ বিতর্কে তাবলীগীরা ফেরকা হয়েছে। ধর্ম শিক্ষা থেকে বিজ্ঞান শিক্ষা আলাদা করন ও ইসলামকে ভিক্ষা বৃত্তির উপর নির্ভরশীল করার কারনে দেওবন্দিরা পৃথক ফিরকা। এভাবে প্রত্যেকেই শরীয়ত বহির্ভুত বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে পৃথক ফেরকায় পরিনত হয়েছে। এখন সঠিক ইসলামে ফিরে আসতে চাইলে ঐসব বিদাত ও বিতর্কিত বিষয়গুলি বাদ দিয়ে নিরেট কোরান সুন্নাহর অনুসারী হতে হবে।

বাস্তব প্রয়োগঃ যীশু খৃষ্ট (ঈসা) বলেছেন, ‘ভণ্ডের দল, অন্যের চোখে কোটা দেখলে তোমরা বাদ- বিসম্বাদ শুরু করে দাও অথচ নিজের চোখে যে গাছের গোড়া পড়ে আছে- তা দেখ না’। আবার রাসূল (সাঃ) বলেছেন ‘এক মুসলমান আরেক মুসলমানের আয়না স্বরুপ’। কিন্তু ফিরকাবাজদের অবস্থা হল তারা শুধু অন্যের দোষ দেখে নিজের দোষ দেখে না। বস্তুত প্রত্যেক ফেরকা অপর ফেরকার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করছে সেগুলি সত্য। এখন সবাই যদি অভিযুক্ত ও বিতর্কিত বিষয়গুলি ত্যাগ করে, তাহলে তারা মুল ইসলামে ফিরে আসতে পারবে। আর তখন ঐক্যও হবে, উম্মাহ দাজ্জালের কবল থেকে মুক্তিও পাবে, ইহকাল- পরকালও রক্ষা পাবে। কাজেই আমরা ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।

যাই হউক উক্ত আয়াতের নির্দেশ হচ্ছে, ইহুদি খৃস্টানের মত বিভক্ত না হতে এবং নিজেদের মতবাদে তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে কোরান হাদিসের কষ্টি পাথরে যাচাই করে দেখতে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ফিরকাবাজ আলেমরা কি এ নির্দেশ মানছে? সবাই উত্তর দিল, না মানেনি, বরং উম্মাহ বিভক্ত করেছে। কাজেই প্রমানিত হল, ফিরকাবাজরা আলেম নয়, শয়তান। অনুগত নয় গাদ্দার। কোরান সুন্নাহর অনুসারী নয় বিকৃতকারী। এরাই হল প্রকৃত মুনাফিক। উস্তাদজি আপনি এই প্রস্তাব পাশ করুন। হাসান মুসান্না দাঁড়িয়ে সকলের সম্মতিতে প্রস্তাব পাশ করল।

সকল জাতির ঐক্য ফরয বিভক্তি হারামঃ

(شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ ﴿الشورى: ١٣﴾

তিনি তোমাদের জন্য সেই ধর্ম থেকে বিধান দিচ্ছেন যার দ্বারা তিনি নূহকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আর যা আমরা তোমার কাছে প্রত্যাদেশ করছি, আর যার দ্বারা আমরা ইব্রাহীমকে ও মূসাকে ও ঈসাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম এই বলে -- ''ধর্মকে কায়েম করো, আর এতে একে-অন্যে বিচ্ছিন্ন হয়ো না।’’ মুশরিকদের জন্য এ বড় কঠিন ব্যাপার যার প্রতি তুমি তাদের আহ্‌বান করছ! আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে তাঁর কারণে নির্বাচিত করেন, আর তাঁর দিকে পরিচালিত করেন তাকে যে ফেরে। (৪২: ১৩)

ব্যাখ্যাঃ- شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ-- তোমাদের জন্য দ্বীন তথা ইসলামকে বিধিবদ্ধ, নির্ধারিত, অবধারিত করে দেয়া হয়েছে। - مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا- সে দ্বীন সম্পর্কে প্রথম রাসূল নুহ (আঃ) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ সম্বলিত দ্বীনের অহী শেষ রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিকট আসে। আর প্রথম ও শেষ রাসূলের মধ্যবর্তি মহিমান্বিত রাসূলগণ তথা ইবরাহীম মুসা ও ঈসা (আঃ) কে সেই দ্বীনের ব্যাপারেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই নির্দেশটি কি? সেই নির্দেশ হচ্ছে - أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ – (ঐক্যবদ্ধ ভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা কর কখনো বিভক্ত হয়ো না) অর্থাৎ নুহের (আঃ) মাধ্যমে যে দ্বীনের শুরু হয়েছে যুগে যুগে প্রত্যেক নবী তা প্রতিষ্ঠিত করবেন, এক নবীর উম্মত আরেক নবীর উম্মতের সাথে মতভেদ করবে না, দলে দলে বিভক্ত হবে না বরং সবাই সম্মিলিতভাবে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবে। বস্তুত আল্লাহ্‌র দ্বীন একটাই, যুগে যুগে নবীগণ মতভেদ ও বিভক্তি ব্যতিত তা প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন, এ দায়িত্ব সর্বশেষ উম্মতে মুহাম্মদির উপর বর্তেছে। পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থগুলিতে বিকৃতির পর এখনো এর প্রমাণ পাওয়া যায়।

মুফাসসিরানে কেরামের মতামতঃ- - شَرَعَ অর্থ- বিধিবদ্ধ করা, প্রচলন করা, নিয়ম করা, বর্ণনা করা, স্পষ্ট করা ইত্যাদি। دين- অর্থ জীবন ব্যবস্থা অর্থাৎ ইসলাম। - مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا- এখানে হযরত আদমের (আঃ) উল্লেখ না করে নুহ (আঃ) এর উল্লেখ করা হয়েছে।কারণ নুহ (আঃ) প্রথম শরীয়তধারি রাসূল ছিলেন। যেমন শাফায়াৎ সম্পর্কিত হাদীসে এসেছে।

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِي حَدِيثِ الشَّفَاعَةِ الْكَبِيرِ الْمَشْهُورِ: (وَلَكِنِ ائْتُوا نُوحًا فَإِنَّهُ أَوَّلُ رَسُولٍ بَعَثَهُ اللَّهُ إِلَى أَهْلِ الْأَرْضِ فَيَأْتُونَ نُوحًا فَيَقُولُونَ لَهُ أَنْتَ أَوَّلُ رَسُولٍ بَعَثَهُ اللَّهُ إِلَى أَهْلِ الْأَرْضِ .. – অর্থাৎ কিয়ামতের ময়দানে লোকেরা যখন রাসূল (সাঃ) এর নিকট আসবে তখন তিনি বলবেন, তোমরা নূহ (আঃ) এর নিকট যাও, তিনিই পৃথিবীবাসির প্রতি আল্লাহর প্রেরিত প্রথম রাসূল। (কুরতুবী) কিন্তু আদম (আঃ) শরীয়তধারী রাসূল ছিলেন না, তিনি ছিলেন নবী। হযরত নুহের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তা’লা নতুন শরীয়ত প্রবর্তন করেন। হালাল হারামের বিধান দেন, বৈবাহিক সম্পর্কে মাতাগণ ভগ্নিগণ ও কন্যাগণকে হারাম করেন, কর্তব্য নির্ধারিত করে দেন এবং দ্বীনী বিষয়য়ের নিয়ম কানুন নির্দিষ্ট করে দেন। আর এ ধারা রাসূলগণের পরাম্পরায় চলতে থাকে আর প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে, সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) এর মাধ্যমে সেই মিশনের পরিসমাপ্তি হয়।

وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ - আল্লাহ্‌র দ্বীন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে এখানেও সেই পাঁচজন নবীর উল্লেখ্য করা হয়েছে যাদের কথা সুরা আহযাবে এসেছে। যেমন-

وَإِذْ أَخَذْنَا مِنَ النَّبِيِّينَ مِيثَاقَهُمْ وَمِنكَ وَمِن نُّوحٍ وَإِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ ۖ وَأَخَذْنَا مِنْهُم مِّيثَاقًا غَلِيظًا [٣٣:٧] আর স্মরণ কর! আমরা নবীদের থেকে তাঁদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম, আর তোমার কাছ থেকেও, আর নূহ ও ইব্রাহীম ও মূসা ও মরিয়ম-পুত্র ঈসার কাছ থেকে, আর তাঁদের কাছ থেকে আমরা গ্রহণ করেছিলাম এক জোরালো অংগীকার -- (৩৩/৭)। অর্থাৎ দ্বীন প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার।

বাস্তবেও পৃথিবীতে এ পাঁচজন নবীর উম্মত দেখা যায়। যেমন, নুহের উম্মত- হিন্দু সম্প্রদায় (গবেষকদের মতে)। মুসার উম্মত- ইহুদী জাতি। ঈসার উম্মত- খৃষ্টান জাতি। মুহাম্মদের উম্মত- মুসলমান জাতি। ইব্রাহীমের উম্মত- উপরোক্ত সবাই। উল্লেখ্য যে অথর্ব বেদে আব্রাম (ইব্রাহিম) কর্তৃক বড় ছেলে অথর্বকে (ঈসমাইল) কুরবানী দেয়ার উল্লেখ আছে বিধায় বুঝা যায় হিন্দুরাও তার উম্মতভুক্ত। উক্ত নবী গণের দ্বীন ছিল একটাই- যার মূল বার্তা হচ্ছে আল্লাহ্‌র একত্ববাদ ও তার ইবাদত। যেমন ইরশাদ হচ্ছে-وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ [٢١:٢٥] - আর তোমার পূর্বে আমরা কোনো রসূল পাঠাই নি যাঁর কাছে আমরা প্রত্যাদেশ না দিয়েছি এই বলে যে, ''আমি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, কাজেই আমারই ইবাদত করো’’।-(২১/২৫)

হাদীসে এসেছে "نَحْنُ مَعْشَرَ الْأَنْبِيَاءِ أَوْلَادُ عَلَّاتٍ دِينُنَا وَاحِدٌ" -- আমরা নবীগণ বৈমাত্রেয় ভ্রাতার মত, আমাদের দ্বীন এক। (কুরতুবী, কাছির) সকল নবীর দ্বীন এক হলেও শরীয়ত তথা বিধি বিধান ও পদ্ধতিগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। কারণ শরীয়তের বিধান আল্লাহ্‌ তা’লা একসাথে প্রয়োগ করেননি বরং নবীদের পরাম্পরায় ক্রমে ক্রমে পূর্নতা দান করেছেন যা মুহাম্মদ (সাঃ) এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় এবং সমাপ্তি ঘটে। যেমন –

الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ﴿المائدة: ٣﴾ - আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মব্যবস্থা পূর্ণাঙ্গ করলাম, আর তোমাদের উপরে আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম, আর তোমাদের জন্য ধর্মরূপে মনোনীত করলাম ইসলাম। (৫: ৩)

কাজেই প্রমানিত হল যে, সকল নবীর উম্মতের উপর একটাই দায়িত্ব- তা হল বিভক্তি না করে ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা। সুতরাং মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ ইহুদি খৃষ্টান সকলের উপর ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা ফরয।

أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ - আল্লাহ্‌ তা’লা সকল নবীকে নির্দেশ দিয়েছেন সেই একক দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করতে- যে দ্বীনের মুল বিষয়বস্তু হচ্ছে- কাতাদা বলেন –হালাল-হারাম। হাকাম বলেন- বৈবাহিক সম্পর্কে মাতাগণ ভগ্নিগণ ও কন্যাগণকে হারামকরণ। মোজাহিদ বলেন আল্লাহ্‌ তা’লা যত নবী পাঠিয়েছেন সবাইকেই নামায প্রতিষ্ঠা, যাকাত প্রদান ও আল্লাহ্‌র আনুগত্যের নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছেন। কাজেই সকল নবীর উম্মত সম্মিলিতভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা ফরয, কিন্তু মতভেদ ও বিভক্তি হারাম। لان الفرقة هلكة و الجماعة ثقة- (কারণ ফিরকাবাজীই ধ্বংস আর ঐক্যই শক্তি)

- كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ - রাসূল (সাঃ) তাওহীদের দিকে আহ্বান করেছেন, কিন্তু মুশরিকদের পক্ষে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য প্রদান করা এবং মূর্তিপূজা ত্যাগ করা খুবই কঠিন বিষয়। শয়তান এবং তার বাহিনী এ কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এজন্যই ( أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ) ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা মুশরিকদের উপর কঠিন।

ব্যাখ্যাঃ উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহ্‌র দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা মুশরিকদের জন্য কঠিন, কারণ তাদের একেক দল একেক নবী বা দেবতা বা অবতারের অনুসারী। ঠিক অনুরূপভাবে বর্তমান মুসলামানরাও ঐক্যবদ্ধ হয়ে খোদার দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা খুবই কঠিন, কারণ তারাও বিভিন্ন মনিষীর অনুসারী অর্থাৎ নিজ নিজ ফিরকার মুরুব্বিদের নবীর মত অনুসরণ ও আনুগত্য করে। তাদের পক্ষে এসব ফিরকা- বিভক্তি মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্ভব নয় বিধায় তারা ইহুদী খৃষ্টানের ন্যায় হয়ে গেছে।

اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ - যে হেদায়েতের যোগ্য, সত্য অন্বেষন করে আল্লাহ্‌ তাকে হেদায়েত দান করেন। যেমন - (وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ ﴿العنكبوت: ٦٩﴾ পক্ষান্তরে যারা আমাদের জন্য সংগ্রাম করে, আমরা অবশ্যই তাদের পরিচালিত করব আমাদের পথগুলোয়। আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সৎকর্মীদের সাথেই রয়েছেন। (২৯: ৬৯) কিন্তু যে সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে আল্লাহ্‌ তাকে অন্ধকারের দিকেই চালিত করেন।

ব্যাখ্যাঃ আয়াতের প্রথামাংশে আল্লাহ্‌ তা’লা নির্দেশ দিয়েছেন বিভক্তি না করে ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর একাজে যারা সচেষ্ট থাকে আল্লাহ্‌ তা’লা তাদেরকে মনোনিত করেন, দ্বীন প্রতিষ্ঠার পথে পরিচালনা করেন এবং সাহায্য করেন। কাজেই দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরয। আর দ্বীন প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত এবং মূল উপদান হচ্ছে ঐক্য। কারণ ঐক্য ব্যতিত দ্বীন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। এ জন্যই আল্লাহ তা’লা দ্বীন প্রতিষ্ঠার নির্দেশের সাথে সাথে দ্বিতীয় নির্দেশ দিয়েছেন (وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ) বিভক্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধ থেকে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে। এখন ঐক্যের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করবে সেই আল্লাহ্‌র মনোনিত বান্দা, আল্লাহ্‌ তাকে সঠিক পথ দেখাবেন, সাহায্য করবেন। আর তার জন্য রয়েছে ইহকালে সম্মান এবং পরকালে মহা পুরুষ্কার -- فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ- তাদের কোন ভয় নাই, তারা চিন্তিতও হবে না)। যুগে যুগে এ মহান দায়িত্ব পালনকারী একটি দলকে সচেষ্ট দেখা যায়। যেমন আধুনিক কালে জামাল উদ্দিন আফগানি থেকে নিয়ে বর্তমান পর্যন্ত অনেকেই এ কর্তব্য সম্পাদন করে যাচ্ছেন। এরাই হচ্ছে ৭৩ দলের নাজাত প্রাপ্ত দল। পক্ষান্তরে যারা বিভক্তি ও দলাদলি করছে, তারা আকাশের নিচে মর্তের উপরে নিকৃষ্টতর প্রাণী, আল্লাহ-রাসূলের শত্রু, মুসলিম জাতির দুশমন, ইসলামের চূড়ান্ত শত্রু। এরা আল্লাহ-রাসূলের নির্দেশ অমান্য করে প্রকারান্তরে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

কাজেই কোরানের নির্দেশ অনুসারে এদের বিচার হওয়া উচিত। যেমন আল্লাহ তা’লা বলেন-- إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلَافٍ أَوْ يُنفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ذَٰلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ ﴿المائدة: ٣٣﴾

যারা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং ভুপৃষ্ঠে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়- তাদের একমাত্র প্রাপ্য হচ্ছে -- তাদের কাতল করো অথবা শূলে চড়াও অথবা তাদের হাত ও তাদের পা বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলো অথবা তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করো। এটি হচ্ছে তাদের জন্য ইহলোকে লাঞ্ছনা আর তাদের জন্য পরকালে রয়েছে কঠোর শাস্তি (৫: ৩৩)

বিধানঃ আয়াতে – أَقِيمُوا অনুজ্ঞা, আর - لَا تَتَفَرَّقُوا - নিষেধাজ্ঞা। আর - الامر للوجوب والنهي للحرام- (কোরানের অনুজ্ঞা দ্বারা ফরয, নিষেধাজ্ঞা দ্বারা হারাম সাব্যস্ত হয়) এর সুত্রানুসারে ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ফরয, আর বিভক্ত হওয়া- বিচ্ছিন্ন হওয়া হারাম।

