চিঠি- ২৫ (সত্য ঘটনা অবলম্বনে)
লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১৮ আগস্ট, ২০১৬, ১০:১৭:২৮ সকাল
৩য় বাসা।
কিন্তু নতুন বাসা খুঁজতে গিয়ে দেখা দিল আরেক বিপত্তি। তার বউ তখন অলরেডি মহারানী ভিক্টেরিয়া হয়ে গেছেন। উনি ফ্লাট বাসা ছাড়া উঠবেন না। যদিও তার ভাই বোনদের কেউ কোনদিন ফ্লাট বাসায় থাকেনি। কিন্তু তখনো টাওনের দক্ষিণাংশে কোন ফ্লাট বাসা গড়ে উঠেনি। বড়লোক ছোটলোক সবাই সাধারণ বিল্ডিংয়ে থাকে। বেঙমিয়াঁ নামে একটা ফ্ল্যাট- বাসা পাওয়া গেল- যা বহু পুরানো লোনা ধরা, প্লাস্টার উঠা, স্যাতস্যাতে যা বসবাসের অনুপযোগি। বউকে নিয়ে অনেক ঘুরল কিন্তু কোন বাসাই তার পসন্দ হয় না। অবশেষে পরিচিত একলোক হাসানের কাছে ভাড়া দিতে খুব আগ্রহি। জামালপুর থেকে ঢাকাগামী মেইন রোড থেকে বিশ ফুট পুর্ব পাশে এক্সট্রা একটা বাসা। পুর্ব- পশ্চিমা ঘরে বড় বড় দু’টি রুম, দুই পাশে বারান্দা। পুর্বের বারান্দা সিঙ্গেল একটি রুম, দক্ষিনের বারান্দায় পুর্ব পাশে রান্না ঘর, তার সংলগ্ন বাথরুম, বাকিটুকু গ্রিল দেয়া উন্মুক্ত বারান্দা। তার সামনে গেইট দেয়া সামান্য উঠান।
হাসান বাসা দেখানোর জন্য শ্বাশুড়ি ও বউকে নিয়ে গেল কিন্তু তার বউয়ের পসন্দ হয় না। বাসায় একটা মুথা ঝাড়ু পড়েছিল, তার মেয়ে সেটা নিয়ে ঝাড়ু দিতে লাগল, অর্থাৎ মাটিতে আছড়াতে লাগল। তা দেখে হাসানের শ্বাশুড়ি বললেন, তোমাদের পসন্দ না হলে কি হবে তোমার মেয়ের পসন্দ, সে থাকবে। এতে বুঝা গেল তার শ্বাশুড়ি মায়ের পসন্দ কিন্তু তিনি মেয়েদের এতটাই অনুগত অথবা ভয় পান যে, নিজের মেয়েকে বলতে সাহস পাচ্ছেন না, বললেন জামাইকে। হাসান স্ত্রীকে অনুরোধ করতে লাগল- চল উঠে পরি, বাসাটা ভালই আছে। কিন্তু না, সে আরো উন্নত বাসা চায়। পরদিন সকালে বড়াপা মানে ঈশ্বরের বাসা থেকে পয়গাম এল। তার এক ভাগ্নে এসে খালাকে বলল, তোমরা যে বাসা দেখে এসেছ আম্মু বলেছে তাতে উঠে পড়তে। অর্থাৎ হাসানের শ্বাশুড়ি গিয়ে বলার পর তার বোন এ বার্তা পাঠিয়েছে। হাসান এত করে বলল রাজি হল না কিন্তু ঈশ্বরের বার্তা পেয়ে একেবারে অনুগত বান্দার মত মেনে নিল, টু শব্দটি পর্যন্ত করল না। ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ সালে উঠে গেল সেই অভিশপ্ত বাসায়- যেখানে ঘটল এক ইতিহাস, যে ইতিহাস আপন বৃত্তে আবর্তিত মানুষ শুনল না, জগৎ জানল না, কোন ঐতিহাসিকের কলম লিপিবদ্ধ করল না, একটি দাম্পত্যের সমাধি রচিত হল।
