আগ্নেয়গিরির উদগিরণ- ৫

লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ১৯ জুন, ২০১৬, ০২:২২:০১ রাত



আল-হাদিসের আরশিতে ফিরকাবাজি- ২

মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা

20707 - أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ غَيْلَانَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ زِيَادِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ، وَخَرَجَ مِنَ الطَّاعَةِ فَمَاتَ فَمِيتَتُهُ جَاهِلِيَّةٌ، وَمَنْ خَرَجَ عَلَى أُمَّتِي بِسَيْفِهِ فَيَضْرِبُ بَرَّهَا وَفَاجِرَهَا لَا يَتَحَاشَى مُؤْمِنًا لِإِيمَانِهِ، وَلَا يَفِي لِذِي عَهْدٍ بِعَهْدِهِ، فَلَيْسَ مِنْ أُمَّتِي، وَمَنْ قُتِلَ تَحْتَ رَايَةٍ عِمِّيَّةٍ يَغْضَبُ لِلْعَصَبِيَّةِ، أَوْ يُقَاتِلُ لِلْعَصَبِيَّةِ، أَوْ يَدْعُو إِلَى الْعَصَبِيَّةِ، فَقِتْلَتُهُ جَاهِلِيَّةٌ»

আবূ হুরাইরা (রাঃ) নবী করীম (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, যে আমীরের আনুগত্য ত্যাগ করবে এবং মুসলিম জামাত (ঐক্য) থেকে পৃথক হয়ে যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়্যাতের মৃত্যু। যে ব্যক্তি মুসলিম জাতীয় পতাকার ছায়া থেকে বেরিয়ে যাবে স্বজাতির প্রতি বিদ্বেষ বশতঃ অথবা স্ব গোত্রকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে বা গোত্রবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য। এ অবস্থায় মারা গেলে তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়্যাতের মরণ। যে ব্যক্তি আমার উম্মতের বিরুদ্ধে বেরিয়ে ভাল মন্দ সবাইকে মারতে থাকে, মুমিনের অনিষ্ট থেকে দূরে থাকে না, অঙ্গিকার রক্ষা করে না, আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই, তার সাথেও আমার কোন সম্পর্ক নেই।

قَالَ يَحْيَى: فَأَخْبَرَنِي الْحَارِثُ الْأَشْعَرِيُّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «وَأَنَا آمُرُكُمْ بِخَمْسٍ: بِالسَّمْعِ، وَالطَّاعَةِ، وَالْجَمَاعَةِ، وَالْهِجْرَةِ، وَالْجِهَادِ [ص:341] فِي سَبِيلِ اللَّهِ، فَمَنَ خَرَجَ مِنَ الْجَمَاعَةِ قِيدَ شِبْرٍ فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الْإِسْلَامِ مِنْ رَأْسِهِ حَتَّى يُرَاجِعَ، وَمَنْ دَعَا دَعْوَةَ جَاهِلِيَّةٍ فَإِنَّهُ مِنْ جُثَا جَهَنَّمَ» ، فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَإِنْ صَلَّى وَصَامَ؟ قَالَ: «نَعَمْ، وَإِنْ صَلَّى وَصَامَ، وَلَكِنْ تَسَمُّوا بِاسْمِ اللَّهِ الَّذِي سَمَّاكُمْ عِبَادَ اللَّهِ الْمُسْلِمِينَ الْمُؤْمِنِينَ»

নবী করীম (সাঃ) বলেন, আমি তোমাদের পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি, ইমামের কথা মানবে, আনুগত্য করবে, জামাত বদ্ধ বা ঐক্যবদ্ধ থাকবে, প্রয়োজনে হিজরত করবে, জেহাদ করবে আল্লাহ্‌র রাস্তায়। যে জামাত থেকে এক বিঘত পরিমান সরে গেল সে তার গর্দান থেকে ইসলামের জাল খোলে ফেলল, যতক্ষন পর্যন্ত না সে ফিরে আসে। যে জাহেলি যুগের কোন কিছু প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে সে যেন জাহান্নামে হাটু গেড়ে বসল। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল, যদি সে নামায রোযা করে তাহলেও? রাসুল (সা) বললেন, হাঁ যদিও সে নামায রোযা করে। তবে তোমরা তাদেরকে মুসলিম নাম ধরেই ডাকবে।

20714 - أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلَاقَةَ، عَنْ عَرْفَجَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ خَرَجَ عَلَى أُمَّتِي وَهُمْ مُجْتَمِعُونَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمْ فَاقْتُلُوهُ كَائِنًا مَنْ كَانَ»

নবী করীম (সাঃ) বলেন, ঐক্যবদ্ধ আমার উম্মতের বিরুদ্ধে যদি কেউ বের হয় এবং তাদের মধ্যে বিভক্তি আনয়নের চেষ্টা করে তাহলে তোমরা তাকে হত্যা কর। সে যত বড় কেউ হউক না কেন?

20728 - أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا تَوَجَّهُ الْمُسْلِمَانِ بِسَيْفَيْهِمَا فَقَتَلَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ فَالْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ» ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَذَا الْقَاتِلُ فَمَا بَالُ الْمَقْتُولِ؟ قَالَ: «إِنَّهُ كَانَ يُرِيدُ قَتْلَ أَخِيهِ»

রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, যখন দুই জন মুসলমান তলোয়ার নিয়ে একে অন্যের মুখোমুখি হয় এবং একজন অপর জনকে হত্যা করে তখন তারা উভয়ই জাহান্নামী। সাহাবাগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, হত্যাকারী তো বুঝলাম কিন্তু নিহিত ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে কেন? উত্তরে রাসূল (সাঃ) বললেন, সেও তো তার প্রতিপক্ষ ভাইকে হত্যার ইচ্ছা পোষণ করেছিল। অর্থাৎ কোন মুসলমানকে হত্যার ইচ্ছা করাও কুফুরী, জাহান্নামের কারণ।

20744 - أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ أَبَانَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَخَافُ عَلَيْكُمُ الْهَرْجَ» ، قَالُوا: وَمَا الْهَرْجُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «الْقَتْلُ» ، قَالُوا: وَأَكْثَرُ مِمَّا نَقْتُلُ الْيَوْمَ، إِنَّا لَنَقْتُلُ فِي الْيَوْمِ مِنَ الْمُشْرِكِينَ كَذَا وَكَذَا؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ قَتْلَ الْمُشْرِكِينَ، وَلَكِنْ قَتْلَ بَعْضِكُمْ بَعْضًا» ، قَالُوا: وَفِينَا كِتَابُ اللَّهِ؟ قَالَ: «وَفِيكُمْ كِتَابُ اللَّهِ» ، قَالُوا: وَمَعَنَا عُقُولُنَا؟ قَالَ: «إِنَّهُ تُنْتَزَعُ عُقُولُ عَامَّةِ ذَاكُمُ الزَّمَانِ، وَيُخْلَفُ لَهَا هَبَاءٌ مِنَ النَّاسِ يَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ عَلَى شَيْءٍ وَلَيْسُوا عَلَى شَيْءٍ»

আবূ মুসা আশয়ারি (রাঃ) থেকে বর্নিত রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের উপর হরজ-এর আশংকা করি। সাহাবা গণ প্রশ্ন করলেন, হরয জিনিসটা কী? রাসূল (সাঃ) বললেন, ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ। সাহাবাগন আরজ করলেন, বর্তমানের চেয়েও কি ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞ হবে? বর্তমানে তো আমরা অমুক অমুক মুশরেকদের সাথে লড়ছি। রাসূল (সাঃ) বললেন, ঐ যুদ্ধ মুশরেকদের সাথে হবে না বরং তোমরা একে অন্যকে হত্যা করবে। সাহাবাগণ অবাক হয়ে বললেন এটা কিভাবে সম্ভব, আমাদের মাঝে আল্লাহ্‌র কিতাব থাকবে না ? রাসূল বললেন হাঁ থাকবে। সাহাবাগণ বললেন, আমাদের কি জ্ঞান বুদ্ধি থাকবে না? রাসূল (সাঃ) বললেন, ঐ সময়কালে (এক বিংশ শতাব্দিতে) তোমাদের আকল ছিনিয়ে নেয়া হবে, লোকেরা মনে করবে একমাত্র তারা নিজেরাই ভিত্তিশীল অর্থাৎ হকপন্থী আর অন্যরা ভিত্তিহীন অর্থাৎ গুমরাহ।

দৃষ্টব্যঃ অত্র হাদীসটি রাসূলের (সা)মোজেজা। হাদীসটি এই একুশ শতকের ফিরকাগুলি এবং আল কায়েদা, তালেবান, আইসিস ইত্যাদি সমস্ত গ্রুপগুলোর জন্য প্রযোজ্য।

20764 - أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَتَتَّبِعُنَّ سُنَنَ بَنِي إِسْرَائِيلَ شِبْرًا بِشِبْرٍ، وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ حَتَّى لَوْ دَخَلَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ جُحْرَ ضَبٍّ لَتَبِعْتُمُوهُ»

রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন, তোমরা ইঞ্চি ইঞ্চি গজ ফুট মেপে মেপে বনী ইসরাইলের সুন্নত তথা রীতি নীতি পদ্ধতির অনুসরণ করবে। এমনকি বনী ইসরাইলের কোন লোক গুই সাপের গর্তে ঢুকলে তোমরাও তার অনুসরণ করবে।

বাস্তব প্রয়োগঃ অত্র হাদীসের দু’টি প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। ১। ইহুদি আলেমরা যেভাবে ফিরকা ও বিকৃতির মাধ্যমে তাদের ধর্ম ধ্বংস করেছে, ইসলামের আলেমরাও হুবহু একই পদ্ধতিতে ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংস করছে। ২। মুসলমানরা ইহুদিদের যন্ত্র সভ্যতা ও কাজে কর্মে পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ করছে।

20765 - أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ حُذَيْفَةَ، قَالَ: «لَتَرْكَبُنَّ سُنَنَ بَنِي إِسْرَائِيلَ حَذْوَ الْقُذَّةِ بِالْقُذَّةِ، وَحَذْوَ الشِّرَاكِ بِالشِّرَاكِ، حَتَّى لَوْ فَعَلَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ كَذَا وَكَذَا، فَعَلَهُ رَجُلٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ» ، فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ: قَدْ كَانَ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ قِرَدَةٌ وَخَنَازِيرُ، قَالَ: «وَهَذِهِ الْأُمَّةُ سَيَكُونُ فِيهَا قِرَدَةٌ وَخَنَازِيرَ»

قَالَ: وَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «سَيَخْرُجُ أُنَاسٌ مِنْ أُمَّتِي مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ، كُلَّمَا خَرَجَ مِنْهَا قَرْنٌ قُطِعَ، كُلَّمَا خَرَجَ مِنْهَا قَرْنٌ قُطِعَ، حَتَّى عَدَدَهَا زِيَادَةً عَلَى عَشْرِ مَرَّاتٍ، كُلَّمَا خَرَجَ مِنْهَا قَرْنٌ قُطِعَ، حَتَّى يَخْرُجَ الدَّجَّالُ فِي بَقِيَّتِهِمْ»

হুযাইফা (রাঃ) বলেন, তোমরা বনী ইসরাইলের রীতি নীতি পদ্ধতির সাথে এমনভাবে মিশে যাবে যেমন তলোয়ার তার খাপের সাথে হুবহু লেগে যায়। জুতার ফিতা ফিতার মত হয় তদ্রুপ। এমনকি ইহুদিদের কেউ পাদবায়ু ছাড়লে এ উম্মতের ব্যক্তিরাও তা করার চেষ্টা করবে। এক ব্যক্তি বলল, বনী ইসরাইলের মধ্যে তো বানর শুকর ছিল? হুযায়ফা বললেন এ উম্মতের মধ্যেও বানর শুকর হবে। তারপর তিনি বলেন, আমি রাসূল (সাঃ)কে বলতে শুনেছি প্রাচ্য তথা ভারত বর্ষের দিক থেকে আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু মানুষ বা দলের আবির্ভাব ঘটবে যারা কোরআন পড়বে কিন্তু উহা তাদের কণ্ঠ নালী অতিক্রম করবে না।

বাস্তব প্রয়োগঃ এই গুমরাহ দলগুলি সম্ভবত ভারত বর্ষের দেওবন্দী, তাবলীগি ও জামাতী। কারণ, এরা কোরআন শরীফ পড়ে অথচ ফিরকা, অর্থ, বিচার, রাষ্ট্র ব্যবস্থা, বিজ্ঞান ইত্যাদি সংক্রান্ত কোরানের আয়াত এদের অন্তরে ঢোকে না। এরা ইসলাম বিকৃত কারী ফিরকাবাজ।

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، عَنْ عَبْدِ الْوَارِثِ، عَنِ الْجَعْدِ، عَنْ أَبِي رَجَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ كَرِهَ مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا فَلْيَصْبِرْ، فَإِنَّهُ مَنْ خَرَجَ مِنَ السُّلْطَانِ شِبْرًا مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً ‏"‏‏.‏

সহিহ বুখারী :: খন্ড ৯ :: অধ্যায় ৮৮ :: হাদিস ১৭৬

মুসাদ্দাদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (সা) বলেছেন : কেউ যদি আমীরের কোন কিছু অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে ব্যক্তি সুলতানের আনুগত্য থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলি যুগের মৃত্যুর ন্যায়।

حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا شَقِيقٌ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ، وَقِتَالُهُ كُفْرٌ ‏"‏‏.‏

সহিহ বুখারী :: খন্ড ৯ :: অধ্যায় ৮৮ :: হাদিস ১৯৭

উমর ইবন হাফস (র)............ আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা) ইরশাদ করেছেন : কোন মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসিকী ( জঘন্য পাপ) আর কোন মুসলমানকে হত্যা করা কুফরী।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ، حَدَّثَنِي بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ الْحَضْرَمِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيَّ، أَنَّهُ سَمِعَ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ، يَقُولُ كَانَ النَّاسُ يَسْأَلُونَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْخَيْرِ، وَكُنْتُ أَسْأَلُهُ عَنِ الشَّرِّ، مَخَافَةَ أَنْ يُدْرِكَنِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا كُنَّا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَشَرٍّ فَجَاءَنَا اللَّهُ بِهَذَا الْخَيْرِ، فَهَلْ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ ‏"‏ نَعَمْ ‏"‏‏.‏ قُلْتُ وَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الشَّرِّ مِنْ خَيْرٍ قَالَ ‏"‏ نَعَمْ، وَفِيهِ دَخَنٌ ‏"‏‏.‏ قُلْتُ وَمَا دَخَنُهُ قَالَ ‏"‏ قَوْمٌ يَهْدُونَ بِغَيْرِ هَدْىٍ، تَعْرِفُ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُ ‏"‏‏.‏ قُلْتُ فَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ ‏"‏ نَعَمْ، دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ، مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا ‏"‏‏.‏ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ صِفْهُمْ لَنَا‏.‏ قَالَ ‏"‏ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا، وَيَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا ‏"‏‏.‏ قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِي إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ قَالَ ‏"‏ تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ ‏"‏‏.‏ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ ‏"‏ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا، وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ، حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ، وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ ‏"‏‏.‏

সহিহ বুখারী :: খন্ড ৯ :: অধ্যায় ৮৮ :: হাদিস ২০৬

মুহাম্মদ ইব্ন মুসান্না (র)....... হুযায়ফা ইব্ন ইয়ামান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা রাসূলুল্লাহ্(সা) কে কল্যানের বিষয়াদি জিজ্ঞাসা করত। কিন্তু আমি তাঁকে অকল্যানের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম এ ভয়ে যে, অকণ্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা তো জাহিলিয়্যত ও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ্তা’আলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে নিয়ে আসলেন। এ কল্যাণের পর আবারাও কি অকল্যান আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূমাচ্ছন্নতা থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম এর ধূমাচ্ছন্নতাটা কিরূপ? তিনি বললেনঃ এক জামাআত আমার তরীকা ছেড়ে অন্য পথ অবলম্বন করবে। তাদের থেকে ভাল কাজও দেখবে এবং মন্দ কাজও দেখবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে এক সম্প্রদায় হবে। যে ব্যক্তি তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তাদের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ তারা আমাদের লোকই এবং আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে। আমি বললাম, যদি এরূপ পরিস্থিতি আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে কি করতে নির্দেশ দেন? তিনি বললেনঃ মুসলিমদের জামাআত ও ইমামকে আঁকড়ে থাকবে। আমি বললাম, আমি তখন মুসলমাদের কোন (সংঘবদ্ধ) জামাআত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তখন সকল দলমত পরিত্যাগ করে সম্ভব হলে কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে, যতক্ষণ না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।

449 - حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، قَالَا: حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ هِلَالٍ، سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ نَاسًا مِنْ أُمَّتِي سِيمَاهُمُ التَّحْلِيقُ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حُلُوقَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ أَوْ مِنَ الْإِسْلَامِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ»

হযরত আবু যর (রা) নবী করীম (সা) থেকে বর্ননা করেন, আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক বা দল বের হবে, তাদের নিদর্শন হল এরা মাথা মুন্ডিয়ে রাখবে। এরা কোরআন তিলাওয়াত করবে কিন্তু কোরআন তাদের কণ্ঠনালি অতিক্রম করবে না। এরা দ্বীন বা ইসলাম থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে যায়। এরাই হল সৃষ্টি আর সৃষ্ট জীবের মধ্যে নিকৃষ্টতর প্রাণী।

ব্যাখ্যাঃ সম্ভবত রাসুল (সা) এখানে ভারতবর্শের ফিরকাগুলির কথা বুঝিয়েছেন। কারণ এরা সবাই কোরআন পড়ে বটে কিন্তু কোরানে বর্নিত ফিরকাবাজির নিষেধাজ্ঞা, ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ব্যবস্থা ইত্যাদির অর্থ তাদের পেটে ও মগজে ঢুকে না, এগুলি তারা বুঝে না। আবার দেওবন্দি ও তাবলিগিরা মাথা মুণ্ডন করে এবং অন্যদের তুলনায় কোরআন হাদিস বেশি পড়ে তবে বুঝে না।

- حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو [ص:361] عِمْرَانَ، سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: لَمَّا قَدِمَ أَبُو ذَرٍّ عَلَى عُثْمَانَ مِنَ الشَّامِ قَالَ: «يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَتَحْسَبُ أَنِّي مِنْ قَوْمٍ وَاللَّهِ مَا أَنَا مِنْهُمْ وَلَا أُدْرِكُهُمْ، يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الْإِسْلَامِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ لَا يَرْجِعُونَ إِلَيْهِ حَتَّى يَرْجِعَ السَّهْمُ عَلَى فُوقِهِ، سِيمَاهُمُ التَّحْلِيقُ وَاللَّهِ لَوْ أَمَرْتَنِي أَنْ أَقُومَ مَا قَعَدْتُ مَا مَلَكَتْنِي رِجْلَايَ وَلَوْ وَثَّقْتَنِي بِعُرْقُوَتَيْ قَتَبٍ مَا حَلَلْتُهُ حَتَّى تَكُونَ أَنْتَ الَّذِي تَحُلُّنِي»

হযরত আবু যর (রা) থেকে বর্নিত, (আমীর মোয়াবিয়ার সাথে গন্ডগোলের পর) তিনি শাম থেকে ফিরে এসে হযরত উসমানকে (রা) বললেন, হে আমিরুল মু’মিনীন, আপনি কি আমাকে সেই দলভুক্ত মনে করেন- আল্লাহর কসম আমি তাদের অন্তর্ভুক্তও নই আর তাদেরকে এখনো দেখিও নি, যারা কোরআন তিলাওয়াত করবে কিন্তু কোরআন তাদের কণ্ঠনালি অতিক্রম করবে না। এরা দ্বীন বা ইসলাম থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তীর যেমন ধনুকে ফিরে আসে না তদ্রুপ এরাও আর ইসলামে ফিরবে না। তাদের নিদর্শন হল এরা মাথা মুন্ডিয়ে রাখবে। এরাই হল সৃষ্টি আর সৃষ্ট জীবের মধ্যে নিকৃষ্টতর প্রাণী।

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُعَاوِيَةَ بْنِ مَالَجَ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيُّ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُهَاجِرٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَتْلُ مُؤْمِنٍ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ زَوَالِ الدُّنْيَا ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُهَاجِرِ لَيْسَ بِالْقَوِيِّ ‏.‏

অধ্যায় ৩৭ :: হাদিস ৩৯৯

মুহাম্মদ ইবন মুআবিয়া (র)......আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ ঐ সত্তার শপথ ! যার হাতে আমার প্রাণ, কোন মুসলমানকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা আল্লাহর কাছে পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অপেক্ষা কঠোর পাপ ।

বিষয়: রাজনীতি

১০১৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

372445
১৯ জুন ২০১৬ সকাল ০৭:২০
জ্ঞানের কথা লিখেছেন : তথ্য পূর্ণ লেখা। অনেক জ্ঞানের কথা।
372489
১৯ জুন ২০১৬ বিকাল ০৪:৪০
সঠিক ইসলাম লিখেছেন :
বাস্তব প্রয়োগঃ এই গুমরাহ দলগুলি সম্ভবত ভারত বর্ষের দেওবন্দী, তাবলীগি ও জামাতী


জামাতী বলতে কি জামায়াতে ইসলামকে বুঝালেন ?
২৯ জুন ২০১৬ বিকাল ০৪:১৭
310013
মুহাম্মদ_২ লিখেছেন : জামাতী বলতে কি জামায়াতে ইসলামকে বুঝানো হয়েছে। হ্যাঁ ।
৩০ জুন ২০১৬ সকাল ১১:০১
310053
সঠিক ইসলাম লিখেছেন : দুটোই কি আপনার নিজের আইডি ?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File