বাস্তব প্রয়োগঃ সৃষ্টির সূচনা থেকে প্রলয় পর্যন্ত মানব জাতির জন্য আল্লাহ্‌র মনোনিত দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা একটাই- ইসলাম। যুগে যুগে আল্লাহ্‌ তা’লা বিভিন্ন নবী রাসূলদের পর্যায়ক্রমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, এভাবে মুহাম্মদ (সাঃ) এর মাধ্যমে দ্বীন পূর্ণতা লাভ করে এবং সমাপ্ত হয়। দ্বীন যেহেতু একটাই তাই আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে সকল উম্মতের উপর দায়িত্ব হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দ্বীন প্রতিষ্টা করা। কিন্তু অন্যান্য উম্মতরা রাসূল বা আরবদের প্রতি বিদ্বেষবশত রাসূলের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ইসলাম থেকে দুরে সরে যায়। কাজেই এখন ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব মুসলিম উম্মাহর উপর অর্পিত হয়ে যায়। তদুপরি অন্যান্য উম্মতের সাথে ইসলামের মূল ভিত্তি তাওহীদের উপর ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়াও মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব। যেমন-

(قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَىٰ كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا اللَّهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلَا يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِّن دُونِ اللَّهِ فَإِن تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ ﴿آل‌عمران: ٦٤﴾ - বলো ''হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা, আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে পরস্পর সমঝোথার মাঝে এসো এ মর্মে যে, আমরা আল্লাহ্ ছাড়া আর কারো এবাদত করবো না, আর তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবো না, আর আমরা কেউ আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে রব বলে গ্রহণ করবো না।’’ কিন্তু তারা যদি ফিরে যায় তবে বলো ''সাক্ষী থাকো আমরা কিন্তু মুসলিম।’’ (৩: ৬৪)

অনুসিদ্ধান্তঃ ব্যস, এখন আমার প্রশ্ন হল, আলেমরা কি খোদার দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য উম্মতদের আহ্বান করছে, তাদেরকে তাওহীদের উপর ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছে? সবাই সমস্বরে চেঁচাল, না না। একজন দাঁড়িয়ে বলল, ইসলামের আলেমরা অন্যান্য নবীর উম্মত- ইহুদী, খৃষ্টান, হিন্দু ইত্যাদির সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠা তো দুরের কথা, তারা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধভাবে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বাদ দিয়ে নিজেদের ভাঙ্গন ও বিভক্তির ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামের প্রথম যুগেই তারা শিয়া সুন্নী দুভাগে ভাগ হয়ে যায়। প্রত্যেকটি ফেরকার মধ্যে আবার গানিতিক হারে ভাঙ্গন শুরু হয়, শত শত ফেরকার জন্ম হয়। শুধুমাত্র উপমহাদেশের সুন্নী হানাফী মুসলমানরাই ইংরেজ আমলে বেরেলভী, দেওবন্দী, জামাতি, তাবলীগি ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। তাদের মধ্যে আবার হিজবুত তাওহীদ, হিজবুত তাহরীর, জাকির নায়েকী, তালেবান, হুজি, জে এম বি, আইসিস, আনসারুল্লাহ ইত্যাদি শত শত ফেরকার জন্ম হচ্ছে। উম্মতের মধ্যে গানিতিক হারে, চক্রবৃদ্ধিহারে ভাঙ্গন ও বিভক্তি ছড়িয়ে পড়েছে। কাজেই আলেমরা ঐক্য নয় বিভক্তির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মাওঃ মোজাহিদ বলল, এখন আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, আল্লাহ্‌র নির্দেশ- দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষে মুসলিম উম্মাহ তো ঐক্যবদ্ধ থাকবেই তদুপরি আহলে কিতাবের সাথে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা ফরয। প্রশ্নটা হল এই বিধান কি ফিরকাবাজ আলেমরা স্ব স্ব অনুসারী ও জনগনকে জানিয়েছে? সবাই চিৎকার করল, না না জানায়নি, ওরা গাদ্দারি করছে। মোজাহিদ বলল, কাজেই শ্রদ্ধেয় ইমাম, আপনি এ মর্মে প্রস্তাব পাশ করুন যে, ফিরকাবাজ আলেমরা গাদ্দার, আল্লাহ রাসুল ইসলাম ও উম্মাহর দুশমন, কিতমানে ইলম তথা কোরানের বিধান গোপনকারী। হাসান মুসান্না দাঁড়িয়ে বললেন, এ বিষয়ে কারো কোন আপত্তি আছে। সবাই বলল, না না, আপনি প্রস্তাব পাশ করেন। তিনি বললেন, প্রস্তাব পাশ হল, ফিরকাবাজ আলেমরা গাদ্দার এবং কিতমানে ইলমকারী।

বিষয়: রাজনীতি

৬৩২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383509
০৬ জুলাই ২০১৭ সন্ধ্যা ০৬:০৯
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : ভালো লাগলো , অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File