আগ্নেয়গিরির উদগিরণ- ১৪
লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১৫ জুলাই, ২০১৬, ০৯:৪৬:২৮ সকাল
দেশের বাস্তবতা-
তারপর প্রেসিডেন্ট জিয়া এবং প্রেসিডেন্ট এরশাদের আমলে আলেমদের চেষ্টা তদবির ব্যতীতই অর্ধেক ইসলাম তো প্রতিষ্ঠা হয়েই গিয়েছিল। সংবিধানে আল্লাহ্র উপর আস্থা, বিসমিল্লাহ সংযোজন, রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম ইত্যাদি হয়েছিল। বাকী ছিল শুধু ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থার বাস্তবায়ন। তখন আলেমরা জনগণের সামনে ও সরকারের সামনে এগুলির সুফল বর্ণনা করে কিছুটা চেষ্টা করলেই খুব সহজে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন। কিন্তু তারা সেই চেষ্টা করেন নি। ফলে সদ্য স্বাধীন একটা দেশ লোটেরা হায়েনাদের লোটপাটের মগরাজ্যে পরিণত হল এবং রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের চারনভূমি হয়ে উঠল। কাজেই এ পাপের দায় আলেম সমাজ কোন ভাবেই এড়াতে পারেন না।
অনেক রক্ত ঝরিয়ে, খড় কুটো পুড়িয়ে অবশেষে ১৯৯১ সালে এল চির প্রতিক্ষিত অনেক সাধের সংসদীয় গণতন্ত্র। আর পাশ্চাত্যের পুঁজিবাদী গণতন্ত্রের মুল বার্তাটাই হচ্ছে, ধর্ম-কর্মের দরকার নাই, ভোগ-বিলাস, সুখ সম্ভুগে ষোল কলায় জীবনটা উপভোগ করাই মানব জন্মের চরম ও পরম লক্ষ। আর ভোগের জন্য অর্থের প্রয়োজন। কাজেই ধর্মের নীতিকথা বাদ দিয়ে বৈধ অবৈধ যে কোন উপায়ে অর্থ উপার্জন কর, জীবন উপভোগ কর। পাশ্চাত্যের এ ভোগবাদি দর্শনে আজ পৃথিবী বিষিয়ে উঠেছে। এক শতাংশ মানুষ নিরানব্বই শতাংশের রক্ত চোষে নিচ্ছে। একই ধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ দেশের লোটেরারা দুই দলে যোগ দিয়ে পালাক্রমে শোষণে শাসনে দুর্নীতিতে দেশটাকে ধ্বংসের শেষ ঘাটিতে পৌঁছে দিয়েছে। এদেশ এখন বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যর্থ রাষ্ট্র এবং আমরা মিসকিন, দাস ও শ্রমিক জাতি হিসেবে বিশ্বময় পরিচিত। কাজেই এসবের দায় আলেম সমাজ কোন ভাবেই এড়াতে পারবেন না।
বিশেষত ১৯৯১ থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে, জনগণকে সার্বভৌমত্বের মালিক বানানোর বুলি আউড়িয়ে যেসব মানবতাহীন কর্মকান্ড ঘটানো হচ্ছে-এসবের দায় কে বহন করবে ? যেমনঃ
১। অন্তহীন লোটপাটঃ লোটেরা দুর্বৃত্তের দল দুই দলে বিভক্ত হয়ে দেশের সম্পদ লোটপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে, দরিদ্র দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছে। অথচ দেশের মানুষ মধ্যযুগে আফ্রিকার গোলামদের ন্যায় দাস হিসাবে বিদেশে পাচার হচ্ছে, থাইল্যান্ডে, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মায়ানমারের জঙ্গলে তাদের গন কবর পাওয়া যাচ্ছে, সমুদ্রে সলীল সমাধি হচ্ছে। গালফ অঞ্চলের মরু সাহারায় ক্ষুধা পিপাসায় বেওয়ারিশ কুকুরের মত মারা পড়ছে, বিভিন্ন সমুদ্রের অতলে হারিয়ে যাচ্ছে। এক মুঠো ক্ষুধার অন্ন জুটাতে এদেশের নারীরা পাচার হয়ে যাচ্ছে। দেশী বিদেশী বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। নরকের কিটদের খাদ্য হচ্ছে। ক্ষুধার জ্বালায় ৬/৭ বছরের শিশু ইট পাথর ভেঙ্গে পেটের অন্ন যোগাচ্ছে। বৃদ্ধ অসহায় নারী, পুরুষ, শিশু ডাস্টবিনে কুকুরের সাথে কাড়াকাড়ি করে বর্জ্য খেয়ে উদরপূর্তি করছে। অথচ দেশের সম্পদ বাইরে পাচার না করলে, সম্পদের সুষম বন্টন হলে, অন্তত যাকাতের সুষম বন্টন হলেও এ পরিস্থিতির উদ্ভব হত না। অথচ আল্লাহ্ ও রাসূল (সাঃ) প্রদত্ত জিহাদ এবং আমরে বিল মারুফের দায়িত্ব হিসাবে আলেম সমাজের কর্তব্য হচ্ছে যেখানেই শোষণ, অন্যায়, অবিচার, জুলুম পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিবাদ করবে। কাজেই আলেম সমাজের উচিত ছিল সম্মিলিতভাবে রাজপথে দাড়িয়ে হুঙ্কার দেয়া, সকল মুস্তাদআফ রাষ্ট্রের পোষ্য। আর জনগণকে শোষণ করে অবৈধ সম্পদ উপার্জন হারাম। কাজেই লোটেরাদের সকল সম্পদ ফিরিয়ে এনে ইসলামী বিধান মতে মুস্তাদআফ (বয়োবৃদ্ধ, ইয়াতিম, বিধবা, প্রতিবন্ধি) গোস্টিকে সরকারি ভাতায় প্রতিপালন করতে হবে। আর সক্ষমদের দেশে বিদেশে সরকারিভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করব। এখন আলেম সমাজের কাছে প্রশ্ন হলো, এ দায়িত্ব তাদের উপর ফরয (কেফায়া) ছিল কিনা ? তারা এ দায়িত্ব পালন করছেন কিনা ? না করলে তজ্জন্য আল্লাহ্র দরবারে জবাবদিহি করতে হবে কিনা ? কোরআন সুন্নাহর বিধান মতে উত্তর অবশ্যই হাঁ বাচক হবে।
রাজনীতির নামে মানুষ হত্যাঃ প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়েছে, রাজা ও সৈন্য মরেছে কিন্তু সাধারণ জনগণের কেউ ক্ষতি করেনি। কিন্তু আমরা এমন এক হতভাগ্য জাতি যে, আমাদের প্রিয় দুই দলের যে দল মসনদে থাকে তারা বিরোধীদলকে শায়েস্তা করার নামে দেশের নাগরিকদের পথে-ঘাটে, মাঠে-প্রান্তরে ক্রস ফায়ারে, গুলি করে হত্যা করে। আর জেল যুলুম নির্যাতনের তো কোন সীমা পরিসীমাই নাই। পক্ষান্তরে যারা বিরোধি দলে থাকে তারা রাজপথে বাস, ট্রাক, ট্রেনে, ক্ষুদ্র যানবাহনে মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারে ? তাছাড়া সরকারকে জব্দ করতে তারা জনগণের জান-মাল, গাড়ি-ঘোড়া, ধন-সম্পদ, ব্যবসা-বাণিজ্য, গাছ-গাছালি, বাড়ি-ঘর সবকিছুই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভাংগচুর করে ধ্বংস করে দেয়, প্রলয়কান্ড ঘটায়। নিজেদের ক্ষমতার লড়াইয়ে সাধারন জনগণকে আগুনে পুড়িয়ে মারা, তাদের ও রাষ্ট্রের সম্পদ এভাবে ধ্বংস করার নযির সম্ভবতঃ পৃথিবীর ইতিহাসে নাই, এমনকি বর্তমানের গণতান্ত্রিক স্বৈরতান্ত্রিক বা একনায়কতান্ত্রিক কোন দেশেও এমন নযির নেই (যুদ্ধাবস্থা ব্যতীত)। অথচ দেশে অসংখ্য ইসলামী দল আছে, আলেম আছে কিন্তু কেউ এ বীভৎস হত্যাকান্ড সম্পর্কে টু শব্দটি পর্যন্ত উচ্চারন করেনি। বস্তুত আলেম সমাজের উচিত ছিল প্রতিটা রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক হত্যাকান্ডের কিসাস অথবা দিয়ত (ক্ষতিপুরন) দাবী করা, ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবী করা। জনগণকে সাথে নিয়ে এসব হত্যাকান্ড, ধ্বংসলীলা, ক্ষতি ও যুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা, যুদ্ধ ঘোষণা করা। তদুপরি পশ্চিমা পুঁজিবাদী গণতন্ত্রের ধ্বংসকারীতা এবং ইসলামের কল্যাণময়তা জনগণের সামনে তুলে ধরে ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালানো। কিন্তু তারা কিছুই করেন নি বিধায় আলেম সমাজ কোনভাবেই এসবের দায় এড়াতে পারবেন না।
দেশের সম্পদ ধ্বংসঃ ১৯৯১ সাল থেকে দেখা যাচ্ছে- যারাই বিরোধি দলে থাকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠে। মানুষ তো হত্যা করেই সেই সাথে দেশের সম্পদ, জনগণের সম্পদ ভেঙ্গে ছোড়ে, আগুনে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। প্রতিদিনের হরতালে ব্যবসায় সেক্টরে কয়েকশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়, আবার শত কোটি টাকার সম্পদ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে, ভেঙ্গে ছোড়ে ধ্বংস করা হয়। এভাবে মাসের পর মাস যখন হরতাল অবরোধ চলতে থাকে- তখন দেশের কি পরিমান ক্ষতি হয়? অথচ এই ক্ষতিটা না হলে এ সম্পদ দিয়েই দেশের মুস্তাদআফ শ্রেণীকে ভাতা দেয়া যেত, প্রতিপালন করা যেত, দেশ অনেক এগিয়ে যেত। কাজেই তখন আলেম সমাজের উচিত ছিল, জনগণকে সাথে নিয়ে না’রা বুলুন্দ করা “বন্ধ কর এসব দাজ্জালি কর্মকান্ড, সাধারন জনগণের জান মালের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দেশ ধ্বংস না করে উন্নয়ন কর, ইসলামী বিধানানুসারে মুস্তাদআফ শ্রেণীকে প্রতিপালন কর। অন্যথায় আমাদের অনুকুলে ক্ষমতা হস্তান্তর কর। আমরা ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করব”। কিন্তু কোন আলেম বা ইসলামী দল কিছুই বলে না বিধায় ঐসব পাপের দায় তারা এড়াতে পারবেন না।
ছাত্র রাজনীতিঃ বিষাক্ত ছাত্র রাজনীতি দেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে। যারা ভবিষ্যতে জ্ঞান বিজ্ঞান, শিক্ষা, সভ্যতায় দেশের নেতৃত্ব দেবে, রাষ্ট্র পরিচালনা করবে-তাদেরকে ক্ষমতালিপ্সু লোটেরারা নিজেদের ক্ষমতার সিড়ি হিসাবে ব্যবহার করছে। ফলে এসব কোমলমতি ছাত্ররা বই খাতা কলম ফেলে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে। সহোদর ভাইয়ের মত নিজেদের ক্লাসমেট, রুমমেট ভাইকে অবলীলায় হত্যা করছে। যে দেশের দরিদ্র জনগোস্টির ট্যাক্সের টাকায় তারা প্রতিপালিত হচ্ছে, শিক্ষা পাচ্ছে তাদের বুলেট বোমায় হত্যা করছে, আগুনে জ্বালিয়ে দিচ্ছে, জনগণের ধন সম্পদ, ব্যবসা বাণিজ্য, বাড়ি-ঘর সব কিছু ভেঙ্গে ছোড়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যে ছাত্র সমাজ দেশের নির্মাতা হওয়ার কথা তারাই দেশ ধ্বংস করছে। সর্বোপরি দলীয় লেবেল এঁটে এসব ছাত্ররা সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাগিবাজি, ডাকাতি, মাস্তানি, খুনখারাবিসহ হেন কোন অপকর্ম নেই যা তারা করছে না। এভাবে অভিশপ্ত ছাত্র রাজনীতি দেশ ও জাতি ধ্বংসের রাজপথ তৈরি করছে, জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে। অথচ আলেম সমাজের উচিত ছিল, যে লোটেরারা জাতির আগামী কান্ডারি ছাত্র সমাজকে ব্যবহার করছে- তাদের বিরুদ্ধে হুসিয়ারি উচ্চারণ করা “নিজেদের সন্তানদের জঠরিয় নিরাপত্তায় দেশে বিদেশে উচ্চ শিক্ষিত বানাচ্ছ আর এ দেশের দরিদ্র কৃষকের সন্তানদের তোমাদের হীন স্বার্থে ঢেলা হিসাবে ব্যবহার করছ, দেশের ও তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়ার কারণে তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে। প্রত্যেকটা হত্যা ও ক্ষতির জন্য কিসাস বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।” তাহলে এ অভিশপ্ত ছাত্র রাজনীতি এবং রাজনৈতিক হত্যাকান্ড বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু আলেমগণ সেই দায়িত্ব পালন করেন নি বিধায় এর দায় তারা এড়াতে পারবেন না।
নারী সমস্যাঃ আজ পাশ্চাত্য নেংটা সভ্যতার কুপ্রভাবে, সহশিক্ষা ও সহকর্মের কুপরিনতিতে নারী সমাজ অস্তিত্ব সংকটের মোকাবেলা করছে। এখন পথে ঘাটে মাঠে প্রান্তরে বিদ্যালয়ে কর্মালয়ে নারী ভয়ঙ্কর হিংস্রতার শিকার হচ্ছে। ইভটিজিং ধর্ষণ ও বহুমুখী অত্যাচারে নারী আজ নীলকণ্ঠ। তার নিজ দেহ নিজের কাছেই বোঝা ও অভিশপ্ত হয়ে উঠেছে। তারা আপন আলয়েও নিরাপদ না। এক্ষেত্রে আলেম সমাজের উচিত ছিল প্রতিবাদ করা এবং ঘোষণা দেয়া, নিরাপত্তার স্বার্থে নারীর শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্র আলাদা কর, শালিন পোশাক ও পর্দা বাধ্যতামূলক কর। যারা ইসলামী এ আইনের প্রতিবাদ করবে বা মানতে অস্বীকার করবে-কোন নারী নির্যাতিতা হলে, ধর্ষিতা হলে- তাদেরকে এর জবাবদিহি করতে হবে, ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাহলে এ সমস্যার অনেকটা সমাধান হত।
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়তনঃ প্রতিটি রাজনৈতিক দলের শাখা সংগঠন বিভিন্ন নামে তৃনমুল পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসব দলিয় নেতা কর্মীরা যখন বিরোধি দলে থাকে তখন তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মানুষ খুন, দেশ ও জনগণের সম্পদ ধ্বংস সহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা করে না। আবার তারা নিজেরাও খুন, গুম, ক্রস ফায়ার, জেল যুলুম ও ধন সম্পদের ক্ষয় ক্ষতির শিকার হয়। তারপর যখন ক্ষমতায় যায় তখন সুদে আসলে চক্রবৃদ্ধিহারে সেই সব ক্ষতি পুষিয়ে নেয়। তখন তারা দেশটাকে বিস্তির্ণ শিকার ক্ষেত্র মনে করে, দেশ হয়ে উঠে তাদের কাছে মগের মুল্লুক। তৃনমুলের একজন কর্মী সমর্থক পর্যন্ত লোটপাটে মেতে উঠে। তারা বিভিন্ন উপায়ে জনগণের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে, সংখ্যালঘু সম্পত্তি দখল করে। ইসলামী কোন দল বা কোন আলেম কখনো সংখ্যালঘু সম্পত্তি দখল করে না। অবৈধ উপার্জন করে না। দলীয় ছত্র ছায়ায় নেতা কর্মীরা এসব অপকর্ম করে বেড়ায় অথচ তাদের জন্য সাত খুন মাফ। তাদের কোন বিচার নাই।এছাড়া সর্বক্ষেত্রে নোংরা দলীয়করণ দেশটাকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এভাবে দেশের জনগণ ত্রিমুখি শোষণ নির্যাতনের যাতাকলে পিস্ট হচ্ছে। অর্থাৎ দলীয় নেতা-কর্মীরা শোষণ করে, পুলিশ প্রশাসন শোষণ করে, তা ছাড়া সরকারি বিভিন্ন ট্যাক্স খাজনা, খারাজ ইত্যাদি তো আছেই। এই ভাবে পশ্চিমা পুঁজিবাদী গণতন্ত্র দেশ জাতি ধ্বংস করে দিচ্ছে-অথচ আলেম সমাজ নীরব। পশ্চিমা তন্ত্র মন্ত্রে যখন মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে, মুক্তির জন্য ত্রাহি ত্রাহি করছে-তখন আলেম সমাজ চির সুন্দর ইনসাফপূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণকে বলছে না, ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে না। সকল ইসলামী দল মিলে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গ্রহণ করছে না বিধায় এসবের দায় তারা কোন ভাবেই এড়াতে পারবেন না। তজ্জন্য আল্লাহ্র দরবারে জবাবদেহি করতে হবে।
তাছারা বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব পশ্চিমা দাজ্জালতন্ত্রের খপ্পরে পরে আগ্নেয়গিরির মত জ্বলছে-তা নিরসনে আলেম সমাজ সম্মিলিত কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। এখন প্রশ্ন হল, যে সব বিষয় বর্ণিত হল এবং অন্যান্য আরো যেসব অন্যায় রয়েছে-সেসবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা আলেমদের উপর কর্তব্য ছিল কিনা? জিহাদ এবং আমরে বিল মারুফ ওয়া নেহি আনিল মুনকারের আওতায় আলেমগণ সে দায়িত্ব পালন করছেন কিনা? না করলে তারা আল্লাহ্ ও জনগণের কাছে জবাবদিহিতার দায়ে দায়ী বা আবদ্ধ কিনা ?
বিষয়: রাজনীতি
১১২৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার লিখাগুলো হৃদয়ে দহন সৃষ্টি করে। জ্বালাময়ী শানিত লিখা মাশাআল্লাহ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন