চিঠি-২৩ (সত্য ঘটনা অবলম্বনে)

লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১৫ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০৮:০৮ দুপুর

এরপর থেকে তার গালির মধ্যে আরো নতুন নতুন মন্ত্র যুক্ত হল। এবারের মন্ত্র হল- জামাইদের কোন লেম দিতে নেই, লেম (প্রশ্রয়) দিলেই মাথায় উঠে, এদেরকে যত পায়ের তলায় রাখা যায়।

প্রথম দিন হাসান কিছু বলেনি। কিন্তু দ্বিতীয় দিন বলল, বাঃ চমৎকার বলেছে, অথচ রাসূল (সাঃ) বলেছেন- মানুষ মানুষকে সেজদা করার অনুমতি থাকলে আমি স্ত্রীদেরকে হুকুম দিতাম তোমরা তোমাদের স্বামীদের সেজদা কর। এটা শুনেই সে চোখ পাকিয়ে তাকাল, তারপর ধেয়ে আসল। এই প্রথম হাসান স্ত্রীকে ভয় পেয়ে গেল- এ পর্যন্ত কত ঝগড়া ঝাটি হয়েছে, কতবার মেরেছে কিন্তু কোনদিন সে স্বামীর গায়ে হাত তুলেনি এবং এমন ভাব- লক্ষনও দেখায়নি। কিন্তু আজকের ভাব গতিক তো ভাল ঠেকছে না, আল্লায় জানে, অবশেষে বউয়ের হাতের পিটুনি খেতে হয় কিনা। সে আত্নরক্ষার্থে মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকল। সে এসেই সোজা উপোড় হয়ে স্বামীর পায়ের পাতায় কপাল ঠেকিয়ে দুই বার সুবহানা রাব্বিয়াল...... তাসবীহ পাঠ করল। তারপর সটান দাঁড়িয়ে তার চোখে চোখ রেখে এখন খুশি তো- বলে হন হন করে চলে গেল।

ঘটনার আকস্মিকতায় হাসান হকচকিয়ে গেল, চট করে সরে যাওয়া বা পা টান দেয়ার মত তার হুসই ছিল না। ঘৃণায় তার শরীর কাটা দিয়ে উঠল। এ কেমন তাবলীগী, কেমন ধর্মীয় পরিবারের মেয়ে, এটা কাকে সে বিয়ে করল, যাকে কোরান-হাদিসের কথা শুনালে এমন কুৎসিত উপহাস করতে পারে। কোন কোন মাজার ও পীরকে মনুষ্যাকৃতির কতক প্রাণী সেজদা করে। তার মন চায় এদেরকে আগুনে জ্বালিয়ে দিতে, কতক ইমাম এদেরকে হত্যার বিধানও দিয়েছেন। কারণ খোদার সৃষ্টি সবাই সমান। মানবিক মর্যাদায় তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্য শুধু কর্মের। এ জন্যই সেজদা করা যাবে না, মাথা নত করা যাবে না, এটাই ইসলামের বিধান। কারণ এতে মানবিক মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়। অথচ তার স্ত্রী কি না তাকেই সেজদা করে বসল। উঃ কী জঘন্য। তাড়াতাড়ি ওর কাছে গিয়ে বলল, হে মালাউন, এটা কি করলে, রাগ গোস্বার তো একটা সীমা থাকা চাই, এক্ষুনি তওবা কর। সে চোখ তুলে স্বামীর দিকে তাকাল, সেই দৃষ্টিতে ছিল ঘৃণা ও উপহাস, কিন্তু মুখে কোন কথা বলল না। তার চোখই বলে দিচ্ছে সে হাসানের কথায় তওবা করবে না। বুঝতে পেরে বলল, মনে মনে তওবা কর, দু রাকাত নামায পড়ে আল্লাহ্‌র কাছে মাফ চেয়ে নিও। তারপর সে নিজেই তওবা টওবা করে তার জন্য ও নিজের জন্য আল্লাহ্‌র দরবারে এস্তেগফার করল। ইতিমধ্যে বাসার আশপাশের লোকেরা জেনে গিয়েছিল যে, এ বাসার মিয়াঁ বিবি ঝগড়া ছাড়া চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে একটা মিনিটও বাজে নষ্ট করে না।

মোবারক সানগ্লাস ব্যবহার করত। বিয়ের কথা বলার পর থেকে ফেরদৌসী তাকে কানা মোবারক্যা বলে ডাকত। ডিসেম্বরে পরিক্ষার পর মাদরাসা বন্ধ হয়েছে, পরিবারের কর্তা হিসাবে বন্ধের সময়টা তাকে বাড়িতে থাকতে হয়। হাসান বউকে বলল, চল বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি । সে বলল, কানা মোবারক্যা কি আর বাড়িতে যাওয়ার মুখ রাখছে, আমি জীবনেও বাড়িতে যাব না। আবার সে স্বামীকে শপৎ করানোর চেষ্টা করতে লাগল, কোনদিন তাকে বাড়িতে নেয়ার কথা বলবে না। আগেও কয়েক বার চেষ্টা করেছে, কিন্তু হাসান বউকে বুঝায়, দেখ বাড়ি তো আর এক দিনের না, কত প্রয়োজন আছে, বিয়ে শাদি আছে, না গেলে তো আমাদেরই ক্ষতি, ধন- সম্পদ সব তারা একাই ভোগ করবে, আমরা ঠকব। তখন সে আর শপতের জন্য জোরাজুরি করে না।

অবশেষে ঠিক হল ফেরদৌসীকে তাদের বাড়িতে রেখে দুয়েক দিন থেকে তারপর সে বাড়িতে যাবে। যাবার সময় সে ব্যাগ গোছানো শুরু করল। মেয়ের ভাল ভাল জামা কাপড় সব ব্যাগে ভরে তার হাতে বানানো কমদামা, বিশ্রি রংচটা একটা জামা বাইরে রাখল- যা গায়ে দিলে ফুটপাতের শিশুদের মত দেখা যায়। হাসান বলল- এটা কেন, জামার কি অভাব পড়েছে? সে তার কথা শুনল না। হাসান গিয়ে ব্যাগ থেকে কয়েকটা জামা বের করে বলল, এগুলির মধ্যে একটা পরাও, এর মধ্যে ফেরদৌসীর হাতে বানানো কচু পাতা রঙের একটা জামা মেয়েকে খুব সুন্দর মানায়- দেখিয়ে বলল এটাও পরাতে পার। কিন্তু সে স্বামীর দেখানো জামাগুলি ব্যাগে ভরে নিজেরটাই রাখল। দু’জন ব্যাগের দুপাশে বসা। স্বামী স্ত্রীরটা ভরে নিজের পসন্দটা বের করে আর স্ত্রী স্বামীরটা ভরে নিজেরটা বের করে, এভাবেই চলতে থাকে।

হাসান বার বার বলে- এগুলি সুন্দর, মেয়েকে মানাবে ভাল, তোমারটার কি মাহাত্ন আছে আমাকে বুঝাও। কিন্তু সে কোন কথা বলে না, গাল ফুলিয়ে অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছে। রাগে একেক বার হাসানের মাথার চুল খারা হয়ে যাচ্ছে, মন চাচ্ছিল ঠাস ঠাস করে কয়েকটা চড় মেরে গালটা লাল করে দিতে। কিন্তু জানে তাহলে মহা বিপদ। একবার স্ত্রীর বের করা জামাটা হাতে নিয়ে বাহুতে একটা গুতা মেরে বলল- এইটার মধ্যে কি মধুটা আছে, শুনি? আর অমনি যেভাবে ধুলার উপর পানি ছিটায় সেইভাবে সে ব্যাগটা নিয়ে উপুড় করে জিনিস গুলি ঘরময় ছড়িয়ে দিল। প্রচন্ড রাগের সময় হাসানের হাসি পায়। সে জানে এখন কিছু বললে আর যাওয়া হবে না। আর না যেতে পারলে তাকে নিয়ে ডাংগুডি খেলবে। তাই একটু হেসে বলল- এত রাগের কি আছে, আচ্ছা যাও তুমি যা পসন্দ কর তাই পরাও। সম্মত হল বটে কিন্তু রাগ ভাঙ্গল না। যাওয়ার তাড়া না থাকলে স্বামীর মাথাটা চিবিয়ে খেত, মাফ চাওয়াত। তোয়াজ নোয়াজ করে ঘর থেকে বের হল।

ষ্টেশনে গিয়ে দেখে শ্বশুর এলাকার তার দুই ছাত্র। আলাপে আলাপে তারা তার শ্যালকটার কথা জিজ্ঞেস করল, তারা নাকি একসাথে প্রাইমারী পড়েছে। তখন বউয়ের দিকে রাগে তার ফেপরা ফুলে আছে। ভাবল, এবার বাঘিনিকে আটকাইছি, একটু খোচা দেই, এখানে তো আর ঝগড়া করতে পারবেনা। বলল, আরে এদের কথা বল না, এগুলি মানুষ হবে না। আসলে কথাটা বলেছে বউকে খোচা দেয়ার জন্য, আর বাস্তবেও ছেলেটা লেখা পড়ায় মনযোগিও ছিল না, মেধাও তেমন ছিল না। ছেলেরা যেন সুযোগ পেয়ে গেল, শুরু করল ফেরদৌসীর দুই ভাইয়ের বদনাম, কে কেমন ভন্ডামি করত, লেখা পড়া করত না ইত্যাদি সমালোচনা। হাসান বউ বেচারার দিকে তাকিয়ে দেখে পিপড়ার বাসার উপর কাউকে দাড় করালে যেভাবে নাচতে থাকে সেভাবে নাচছে। বেচারি পর্দা রক্ষার্থে কিছু বলতেও পারছে না, সইতেও পারছে না। হাসান বুঝল, শীঘ্রই বোম ফুটে যাবে। অবস্থা বেগতিক দেখে ছেলেদের বলল, অনেক আলাপ হল, চল চল, বাসে উঠ।

সারাটা পথ গেল, স্বামীর সাথে একটা কথাও বলল না, হাসান শুধু মুখ টিপে হাসে। বাড়িতে গিয়ে মুখ খুলল, মায়ের সামনে গিয়ে বলল, আমার ভাইয়েরা যেন খাওয়ার জন্য তাদের বাড়িতে গিয়ে বসে থাকে এত সমালোচনা কেন। মা বললেন- কার কথা বলছিস। সে বলল- ঐ যে দক্ষিণ পাড়ার দুইটা ছেলে, আমার ভায়েরা যেন তাদের পাতের ভাত কেড়ে খেয়েছে..... ইত্যাদি ইত্যাদি। সরল মানুষ- মা কোন মন্তব্য করলেন না। এদিকে হাসান দম বন্ধ করে বসে আছে, কারণ এ সমালোচনার মূল হোতা তো সে। যদি বলে দেয় তাহলে স্বাশুরির সামনে আর লজ্বার অন্ত থাকবে না। না, বলে নি।

আসলে তিনটি অবস্থানে ছিল তার স্ত্রীর তিন অবস্থা- যা মেয়েদের স্বাভাবিক স্বভাবের উল্টো। বাপের বাড়িতে সে ছিল হাসানের একান্ত বাধ্যানুগত স্ত্রী, তার চেয়ে আদর্শ স্ত্রী আর হয় না। তখন সে তার খেদমত করে, যা প্রয়োজন সব খেয়াল রাখে। যে বেচারি বাসায় কোনদিন টিউবওয়েল থেকে এক জগ পানি আনে না- সে সেখানে টিউবওয়েল চেপে স্বামীর জন্য বাথরুমে পানি রেখে আসে, গোসল করা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে, গোসলের পর লুঙ্গিটা তাকে ধুতে না দিয়ে নিজে ধুয়ে আনে, টয়লেটে বদনা ভরে পানি দিয়ে আসে। আবার তার বোনদের বাসায় থাকলে সে অনুগত স্ত্রী তবে তর্ক করে, কিন্তু ঝগড়া করে না। আর নিজের বাসায় যখন স্বামীর সাথে থাকে, তখন সে শুধু বাঘিনী নয় আস্ত একটা রক্ত পিপাসু রাক্ষুসি। তখন সে স্বামীকে মানুষ হিসেবেই গন্য করে না।

আবার সে বাইরে স্বামীর বদনাম করত না। স্বামী তাকে কয়েক বার মেরেছে, গালি গালাজ করেছে, কটু কথা বলেছে- এসব সে কোনদিন তার মা-বোনদের বলেনি। কিন্তু তার অন্যান্য বোনেরা যেমন স্বামিদের প্রশংসা করত, সে তা করত না। অথচ বাস্তবতায় এটা তারই সবচেয়ে বেশি করার কথা। আবার সে বোনদের কাছে বলত তার স্বামীর সুখ নেই, এর দ্বারা সে বুঝাত বাড়িতে হাসানের ভাইয়েরা তাকে মানে না, সে অসুখি। কিন্তু সে নিজে যে স্বামীকে কড়াইয়ে বিনা তেলে ভাজা পুড়া করত- সে কথা বলত না।

ফেরদৌসীদের ঘরটা উত্তর দক্ষিণে লম্বালম্বি, অনেকগুলি রুম। হাসান সর্ব দক্ষিনের রুমে শুয়ে বসে থাকে। পরদিন সকালে অভ্যাস অনুযায়ী ফেরদৌসী মেয়েকে ছেড়ে দিল। মেয়ে ইচ্ছানুযায়ী উঠোনে দৌড়াদৌড়ি করছে, চাচীর ঘরে যাচ্ছে, জঙ্গলে যাচ্ছে। কিন্তু মেয়েকে যে খেয়াল রাখতে হবে তার মধ্যে এমন হুস ও চেতনা নেই। চাচী বাইরে রান্না করে দিয়াশলাই চুলার ধারে রেখেই চলে যায়। চাচীর পর এবার তার মেয়ে গেছে রান্না করতে, প্রথমে ম্যাচ নিয়ে খোচা খোচি করল, বড়দের মত আগুন জ্বালাতে চাইল কিন্তু পারল না। তারপর ম্যাচটা লাকড়ির মত চুলায় দিয়ে দিল, যখন ম্যাচটা জ্বলে উঠল তখন তা আনার জন্য আবার হাত বাড়াল। এ মহুর্তে চাচী দেখে চোখের পলকে এসে কোলে নিল, তারপর গিয়ে তার মাকে তিরস্কার করতে লাগল- তোমার মেয়েকে এভাবে ছেড়ে রাখছ এখনি তো হাতটা পুড়েছিল। আমি না দেখলেই তো সর্বনাশ হত---

চাচীর কথা শুনে হাসান দৌড়ে গিয়ে রাগের মাথায় বলে ফেলল- নিজের মেয়েটাকে রাখবে এটুকু ক্ষমতাও তো তোমার নাই। নাই তো ভাল কথা আমার কাছে দিয়ে আসলেই তো পার- এটুকু বলেই ভড়কে গেল। আশংকা করল এখনি মেঘের গর্জন শুরু হবে, বউয়ের গালি খাওয়ার জন্য আবুলের মত তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল। কারণ সে বউয়ের ক্ষমতার খোটা দিবে আর প্যাদানি খাবে না- এমন অযোগ্য বউ তার নয়। কিন্তু বউ তাকে নিরাশ করে দিল, একটা কথাও বলল না। আসলে বাপের বাড়িতে সে হাসানের লক্ষ্মী বউ। কিন্তু এ ঘটনা বাসায় হলে ঠিকই বাঁশ দিত।

অগ্রহায়ন, নাতিশীতোষ্ণ সন্ধ্যা রাত। ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে, দূর গ্রামগুলির নিম্নাংশ কুয়াশায় আবৃত, যেন মোলায়েম মখমলের লুঙ্গি পরে আছে, কিন্তু উর্ধাংশের সবুজ আকাশের নীলিমায় মিশে আছে। চারিদিকে নতুন ধানের উৎসব, হাসান মেয়েকে নিয়ে বাইরে গেল। তখন আকাশে চাঁদ, মেয়েকে চাঁদ দেখিয়ে- আয় আয়, চাম (চাঁদ) মামা নিয়ে যা- বলে দু’হাতে তাকে একটু উর্ধ্বে তুলে ধরতেই উচ্ছ্বসিত হাসি দিয়ে দু’হাতে বাবার গলা জড়িয়ে ধরে। আবার তাকে উর্ধ্বে তুলে ধরে- আয় আয় চাম মামা নিয়ে যা- বলতেই আবার উচ্ছসিত হাসি দিয়ে তার গলা জড়িয়ে ধরে। আহঃ, কী মধুময় অনুভূতি। সন্তান বাৎসল্য পিতা মাতার পুরো অস্তিত্বটাকেই আলোড়িত করে তোলে। এভাবে প্রায় এক ঘন্টা খেলার পর ঘরে আসল। সকাল বেলায় হাসান শুয়ে আছে। ফেরদৌসী বাচ্চাকে কোলে নিয়ে খাটের পাশেই চেয়ারে বসে আছে। মেয়ে বাবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এই এই বলে ডাকে। হাসান তার দিকে তাকিয়ে- ওয়াফ বলে মুখে একটু উচ্চ শব্দ করতেই সে একটা উচ্ছ্বসিত হাসি দিয়ে মায়ের বুকে মুখ লুকায়। সে শুয়, মেয়ে আবার এই এই বলে ডাকে, বাবা ওয়াফ বলে, সে আবার হাসি দিয়ে মুখ লুকায়। এ হাসির মূল্য কত? একজন বাবাই আন্দাজ করতে পারে এ হাসির মূল্য। এই যে নাদুস- নুদুস দুটি হাত, গাতুম- গুতুম দুটি পা- এই দুটি পায়ের চলার পথ মসৃন করার জন্য, দুটি হাতের ব্যাপ্তি সুবিস্তৃত করার জন্য একজন বাবা হাসতে হাসতে তার জীবন কোরবান করতে পারে। এভাবে অনেকক্ষণ পর্যন্ত খেলা চলে। দুপুর বেলায় সে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করল।

যাওয়ার সময় গাড়িতে বসে বসে সে ভাবে- ভালবাসার বিবর্তন, আচ্ছা ভালবাসা কি যৌগিক নাকি মৌলিক। এটা কি বিভক্ত হয় নাকি একই ভালবাসার বিবর্তন হয়। বিয়ের পর বাচ্চার মাকে সে পসন্দও করত না, ভালও বাসত না। কিন্তু তিন মাস পর কিসের পসন্দ আর কিসের ভাল বাসাবাসি- সব কিছু ভেঙ্গেচোরে নতুন রূপ ধারন করল। শয়নে স্বপনে, জাগরনে নিজের ভুবন জুরে স্ত্রীর মুখচ্ছবি ছাড়া কিছুই ভাসত না। কিন্তু এখন কি হল, নিজের অস্তিত্ব জুরে সন্তানের উপস্থিতি। কচি একটি মুখ, উছ্বসিত হাসি, নাদুস- নুদুস দুটি হাত, দুটি পা, লক্ষ পাওয়ার ম্যাগনেটিকের তীব্র আকর্ষণে অন্য সব কিছু ভেঙ্গে পরে। হাসানের অস্তিত্ব জুরে এখন শুধুই সন্তান, এখানে অন্যের জন্য তিল-ঠাই নাই। আসলে পৃথিবীতে কেউ নিজের নয়, প্রত্যেক নর স্ত্রী- সন্তানের, প্রত্যেক নারী স্বামী- সন্তানের, প্রত্যেক স্বামী- স্ত্রী শুধুই সন্তানের, এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

বিষয়: সাহিত্য

১৭৮২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

376312
১৫ আগস্ট ২০১৬ দুপুর ০২:৫৬
কুয়েত থেকে লিখেছেন : প্রথম হাসান স্ত্রীকে ভয় পেয়ে গেল এ পর্যন্ত কত ঝগড়া ঝাটি হয়েছে বেছারা হাছান আর কত সইবে। ভালো লাগলো ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File