নতুন বাসায় মালামাল এনে শীল পাটা মনের ভুলে দেয়ালের সাথে খাড়া করে রাখল। হাসান বাইরের রুম মানে পশ্চিমের রুম গোছানোর কাজে ব্যস্ত। এর মধ্যে স্ত্রী ডেকে বলল- এই তাড়াতাড়ি আসেন, দেখে যান। সে দৌড়ে গেল এবং মৃদু আর্তনাদ করে উঠল। মনে হল যেন তার মেয়ের পায়ের উপর পাটা পড়ে আছে। ঘটনা হল দেয়ালে ঢেস দেয়া পাটা ধরে সে টান দিয়ে নিজের দিকে ফেলে দিয়েছে, আর পাটা তার পা ঘেঁষে এমন ভাবে পড়েছে যে, পায়ের আঙ্গুল দুই সুতা পরিমাণ ঠেলে দিয়েছে, আঙ্গুল বাকা হয়ে আছে। পাটাটা যদি আর দুই সুতা পরিমাণ পেত তাহলে আঙ্গুল গুলি বাঁচার আর কোন উপায় ছিল না। আহঃ আল্লাহ্ কত মেহেরবান। এ দিন হাসানের স্থির বিশ্বাস হল ফেরেশতারা শিশুদের পিছনে থাকে এবং তাদের রক্ষা করে। অথচ ফেরদৌসী তখন পাটা থেকে মাত্র এক ফুট দুরুত্বে বসে কাজ করছে। জিজ্ঞেস করল মেয়ে পাটা ফেলে দিল আর তুমি কাছে থেকেও দেখলে না। সে চোখ রগরিয়ে উত্তর দিল- কাজ করতেছি দেহেন না? কি বলবে, এমন বেহুস মানুষকে আর কীই বা বলার আছে। মেয়েকে নিয়ে গেল এবং সাথে রেখেই বাসা গোছানোর কাজ করল।
স্ত্রীর স্বাস্থ্যের জন্য হাসান প্রাণান্তকর চেষ্টা করছিল। ডিম, এক কেজি দুধ বান্ধিক ছিল কিছুটা মেয়ে খেত বাকীটা তার, হাসান এক ফোটাও খেত না, ভিটামিন জাতীয় ঔষধ আনত কিন্তু এগুলো ঠিক মত খেত না, স্বামী দেখে শুনে খাওয়াত। এছাড়াও তাকে ভাল- মন্দ খাওয়ানোর চেষ্টা করত। আবার তার খাদ্য চাহিদাও মোটামোটি চলনসই ছিল। সব মিলিয়ে তার স্বাস্থ্য হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হয়নি দুটি কারণে, প্রথমত সে অষ্ট প্রহর ঝগড়া করত, মন খারাপ থাকত। দ্বিতীয়ত সে চুম্বকের মত দুনিয়ার সব চিন্তা টেনে আনত, আগে চিন্তা করত হাসান তাকে ফেলে চলে যাবে। কিন্তু মোবারক বিয়ের কথা বলার পর থেকে চিন্তার নতুন খোরাক পেল, স্বামী আবার বিয়ে করবে। এ ছাড়াও রাজ্যির আজে বাজে যত চিন্তা একটা না একটা তার মাথায় ভর করে থাকতই, চিন্তা ছাড়া তার কোন মুহুর্ত কাটত না। ইত্যাদি কারণে তার স্বাস্থ্যের অবনতি বৈ উন্নতি হয় নি।
বাসায় উঠার দুই দিন পর হাসানের শ্বাশুড়ি এসে মেয়ের স্বাস্থ্যহীনতার জন্য তাকে বাঁশ দিলেন। বাসায় এসেই তিনি খাটের কিনারে বসলেন আর হাসান তিন ফুট ব্যবধানে চেয়ারে বসা। ভূমিকা না করেই সরাসরি বললেন, তুমি আমার মেয়েকে কী খাওয়াও, স্বাস্থ্য হয় না কেন। সে বলল, কোনটা না খাওয়াই, সেই তো ঠিক মত খায় না, আমি জোর করে খাওয়াই। তাছাড়া সে আজে বাজে চিন্তা করে, রাত দিন ঝগড়া করে তো স্বাস্থ্য হবে কেমনে? সম্ভবত ঝগড়ার কথাটা শুনে তিনি রেগে গেলেন। বললেন, অজুহাত দেখিও না। এত খাওয়াও তো স্বাস্থ্য হয় না কেন? আমার সব মেয়েরা বিয়ের আগে শুকনা ছিল, কিন্তু বিয়ের পরে সবারই স্বাস্থ্য হয়ে গেছে, ওর হচ্ছে না কেন? তোমার কাছে বিয়ে দেয়াই ভুল হয়েছে, কিভাবে বউ রাখতে হয় তুমি জান না। ঠিকমত বউ পালতে পারবে না তো বিয়ে করেছিলে কেন? এভাবে আমার মেয়েকে রাখব না, তোমাকে কিছু দিন সময় দিলাম- এর মধ্যে যদি তুমি ওর স্বাস্থ্য ঠিক করতে পার তো ভাল, নইলে আমার মেয়েকে আমি নিয়ে যাব। ব্যস তিনি মন্ত্র পাঠ শুরু করলেন। হাসান লজ্বায় মাটির সাথে মিশে যাচ্ছিল, কিন্তু তার জানা ছিল, শ্বাশুরির সাথে তর্ক করে লাভ নাই। এতে তিনিও বিরক্ত হবেন আবার একবারের বাঁশ তাকে দুই বার খেতে হবে। কারণ তিনি চলে গেলে শ্বাশুরির সাথে বেয়াদবির অজুহাতে বউ তাকে আইখ্যা ওয়ালা বাঁশ দিবে। কাজেই নীরবতা শ্রেয়।
হাসান সাপে কাটা রোগীর মত মাথা নিচু করে চেয়ারে বসে আছে আর শ্বাশুড়ি ওঝার মত তাকে ঝাড়ছেন, সে কান ভরে শুনছে। ওদিকে তার গুনধর বউ যাওবা রান্না ঘরে ছিল, হাসানের অপমান স্বচক্ষে দেখার জন্য আলুর খোসা ছাড়ানোর ভান ধরে হাসানের দিকে ফিরে মেঝেতে এসে বসল। তার চেহারায় সেই হিংস্র খুশির আভা ছড়িয়ে পড়েছে। সে তার বউকে চিনে। তার চেহারায় দুই প্রকারের হাসি ফুটে। যখন সে স্বাভাবিকভাবে আনন্দিত হয় তখন তার চেহারায় উচ্ছসিত হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ে যা তার হৃদয় কাড়ে। কিন্তু যখন সে তাকে জ্বালিয়ে জ্বালিয়ে অতিষ্ট করে তুলতে পারে, বা হাতে- পায়ে ধরাতে পারে বা অন্য কোন ভাবে অপমান করাতে পারে তখন তার চেহারায় ফুটে উঠে হিংস্র দানবীর ক্রোড় হাসি। তার চোখে থাকে প্রতিশোধের মাদকতা। সে বারবার স্বামীর দিকে তাকিয়ে দেখছে কেমন ভাবান্তর হচ্ছে, কাঁদছে নাকি শ্বাশুড়ির গালি শুনে দাঁত বের করে হাসছে। হাসানও স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে সেই হিংস্র খুশির ঝিলিক দেখছে। স্ত্রীর এ কুৎসিত রূপটা তার খুবই পরিচিত- যা দেখলে হাসানের কলজেটা তোষের আগুনে পোড়তে থাকে। বসে বসে ভাবে যার ঘরে এমন দাজ্জাল বউ আছে তার কপালে গালি জুটবে না তো মালা জুটবে?
প্রায় আধা ঘন্টা পর্যন্ত তিনি জামাইকে ঝাড় ফুক করে উঠে সোজা চলে গেলেন। হাসান বারংবার বলল, এই দুপুরে যাওয়া ঠিক হবে না, বিকালে যাবেন, অন্তত চারটে খেয়ে যান। সে শ্বাশুড়ির হাতেও ধরল কিন্তু তিনি মানেন নি, সোজা রোডের উপর চলে গেলেন। অগত্যা কি আর করবে, রিকশা ডেকে ভাড়া দিয়ে বিদায় করে দিল। ঘরে এসে বউকে বলল, এখন খুব খুশি তাই না? সে আত্মতৃপ্তির একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল আর বুঝাল হা- সে খুশি। এর আগে বা পরে শ্বাশুড়ি হাসানের সাথে এমন রাগ কোন দিন দেখাননি। সে বসে বসে ভাবে- শ্বাশুড়ি হঠাৎ এত রাগ দেখালেন কেন, এমন সহজ সরল বোকা টাইফের মানুষ এত মোক্ষম মোক্ষম কথাইবা বললেন কি করে।
আসলে এ রাগের পিছনে অন্য একটি শানে নুযুল আছে। বড়াপা মানে ফেরদৌসির বড় বোনের প্রথম সন্তান হওয়ার পর স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পরে। তারপর একদিন বাবা এসে মেয়ের স্বাস্থ্য দেখে জামাইকে- তুমি আমার মেয়েকে কী খাওয়াও, শরীরের এই অবস্থা কেন, ইত্যাদি বলে বাঁশ দিয়ে গেলেন। আর এই বড়াপা যখন দেখলেন তার বোনের স্বাস্থ্যের কোন অগ্রগতি নাই তখন তার হিংসে হল। কারণ তার জামাই বাঁশ খেয়েছে, অথচ একই অপরাধে ফেরদৌসীর জামাই বাদ যাবে কেন? এ জন্যই তিনি মাকে ডেকে এনে বাঁশ দেয়ার মন্ত্র শিখালেন, শুধু শিখালেন না কি কি বলতে হবে- কিভাবে বলতে হবে সব শিখিয়ে তারপর মাকে বলেছেন, এবার তুমি বল আমি শুনি। এভাবে কয়েক বার রিহার্সেল করিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন, আর বলে দিলেন- কথা বলার পর আর বসে থাকবে না, সোজা আমার বাসায় চলে আসবে। এরপর তিনি আসলেন মঞ্চে উঠলেন, হাসানের উপর মন্ত্র পাঠ করলেন, তারপর নেমে সোজা চলে গেলেন। অন্যথায় শ্বাশুড়ি তার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন বিধায় এভাবে বকতেন না, বকলেও এত কলা কৌশলে বকতেন না। এই হল হাসানের বাঁশ খাওয়ার গুপ্ত রহস্য।
একদিন মাদরাসা থেকে আসার পর বউ বলল, খুলনার দুলা ভাই এসেছে দেখা করে আসেন। সন্ধ্যার পর যাওয়ার সময় হাসান বলল, রান্না করে রেখ, তাকে নিয়ে আসব। যেহেতু তার শ্বাশুড়ি বাড়িতেও থাকতেন না বা তার কোন ঠিক ঠিকানাও ছিল না, কাজেই বোনদের বেড়ানো বা পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ হত ইঞ্জিনিয়ার ও এডির বাসায়। বজলু নামে আরেকজন ছিল, কিন্তু সে ছিল দরিদ্র। কাজেই হাসান বাসা নেয়ার পর চাইত সেও কিছুটা শেয়ার করতে। এ জন্যই অনেকটা দূর থেকে তাকে নিয়ে আসতে গেল। হাসান গিয়ে সালাম দিয়ে বসল। লোকটা তখন গেস্ট রুমে আর ইঞ্জিনিয়ার তার রুমে বসে দুজন উচ্চ স্বরে আলাপ করছে। বিষয় বস্তু হল সে তার মেয়েকে হাফেজা বানাবে। আলাপ শেষ হলে হাসান বলল, মেয়েদের হাফেজা বানানো ঠিক না। বুঝিয়ে বলল, মেয়েরা তারাবীহ পরাতে পারে না, আবার সাংসারিক ঝামেলায় ঠিক মত তিলাওয়াত ও করতে পারে না। ফলে তাদের ইয়াদ থাকে না। এজন্যই মেয়েদের কিতাবাদি শিক্ষা দেয়া ভাল। তাতে নিজেরাও উপকৃত হয় আবার সন্তানদেরও শিক্ষা দিতে পারে।
বস্তুত এ লোকটা ছিল অনেকটা এলিয়েনের মত, সে টেনে টেনে এমন ভাবে কথা বলে যে, হাসান পুর্বেও বহুবার তার কথা শুনেছে কিন্তু বুঝে নাই বাংলা বলছে নাকি ভিনগ্রহের ভাষা বলছে। হাসানের কথা শুনেই সে মন্তব্য করে বসল, আপনি বুললেই তো হবিকনে, হামাদেরও তো ইকটা মোতামোত ( মতামত) আছে। শুনে তো সে টাসকি খায়া গেল, হালায় কয় কি। আমি দিলাম পরামর্শ আর তুমি করলে অপমান, রাখ শালা, তোমাকে জব্দ করব। এখন সাথে সাথে যদি বেরিয়ে আসে তাহলে বলবে জামাইটা অসভ্য, এ পরিবারের অযোগ্য, আর এর জের ধরে বউটা হারানোর সম্ভাবনাও রয়েছে। কাজেই নির্বাক কিছুক্ষণ বসে থেকে বলল- আসি, তাকে সালামও দিল না, বাসায় আসার দাওয়াতও দিল না। এটাই তাকে জব্দ কর হল, কারণ হাসানের ক্ষমতার দৌড় এ পর্যন্তই ছিল। আসতে আসতে ভাবল- ভোতা কা ভুতি মিলে জ্যায়সা কা ত্যায়সা মিলে। আল্লাহ্ সব কিছু মিলিয়েই দেন। ইঞ্জিনিয়ার ও তার বউ উভয়টাই কর্তৃত্ব পরায়ন ও দাম্ভিক, আল্লাহ্ দুটাকে মিলিয়ে দিয়েছেন। আবার এই শালা যেমন এলিয়েন তার বউটাও আরেকটা এলিয়েননি। দুই এলিয়েন আল্লাহ মিলিয়ে দিয়েছেন।
সে ছিল তাদের দ্বিতীয় বোন। স্ত্রীর সাথে প্রথম রাত্রে তার একটু অসুবিধা হয়েছিল, যদ্দরুন ফজরের নামায পড়তে পারেনি। তখন এই মহিলা অন্দর মহলে তার বোন ও অন্যান্য মহিলাদের মধ্যে মাইকিং করে দিল- জামাইয়ের হায়েজ হয়েছে, এজন্যই নামায পড়তে পারেনি, কেউ কিছু মনে কইরেন না। বিয়ের প্রায় মাস খানেক পর সে খুলনা থেকে হাসানকে কল করল, তার বাসায় বেড়ানোর দাওয়াত দিল। সে বলল, আপা আপনি তো অনেক দুরে থাকেন এখন ছুটিও নেই, যখন লম্বা ছুটি পাব তখন আসব ইংশাআল্লাহ। ওমা- যাও, তোমার সাথে কোন কথা নাই- বলে কল কেটে দিল। সে তাজ্জব হয়ে মনে মনে বলল, মহিলাটা কি দাজ্জাল নাকি। এ মহিলার বিয়ের পরদিন কাজের মেয়ের জন্য ফরমান জারি করল, সে কোন কাজ করবে না। তিন দিন পর তার ভাসুর বলল, বউ থাকতে কাজের মেয়ে কেন? সে ভাসুরের মুখে মুখে উত্তর দিয়ে দিল- তাহলে কাজের মেয়ে থাকতে আবার বউ কেন? অর্থাৎ সে বোকা ভাসুরকে বুঝিয়ে দিল কাজের মেয়ের কাজ মাটিতে আর বউয়ের কাজ বিছানায়। কাজেই কাজের মেয়ে দিয়ে যদি বিছানার কাজ না চলে তাহলে বউ দিয়ে মাটির কাজ চলবে কিভাবে। আর হাসানের বধুরত্ন ছিল এ মহিলারই কপি পেস্ট। আকৃতি প্রকৃতি স্বভাব চরিত্র হুবহু এক। তবে বোকামি, বদমেজাজ ও মুখরাপনায় তার বউ ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান।
ঘটনাটা এসে বউকে বলল, কিন্তু তার মধ্যে কোন ভাবান্তর দেখা গেল না। ঝগড়া দিন দিন বেড়েই চলছিল, তারও ধৈর্যের বাঁধ ক্রমে ক্রমে ভেঙ্গে যাচ্ছিল। স্ত্রীর প্রতি যে নিখাদ ভালবাসা ছিল সেখানে ঠাই নিল ঘৃণা, আর তা ধীরে ধীরে বেড়েই যাচ্ছিল।
বিষয়: সাহিত্য
১৮৪৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন